Skip to content

অর্ধমুক্ত ছাগল পালন পদ্ধতি

অর্ধমুক্ত ছাগল পালন পদ্ধতি এর বৈশিষ্ট্য, বাস স্থান ও ঘর নির্মাণ

(১) অর্ধমুক্ত ছাগল পালন পদ্ধতি এর বৈশিষ্ট্য সমূহ

অর্ধমুক্তভাবে ছাগল পালন

১। এ ধরণের পদ্ধতিতে খামারে ২০ বা ততোধিক সংখ্যক ছাগল পালন করা হয়। খামারীর বিনিয়োগ ও ইচ্ছার উপর এই সংখ্যা নির্ভরশীল |

২। এ পদ্ধতিতে ছাগলকে দিনের বেলায় খামারের নিজন্ব ভূমিতে চরানো হয় এবং রাতের বেলায় ঘরে আবদ্ধ অবস্থায় রাখা হয়।

৩। ছাগলের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য দানাদার খাদ্য ও কাচা ঘাস সরবরাহ করা হয়।

৪। এই পদ্ধতিতে পালন করলে ছাগল কর্তৃক অন্যের ক্ষেতের ক্ষতিসাধনের সম্ভাবনা থাকে না বলে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই পদ্ধতি বিশেষ উপযোগী।

৫। খাদ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার পেছনে বেশী বিনিয়োগ করা হয় বলে এই পদ্ধতিতে উৎপাদন আশাব্যগ্রক হয়।

৬। বিনিয়োগ বেশী করতে হয় বলে স্বল্প পুঁজির খামারীর জন্য এই পদ্ধতি কিছুটা ব্যয় বহুল। এক সাথে অনেক ছাগল পালন করা হয় বলে খামারের কোন একটি ছাগলে সংক্রামক রোগ হলে তা দ্রুত খামারে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে স্থস্থয ব্যবস্থাপনা খাতে খরচ বেশী হয়।

৭। বিনিয়োগের উপর আয় নির্ভরশীল। বিনিয়োগ যত বেশী হবে অর্থাৎ যত বেশী সংখ্যায় ছাগল পালন করা হবে আয়ও সেই অনুপাতে বেশী হবে ৷

(২) অর্ধমুক্ত পদ্ধতিতে ছাগলের বাস ঘরের স্থান নির্বাচনে লক্ষ্যণীয় বিষয়

১। ছাগলের ঘর পূর্ব পশ্চিমে লম্বা লি দক্ষিণ দিক খোলা থাকলে ভাল |

২। খামারের তিনদিকে ঘেরা পরিবেশ বিশেষ করে উত্তর দিকে গাছপালা লাগাতে হবে।

৩। ছাগলের বাসগৃহ শুঙ্ক ও উচু স্থানে নির্মান করা দরকার।

৪। ঘরে আলো-বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন |

৫। ঘরের মেঝে সব সময় শুষ্ক ও পরিস্কার রাখার ব্যবস্থা করা উচিৎ।

See also  কোন সময় ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের খামার শুরু করা হলে বেশি লাভে থাকা যায়?

৬। উত্তম পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

৭। লাভজনকভাবে খামার করতে হলে ছাগলের জন্য পরিস্কার, শুল্ক, দুর্গন্ধমুক্ত, উষ্ণ, পর্যাপ্ত আলো ও বায়ুচলাচলকারী পরিবেশ রয়েছে এমন আবাসন প্রয়োজন | অপরিস্কার স্যাঁতসেঁতে, বদ্ধ, অন্ধকার ও পুঁতিগন্ধময় পরিবেশে ছাগলের বিভিন্ন রোগ বালাই হতে পারে | ফলে দৈহিক ওজন বৃদ্ধির হার, দুধ প্রদানের পরিমান এবং বাচ্চা উৎপাদনের হার কমে যায়।

(৩) অর্ধমুক্ত পদ্ধতিতে ছাগলের ঘর নির্মানে লক্ষ্যণীয় দিক সমূহ

১। সেমি ইন্টেনসিভ পদ্ধতিতে ছাগলকে সাধারণতঃ ১৪-১৬ ঘন্টা সময় ঘরে আবদ্ধ রাখা হয় | এজন্য এই পদ্ধতিতে একটি ছাগলের জন্য ৮-৯ বর্গ ফুট জায়গার প্রয়োজন হয়। অথ্যার্থ ১৬ থেকে ১২ বর্ণফুট ঘরে ২৪ টি বয়স্ক ছাগল রাখা যায়। প্রতিটি বাড়ন্ত বাচ্চার জন্য গড়ে ৫-৭ বর্গস্ছট জায়গার প্রয়োজন হয়।

২। সেমি ইন্টেনসিভ পদ্ধতিতে পালনের জন্য ছাগলের ঘর ছন, গোলপাতা, খড়, টিনা বা ইটের তৈরী হতে পারে। ঘরের ভিতর বাঁশ বা কাঠের মাচা তৈরী করে তার উপর ছাগলকে রাখতে হবে। মাচার উচ্চতা ৫ ফুট হবে এবং মাচা থেকে ছাদের উচ্চতা হবে ৬-৮ ফুট। গোবর ও পেশাব পড়ার সুবিধার্থে মাচার মেঝেতে বাঁশের চটা বা কাঠকে ১ ইঞ্চি ফাঁকা রাখতে হবে। শীতের সময় মাচার উপর ৪-৫ ইঞ্চি পুরু খড়ের বেডিং বিছিয়ে দিতে হবে।

৩। বিভিন্ন বয়সের এবং বিভিন্ন ধরণের ছাগলকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে রাখা উচিৎ | পাঠাকে সবসময় ছাগী হতে পৃথক রাখা উচিৎ। দুপ্ধবতী, গর্ভবতী ও শুস্ক ছাগীকে একসাথে রাখা যেতে পারে | ছাগল ছানাকে ১ মাস বয়স পর্যন্ত মা ছাগীর সাথে রাখা উচিৎ। বাড়ন্ত ছাগল ও খাসীকে একসাথে রাখা যেতে পারে তবে তাদেরকে পৃথকভাবে খাওয়াতে হবে।

৪। বাঁশের খাঁচা বা কাঠের খাঁচাকে ক্লডিং পেন হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর চারপাশ ছালা বা চটের বস্তা দিয়ে ঢাকা থাকবে। খাঁচার মেঝেতে ৪-৫ ইঞ্চি পুরু খড় বিছানো থাকবে। ৬০ × ৫৬ × ৬০ ঘন সে.মি. আয়তনের ব্রডিং পেনে ২ টি ছাগীসহ ৪-৬ টি বাচ্চা রাখা যায়। তাপমাত্র ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামলে খাঁচা প্রতি ১ টি ১০০ ওয়াটের বাল্ধ জ্বালিয়ে তাপমাত্রা ২০-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখা যায়।

See also  গর্ভবতী ছাগলকে কৃমিনাশক দেওয়ার সঠিক সময় কোনটি? গর্ভবতী ছাগলের কৃমিনাশক

বিভিন্ন গবাদি পশু যেমন- গরু পালন, ছাগল পালন, মহিষ পালন, ভেড়া পালন ইত্যাদি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট গবাদি পশু’ (inbangla.net/gobadi) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট গবাদি

বিভিন্ন গবাদি পশু যেমন- গরু পালন, ছাগল পালন, মহিষ পালন, ভেড়া পালন ইত্যাদি সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts