Skip to content

অসুস্থ ব্যক্তির নামাজের পদ্ধতি: শুয়ে/বসে নামাজ পড়ার নিয়ম

অসুস্থ ব্যক্তির নামাজের পদ্ধতি, শুয়ে বা বসে নামাজ পড়ার নিয়ম

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ফরয। নির্ধারিত ওযর ব্যতীত সালাত পরিত্যাগ করা যাবে না।

অসুস্থ ব্যক্তি যথানিয়মে সালাত আদায় করতে না পারলে, তার জন্য ইসলামে সহজ নিয়মের অনুমোদন রয়েছে। রোগীর সেই সহজ নিয়মে সালাত আদায়কে রুগ্ণ ব্যক্তির সালাত বলে।

পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে,

‘আল্লাহ কোনো মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে কিছু চাপিয়ে দেন না।’

(সুরা বাকারা: ২৮৬)

রাসুল (সা.) বলেন,

“দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো, যদি না পারো তাহলে বসে নামাজ পড়ো, যদি তাও না পারো, তাহলে ইশারা করে নামাজ আদায় করো।”

(সহিহ্ বুখারি)

এ হাদিস থেকে সহজেই বুঝে আসে যে, অসুস্থ অবস্থায়ও নামাজ ছেড়ে দেওয়া জায়েজ নেই। বরং নির্দিষ্ট নিয়মে বসে কিংবা শুয়ে ইশারা-ভঙ্গিতে নামাজ আদায় করতে হয়। নিম্নে অসুস্থ ব্যক্তির নামাজের পদ্ধতি বা শুয়ে/বসে নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ তুলে ধরা হলো।

অসুস্থ ব্যক্তির নামাজের পদ্ধতি বা শুয়ে/বসে নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহের বর্ণনা-

  1. অসুস্থ ব্যক্তির জন্য জ্ঞান থাকা পর্যন্ত সালাত আদায় করা বাধ্যতামূলক। রোগ যত কঠিন হোক না কেন, সম্পূর্ণরূপে অপারগ না হলে সালাত ত্যাগ করা যাবে না।
  2. যথাসম্ভব ওয়াক্তের মধ্যেই নামায আদায় করতে হবে।
  3. নামাযের সমুদয় আরকান-আহকাম যথাযথভাবে আদায় করতে সামর্থ্য না হলে ইশারায় হলেও ওয়াক্তের মধ্যেই নামায আদায় করতে হবে।
  4. রোগীর দাঁড়াতে কষ্ট হলে বসে থেকে রুকু-সিজদাহর সাথে সালাত আদায় করবে।
  5. বসে রুকু-সিজদা আদায়কারী নামাজে রুকুর তুলনায় সিজদায় সামান্য বেশি ঝুঁকবে। না হয় তার নামাজ শুদ্ধ হবে না। 
  6. বসে সিজদা করার জন্য কোনো জিনিস ওপরে তোলা এবং সেটাতে সিজদা করা— এসবের প্রয়োজন নেই।
  7. বসে থেকেও রুকু-সিজদাহ করতে অক্ষম হলে বসে থেকে ইশারায় সালাত আদায় করবে। অসুস্থ ব্যক্তিকে বসার সময় সালাতের অবস্থায় বসতে হবে।
  8. যদি রোগী এতই দুর্বল হয় যে বসে থাকা সম্ভব নয়, তবে কিবলার দিকে পা দুটি রাখতে হবে। পা সোজা না রেখে হাঁটু উঁচু করে রাখতে হবে এবং মাথার নিচের বালিশ বা এ-জাতীয় কিছু জিনিস রেখে মাথা একটু উঁচু রাখতে হবে। অতপর, শুয়ে ইশারায় রুকু ও সিজদাহ করবে অথবা উত্তর দিকে মাথা রেখে কাত হয়ে শুয়ে এবং কিবলার দিকে মুখ রেখে ইশারায় সালাত আদায় করবে। যদি এভাবেও সালাত আদায় করা সম্ভব না হয়, তবে যেভাবে সম্ভব সেভাবে সালাত আদায় করতে হবে।
  9. অসুস্থ ব্যক্তি যদি মাথা দিয়েও ইশারা করার সক্ষমতা না রাখে বা বেহুঁশ হয়ে পড়লে যদি চব্বিশ ঘণ্টা সময় অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের বা তার চেয়ে কম সময় অতিক্রান্ত হয়, তাহলে সক্ষম হওয়ার পর অসুস্থ ব্যক্তিকে ধারাবাহিকভাবে কাযা করতে হবে। যদি পাঁচ/ছয় ওয়াক্তের বেশি সময় অতিবাহিত হয়, তবে আর ধারাবাহিকভাবে কাযা করতে হবে না। এ নামায আদায় না করতে পারার জন্য মহান আল্লাহর নিকট তওবা ও ক্ষমা প্রাথর্না করবে।
  10. নামাযরত অবস্থায় কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে, দাঁড়িয়ে নামায পড়তে না পারলে বসে পড়তে হবে, বসে না পারলে শুয়ে বা ইশারা করে বাকি নামায আদায় করতে হবে।
See also
সালাত/নামাজ কেন পড়তে হবে? তাৎপর্য, উপকারিতা, মাহাত্ম্য ও আদর্শ জীবন গঠনে এর ভূমিকা

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। সর্বাবস্থায় নামাজ আদায় প্রতিটি মুমিনের ওপর অত্যাবশক। কেউ অসুস্থ হয়ে গেলেও নামাজ আদায় করতে হবে। তবে নামাজ আদায়ের ধরনে তখন ভিন্নতা আসে। কিন্তু তার ওপর নামাজ রহিত হবে না।

নামাজ সব সময় আদায় করতে হয়। কোনো গুরুতর অসুস্থতার কারণে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বেশি সময় পর্যন্ত কেউ অজ্ঞান থাকলে তার জন্য সেই নামাজ মাফ করা হয়। এছাড়া নামাজ না পড়ার ক্ষেত্রে কোনো অজুহাতই গ্রহণযোগ্য নয়। কেউ যদি অসুস্থতার কারণে দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় নামাজ পড়তে না পারে তার জন্য বসে নামাজ পড়ার বিধান দেওয়া হয়েছে।

শুধু তিন ব্যক্তির ওপর নামাজ সাময়িক রহিত হয়; অপ্রাপ্তবয়স্ক, মানসিক ভারসাম্যহীন ও ঘুমন্ত ব্যক্তি।

এখানে অসুস্থ ব্যক্তির নামাজের পদ্ধতি বা শুয়ে/বসে নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ জানলাম। আমরা সুস্থ/অসুস্থ যে কোন অবস্থাতে নামজ ছাড়ব না। নামাজ হলো মুমিন ও কাফের ব্যক্তি মাঝে প্রধান পার্থক্য। আল্লাহ আমাদের সুস্থ জীবন দান করুন ও জামাআতের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার সুযোগ দান করুন। আমিন।

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট ইসলাম

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts