Skip to content

ঈদ কাকে বলে?

ঈদ কাকে বলে

(১) ঈদ কাকে বলে?

ঈদ মোবারক

ঈদ কাকে বলে: ঈদ মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসবগুলোর একটি। আরবি শব্দ “ঈদ” (عيد) এর অর্থ হলো “আনন্দ” বা “উৎসব”। এটি এমন একটি দিন যখন মুসলমানরা একত্রিত হয়ে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সময় কাটায় এবং সমাজে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির বন্ধন মজবুত করে।

(২) ঈদ কত ধরণের?

ঈদ প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে: ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা। এই দুটি উৎসবই ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত এবং এর পেছনে রয়েছে ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য।

ক) ঈদুল ফিতর (রোজার পর আনন্দের উৎসব)

ঈদুল ফিতরকে প্রায়ই “রোজার ঈদ” বলা হয়। এটি রমজান মাসের শেষে পালিত হয়, যখন মুসলমানরা পুরো এক মাস রোজা রাখার পর আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করে। রমজান হলো সংযম, প্রার্থনা এবং আত্মশুদ্ধির মাস। এর শেষে ঈদুল ফিতর এসে সবাইকে আনন্দে মাতিয়ে তোলে।

  • ঈদুল ফিতর পালিত হয় শাওয়াল মাসের প্রথম দিনে, যা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। চাঁদ দেখা গেলে রমজান শেষ হয় এবং পরদিন ঈদের আনন্দ শুরু হয়।
  • এই দিনে মুসলমানরা সকালে গোসল করে, নতুন বা পরিচ্ছন্ন কাপড় পরে এবং ঈদের নামাজের জন্য মসজিদ বা ঈদগাহে যায়। নামাজের আগে ফিতরা বা জাকাতুল ফিতর দান করা হয়, যা গরিবদের জন্য একটি বাধ্যতামূলক দান। নামাজ শেষে সবাই একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে এবং “ঈদ মোবারক” বলে শুভেচ্ছা বিনিময় করে। এরপর বাড়িতে সেমাই, মিষ্টি, পিঠা-পুলি খাওয়া হয় এবং আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া হয়।
  • ঈদুল ফিতর শুধু আনন্দের দিন নয়, এটি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সমাজের দরিদ্রদের প্রতি দায়িত্বের প্রতীক। ফিতরা দিয়ে নিশ্চিত করা হয় যে কেউই ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়।
পড়ুন
Eid Mubarak Wishes: ঈদের শুভেচ্ছা বার্তা

খ) ঈদুল আজহা (ত্যাগের উৎসব)

ঈদুল আজহা, যাকে “কোরবানির ঈদ”ও বলা হয়, মুসলমানদের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এটি হজের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং নবী ইব্রাহিম (আ.)-এর ত্যাগের স্মরণে পালিত হয়।

  • ঈদুল আজহা পালিত হয় জিলহজ মাসের দশম দিনে, যা হজের সময়ের সঙ্গে মিলে যায়। এটিও চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে।
  • এই দিনে সকালে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। নামাজের পর যারা সামর্থ্য রাখে, তারা পশু (যেমন গরু, ছাগল, ভেড়া) কোরবানি দেয়। কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয়ঃ এক ভাগ নিজের পরিবারের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়-বন্ধুদের জন্য এবং এক ভাগ গরিব-দুঃস্থদের জন্য। এই দিনে পরিবারের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়।
  • ঈদুল আজহা হলো ত্যাগ ও আনুগত্যের প্রতীক। নবী ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর আদেশে তাঁর পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন, কিন্তু আল্লাহ তাঁর জায়গায় একটি পশু দিয়েছিলেন। এটি মানুষকে শেখায় যে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্য সবচেয়ে বড়।

(৩) ঈদের তাৎপর্য

ঈদ শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঘটনাও। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঈদ ভিন্ন ভিন্ন রঙে পালিত হয়। বাংলাদেশে ঈদ মানে নতুন জামা, সেমাই-পায়েস, আর আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ। শিশুদের জন্য “ঈদি” বা সালামি দেওয়ার রীতি এই দিনকে আরও মজার করে তোলে।

ঈদের মূল বার্তা হলো একতা, ভালোবাসা এবং ভাগাভাগি। এটি আমাদের শেখায় যে ধনী-গরিব সবাই একসঙ্গে আনন্দ করতে পারে। ঈদুল ফিতরে ফিতরা এবং ঈদুল আজহায় কোরবানির মাংস বণ্টন এই বার্তাকে আরও জোরালো করে।

ঈদ মুসলমানদের জন্য শুধু একটি উৎসব নয়, এটি জীবনের একটি দর্শন। এটি সংযম, ত্যাগ, কৃতজ্ঞতা এবং সম্প্রীতির শিক্ষা দেয়। ঈদুল ফিতর হোক বা ঈদুল আজহা, প্রতিটি ঈদ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা একে অপরের জন্য বাঁচি। তাই এই ঈদে আমরা সবাই মিলে “ঈদ মোবারক” বলে আনন্দ ভাগ করে নিই!

পড়ুন
ঈদের নামাজের নিয়ম, নিয়ত ও পদ্ধতি

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।

অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।

Tags:

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট ইসলাম

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts