Skip to content

ওয়াইফাই (Wi-Fi) কী? কিভাবে কাজ করে? এর বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা-অসুবিধা

ওয়াইফাই (Wi-Fi) কী, কিভাবে কাজ করে, এর বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা-অসুবিধা

বর্তমানে প্রযুক্তির এ যুগে ওয়াইফাই (Wi-Fi) শব্দটি আমাদের সকলের কাছে পরিচিত। অর্থাৎ, কমবেশি সবাই আমরা এ শব্দটি জানি। তবে এ শব্দটির সাথে পরিচিত থাকলেও আমরা অনেকেই জানি না ওয়াইফাই (Wi-Fi) কি,এটি কীভাবে কাজ করে, এর সুবিধা-অসুবিধা কি? তাহলে চলুন আজকের আর্টিকেল থেকে আমরা এসব বিষয়ে জেনে নেই। 

(১) ওয়াইফাই (Wi-Fi) কী?

ওয়াইফাই (Wi-Fi) কী

ওয়াইফাই ১৯৯৮ সালে আবিষ্কৃত হয়। Wi-Fi এর পূর্ণরুপ হলো- Wireless Fidelity

ওয়াই-ফাই হলো একটি ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তি। এটি বিভিন্ন ডিভাইসের (যেমন – কম্পিউটার, মোবাইল, ল্যাপটপ,ট্যাবলেট, স্মার্ট টিভি, এবং অন্যান্য প্রযুক্তি ইত্যাদি) সাথে ইন্টারনেট সংযোগের সুযোগ করে দেয়। এটি তাঁর এর পরিবর্তে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সংকেত ব্যবহার করে তথ্য সরবরাহ করে।

এককথায়, ওয়াইফাই হলো একটি তারবিহীন প্রযুক্তি। যা লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট এক্সেসের জন্য ব্যবহৃত হয়।

ইন্টারনেটের সাথে কানেক্ট রাখতে, ওয়াইফাই সবার কাছে সহজ এবং জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে ওয়াইফাই। পার্সোনাল কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্ট ফোন, ট্যাবলেট, স্মার্ট টিভি, স্মার্ট স্পিকার, গাড়ি, মুদ্রণ যন্ত্র,ড্রন ইত্যাদি ডিভাইস ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির অন্তর্গত। ২০১৮ সালের হিসেব অনুযায়ী, সারা বিশ্বে ২.৯৭ বিলিয়নেরও বেশি ডিভাইসে ওয়াই-ফাই প্রযুক্তি চালু হয়।

(২) ওয়াইফাই(Wi-Fi) কয় ধরণের?

যোগাযোগের সুবিধার জন্য বর্তমানে প্রায় স্কুল,কলেজ, অফিস, হোটেল, ক্যাফে, এয়াপোর্ট, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, মার্কেট, বিভিন্ন জনবহুল স্থান, গুরুত্বপূর্ণ স্থান ইত্যাদি জায়গায় ওয়াইফাই ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি তারবিহীন হাওয়ায় অনেক মানুষ ব্যাবসায়িক ব্যক্তিগত কাজে এটি ব্যবহার করে।

ওয়াইফাই ৩ ধরণের হয়। যথা-

  1. হটস্পট ওয়াইফাই।
  2. IEEE 802.11
  3. লাই-ফাই

(৩) ওয়াইফাই (Wi-Fi) কিভাবে কাজ করে?

ওয়াইফাই (Wi-Fi) কিভাবে কাজ করে

ওয়াইফাই সক্ষম ডিভাইসগুলি রেডিও তরঙ্গ প্রেরণ এবং গ্রহণের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে। এককথায় Wi-Fi ফ্রিকোয়েন্সিগুলির মাধ্যমে আপনার ডিভাইস এবং রাউটারের মধ্যে ডাটা পাঠাতে বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে।

কী পরিমাণ ডাটা পাঠানো হবে এর উপর নির্ভর করে দুটি রেডিও-ওয়েভ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন-

  1. 2.4 গিগাহার্টজ এবং
  2. 5 গিগা হার্টজ।

Wi-Fi এ প্রধানত 802.11b স্ট্যান্ডারর্ডে ভালো ফ্রিকোয়েন্সি পাওয়া যায়। 

দু রকমের ওয়্যারলেস সংযোগ রয়েছে যা আপনাকে ইন্টারনেটে সংযুক্ত করতে পারে। যথা-

  • আপনার মোবাইল নেটওয়ার্ক সরবরাহকারীর মাধ্যমে মোবাইল ইন্টারনেট অ্যাক্সেস
  • ওয়াইফাই রাউটারের মাধ্যমে একটি ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সংযোগ।

ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক দ্বিমুখী ট্র্যাফিক হিসাবে কাজ করে,তাই ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রাপ্ত ডাটাগুলো রাউটারের মাধ্যমে একটি রেডিও সিগন্যালে কোডেড হয়ে পাস করবে যা কম্পিউটারের বেতার অ্যাডাপ্টারের মাধ্যমে প্রাপ্ত হবে।

(৪) ওয়াইফাই (Wi-Fi) এর বৈশিষ্ট্য

  1. যোগাযোগ ব্যবস্থায় হাই ফ্রিকোয়েন্সী রেডিও ওয়েব ব্যবহার করা হয়।
  2. এর মাধ্যমে একই সাথে একাধিক কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া যায়।
  3. ওয়াইফাই ওয়ারলেস Local Area Network IEEE 802.11 এর জন্য প্রণীত স্ট্যান্ডার্ড।
  4. উচ্চ ক্ষমতা লোড ব্যালান্সিং।
  5. কর্ডলেস টেলিফোনের ন্যায় বিভিন্ন পোর্টেবল ডিভাইস ও  ফিক্সড ডিভাইসের নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়।
  6. Wi-Fi এর কাভারেজ এরিয়া একটি কক্ষ, একটি ভবন বা কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে হতে পারে।
  7. হটস্পটের মাধ্যমেও এটি ব্যবহার করা যায় তবে এর কাভারেজ বেশি এলাকায় পাওয়া যায় না।
  8. এর প্রডাক্টসমূহ ওয়াইফাই এলায়েন্স কর্তৃক সনদ প্রাপ্ত।

(৫) ওয়াইফাই (Wi-Fi) এর ব্যবহার

  1. নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে Wi-Fi প্রযুক্তি ব্যবহার করা সহজ।
  2. প্রায় সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহারের সুবিধার্থে Wi-Fi প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায়।
  3. Airport , হোটেল, রেস্তোরাতে Wi-Fi সেবা ব্যবহার করা যায়।
  4. যেসকল ওয়াইফাই ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে ওয়াইফাই ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে খুব সহযে ব্যবহার করা যায়।
  5. ওয়াইফাই ব্যবহার করে এক সাথে কয়েকজন মিলে একই ভিডিও গেইম খেলা যায়।
  6. অডিও, ভিডিও ইত্যাদি দেখা যায়।

(৬) ওয়াইফাই (Wi-Fi) এর সুবিধা

  1. এর স্পিড অনেক দ্রুত, এজন্য এর ব্যবহারকারী দিন দিন বাড়ছে।
  2. রাউটারের মাধ্যমে একাধিক ডিভাইসে একসাথে সংযোগ করা যায় ।
  3. রাউটারের সিগন্যাল অনুযায়ী যেকোনো জায়গা থেকে ইন্টারনেট এক্সেস করা যায়।
  4. ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ওয়াইফাই জনপ্রিয় ইন্টারনেট হিসেবে পরিচিত।
  5. খুব সহজে ব্যবহার করা যায়।
  6. ওয়াইফাই সিস্টেম এবং এর প্রোটোকলগুলির প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতার দরকার নেই।
  7. সহজেই TP-Link,D-Link,টেন্ডা ইত্যাদি থেকে খুব সহজে এবং কম দামে ওয়াইফাই পাওয়া যায় ।
  8. বিভিন্ন ধরণের ডিভাইসে (যেমন: স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ,কম্পিউটার ইত্যাদি) ব্যবহার করা যায়।
  9. কোনও জায়গা থেকে অ্যাক্সেস করা যায়। (যেমন-বাস, ট্রেন, কফি-শপ, সুপার মার্কেট ইত্যাদি।)
  10. Wi-Fi এক্সটেন্ডার ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করা যায় ইত্যাদি।

(৭) Wi-Fi এর অসুবিধা সমূহ

  1. ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ডাটা ট্রান্সফার রেট কমে যায়।
  2. ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  3. ওয়াইফাই অ্যাক্সেস প্রায় ৩০–১০০ মিটার পর্যন্ত অর্থাৎ, ১০০ থেকে ৩০০ ফুট পর্যন্ত সীমাবদ্ধ।
  4. অধিক ডিভাইস যুক্ত করার সাথে সাথে ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের ব্যান্ডউইথ দুর্বল হয়ে যায়।
  5. স্বাস্থ্য ক্ষতিও হতে পারে; (যেমন-ক্যান্সার, অনিদ্রা, অ্যাপোপটোসিস ইত্যাদি)।
  6. গর্ভবতী মহিলাদের  ওয়াইফাই রেডিয়েশনের বাইরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
  7. সুরক্ষিত না করা হলে লোকেরা ব্যক্তিগত নেটওয়ার্ক অ্যাক্সেস করতে পারে।
  8. ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড হ্যাক করে তথ্য চুরি করতে এবং এমনকি খারাপ উদ্দেশ্যে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারে।

ওয়াইফাই এর সুবিধা এবং অসুবিধা দুটিই রয়েছে। তবে বেশি সুবিধা থাকার কারনে বর্তমানে এটি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সময় যত বাড়ছে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যাও তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এককথায় ওয়াইফাই এর বিকল্প কিছু নেই।


আজ এখানেই থাকলো। খুব শীঘ্রই আপনাদের সাথে আরেকটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হব। আর এ আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

টেকনোলজি বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট আইসিটি’ (inbangla.net/ict) এর সাথেই থাকুন।

অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট আইসিটি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts