Skip to content

ওয়ারিশ সনদ ইউনিয়ন পরিষদঃ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও উত্তোলন প্রক্রিয়া

ওয়ারিশ সনদ ইউনিয়ন পরিষদঃ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও উত্তোলন প্রক্রিয়া

ওয়ারিশ সনদ বা উত্তরাধিকার সনদ বাংলাদেশে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইনি দলিল, যা মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য প্রয়োজন হয়। এই সনদের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির বৈধ উত্তরাধিকারীদের পরিচয় ও তাদের সম্পত্তির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

এই ব্লগ পোস্টে আমরা ওয়ারিশ সনদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব, যার মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, উত্তোলন প্রক্রিয়া, ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা, ওয়ারিশ বাদ দেওয়ার ফলাফল এবং আদালতের বিবেচনা। এই পোস্টটি ওয়ারিশ সনদ ইউনিয়ন পরিষদ বিষয়ে পাঠকদের জন্য সহজবোধ্য ও বিস্তারিতভাবে লেখা হয়েছে।

(১) ওয়ারিশ সনদ কী?

ওয়ারিশ সনদ কী

ওয়ারিশ সনদ হলো একটি আইনি প্রত্যয়নপত্র, যা মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের (ওয়ারিশ) পরিচয় নিশ্চিত করে এবং তাদের সম্পত্তির অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। এটি সাধারণত স্থানীয় পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা দেওয়ানি আদালত কর্তৃক প্রদান করা হয়। ওয়ারিশ সনদের মূল উদ্দেশ্য হলো মৃত ব্যক্তির স্থাবর (জমি-জমা) এবং অস্থাবর (ব্যাংকের টাকা, শেয়ার, বীমা) সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা এড়ানো।

এই সনদটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যখন-

  • সম্পত্তি বণ্টন বা নামজারি করতে হয়।
  • ব্যাংক, বীমা বা পেনশন সংক্রান্ত অর্থ উত্তোলন করতে হয়।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন বা অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়ায় উত্তরাধিকারীদের পরিচয় প্রমাণ করতে হয়।

(২) ওয়ারিশ সনদ কেন প্রয়োজন?

ওয়ারিশ সনদ কোন কোন কাজে ব্যবহৃত হয়, ওয়ারিশ সনদ কি কাজে লাগে

ওয়ারিশ সনদের প্রয়োজনীয়তা বোঝার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে-

  1. সম্পত্তি বণ্টন: মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি ব্যক্তিগত আইন (যেমন, মুসলিম, হিন্দু বা খ্রিস্টান আইন) অনুসারে বণ্টন করতে হয়। এই সনদ ছাড়া প্রকৃত উত্তরাধিকারীদের নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
  2. আইনি বৈধতা: স্থানীয়ভাবে উত্তরাধিকারীদের পরিচয় জানা থাকলেও, সরকারি প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের কাছে তা প্রমাণ করার জন্য ওয়ারিশ সনদ প্রয়োজন। এটি প্রতারণা বা ভুল বোঝাবুঝি রোধ করে।
  3. ভবিষ্যৎ জটিলতা এড়ানো: এই সনদ ছাড়া সম্পত্তি বণ্টন বা আর্থিক লেনদেনে ভবিষ্যতে আইনি সমস্যা দেখা দিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো উত্তরাধিকারী পরবর্তীতে সম্পত্তির অংশ দাবি করলে মামলা হতে পারে।
  4. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান: ব্যাংকে মৃত ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থাকলে বা বীমার অর্থ উত্তোলন করতে হলে ওয়ারিশ সনদ ছাড়া প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

(৩) ওয়ারিশ সনদ নিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ছবিঃ ওয়ারিশ সনদ আবেদন পত্র
ছবিঃ ওয়ারিশ সনদ আবেদন পত্র

ওয়ারিশ সনদ নেওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এই ডকুমেন্টগুলো স্থানীয় প্রশাসন বা আদালতের প্রয়োজনীয়তার ওপর নির্ভর করে সামান্য ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো হলো-

  1. মৃত্যু সনদ (Death Certificate): মৃত ব্যক্তির মৃত্যু প্রমাণের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সাধারণত সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ করা যায়।
  2. জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম নিবন্ধন: আবেদনকারীর পরিচয় প্রমাণের জন্য এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি জমা দিতে হয়।
  3. কাবিননামা (বিবাহের ক্ষেত্রে): যদি স্ত্রী বা স্বামী উত্তরাধিকারী হিসেবে দাবি করেন, তবে কাবিননামা বা বিবাহের প্রমাণপত্র প্রয়োজন হতে পারে।
  4. অন্যান্য প্রমাণপত্র: মৃত ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক প্রমাণের জন্য অতিরিক্ত কাগজপত্র, যেমন পারিবারিক সনদ বা স্থানীয় প্রত্যয়নপত্র।
  5. আবেদন ফরম: ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা থেকে প্রাপ্ত ওয়ারিশ সনদের আবেদন ফরম পূরণ করতে হয়। অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রত্যয়ন পোর্টালে (prottoyon.gov.bd) ফরম পূরণ করা যায়।
  6. অন্যান্য (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে):
    • সম্পত্তির দলিল বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট (দেওয়ানি আদালতের ক্ষেত্রে)।
    • হলফনামা (ওয়ারিশ সূত্রে মালিকানা বদলের ক্ষেত্রে, যেমন গাড়ির মালিকানা)।

(৪) ওয়ারিশ সনদ উত্তোলন প্রক্রিয়া

ওয়ারিশ সনদ উত্তোলন প্রক্রিয়া, ওয়ারিশ সদর তোলার নিয়ম

ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহের প্রক্রিয়া দুইভাবে সম্পন্ন করা যায়: স্থানীয় প্রশাসন (ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা) এবং দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে। নিচে উভয় প্রক্রিয়ার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো-

ক) ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার মাধ্যমে

ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা থেকে ওয়ারিশ সনদ নেওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ এবং দ্রুত। প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ-

  1. ডকুমেন্ট সংগ্রহ: উপরে উল্লিখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করুন।
  2. আবেদন ফরম পূরণ: ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা থেকে ওয়ারিশ সনদের ফরম সংগ্রহ করে পূরণ করুন। অনলাইনে আবেদনের জন্য prottoyon.gov.bd পোর্টালে নিবন্ধন করে ফরম পূরণ করা যায়।
  3. কাগজপত্র জমা: সকল কাগজপত্র ফরমের সঙ্গে স্থানীয় চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে জমা দিন।
  4. যাচাই প্রক্রিয়া: চেয়ারম্যান বা তাঁর প্রতিনিধি কাগজপত্র যাচাই করে এবং প্রয়োজনে স্থানীয় সাক্ষী বা ওয়ার্ড মেম্বারের সঙ্গে পরামর্শ করেন।
  5. সনদ প্রদান: যাচাইয়ের পর স্বাক্ষরিত ওয়ারিশ সনদ প্রদান করা হয়। সাধারণত এই প্রক্রিয়ায় ৫০-১০০ টাকা ফি লাগতে পারে, তবে কিছু ক্ষেত্রে ফি বেশি হতে পারে।

খ) দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে

অস্থাবর সম্পত্তি (ব্যাংক, বীমা, শেয়ার) বা জটিল সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। এই প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ-

  1. মামলা দায়ের: জেলা জজ আদালত বা যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ওয়ারিশ সনদের জন্য মামলা দায়ের করতে হয়। মামলাটি সাধারণত মৃত ব্যক্তির বসবাসের এলাকায় বা সম্পত্তির অবস্থানের এলাকায় দায়ের করা হয়।
  2. ডকুমেন্ট জমা: মৃত্যু সনদ, এনআইডি, সম্পত্তির দলিল, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি জমা দিতে হয়।
  3. সমন জারি: আদালত সকল উত্তরাধিকারীদের সমন জারি করে এবং তাদের আপত্তি বা মতামত শোনে।
  4. সাক্ষ্য গ্রহণ: আদালত সাক্ষীদের বক্তব্য ও কাগজপত্র পরীক্ষা করে।
  5. সনদ প্রদান: বিচারকের বিবেচনার ভিত্তিতে ওয়ারিশ সনদ প্রদান করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় সময় ও খরচ বেশি লাগতে পারে।

গ) অনলাইন আবেদন

বাংলাদেশ সরকারের প্রত্যয়ন পোর্টাল (prottoyon.gov.bd) এর মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদের জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায়। প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ-

  1. নিবন্ধন: পোর্টালে মোবাইল নম্বর, এনআইডি এবং জন্ম তারিখ দিয়ে নিবন্ধন করুন।
  2. আবেদন ফরম পূরণ: প্রয়োজনীয় তথ্য ও ডকুমেন্ট আপলোড করে ফরম পূরণ করুন।
  3. ফি প্রদান: নির্ধারিত ফি (সাধারণত ১০-১০০ টাকা) অনলাইনে প্রদান করুন।
  4. যাচাই ও প্রদান: আবেদনটি স্থানীয় চেয়ারম্যান বা কাউন্সিলরের কাছে পাঠানো হয়। যাচাইয়ের পর সনদ ইস্যু করা হয়।

(৫) ওয়ারিশ সনদে ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা

ওয়ারিশ সনদে ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা

ইউনিয়ন পরিষদ বাংলাদেশে ওয়ারিশ সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রাথমিক ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর মূল কারণ হলো এটি স্থানীয় সরকারের একটি অংশ এবং স্থানীয় জনগণের তথ্যের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত। ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা নিম্নরূপ-

  1. আবেদন গ্রহণ ও যাচাই: ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা তাঁর প্রতিনিধি আবেদন ও কাগজপত্র যাচাই করেন। তারা স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার বা সাক্ষীদের সঙ্গে পরামর্শ করে উত্তরাধিকারীদের পরিচয় নিশ্চিত করেন।
  2. সনদ প্রদান: যাচাইয়ের পর চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত সনদ প্রদান করেন। এই সনদ স্থানীয়ভাবে সম্পত্তি বণ্টন বা নামজারির জন্য যথেষ্ট।
  3. অনলাইন সেবা: ইউনিয়ন পরিষদগুলো এখন প্রত্যয়ন পোর্টালের সঙ্গে সমন্বিত। ফলে অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে তারা ডিজিটালভাবে সনদ ইস্যু করতে পারে।
  4. স্থানীয় তথ্যের সত্যতা নিশ্চিতকরণ: ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয়ভাবে পরিচিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির পরিবারের তথ্য যাচাই করে, যা প্রতারণা রোধে সহায়ক।

(৬) কোন ওয়ারিশের নাম বাদ দেওয়ার ফলাফল

কোন ওয়ারিশের নাম বাদ দেওয়ার ফল

ওয়ারিশ সনদে কোনো বৈধ উত্তরাধিকারীকে বাদ দেওয়া গুরুতর আইনি সমস্যার কারণ হতে পারে। এটি করা হলে নিম্নলিখিত ফলাফল হতে পারে-

  1. সনদের অবৈধতা: যদি কোনো উত্তরাধিকারীকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়, তবে পরবর্তীতে তিনি আদালতে গিয়ে সনদটিকে জাল বা অবৈধ প্রমাণ করতে পারেন। এটি সম্পত্তি বণ্টন বা লেনদেন বাতিলের কারণ হতে পারে।
  2. আইনি মামলা: বাদ দেওয়া উত্তরাধিকারী তাঁর সম্পত্তির অংশ দাবি করে মামলা করতে পারেন। এটি দীর্ঘমেয়াদি আইনি জটিলতা ও খরচের কারণ হতে পারে।
  3. সম্পত্তি হস্তান্তর বাতিল: যদি বাদ দেওয়া উত্তরাধিকারী প্রমাণ করতে পারেন যে তাঁকে অবৈধভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে, তবে সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর বাতিল হতে পারে।
  4. সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যা: ওয়ারিশ বাদ দেওয়া পারিবারিক কলহ বা সামাজিক সমস্যার কারণ হতে পারে।

এজন্য ওয়ারিশ সনদে সকল বৈধ উত্তরাধিকারীদের নাম উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। এমনকি কোনো উত্তরাধিকারী মৃত হলেও তাঁর নাম মৃত হিসেবে সনদে উল্লেখ করতে হয়।

(৭) আদালতের বিবেচনা

দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ নেওয়ার ক্ষেত্রে আদালত নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করে-

  1. উত্তরাধিকার আইন: আদালত মৃত ব্যক্তির ধর্মীয় বা ব্যক্তিগত আইন (যেমন, মুসলিম উত্তরাধিকার আইন, হিন্দু আইন) অনুসারে উত্তরাধিকারীদের অংশ নির্ধারণ করে। উদাহরণস্বরূপ, মুসলিম আইনে পুত্র ও কন্যার অংশের অনুপাত ২:১।
  2. কাগজপত্রের সত্যতা: আদালত মৃত্যু সনদ, এনআইডি, সম্পত্তির দলিল ইত্যাদির সত্যতা যাচাই করে।
  3. সাক্ষ্য ও আপত্তি: সকল উত্তরাধিকারীদের বক্তব্য ও সম্ভাব্য আপত্তি শোনা হয়। প্রয়োজনে সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।
  4. আইনি বিধান: উত্তরাধিকার আইন, ১৯২৫ (ধারা ৩৭০-৩৮৯) অনুসারে আদালত সনদ প্রদান করে। এই আইনের অধীনে কোনো দেনা বা জামানত সংক্রান্ত অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশেষ বিধান রয়েছে।
  5. কোর্ট ফি: সনদের জন্য কোর্ট ফি জমা দিতে হয়, যা Court-fees Act, 1870 অনুসারে নির্ধারিত হয়।

(৮) ওয়ারিশ সনদের মেয়াদ ও যাচাই

ওয়ারিশ সনদের মেয়াদ ও যাচাই

ওয়ারিশ সনদ সাধারণত তিন মাসের জন্য ইস্যু করা হয়। তবে, এটি নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে পুনর্নবীকরণের প্রয়োজন হতে পারে। সনদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা প্রত্যয়ন পোর্টালে যোগাযোগ করা যায়। কিছু ক্ষেত্রে, আদালতের মাধ্যমে সনদের সত্যতা যাচাই করা হয়।

(৯) সাধারণ ভুল ও সমাধান

ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহের সময় কিছু সাধারণ ভুল হতে পারে। নিচে এগুলোর সমাধান দেওয়া হলো-

  1. অসম্পূর্ণ কাগজপত্র: সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে জমা দিন। প্রয়োজনে স্থানীয় চেয়ারম্যান বা আইনজীবীর পরামর্শ নিন।
  2. ওয়ারিশ বাদ দেওয়া: সকল উত্তরাধিকারীদের নাম সনদে উল্লেখ করুন, এমনকি তারা মৃত হলেও।
  3. অতিরিক্ত ফি প্রদান: কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি দাবি করা হতে পারে। সরকারি নির্ধারিত ফি সম্পর্কে জেনে নিন।
  4. অনলাইন আবেদনের সমস্যা: প্রত্যয়ন পোর্টালে নিবন্ধন বা আবেদনের সময় সমস্যা হলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

(১০) শেষ কথা

ওয়ারিশ সনদ একটি অপরিহার্য আইনি দলিল, যা মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বণ্টন ও উত্তরাধিকারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সনদ সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, সঠিক প্রক্রিয়া এবং আইনি বিবেচনা সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।

ওয়ারিশ সনদ ইউনিয়ন পরিষদ বা দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে সনদ সংগ্রহ করা যায়, এবং অনলাইন পোর্টাল এই প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করেছে। তবে, কোনো উত্তরাধিকারীকে বাদ দেওয়া বা অসম্পূর্ণ তথ্য প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ এটি গুরুতর আইনি সমস্যার কারণ হতে পারে।

আপনি যদি ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যার সম্মুখীন হন, তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর বা একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন। এই পোস্টটি আপনার জন্য সহায়ক হলে শেয়ার করুন এবং আপনার মতামত কমেন্টে জানান।

বিভিন্ন ধরণের নাগরিক সেবা সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট সেবা’ (inbangla.net/seba) এর সাথেই থাকুন।

অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট

যা কিছু বাংলাতে।View Author posts