Skip to content

ওযুর সুন্নাত সমূহ কি কি?

ওযুর সুন্নাত সমূহ কি কি

ওযু ইসলামে পবিত্রতা অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ওযুর ফরজ কাজগুলো পালন করা বাধ্যতামূলক হলেও, সুন্নাত কাজগুলো পালন করলে অতিরিক্ত সওয়াব পাওয়া যায়। হাদিস ও ইসলামী আলেমদের বর্ণনা অনুযায়ী ওযুর সুন্নাত সাধারণত ১৮টি বলে গণ্য করা হয়। নিচে সেই ১৮টি ওযুর সুন্নাত সমূহ কি কি, এগুলো বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো।

ওযুর সুন্নাত সমূহ-

ওযুর সুন্নাতসমূহ
  1. নিয়ত করা: ওযুর শুরুতে মনে মনে নিয়ত করা যে, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ওযু করছি।
  2. বিসমিল্লাহ পড়া: ওযু শুরুর আগে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” পড়া।
  3. দুই হাত ধোয়া: কবজি পর্যন্ত তিনবার হাত ধোয়া।
  4. মিসওয়াক করা: দাঁত পরিষ্কার করার জন্য মিসওয়াক ব্যবহার করা।
  5. কুলি করা: মুখে পানি নিয়ে তিনবার কুলি করা।
  6. নাকে পানি দেওয়া: নাকে পানি নিয়ে তিনবার পরিষ্কার করা।
  7. পুরো মুখ ধোয়া: কপাল থেকে চিবুক এবং কানের লতি পর্যন্ত তিনবার ধোয়া।
  8. দাড়ি খিলাল করা: দাড়ি থাকলে আঙ্গুল দিয়ে পানি পৌঁছে দেওয়া।
  9. দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধোয়া: ডান হাত তারপর বাম হাত তিনবার ধোয়া।
  10. মাথা মাসেহ করা: ভেজা হাত দিয়ে পুরো মাথা একবার মাসেহ করা।
  11. কান মাসেহ করা: দুই কানের ভেতর ও বাইরে ভেজা আঙ্গুল দিয়ে মাসেহ করা।
  12. ঘাড় মাসেহ করা: ভেজা হাত দিয়ে ঘাড়ের পিছনে মাসেহ করা (মাথার পিছন নয়)।
  13. পা ধোয়া: ডান পা তারপর বাম পা টাখনু পর্যন্ত তিনবার ধোয়া।
  14. পায়ের আঙ্গুল খিলাল করা: পায়ের আঙ্গুলের মাঝে বাম হাতের কনিষ্ঠা দিয়ে খিলাল করা।
  15. তারতিব বজায় রাখা: ওযুর অঙ্গগুলো ক্রমানুসারে ধোয়া (মুখ, হাত, মাথা, পা)।
  16. একটানা করা: অঙ্গগুলো এমনভাবে ধোয়া যেন মাঝে শুকিয়ে না যায়।
  17. পানিতে মিতব্যয়ী হওয়া: অপ্রয়োজনীয় পানি নষ্ট না করা।
  18. ওযুর শেষে দোয়া পড়া: ওযু শেষে এই দোয়া পড়া—
    “আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।”
    (অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোনো শরিক নেই। এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সা.) তার বান্দা ও রাসুল।)
পড়ুন
ওযু করার নিয়ম

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

  • এই সুন্নাতগুলো পালন না করলেও ওযু হয়ে যায়, তবে সুন্নাত পালন করলে সওয়াব বৃদ্ধি পায়।
  • কিছু আলেমের মতে, কান মাসেহ করা ওয়াজিব হিসেবেও গণ্য হয়, তবে জমহুর (বেশিরভাগ) আলেম এটিকে সুন্নাত বলেছেন।
  • ওযুর পর দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া মুস্তাহাব, যা সওয়াব বাড়ায়।

এই সুন্নাতগুলো রাসুল (সা.)-এর কর্ম ও হাদিস থেকে সংগৃহীত, যেমন সহিহ বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ প্রভৃতি গ্রন্থে বর্ণিত আছে। ওযু করার সময় এগুলো মেনে চললে ইবাদতের পরিপূর্ণতা আসে।

ওযু শুধু শারীরিক পবিত্রতার মাধ্যম নয়, বরং এটি আমাদের মন ও আত্মাকে আল্লাহর কাছে নিয়ে যাওয়ার একটি সুন্দর সুযোগ। সুন্নাতগুলো পালনের মাধ্যমে আমরা রাসুল (সা.)-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করি এবং প্রতিটি ধাপে সওয়াবের ধন অর্জন করি। তাই আসুন, প্রতিবার ওযু করার সময় এই সুন্নাতগুলো মনে রেখে আমাদের ইবাদতকে আরও পরিপূর্ণ ও প্রিয়নবী (সা.)-এর আদর্শের কাছাকাছি নিয়ে যাই। ওযুর প্রতিটি ফোঁটা হোক আমাদের জন্য রহমতের সুযোগ!

বন্ধরা, আশা করি আজকের এই আলোচনাটির মাধ্যমে ওযুর সুন্নাত সমূহ কি কি, তা ভালো ভাবেই জানতেপেরেছেন।

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।

অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট ইসলাম

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts