Skip to content

কত বছর পর্যন্ত পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধি পায়?

কত বছর পর্যন্ত পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধি পায়

“কত বছর পর্যন্ত পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধি পায়?”—এই প্রশ্নটি অনেক পুরুষের মনে ঘুরে বেড়ায়, বিশেষ করে কৈশোর ও যৌবনের শুরুর দিকে। পুরুষাঙ্গের আকার নিয়ে কৌতূহল বা উদ্বেগ শুধু ব্যক্তিগত নয়, এটি অনেক সময় আত্মবিশ্বাস এবং দৈহিক বিকাশের সঙ্গে জড়িত।

এই ব্লগ পোস্টে আমরা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই বিষয়টি বিশ্লেষণ করব এবং জানবো কত বছর পর্যন্ত পুরুষাঙ্গ স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়, এর পেছনে কী কী কারণ কাজ করে এবং এর পরে কী করা সম্ভব। এই পোস্টটিতে “কত বছর পর্যন্ত পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধি পায়”, আপনি এখানে বিস্তারিত তথ্য পাবেন।

(১) পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধি কখন শুরু হয়?

লিঙ্গ কত বছর পর্যন্ত বাড়ে

পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধি সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে (Puberty) শুরু হয়। বয়ঃসন্ধি হলো শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়, যখন হরমোনের পরিবর্তনের মাধ্যমে শারীরিক ও যৌন বিকাশ ঘটে। পুরুষদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি সাধারণত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়। এই সময়ে পিটুইটারি গ্রন্থি টেস্টোস্টেরন হরমোন নিঃসরণ বাড়ায়, যা পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য ও বেধ বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা পালন করে।

বয়ঃসন্ধির শুরু ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে এটি ৯ বছর বয়সেও শুরু হতে পারে, আবার কারো ক্ষেত্রে ১৫ বছর পর্যন্ত দেরি হতে পারে। তবে গড়ে ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সে পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধি লক্ষণীয় হয়ে ওঠে। এই সময়ে শরীরে অন্যান্য পরিবর্তনও দেখা যায়, যেমন—অণ্ডকোষের আকার বৃদ্ধি, লোম গজানো এবং কণ্ঠস্বর ভারী হওয়া।

পড়ুন
লিঙ্গ বড় করা কি সম্ভব? বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পুরুষ অঙ্গ কিভাবে বড় করা যায়? লিঙ্গ লম্বা ও মোটা করার উপায়

(২) কত বছর পর্যন্ত পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধি পায়?

বয়ঃসন্ধি শুরু হওয়ার পর পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধি সাধারণত ৪ থেকে ৬ বছর ধরে চলে। অর্থাৎ, যদি কারো বয়ঃসন্ধি ১২ বছর বয়সে শুরু হয়, তবে তার পুরুষাঙ্গ ১৮ থেকে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, ১৮ বছর বয়সের মধ্যে পুরুষাঙ্গ তার সর্বোচ্চ প্রাকৃতিক আকারে পৌঁছে যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে, শরীরের বিকাশ ২১ বছর বয়স পর্যন্ত চলতে পারে।

বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুসারে, ২০ থেকে ২১ বছর বয়সের পর পুরুষাঙ্গের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর শরীরে হরমোনের প্রভাবে আর কোনো পরিবর্তন ঘটে না। তাই বলা যায়, পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধি সাধারণত ২১ বছর বয়স পর্যন্ত চলতে পারে, তবে বেশিরভাগ পুরুষের ক্ষেত্রে এটি ১৮-১৯ বছরেই সম্পন্ন হয়।

(৩) পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধির পেছনে কী কী কারণ কাজ করে?

পুরুষাঙ্গের আকার ও বৃদ্ধি নির্ভর করে বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর। এগুলো বোঝা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি জানলে আপনি বুঝতে পারবেন কেন সবার ক্ষেত্রে ফলাফল একই রকম হয় না।

ক) জেনেটিক্স বা বংশ

পুরুষাঙ্গের আকার অনেকটাই জেনেটিক (Genetics) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আপনার পিতামাতার জিন আপনার শরীরের গঠন ও পুরুষাঙ্গের সম্ভাব্য আকার নির্ধারণ করে। যদি আপনার পরিবারে পুরুষদের পুরুষাঙ্গের গড় আকার বড় হয়, তবে আপনারও তেমন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

খ) হরমোন

টেস্টোস্টেরন হরমোন (Hormone) হলো পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। বয়ঃসন্ধিকালে এই হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা পুরুষাঙ্গের কোষ বিভাজন ও বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে। যদি কারো শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কম থাকে বা হরমোনের ভারসাম্যে সমস্যা হয়, তবে পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধি প্রভাবিত হতে পারে।

গ) স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

বয়ঃসন্ধিকালে সুষম খাদ্য (Health and Nutrition) ও সুস্থ জীবনযাপন শরীরের বিকাশে সাহায্য করে। পুষ্টির ঘাটতি থাকলে বা দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা থাকলে পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

পড়ুন
ছেলেদের পুরুষাঙ্গের বিভিন্ন নাম

ঘ) পরিবেশ ও জীবনযাত্রা

ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান বা মানসিক চাপের মতো বিষয়গুলো হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে, যা পরোক্ষভাবে পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করতে পারে।

(৩) বয়ঃসন্ধির পর পুরুষাঙ্গ কি বৃদ্ধি পায়?

২১ বছর বয়সের পর পুরুষাঙ্গের প্রাকৃতিক বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর শরীরে টেস্টোস্টেরনের প্রভাবে আর কোনো কোষ বৃদ্ধি ঘটে না। অনেকে মনে করেন যে ব্যায়াম, খাদ্য বা কিছু বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে এরপরও পুরুষাঙ্গ বড় করা সম্ভব। কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে এটি সমর্থিত নয়। যেসব পদ্ধতি প্রাকৃতিকভাবে পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধির দাবি করে (যেমন—জেলকিং বা হারবাল ওষুধ), সেগুলোর কার্যকারিতা প্রমাণিত নয় এবং অনেক সময় এগুলো ক্ষতিকর হতে পারে।

(৪) ২১ বছরের পর পুরুষাঙ্গ বড় করার উপায় কী?

যদি আপনার বয়স ২১ বছর পেরিয়ে যায় এবং আপনি পুরুষাঙ্গের আকার বাড়াতে চান, তবে প্রাকৃতিকভাবে তা সম্ভব নয়। তবে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে কিছু পদ্ধতি রয়েছে, যা পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য ও বেধ বৃদ্ধি করতে পারে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

ক) সার্জারি

লিঙ্গ লম্বা ও মোটা করার জন্য যেই সার্জারি করা হয়, তাকে ইংরেজিতে Penile Lengthening and Girth Enhancement সার্জারি বলা হয়।

  • দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি: পুরুষাঙ্গের নিচে একটি ছোট ছেদ দিয়ে লিগামেন্ট কেটে দৈর্ঘ্য বাড়ানো হয়। এতে ১ থেকে ২.৫ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃদ্ধি সম্ভব।
  • মোটাকরণ: শরীরের অন্য অংশ থেকে ফ্যাট নিয়ে পুরুষাঙ্গের ত্বকের নিচে ইনজেক্ট করা হয়। এতে ২০-৩০% বেধ বৃদ্ধি পায়।
    এই পদ্ধতি নিরাপদ, তবে অভিজ্ঞ সার্জনের তত্ত্বাবধানে করতে হয়।

খ) পেনাইল ইমপ্লান্ট বা ডিভাইস

কিছু ক্ষেত্রে ট্রাকশন ডিভাইস বা পাম্প ব্যবহার করা হয়। তবে এগুলোর ফলাফল সীমিত এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে ঝুঁকি থাকতে পারে।

গ) হরমোন থেরাপি

যদি বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনের ঘাটতির কারণে পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধি কম হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শে হরমোন থেরাপি নেওয়া যেতে পারে। তবে এটি শুধু বয়ঃসন্ধির সময় কার্যকর, পরবর্তী বয়সে নয়।

পড়ুন
পুরুষ লিঙ্গের স্বাস্থ্য ও সমস্যা

(৫) পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধি নিয়ে ভুল ধারণা

অনেকেই বিভিন্ন মিথ বা ভুল ধারণায় বিশ্বাস করেন। এগুলো পরিষ্কার করা জরুরি-

  • ভুল ধারণা ১: ব্যায়াম বা ম্যাসাজে পুরুষাঙ্গ বড় হয়।
    সত্য: কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই যে ম্যাসাজ বা ব্যায়ামে পুরুষাঙ্গের আকার বাড়ে।
  • ভুল ধারণা ২: হারবাল ওষুধ বা তেলে পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধি পায়।
    সত্য: এগুলোর কার্যকারিতা প্রমাণিত নয় এবং অনেক সময় এগুলো ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
  • ভুল ধারণা ৩: বয়স বাড়ার সঙ্গে পুরুষাঙ্গ স্বাভাবিকভাবে বড় হয়।
    সত্য: ২১ বছরের পর আর কোনো প্রাকৃতিক বৃদ্ধি হয় না।

(৬) পুরুষাঙ্গের গড় আকার কত?

বিশ্বব্যাপী গবেষণা অনুযায়ী, পুরুষাঙ্গের গড় আকার নিম্নরূপ:

  • শিথিল অবস্থায়: ৯.১৬ সেমি (৩.৬১ ইঞ্চি)
  • ইরেক্ট (খাঁড়া) অবস্থায়: ১৩.১২ সেমি (৫.১৬ ইঞ্চি)
    বাংলাদেশে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট গবেষণা না থাকলেও, এশিয়ান পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি গড়ে একই রকম হয়। তবে আকারের এই ভিন্নতা স্বাভাবিক এবং যৌন সন্তুষ্টির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়।

(৭) কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

যদি আপনার মনে হয় বয়ঃসন্ধিকালে পুরুষাঙ্গের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়নি বা আপনার বয়স ১৮ পেরিয়ে গেছে এবং এখনো কোনো পরিবর্তন দেখছেন না, তবে একজন ইউরোলজিস্ট বা এন্ডোক্রিনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। হরমোনের সমস্যা বা অন্য কোনো শারীরিক অবস্থা থাকলে তা শনাক্ত করে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।

(৮) উপসংহার

“কত বছর পর্যন্ত পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধি পায়?”—এর উত্তর হলো, সাধারণত ১৮ থেকে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে জেনেটিক্স, হরমোন এবং স্বাস্থ্যের ওপর ভিত্তি করে পুরুষাঙ্গ তার প্রাকৃতিক আকারে পৌঁছে যায়। এরপর প্রাকৃতিকভাবে বৃদ্ধি সম্ভব না হলেও, চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে আকার বাড়ানো যায়। তবে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।

এই ব্লগে আমরা “কত বছর পর্যন্ত পুরুষাঙ্গ বৃদ্ধি পায়” বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি, এটি আপনার কৌতূহল মেটাতে এবং সঠিক তথ্য দিতে সক্ষম হয়েছে।

পড়ুন
লিঙ্গ বড় করা কি সম্ভব? বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পুরুষ অঙ্গ কিভাবে বড় করা যায়? লিঙ্গ লম্বা ও মোটা করার উপায়

ডিসক্লেইমার: এই পোস্টটি শুধুমাত্র তথ্য প্রদানের জন্য লেখা হয়েছে। আমি কোনো চিকিৎসক নই। সঠিক পরামর্শ ও চিকিৎসার জন্য অবশ্যই একজন যোগ্য ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

মানব শরীর ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট স্বাস্থ্য’ (inbangla.net/sastho) এর সাথেই থাকুন।

অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট স্বাস্থ্য

মানব শরীর ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts