বয়ঃসন্ধির সময়-ছেলে মেয়ে সবারই যৌনাঙ্গের চারপাশে চুল গজাতে থাকে। অনেকের মনে জানা ইচ্ছা থাকে যে, ঠিক কত বছর বয়সে মেয়েদের যোনির চুল গজায়?
মেয়েদের শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে সাধারণত বয়ঃসন্ধির সময় যোনির চুল গজায়, এটি সাধারণত ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়, তবে এটি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। কারো আগে বা পরে শুরু হতে পারে, এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও প্রকৃতিক একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া।
যোনির চুলকে পিউবিক চুল বা পিউবিক হেয়ার-ও বলা হয়ে থাকে।

বয়ঃসন্ধির সময় হরমোনের পরিবর্তনের ফলে বেশ কয়েকটি শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চতা বৃদ্ধি, বুকে পরিবর্তন (মেয়েদের ক্ষেত্রে), যৌন অঙ্গের বৃদ্ধি, ত্বকের পরিবর্তন (যেমন ব্রণ ওঠা), এবং পিউবিক চুল ও বগলের চুল গজানো। এ সময় কিশোর-কিশোরীরা মানসিকভাবে আরও বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে এবং স্বাধীন চিন্তা করার ক্ষমতা বাড়ে।
মেয়েদের শরীরে প্রধানত ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন সক্রিয় হয়ে ওঠে। এগুলো বয়ঃসন্ধিতে বুকে বৃদ্ধি, মাসিক চক্র শুরু, পিউবিক চুল গজানো এবং যৌন অঙ্গের পূর্ণতা আনায় ভূমিকা রাখে। এছাড়া হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ত্বক ও তেলের গ্রন্থিগুলোর সক্রিয়তা বেড়ে ব্রণ হতে পারে।
বয়ঃসন্ধির সময় শরীরে টেস্টোস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন বৃদ্ধি পায়, যা পিউবিক এবং বগলের চুল বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এগুলো প্রাকৃতিক শারীরিক পরিবর্তন, যা যৌবনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার অংশ।
ছেলেদের ক্ষেত্রে ভয়েস ভারী হয়ে ওঠা, মুখে দাড়ি-গোঁফ গজানো, পেশী বৃদ্ধি এবং যৌন অঙ্গের বৃদ্ধি দেখা যায়। অন্যদিকে মেয়েদের ক্ষেত্রে মাসিক চক্র শুরু, বুকে পরিবর্তন এবং পিউবিক চুল বৃদ্ধি দেখা যায়।
এ সময় কিশোর-কিশোরীরা অধিক সংবেদনশীল হয়ে ওঠে এবং আত্মপরিচয় সম্পর্কে সচেতন হয়। তারা স্বাধীন চিন্তা করতে শুরু করে এবং বন্ধুদের প্রভাব বেশি অনুভব করে। এছাড়া উদ্বেগ, আত্মবিশ্বাসের পরিবর্তন এবং অনুভূতির তীব্রতা এ সময় লক্ষণীয়।
কিশোরীদের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলার সময় তাদের অনুভূতি ও প্রশ্নগুলিকে সম্মান করা উচিত। সহজ ভাষায় এবং তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা করা ভালো। তাদের শরীরের পরিবর্তন ও মাসিক চক্র নিয়ে শিক্ষিত করা এবং স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করা জরুরি।
মেয়েদের বয়ঃসন্ধির প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চতার দ্রুত বৃদ্ধি, পিউবিক চুল গজানো, বগলের চুল বৃদ্ধি, এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে মাসিক চক্রের পূর্ব লক্ষণ।
বয়ঃসন্ধি শুরু হওয়ার সময়কাল একেকজনের ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। এর কারণগুলো হলো জিনগত বৈশিষ্ট্য, খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রার ধরন, এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়। পরিবেশও কখনও কখনও এর উপর প্রভাব ফেলে।
স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, ব্যায়াম করা, এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে তাদের সুস্থ জীবনধারা গড়ে তোলা যায়।
বয়ঃসন্ধিতে শরীরের বিকাশের জন্য সুষম খাদ্যের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত প্রোটিন, ভিটামিন, এবং মিনারেল গ্রহণ করতে হবে। শারীরিক কার্যকলাপ এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
মানব শরীর ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট স্বাস্থ্য’ (inbangla.net/sastho) এর সাথেই থাকুন।
অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।