Skip to content

 

গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি পালন

গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি পালন

(১) গরু পালন

চিত্র- গরু
চিত্র- গরু

দেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষের (মাংস, দুধ) এক বিরাট অংশ গবাদিপশু বিশেষ করে গরুর মাধ্যমে মিটানো হয়ে থাকে।

ক) গরু পালনে সফল হতে বিবেচ্য বিষয়সমূহ

সফলভাবে দুধ অথবা মাংসের জন্য গরু পালন করলে একজন খামারির প্রধান বিবেচ্য বিষয়সমূহ হলো-

  1. ভালো জাত নির্বাচন,
  2. ভালো বাসস্থান,
  3. কৃমিমুক্তকরণ,
  4. সুষম খাদ্য,
  5. পরিষ্কার পানি ও অন্যান্য পরিচর্যা,
  6. খামারের জীব নিরাপত্তা বিধান রাখা,
  7. গরুর প্রজনন ব্যবস্থাপনা,
  8. মানসম্পন্ন পথ্য, ফিড এডিটিভস প্রদান,
  9. ভ্যাকসিন/টিকা প্রদান।

খ) গরু মোটাতাজাকরণ ও সুফল লাভ

চিত্র- গরু মোটাতাজাকরণ
চিত্র- গরু মোটাতাজাকরণ

উপযুক্ত পরিচর্যা ও পুষ্টিসমৃদ্ধ সম্পূরক খাদ্যের জোগান পেলে ৩ মাসেই ৪০ থেকে ৬০ কেজি মাংস বৃদ্ধি সম্ভব। এতে একজন খামারি ১টি গরু পালন করে একবারে মোটা টাকা মুনাফা অর্জন করতে পারে। এ প্রযুক্তিটি দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, আমিষজাতীয় পুষ্টি সরবরাহ, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সর্বোপরি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

গরু বাজারজাতকরণ ও সুফল লাভের পূর্ব শর্ত হচ্ছে-

i) ভালো জাত নির্বাচন গরু নির্বাচন: ২-৩ বছরের গরু নির্বাচন করা। গায়ের চামড়া ঢিলা, শরীরের হাড়গুলো আনুপাতিক হারে মোটা: মাথা ও ঘাড় চওড়া এবং খাটো পাগুলো খাটো যা শরীরের সাথে যুক্ত ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে।

ii) ভালো বাসস্থান ও কৃমিমুক্তকরণ: গরু সংগ্রহের পর পালের সকল গরুকে একসাথে কৃমিমুক্ত করতে হবে।

iii) সুষম খাদ্য পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা: মোটাতাজাকরণের মোট খরচের ৭০-৮০ শতাংশই খাদ্য খরচ। গরু মোটাতাজাকরণে ২ ধরনের খাদ্যের সমন্বয়ে রসদ তৈরি করা হয় যেমন- আঁশজাতীয় ও দানাদারজাতীয় খাবার আঁশজাতীয় খাবারের মধ্যে খড়, হে, রাফেজ, সাইলেজ, লতাপাতা এবং দানাদার খাবারের মধ্যে ভুট্টা, চাল, গম, খেসারী ভাঙা, বিভিন্ন শস্যের উপজাত, খৈল, ভুসি, খনিজ লবণ ইত্যাদি। গরুকে ঘাস ও দানাদার খাবার সরবরাহে ৩ ভাগের ২ ভাগ আঁশ এবং ৩ ভাগের ১ ভাগ ভাগ দানাজাতীয় খাবার দিয়ে তার শারীরিক চাহিদা মেটানো হয়ে থাকে।

গরু মোটাতাজাকরণে দানাদার খাবারের পাশাপাশি ইউরিয়া/মোলাসেস খাওয়ানোর উপায় ও অনুপাত-

সূত্রখাদ্যখাদ্যে ওজনের ভিত্তিতে গঠন
ইউএমএসখড়ঃচিটাগুড়ঃইউরিয়া১০০ঃ২৬ঃ৩
সংরক্ষিতখড়ঃইউরিয়া১০০ঃ২
তাজা ও ভেজা খড়খড়ঃচিটা গুড়১০০ঃ৪
সবুজ ঘাসসবুজ ঘাসঃইউরিয়া১০০ঃ৩

সরবরাহকৃত আঁশজাতীয় খাদ্য বা সবুজ ঘাস প্রস্তুতের তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো-

সবুজ ঘাসভিত্তিক খাদ্য প্রদান তালিকাপরিমাণ
সবুজ ঘাস + দানাদার মিশ্রণদৈহিক ওজনের ০.৮-১.০%
সবুজ ঘাস + চিটাগুড় + দানাদার মিশ্রণদৈহিক ওজনের ০.৮-১.০%
সবুজ ঘাস + ইউএমএস + দানাদার মিশ্রণদৈহিক ওজনের ০.৮-১.০%

আমাদের দেশে বছরে ৬ লক্ষ মে. টন গরুর মাংস উৎপাদন হয়। গরু মোটাতাজাকরণে ষাঁড় ও বলদ অথবা পুনঃউৎপাদন ক্ষমতাহীন গাতিগুলোকেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ প্রযুক্তিটির মেয়াদ ৩-৪ মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে।

(২) মহিষ পালন

চিত্র- মহিষ পালন
চিত্র- মহিষ পালন

দেশের কৃষিকাজের জন্য সিংহভাগ শক্তির উৎস হলো গরু এবং মহিষ। বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে মহিষ পালনে তথা মহিষ উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করে এ দেশের প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণ, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি, বেকার যুবসমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।

See also  হাঁস-মুরগির বাসস্থানঃ হাঁস-মুরগির ঘর তৈরির নিয়ম

মহিষ বিশ্বে ২য় বৃহত্তম দুধ উৎপাদনকারী প্রাণী হিসেবে পরিচিত। মহিষের দুধে চর্বি বেশি কিন্তু কলস্টেরলের পরিমাণ কম। এছাড়া মহিষ প্রতিকূল আবহাওয়ায়ও টিকে থাকতে পারে। নিম্নমানের আঁশজাতীয় খাবার খেয়েও শরীর রক্ষার কাজ এবং দুধ উৎপাদন করতে সক্ষম।

ক) মহিষের জাত

আবাস ও উপযোগিতার উপর ভিত্তিতে মহিষকে দুইভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে i) জলাভূমির মহিষ ii) নদীর মহিষ।

জলামহিষ এর গায়ের রং ধূসর, গাঢ় ধূসর হতে কালো রং এর হয়ে থাকে। জলামহিষ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

নদীর মহিষ গাঢ় কালো, দেহ ত্রিভুজাকার। এ জাতের মহিষ প্রধানত দুধ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

মুররা নিলি, রাভি, জাফরাবাদি ইত্যাদি কয়েকটি উন্নত জাতের মহিষ রয়েছে।

খ) মহিষের বাসস্থান

মহিষ এর বাসস্থান উদাম ঘর ও বাঁধা ঘর হয়ে থাকে।

মহিষের বয়স ভেদে মেঝের আয়তন এবং খাবার পাত্রের আয়তন-

প্রাণীর ধরনমুক্ত এরিয়াতে মেঝের আয়তনআবদ্ধ এরিয়াতে মেঝের আয়তনখাবার পাত্রের আয়তন
বয়ষ্ক মহিষ২৫-৩০৮০-১০০২৪-৩০
বাড়ন্ত মহিষ১৫-২০৫০-৬০১৫-২০
গর্ভবতী১০০-১২০১৮০-২০০০২৪-৩০
ষাঁড়১২০-১৪০২০০-২৫০২৪-৩০

গ) মহিষের খাদ্য ও পুষ্টি ব্যবস্থাপনা

দুইধরনের খাদ্য যেমন- আঁশযুক্ত ও দানাদার খাদ্য এর খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করতে হয়।

সবল ও কর্মক্ষম জীবনযাপন করার জন্য মহিষে যে খাদ্য রসদ তা হলো-

  1. স্বাস্থ্য পালন রসদ;
  2. উৎপাদন রসদ;
  3. গর্ভধারণ রসদ;
  4. সুষম রসদ।

(৩) ছাগল পালন

চিত্র- ছাগল পালন
চিত্র- ছাগল পালন

ছাগল পালন ভূমিহীন কৃষক, দুস্থ নারীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে একটি অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশে বহুল পরিচিত এবং পালিত ২টি ছাগলের জাত হলো ব্ল্যাক বেঙ্গল এবং যমুনাপাড়ি। এছাড়া মাংস উৎপাদনে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ছাগলের জাত হলো সেনেন, বিটাল, বোয়ের ও বারবারি।

ক) ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল

  • বেঙ্গল গো /ব্ল্যাক বেঙ্গল পোর্ট জাতের ছাগল দৈনিক ২০০-৩০০ মিলি দুধ দেয়। সঠিক ব্যবস্থাপনায় দুধ উৎপাদন ১.০ লিটার পর্যন্ত হতে পারে।
  • এর বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতা অধিক এবং দেশীয় আবহাওয়ার অভ্যন্ত, এদের গড় ওজন ১৫-২০ কেজি, দৈহিক বৃদ্ধির হার ২০-৪০ গ্রাম/দিন।
  • এ ছাগল কালোসহ সাদা-কালো খয়েরি মিশ্র বর্ণের হয়ে থাকে।

খ) যমুনাপারি ছাগল

  • যমুনাপাড়ি ছাগল দেশের সীমান্ত এলাকায় বেশি পাওয়া যায়।
  • এদের শরীরের রং সাদা, কালো, হলুদ, বাদামি বা বিভিন্ন রং এর সংমিশ্রণে হয়ে থাকে এরা অত্যন্ত কষ্টসহিষ্ণু ও চঞ্চল।
  • একটা বয়ষ্ক পাঁঠার ওজন ৬০-৯০ কেজি, ছাগির ওজন ৪০-৬০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। দৈনিক দুধ উৎপাদন ৩-৪ লিটার।

গ) বাসস্থান

  • ছাগল ছেড়ে, অর্ধ ছেড়ে এবং আবদ্ধ অবস্থায় (স্টল ফিডিং) পালন করা যায়।
  • আবদ্ধ অবস্থায় প্রতিটি বয়স্ক ছাগলের জন্য ঘরে জায়গা প্রয়োজন হবে ৭-১০ বর্গফুট।
  • স্টল ফিডিং পদ্ধতিতে প্রথমে ছাগলকে ৬-৮ ঘণ্টা মাঠে চরিয়ে বাকি সময় আবদ্ধ রেখে পর্যাপ্ত ঘাস ও দানাদার খাদ্য সরবরাহ করা হয়। পরবর্তীতে চরানোর সময় ১-২ সপ্তাহের মধ্যে কমিয়ে ছাগলকে সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় রাখা হয়।
  • ছাগল পালনে ২ ধরনের ঘর ব্যবহার করা হয় সেগুলো হলো- i) ভূমির উপর ঘর ii) মাচার উপর ঘর।
See also  গবাদি পশুর রোগ ও চিকিৎসা

ঘ) খাদ্য

  • ছাগল সাধারণত তার ওজনের ৪-৫% হারে খেয়ে থাকে, এর মধ্যে ৬০-৮০% আঁশজাতীয় খাবার (ঘাস, লতা, পাতা, খড় ইত্যাদি) এবং ২০-৪০% দানাদার খাবার (কুঁড়া, ভুসি, চাল, ডাল)।
  • বিভিন্ন বয়সের এবং উৎপাদনের উপর ছাগলের খাবার সরবরাহ করা হবে। সেগুলো হলো- বাচ্চা অবস্থায়, বাড়ন্ত, প্রজননক্ষম ছাগল ও পাঁঠা, গর্ভবর্তী ছাগলের খাদ্য ব্যবস্থাপনা।

(৪) ভেড়া পালন

ভেড়া এদেশের অন্যতম গৃহপালিত প্রাণিজ সম্পদ। ভেড়া হতেও যথেষ্ট পরিমাণে মাংস, দুধ ও পশম পাওয়া সম্ভব। বর্তমানে বাংলাদেশের ভেড়ার সংখ্যা ৩২ লক্ষ।

চিত্র- ভেড়া পালন
চিত্র- ভেড়া পালন

ক) বাংলাদেশি ভেড়ার জাত

বাংলাদেশে প্রাপ্ত ভেড়াসমূহ এখন পর্যন্ত জাত হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পেলেও এদের বিশেষ স্বকীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কৃষি পরিবেশ অঞ্চল অনুসারে বাংলাদেশে তিন ধরনের ভেড়া দেখা যায়। যেমন- বরেন্দ্র এলাকার ভেড়া, যমুনা অববাহিকার ভেড়া; উপকূলীয় অঞ্চলের ভেড়া। এছাড়াও গারল জাতের ভেড়া বাংলাদেশের দক্ষিণাংশের সুন্দরবন অঞ্চলে পাওয়া যায়।

খ) ভেড়া পালনের সুবিধা

  • ভেড়া থেকে প্রধানত মাংস, পশম, চামড়া, জৈব সার পাওয়া যায়।
  • একটি ভেড়া থেকে বছরে ৪টি পর্যন্ত বাচ্চা পাওয়া যায়।
  • ভেড়া পরিবেশের সাথে সহজেই খাপ খাইয়ে চলতে পারে।
  • ভেড়ার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।

গ) ভেড়ার বাসস্থান

ভেড়ার ঘর খড়, ছন, টিন বা ইটের তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে মাচার উচ্চতা ২.৫-৩ ফুট এবং মাচা থেকে ছাদের উচ্চতা ৬-৮ ফুট হতে হবে। মাচার নিচে ঘরের মাঝ বরাবর উঁচু করে দুই পাশে চালু রাখতে হবে।

ঘ) ভেড়ার খাদ্যাভ্যাস

ভেড়া মাটিতে চরে লতা গুল্মজাতীয় গাছের পাতা খায়। এদের খাদ্যে বাছ-বিচার সাধারণত কম। খুব সহজেই নতুন খাদ্যে অভ্যস্ত হয়। এরা ঘাস, লতাপাতা, সাইলেজ, হে, খড়, দানাদার খাদ্য ইত্যাদি খেয়ে থাকে।

ঙ) ভেড়ার পশম উৎপাদন

ভেড়ার পশম কেটে সংগ্রহ করাকে পশম ছাঁটা বা শেয়ারিং বলে। আমাদের দেশে ভেড়াকে বসন্তকালে (ফেব্রুয়ারি-মার্চ) এবং শরৎকালে (অক্টোবর-নভেম্বর) ২ বার শেয়ারিং করানো হয়। বর্তমানে ভেড়ার পশমের সাথে পাট ও তুলা মিশিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাপড়, শাল, কম্বল ইত্যাদি তৈরি করা হচ্ছে।

চ) ভেড়ার রোগসমূহ

ভেড়ার পরজীবীজনিত রোগ যেমন- চর্মরোগ, লোম উঠা ইত্যাদি দেখা যায়। তাছাড়া কিছু কিছু রোগ যেমন- ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর মাঝে মাঝে দেখা যায়।

(৫) হাঁস পালন

চিত্র- হাঁস পালন
চিত্র- হাঁস পালন

দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে হাঁস পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। এ দেশের নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়, পুকুর, ডোবা হাঁস পালনের উপযোগী। হাঁস প্রাকৃতিক খাদ্য খেয়ে তার খাদ্য চাহিদার অর্ধেকের বেশি পূরণ করে থাকে। যেহেতু দেশে প্রচুর খাল-বিল, নদী-নালা আছে তাই একজন খামারি সামান্য পরিমাণ খাদ্য প্রদান করে সারা বছরই গ্রামীণ পরিবেশে লাভজনকভাবে হাঁস পালন করতে পারে।

See also  হাঁস-মুরগির রোগ ও প্রতিকার

বাংলাদেশের প্রধান হাঁসপ্রবণ এলাকাসমূহ হচ্ছে-

নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও এর আশপাশের নিচু এলাকাসমূহ। এ সমস্ত এলাকায় সচরাচর যে সমস্ত হাঁসের জাত দেখা যায় সেগুলো হলো- থাকি ক্যাম্ববেল, দেশি, জেন্ডিং, ইন্ডিয়ান রানার ইত্যাদি।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ করা যায় তার মধ্যে-

নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় হাঁস প্রজনন খামার, খুলনার দৌলতপুর, নওগাঁ এবং নোয়াখালীর সোনাগাজীর আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারেও হাঁসের বাচ্চা পাওয়া যায়।

হাঁস আবদ্ধ, অর্ধ আবদ্ধ, ছেড়ে, হারডিং এবং ল্যানটিং পদ্ধতিতে পালন করা যায়।

হাঁসের ২টি মারাত্মক রোগ হলো- ডাক প্লেগ ও ডাক কলেরা। এ দুইটি রোগের ভ্যাকসিন সময়মতো পরিমাণমতো দিলে এর প্রকোপ হতে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যায়।

উন্নত ব্যবস্থাপনায় হাঁস পালন করলে পারিবারিক আয় বৃদ্ধি, পুষ্টির অবস্থার উন্নয়ন তথা দারিদ্র্য বিমোচনে অগ্রণী ভূমকিা পালনে সহায়ক হবে।

(৬) মুরগি পালন

দেশের প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণের ক্ষেত্রে মুরগি (ব্রয়লার, পেয়ার) পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। এর মাধ্যমে দেশের বেকার সমস্যার সমাধান, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি, সর্বোপরি দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উন্নত মুরগি পালনের মাধ্যমে অবদান রাখতে পারে।

চিত্র- লেয়ার স্টেইন
চিত্র- লেয়ার স্টেইন
চিত্র- ব্রয়লার স্টেইন
চিত্র- ব্রয়লার স্টেইন

ক) ব্রয়লার স্টেইনের নাম

স্টারব্রো, ট্রপিকব্রো, ইসা বেডেট, ইসা আই ৭৫৭, ইসা ৭৩০ এমপিকে হাবার্ড ক্ল্যাসিক, গোল্ডেন কমেট, লোহম্যান, ভ্রানকব, কাসিলা, কব ৫০৯।

খ) লেয়ার স্টেইনের নাম

সোনালি, যেবার ৫৭৯, ইসা ব্রাউন, ইসা হোয়াইট, সোহয্যান ব্রাউন, লোহম্যান হোয়াইট, হাইসেন্স ব্রাউন, হাইসেন্স হোয়াইট।

গ) একজন সফল ব্রয়লার/লেয়ার খামারি হওয়ার পূর্বশর্ত

  • গুণগত মানসম্পন্ন খাদ্য ও বাচ্চার প্রাপ্তিতার নিশ্চয়তা;
  • গুণগত মানসম্পন্ন ভ্যাকসিন, পথ্য, ভিটামিন-প্রিমিক্স সরবরাহের নিশ্চয়তা;
  • খামারে কঠোর জীব নিরাপত্তা বজায় রাখা;
  • খামার ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছ ধারণা মথাকা এবং
  • ফোরাম ভিত্তিক বাজার ব্যবস্থা পড়ার মাধ্যমে সঠিক বাজারমূল্য নিশ্চিত করা।

ঘ) পোল্ট্রি শিল্প

দেশের মুরগির মাংস এবং ডিমের চাহিদা সরবরাহের তুলনায় অপ্রতুল। এফএও এর হিসাব অনুযায়ী আমাদের দেশে মুরগির মাংসের মোট চাহিদা ১৭০০ মে.টন এবং ডিমের চাহিদা ২ কোটি।

বাংলাদেশের মোট মুরগির মাংস এবং ডিমের চাহিদা বাণিজ্যিক মুরগি হতে প্রায় ৬০-৭০%। বাকি অংশ দেশি মুরগি হতে আসে। এ শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ ২০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে যেখানে ৫০% নারী এ কাজের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এ শিল্পকে ঘিরে।

বর্তমানে এ শিল্পে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এ শিল্পের উন্নয়নে বিভিন্ন ব্যক্তি, উন্নয়ন কর্মী, এনজিওর পাশাপাশি সরকারিভাবে সার্বিক সহায়তা দিলে এগিয়ে যাবে। প্রয়োজন ভালো বাচ্চা ও খাবারের প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, বাচ্চা ও খাদ্যের মূল্য সহনশীলতা, ওষুধ ও ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা ও গুণাগুণের নিশ্চয়তা, সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা। আগামী ২০২০ সাল নাগাদ এ খাতে বিনিয়োগ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।


বিভিন্ন গবাদি পশু যেমন- গরু পালন, ছাগল পালন, মহিষ পালন, ভেড়া পালন ইত্যাদি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট গবাদি পশু’ (inbangla.net/gobadi) এর সাথেই থাকুন।

বিভিন্ন পোল্ট্রি খামার যেমন- মুরগি পালন, হাঁস পালন, কোয়েল পালন ইত্যাদি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট পোল্ট্রি’ (inbangla.net/poultry) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট কৃষি

পশু-পাখি পালন ও চাষাবাদ সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts