Skip to content

গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি (সংক্ষিপ্ত ধারণা)

গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি

আমাদের বাংলাদেশে ধান ও শাকসবজির উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও পশু সম্পদের উন্নতি তেমন হয়নি। একটা কথা মনে রাখা দরকার যে প্রানি সম্পদের উন্নতি না হলে জনগণকে প্রয়োজনীয় আমিষ সরবরাহ করা যাবে না।

কারণ একজন মানুষের দৈনিক ১২০ গ্রাম মাংসের প্রয়োজন হয়। কিন্তু একটি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ দৈনিক মাথাপিছু ২৪ গ্রাম মাংস খেয়ে থাকে (২০২৩ খ্রিঃ)।

এ থেকে বোঝা যাচ্ছে আমাদের বাংলাদেশে প্রাণিজ আমিষ সরবরাহের ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে গো-মাংসের সরবরাহ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এ সমস্যা দূরীকরণের লক্ষ্যেই গরু-বাছুর মোটাতাজাকরণের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অল্প সময়ে গরুকে মোটাতাজা করে অধিক মূল্যে বাজারজাত করা হয় এবং অধিক লাভ পাওয়া যায়।

(১) গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতির উল্লেখযোগ্য ৪টি বিষয়

  1. গরু নির্বাচন ও ক্রয় করা: ষাড় গরু মোটাতাজাকরণের জন্য ভালো। এ জন্যে দেড়-দুই বছর বয়সের এঁড়ে বাছুর ক্রয় করা উত্তম।
  2. বাসস্থান নির্মাণ: প্রতিটি গরুর জন্য ১.৫ মি. x ২ মি. জায়গায় ঘর নির্মাণ করতে হবে।
  3. রোগ ব্যাধির চিকিৎসা: এ ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সংক্রামক রোগের টিকা দেওয়া জরুরি।
  4. খাদ্য সরবরাহ: পশুকে এমন খাদ্য দিতে হবে যাতে আমিষ, শর্করা, চর্বি, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিনের পরিমাণ খাদ্যে বেশি থাকে।

মোটাতাজাকরণে খাদ্য তৈরি প্রক্রিয়া পশু মোটাতাজাকরণ অর্থ হচ্ছে পরিমিত খাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে গরুর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং মানুষের জন্য আমিষ সরবরাহের ব্যবস্থা করা।

খাদ্য থেকে পশু পুষ্টি পায় এবং শারীরিক বৃদ্ধি ঘটে। পশুকে এমন খাদ্য দিতে হবে যাতে আমিষ, শর্করা, চর্বি, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন সাধারণ খাদ্যের চেয়ে একটু বেশি পরিমাণ থাকে।

See also
গরু মোটাতাজাকরণ স্বাস্থ্য পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা

খড়, কুড়া, ভুট্টা বা গম ভাঙা, ঝোলাগুড়, খৈল ইত্যাদিতে আমিষ, শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্য থাকে। আর সবুজ কাঁচা ঘাস, হাড়ের গুঁড়া ইত্যাদিতে খনিজ লবণ ও ভিটামিন থাকে।

ইউরিয়া ও ঝোলাগুড় মেশানো খাদ্য পশু মোটাতাজাকরণের সহায়ক। এগুলো দুইভাবে মিশিয়ে খাওয়ানো যায়- খড়ের সাথে মিশিয়ে এবং দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে।

(২) গরু মোটাতাজাকরণের জন্য খড়ের সাথে ইউরিয়া মিশিয়ে গো-খাদ্য তৈরি

  1. প্রথমে একটি ভোল নিয়ে এর চারপাশ কাদা মিশিয়ে লেগে শুকিয়ে নিতে হবে।
  2. এরপর একটি বালতিতে ২০ লিটার পানি নিতে হবে।
  3. এই পানিতে ১ কেজি ইউরিয়ার দ্রবণ তৈরি করতে হবে।
  4. ২০ কেজি খড় ডোলের মধ্যে ছোট ছোট করে কেটে অল্প অল্প করে দিয়ে ইউরিয়া প্রবণ খড়ের উপর ছিটিয়ে চেপে চেপে ভরতে হবে।
  5. এভাবে সম্পূর্ণ ডোল খড় দিয়ে ভরতে হবে।
  6. ডোলে খড় ভরা সম্পূর্ণ হলে এর মুখ ছালা বা পলিথিন দিয়ে বেঁধে দিতে হবে।
  7. ১০-১২ দিন পর খড় বের করে রোদে শুকাতে হবে।
  8. এরপরই খড় গরুকে খাওয়ানোর উপযুক্ত হবে।
  9. সাধারণ একটি গরুকে প্রতিদিন ৩ কেজি ইউরিয়া মেশানো খড় খাওয়াতে হবে।
  10. খড়ের সাথে দৈনিক ৩০০-৪০০ গ্রাম ঝোলাগুড় মিশিয়ে দিতে হবে।

বিভিন্ন গবাদি পশু যেমন- গরু পালন, ছাগল পালন, মহিষ পালন, ভেড়া পালন ইত্যাদি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট গবাদি’ (inbangla.net/gobadi) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট কৃষি

পশু-পাখি পালন ও চাষাবাদ সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts