Skip to content

 

ছাগলের খাবার তৈরি, ছাগলের খাদ্য তালিকা, ছাগলের খাবার তালিকা কি কি?

ছাগলের খাবার তৈরি, ছাগলের খাদ্য তালিকা, ছাগলের খাবার তালিকা কি কি

(১) ছাগল ছানাকে দুধ খাওয়ানো

⇒ সাধারণত ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বাচ্চার ওজন জন্মের সময়ে ০.৮-১.৫ কেজি হয় |

⇒ জন্মের পরপরই ছাগল ছানাকে শাল দুধ খাওয়াতে হবে। শাল দুধ বাচ্চার দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী করে |

⇒ প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ছাগল ছানাকে ১৫০-২০০ গ্রাম শাল দুধ খাওয়াতে হবে | এই পরিমান দুধ দিনে ৮-১০ বারে খাওয়াতে হবে।

⇒ শাল দুধ খাওয়াতে দেরী হলে হজমে সমস্যা হয় | দুই বা ততোধিক বাচ্চা হলে প্রত্যেকেই যেন শাল দুধ পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।

⇒ ছাগল ছানা সাধারণত ২-৩ মাসের মধ্যে দুধ খাওয়া ছেড়ে দেয় | জন্ম হতে তিন মাস বয়স পর্যন্ত ছাগল ছানাকে নিযনোক্ত হারে খাদ্য প্রদান করা উচিৎ।

⇒ ব্লাক বেঙ্গল জাতের একটি ছাগী এক সাথে ৩-৪ টি বাচ্চা প্রসব করে। কিন্তু ছাগীর দুধের বাট দুটি হওয়ায় সবগুলো বাচ্চা একসাথে মায়ের দুধ খেতে পায় না। ফলে অপেক্ষাকৃত দূর্বল বাচ্চা আরও দূর্বল হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে ছাগল ছানাকে নিম্নোক্ত মিশ্রণ অনুযায়ী মিক্ক রিপ্রেসার খাওয়ানো যেতে পারে।উক্ত মিশ্রণের একভাগ, নয় ভাগ উষ্ণ (৩৯-৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস) পানির সাথে মিশিয়ে ভালমত ফুটানোর পর ঠান্ডা করে ছাগল ছানাকে খাওয়াতে হবে।

(২) ছাগল ছানার দানাদার খাদ্য

⇒ ছাগল ছানার দানাদার খাদ্য মিশ্রণে কম আঁশ, উচ্চ প্রোটিন এবং উচ্চ বিপাকীয় শক্তি থাকতে হবে। নিম্নে ছাগল ছানার কিড ষ্টার্টার এর কয়েকটি সম্ভাব্য মিশ্রণ দেয়া হলো।

(৩) ছাগল  ছানাকে সবুজ ঘাস প্রদান

⇒ ছাগল ছানার ১৫ দিন বয়স হতে অল্প অল্প করে দানাদার খাদ্য এবং আঁশ জাতীয় খাবার (কাঁচা ঘাস, গাছের পাতা প্রভৃতি) খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হবে।

See also  গরু-ছাগলের খাদ্য, আঁশ জাতীয়, দানাজাতীয়, সাইলেজ ও হে তৈরির পদ্ধতি, সুবিধা এবং বৈশিষ্ট্য

⇒ মোটামুটি একমাসের মধ্যে পাকস্থলী ও অন্ত্রের জীবানুর মাধ্যমে ছাগল ছানা ঘাস হজম করতে পারে | এ সময়ে ছাগল ছানাকে কচি ঘাস ও পাতা খাওয়ানো যেতে পারে | ছাগল ছানা এ সময় ২০০-৩০০ গ্রাম ঘাস/পাতা খেতে পারে।

(৪) বাড়ন্ত ছাগলের খাদ্য ব্যবস্থাপনা

⇒ ছাগলের বাড়ত্তকালীন সময়ে যে সব ছাগল প্রজনন বা মংস উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হবে তাদের খাদ্য ও পৃষ্টি চাহিদা যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে | দুধ ছাড়ানোর পর থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত সময়ে পর্যাপ্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ দানাদার ও আঁশ জাতীয় খাদ্য দিতে হবে।

⇒ ছাগল সাধারণত তার ওজনের ৪-৫% হারে শুক্ধ পদার্থ খেয়ে থাকে | দানাদারখাদ্যের পরিমান সবুজ ঘাসের প্রাপ্যতা এবং গুনগত মানের উপর নির্ভরশীল। বাড়ন্ত ছাগলের দৈনিক খাদ্য সরবরাহের তালিকা দেওয়া হলো।

(৫) গর্ভবতী ও দুগ্ধবতী ছাগীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা

⇒ সুস্থ, সবল ও স্বাস্থ্যবান বাচ্চা উৎপাদনের লক্ষ্যে ছাগীকে গর্ভকালীন সময়ে উপযুক্ত পরিমান উন্নতমানের খাবার এবং উপযুক্ত যত নেওয়া জরুরী | এ সময়ে ছাগীকে স্বাভাবিক খাদ্যের পাশাপাশি ভিটামিন ও মিনারেল সরবরাহ করতে হবে।

⇒ গর্ভস্থ জরণের দেহের দুই তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি ঘটে গর্ভধারণের শেষ সপ্তাহে। তাই এসময়ে আমিষের চাহিদা তিনগুন হয় | এসময়ে ভ্রণের বৃদ্ধি ও ছাগীর স্তনের বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে উন্নত মানের খাবার দিতে হবে।

⇒ প্রসবের পর ছাগীর প্রয়োজনের উপর লক্ষ্য রেখে খাদ্যের পরিমান প্রয়োজন অনুসারে বৃদ্ধি করা আবশ্যক।

⇒ গাভীর দুধের চেয়ে ছাগীর দুধে প্রোটিন ও চর্বির শতকরা পরিমান বেশি থাকে বিধায় দুগ্ধবতী ছাগীকে পর্যাপ্ত পরিমান প্রোটিন ও ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার প্রদান করতে হবে।

⇒ দুগ্ধবতী ছাগীর হাইপোক্যালসেমিয়া প্রতিরোধ করার জন্য খাদ্যে প্রয়োজনীয় পরিমানে ক্যালসিয়াম সরবরাহ করতে হবে। দুগ্ধবতী ছাগীর দৈনিক খাদ্য সরবরাহের তালিকা টেবিল দেখানো হলো।

(৬) প্রজননক্ষম পাঁঠার খাদ্য ব্যবস্থাপনা

⇒ পাঁঠার খাদ্য ব্যবস্থাপনা বাড়ন্ত ছাগল ও দুধালো ছাগীর মতই। তবে প্রজনন কার্যক্রমে সহায়তার জন্য প্রতিটি পাঁঠাকে দৈনিক ১০ গ্রাম গাঁজানো ছোলা দেয়া প্রয়োজন |

See also  গরু-ছাগলের সম্পূরক খাদ্য তৈরির ফর্মুলা ও প্রয়োগ পদ্ধতি

⇒ কোন ভাবেই পাঁঠার শরীরে চর্বি জমতে দেয়া উচিৎ নয়।

⇒ প্রয়োজনে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে | ২৮-৩০ কেজি ওজনের একটি পাঁঠাকে দৈনিক ৪০০ গ্রাম করে দানাদার খাদ্য প্রদান করতে হবে।

(৭) ছাগলকে মাঠে চরানোঃ

⇒ সেমি ইন্টেনসিভ পদ্ধতিতে ছাগলকে ঘরে দানাদার খাদ্য প্রদানের সাথে সাথে মাঠে চরিয়ে প্রয়োজনীয় পরিমানে ঘাস খাওয়ানো উচিত।

⇒ ভাল চারণ ভূমিতে প্রতি হেক্টরে ৮০-১০০ টি ছাগল চরানো যায় |

⇒ চারণ ভূমিতে দুর্বা, রোজী, পেঙ্গোলা প্রভৃতি জাতের ঘাস লাগানো যেতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ঘাস সরবরাহের জন্য আলাদাভাবে নেপিয়ার, স্প্লেনডিডা ইত্যাদি ঘাসের চাষ করা যেতে পারে |

⇒ এ ছাড়া বর্ধাকালে ঘাসের সাথে মাসকালাই ছিটিয়ে দিলে ঘাসের খাদ্যমান অনেক বেড়ে যায় |

⇒ শীতকালে পর্যাপ্ত ঘাস পাওয়া যায় না বিধায় ছাগলকে ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র (ইউ এমএস) খাওয়ানো যেতে পারে।


বিভিন্ন গবাদি পশু যেমন- গরু পালন, ছাগল পালন, মহিষ পালন, ভেড়া পালন ইত্যাদি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট গবাদি পশু’ (inbangla.net/gobadi) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট গবাদি

বিভিন্ন গবাদি পশু যেমন- গরু পালন, ছাগল পালন, মহিষ পালন, ভেড়া পালন ইত্যাদি সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts