Skip to content

পরিবার কাকে বলে? পরিবারের প্রকারভেদ

inbangla.net-logo-a4-size-png

পরিবার একটি মৌলিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান। মানুষ হিসেবে সবাই কোন না কোন পরিবারের সদস্য। এর মাধ্যমেই আমরা জন্মগ্রহণ করি, বড় হই, নিজেও পরিবার গঠন করি এবং মৃত্যুবরণ করি। চলুন তাহলে পরিবার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

(১) পরিবার কাকে বলে?

পরিবারের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Family. যা ল্যাটিন শব্দ Familia থেকে এসেছে।

পরিবার একটি প্রাচীনতম সংগঠন। সাধারণত স্বামী-স্ত্রীর যৌন সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে এই সংগঠন গঠন করে এবং সন্তান সন্তনাদি উৎপাদন ও লালন পালনের মাধ্যমে তার অস্থিত্ব ধরে রাখে।

সমাজবিজ্ঞানী ম্যাকাইভার ও পেজের মতে, “সুস্পষ্ট জৈবিক সম্পর্কের দ্বারা সৃষ্ট সুনির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠী হলো পরিবার যা সন্তান সন্ততির জন্মদান এবং লালন-পালনের একটি স্থায়ী প্রতিষ্ঠান।

সমাজবিজ্ঞানী Nimkoff বলেছেন, “Family is a union of husband & wife with or without children.”

কিংসলি ডেভিস বলেছেন, “পরিবার হচ্ছে এমন কতগুলো ব্যক্তির দ্বারা গঠিত গোষ্ঠী, যারা পরস্পর রক্তের সম্পর্কে আবদ্ধ এবং সে সূত্রে তারা একে অন্যের আত্মীয়।”

(২) পরিবারের প্রকারভেদ

পরিবার প্রধানত ৬ প্রকার। এগুলো হলো–

  1. স্বামী-স্ত্রীর সংখ্যার ভিত্তিতে পরিবার
  2. কর্তৃত্বের ভিত্তিতে পরিবার
  3. আকারের ভিত্তিতে পরিবার
  4. বংশ মর্যাদা ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে পরিবার
  5. বিবাহোত্তর স্বামী-স্ত্রীর বসবাসের ভিত্তিতে পরিবার
  6. পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ভিত্তিতে পরিবার

ক) স্বামী-স্ত্রীর সংখ্যার ভিত্তিতে পরিবার

স্বামী-স্ত্রীর সংখ্যার ভিত্তিতে পরিবার ৩ ধরণের। যথা-

  1. একপত্নী পরিবার
  2. বহুপত্নী পরিবার
  3. বহুপতি পরিবার

একপত্নী পরিবারঃ একজন পুরুষ যদি একজন স্ত্রী গ্রহণ করে পরিবার গঠন করে, তবে তাকে একপত্নী পরিবার বলে।

বহুপত্নী পরিবারঃ যখন একজন পুরুষ একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করে পরিবার গঠন করে, তখন তাকে বহুপত্নী পরিবার বলে।

বহুপতি পরিবারঃ একজন স্ত্রী যখন একের অধিক স্বামী গ্রহণ করে পরিবার গঠন করে, তখন তাকে বহুপতি পরিবার বলে।

খ) কর্তৃত্বের ভিত্তিতে পরিবার

কর্তৃত্বের ভিত্তিতে পরিবার ২ প্রকার। যথা-

  1. পিতৃতান্ত্রিক বা পিতৃপ্রধান পরিবার
  2. মাতৃতান্ত্রিক বা মাতৃপ্রধান পরিবার

পিতৃতান্ত্রিক বা পিতৃপ্রধান পরিবারঃ যে পরিবারের কর্তৃত্ব পিতা,স্বামী বা অন্য কোন পুরুষের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়, তাকে পিতৃতান্ত্রিক বা পিতৃপ্রধান পরিবার বলে।

মাতৃতান্ত্রিক বা মাতৃপ্রধান পরিবারঃ যে পরিবারের কর্তৃত্ব মাতা, স্ত্রী বা অন্য কোন নারী সদস্য দ্বারা পরিচালিত হয়, তাকে মাতৃতান্ত্রিক বা মাতৃপ্রধান পরিবার বলে।

গ) আকারের ভিত্তিতে পরিবার

আকারের ভিত্তিতে পরিবার ৪ ধরণের। এগুলো হলো–

  1. একক বা অনু পরিবার
  2. যৌথ পরিবার
  3. বর্ধিত পরিবার

একক বা অনু পরিবারঃ স্বামী, স্ত্রী ও তাদের অবিবাহিত সন্তান নিয়ে যে পরিবার গড়ে উঠে তাকে একক বা অনু পরিবার বলে।

যৌথ পরিবারঃ এ ধরণের পরিবারে স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি,মাতা-পিতা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি, ভাইয়ের সন্তান- সন্ততি এমনকি স্ত্রীর ভাই-বোন, পিতা – মাতা সহ একত্রে বসবাস করে।

বর্ধিত পরিবারঃ যে পরিবারের ৩ পুরুষ তথা বাবা, মা, দাদা-দাদি, চাচা-চাচী, সন্তান-সন্তুতি সবাই মিলে বসবাস করে, তাকে বর্ধিত পরিবার বলে। এক কথায় তিন পুরুষের পরিবারকে বর্ধিত পরিবার বলে।

ঘ) বংশ মর্যাদা ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে পরিবার

বংশ মর্যাদা ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে পরিবার ২ প্রকার। যথা-

  1. পিতৃসূত্রীয় পরিবার
  2. মাতৃসূত্রীয় পরিবার

পিতৃসূত্রীয় পরিবারঃ যে পরিবারে পিতার মাধ্যমে সন্তানের পরিচয় নির্ধারিত হয় এবং সন্তান পিতার বংশ পরিচয়ে বড় হয়, তাকে পিতৃসূত্রীয় পরিবার বলে।

মাতৃসূত্রীয় পরিবারঃ যে পরিবারে মাতার মাধ্যমে সন্তানের পরিচয় নির্ধারিত হয় এবং সন্তান মাতার বংশ পরিচয়ে বড় হয়, তাকে মাতৃসূত্রীয় পরিবার বলে।

ঙ) বিবাহোত্তর স্বামী-স্ত্রীর বসবাসের ভিত্তিতে পরিবার

বিবাহোত্তর স্বামী-স্ত্রীর বসবাসের ভিত্তিতে পরিবার ৩ প্রকার। যথা-

  1. পিতৃবাস পরিবার
  2. মাতৃবাস পরিবার
  3. নয়াবাস পরিবার

পিতৃবাস পরিবারঃ বিবাহের পর নতুন দম্পতি স্বামীর পিতৃগৃহে বসবাসের মাধ্যমে যে পরিবার গঠন করে তাকে পিতৃবাস পরিবার বলে।

মাতৃবাস পরিবারঃ বিবাহের পর নতুন দম্পতি স্ত্রীর মাতৃগৃহে বসবাসের মাধ্যমে যে পরিবার গঠন করে তাকে মাতৃবাস পরিবার বলে।

নয়াবাস পরিবারঃ বিবাহের পর নতুন দম্পতি স্বামী-স্ত্রীর কার পিতৃ বা মাতৃ গৃহে বাস না করে, আলাদা বসবাস করে পরিবার গঠন করে, তাকে নয়াবাস পরিবার বলে।

চ) পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ভিত্তিতে পরিবার

পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ভিত্তিতে পরিবার ২ প্রকার। যথা-

  1. অন্তর্গোত্র পরিবার
  2. বহির্গোত্র পরিবার

অন্তর্গোত্র পরিবারঃ অন্তর্গোত্র পরিবারের ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তিকে অবশ্যই আপন জাতিবর্ণের মধ্যে পাত্র-পাত্রী খুঁজতে হয়। এটি আবার ২ প্রকার। যথাঃ অনুলোম বিবাহ ভিত্তিক পরিবার ও প্রতিলোম বিবাহ ভিত্তিক পরিবার।

বহির্গোত্র পরিবারঃ বহির্গোত্র পরিবারের ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তিকে অবশ্যই আপন জাতিবর্ণের বাইরে পাত্র-পাত্রী খুঁজতে হয়।


আজ এখানেই থাকলো। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

শিক্ষা ও লেখাপড়া সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট লেখাপড়া’ (inbangla.net/lekhapora) এর সাথেই থাকুন।

অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট

যা কিছু বাংলাতে।View Author posts