নিম্নে সংক্ষিপ্তাকারে বাংলা ভাষায় ইসলামী সাহিত্য, লিখনী ও জ্ঞানচর্চার গরুত্ব তুলে ধরা হলো-
সমস্ত পৃথিবীর মালিক আল্লাহ পাক। তিনিই সবকিছুর স্রষ্টা। তাঁর কোন শরীক নেই।
এক বিশেষ উদ্দেশ্যে তিনি মানুষকে সৃষ্টি করে সকলের উপর তাদেরকে শ্রেষ্টত্ব দান করেছেন।
আর উদ্দেশ্য ও অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করে শ্রেষ্টত্ব বজায় রাখার যথাযথ ব্যবস্থা স্বরূপ পবিত্র কুরআন নাযিল করেছেন।
প্রিয় রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্বশেষ নবী হিসেবে পাঠিয়েছেন। তাঁর একান্ত মেহনত এবং অবিরাম চেষ্টার ফলে চরম বর্বরতার অবসান ঘটে সভ্যতার স্বর্ণযুগ সৃষ্টি হয়।
এ কথা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় যে, বিশ্ব মানবতার উৎকর্ষ সাধন, ইহকাল পরকালের প্রকৃত শাস্তি, নিরাপত্তা এবং সফলতা অর্জন-এর একমাত্র পথ হচ্ছে ইসলাম, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি সঠিক ঈমান স্থাপন করা এবং পরিপূর্ণ আনুগত্য করা। এর কোন বিকল্প নেই।
এ কথাও আজ সুস্পষ্ট যে, মানুষ ইসলামী জীবন ব্যবস্থা থেকে যে পরিমাণ দূরে সরে রয়েছে সে পরিমাণই ধ্বংসের ছোবলে আক্রান্ত হয়েছে, হচ্ছে এবং হয়ে চলেছে।
কেবল মুসলমানরাই নয় বরং সমস্ত বিধর্মীরাও এ ধ্রুব সত্য অনুধাবনে সক্ষম হয়েছে।
তাই দেখা যায় যে, এক শ্রেণীর কুচক্রীরা ইসলাম এবং মুসলমানদেরকে নির্মূল করে দেয়ার যতই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, ততই বিধর্মীদের মধ্যে ইসলামী জীবন বিধান গতিশীল এবং সম্প্রসারিত হচ্ছে, অসংখ্য অমুসলিম ইসলামের শীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করে চলেছে।
এই মুহূর্তে ইসলামী জীবন বিধান এবং ইসলামী হুকুম আহকামের ব্যাপক এবং নিখুঁত প্রচার প্রসারের বিশেষ প্রয়োজন, প্রয়োজন সম-সাময়িক আধুনিক যুগ জিজ্ঞাসার গবেষনামূলক সঠিক উত্তর এবং জ্ঞান চর্চার।
একথা সর্বজন স্বীকৃত যে, ব্যাপক প্রচার প্রসারের ক্ষেত্রে জ্ঞানগর্ভ রচনা এবং বই পুস্তকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে মুসলিম মনীষীদের অবদান তুলনাহীন।
সর্বযুগে সর্ববিষয়ে বিভিন্ন ভাষায় ইসলামী বিষয়াদির উপর ছোট বড় এত অধিক পরিমাণ কিতাব এবং বই পুস্তক রচিত হয়েছে যার নজির অন্য কোন ধর্মে বিরল।
তবে একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে ইসলাম মোতাবেক স্বীয় জীবন গড়ে তোলার জন্য এতসব ঘাটাঘাটি করা অতি সহজ ব্যাপার নয়।
জ্ঞানের এবং সময়ের স্বল্পতার সাথে সাথে ভাষাগত জটিলতাও অনেক ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
আমাদের দেশে বাংলা ভাষায় অনেক কিতাব ও বই-পুস্তক এ ব্যাপারে যথেষ্ট অবদান রাখছে এতে কোন সন্দেহ নেই।
কিন্তু এদেশের প্রেক্ষাপট, তাহযীব তামাদ্দুন, সংস্কৃতি ও সভ্যতার চাহিদা আর বিশেষতঃ আধুনিক বিষয়াদির নিরিখে আকায়েদ, ইবাদাত, মুআমালাত, মুআশারাত এবং আখলাকিয়াতের ইত্যাদি উপর একটি যথেষ্ট পরিমাণ কিতাব রচনার যথেষ্ট প্রয়োজন ছিল ও আছে।
ইসলায় মানব জীবনের একটি মুকাম্মাল হেদায়াত ও পূৰ্ণ দিক নির্দেশনা। মানব জীবনের সর্ববৃহৎ বিষয় থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ের ব্যাপারেও ইসলামের দিক নির্দেশনা ও নীতিমালা রয়েছে।
জীবনের এমন কোন বিষয় নেই যেখানে ইসলাম নিরব; এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে ইসলামের নীতি ও দিক নির্দেশনা অনুপস্থিত।
উম্মতের ফুকাহা উলামা বুযুর্গানে দ্বীন ও মনীষীগণ কুরআন ও হাদীস থেকে চয়ন করে এসব নীতিমালা ও দিক নির্দেশাবলী বিভিন্ন গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন, মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন, যেন মানুষ সেগুলো জেনে সে অনুযায়ী তার পূর্ণ জীবন ঢেলে সাজাতে পারে এবং যেন মানুষ এভাবে পূর্ণ মুসলমান হতে পারে। যার মধ্যে পূর্ণ মান্যতা থাকে সেই তো পূর্ণ মুসলমান।
তাই, মুসলিম হিসেবে আমাদের প্রচুর পরিমাণে ইসলামি বিষয় নিয়ে চর্চা ও লেখালেখি করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।