বিদআত কাকে বলে: বিদআত বলা হয় দ্বীন ও ইবাদতে নব আবিষ্কৃত কাজকে। অর্থাৎ দ্বীন বা ইবাদত মনে করে করা এমন কাজকে বিদআত বলা হবে, যে কাজের কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর কোন দলীল নেই। বিদআতের সম্পর্ক হল দ্বীনী কাজকর্মের সঙ্গে। দুনিয়ার বস্তুসামগ্রী কিংবা জীবনযাত্রার ব্যবস্থাপনাগত পন্থা ও পদ্ধতির সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
বাংলাদেশের সমাজে প্রচলিত কিছু বিদআত যা প্রতিনিয়ত মানুষ সুন্নাহ মনে করে চালিয়ে যাচ্ছে।
নিম্নে ২১১টি বিদআত এর তালিকা প্রদান করা হলো, দেখে মিলিয়ে নেন আপনি কোনটা করছেন না তো?

আসুন আরো কিছু সমাজে প্রচলিত বিদআত জেনে নিই-
(প্রখম খন্ড)
- ১। ঈদ-ই মিলাদুন্নবী পালন করা।
- ২। সকল মিলাদ।(কারোর মৃত্যুর পর তার জন্য মিলাদ/চল্লিশা/কুলখানি করলে বিদআত হয় আর দিন নিদিষ্ট করে যেমন চল্লিশা মরার ৪০ দিন পর করা হয়, এমন দিন নিদিষ্ট করে করলে শিরক + বিদআত দুটিই হবে।
- ৩। শব-ই বরাত পালন ও এর উদ্দেশ্যে রোজা থাকা।
- ৪। শব-ই মিরাজের সালাত বা সাওম বা এ উপলক্ষে কোন ইবাদাত করা।
- ৫। মৃত ব্যাক্তির জন্য- কুর’আন পড়া(মাদ্রাসা/হাফিজ খানা থেকে হুজুর/ছাত্র দিয়ে বা নিজে। , কুলখানি, চল্লিশা, দু’আর আয়োজন, সওয়াব বখশে দেয়া।
- ৬। জোরে জোরে চিল্লিয়ে জিকির করা।
- ৭। হাল্কায়ে জিকির,ইসকের জিকির লাফালাফি,নাচানাচি জিকির।
- ৮। প্রচলিত/তথাকথিত পীর-মুরীদি মানা বিদাত ও শিরক।
- ৯। নামাজে মুখে মুখে উচ্চারণ করে নাওয়ায়তুয়ান বলে নিয়্যাত পড়া।(মনে রাখবেন নিয়াত করতে হয়। পড়তে হয় না। তাই নিয়াত মনে মনে করাই সুন্নত। কোন নিদিষ্ট শব্দ (যেমন নাওয়ায়তুয়ান। বলে নিয়াত করা যাবে না। ।
- ১০। প্রসাবের পর ঢিলা কুলুখ নিয়ে ৪০ কদম হাঁটা, কাঁশি দেয়া উঠা বসা করা,লজ্জাস্থানে হাত দিয়ে হাটাহাটি ইত্যাদি নির্লজ্জতা।
- ১১। জায়নামাজের দুআ পড়া
- ১২.কবরে হাত তুলে সবাই একএে দূ’আ করা।
- ১৩.খতমে ইউনুস,তাহলীল, খতমে কালিমা, বানানো দরুদ পড়া, এবং যত প্রকার তাজবীহ খতম আছে সবই বিদাত, তাজবীহ দানা গননা করাও বিদাত।
- ১৫। ইলমে তাসাউফ বা সুফীবাদ মানা।
- ১৬। জন্মদিন, মৃত্যুদিবস,মা, বাবা দিবস বিবাহবার্ষিকী, ভ্যালেন্টাইন ডে, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি দিবস পালন করা।
- ১৭। আল্লাহকে “খোদা” বলা (কেননা খোদা শব্দে শিরক এর গন্ধ আছে।
- ১৮। অজুতে ঘাড় মাসেহ করা।
আসুন আরো কিছু সমাজে প্রচলিত বিদআত জেনে নিই-
(দ্বিতীয় খন্ড)
- ১। অপরের কাছে তাওবা পড়া
- ২। বাতেনী এলেম বা তাওয়াজ্জুহ মানা।
- ৩। অন্ধভাবে মাজহাব মানা বা অন্ধ তাকলিদ করা যেটা অনেক সময় ব্যক্তিপূজায় পরিণত হয় ও শিরকে পরিণত হয়।
- ৪। ওরস পালন করা।কবর পাকা, কবর সাজানো, লাইটিং করা।
- ৫। এমন দু’য়া বা দুরুদ পড়া যা হাদিসে নাই যেমনঃ দুরুদে হাজারী, দুরুদে লক্ষী, দুরুদে তাজ, ওজীফা, দুরুদে জালালী
- ৬। ওয়াজ/মাহফিলে মিথ্যা বানোয়াট হাসির গল্প বলে মানুষকে হাসানো
- ৭। “আস্তাগ ফিরুল্লাহ [রব্বি মিন কুল্লি জাম্বি ৷ ওয়া ] আতুবুইলাইক লাহাওলা ওয়ালা কুয়াত্তা ইল্লা ‘আলিইল ‘আজিম”(এখানে রব্বি মিন কুল্লি জাম্বি অংশটুকু বিদআ’ত ।
- ৮। ৭০হাজারবার কালিমা খতম করা
- ৯। ইসলামের নামে দলাদলি করা
- ১০। ইসলামি খলিফা/আমীর ব্যতীত অন্য দলের আমীরের হাতে বায়াত করা
- ১১। দ্বীন প্রতিষ্ঠায় প্রচলিত রাজনীতি করা
- ১২। দ্বীনের হেফাজতের নামে হরতাল অবরোধ মারামারি করা অনেক ক্ষেত্রে হারামও।
- ১৩। বিদায় কালে ফি আমানিল্লাহ বলা।
- ১৪। জানাজা দেয়ার সময় কালিমা শাহাদাত পাঠ করা।
- ১৫। মৃত ব্যাক্তির কাজা নামাজের কাফফারা দেয়া বা আদায় করা।
- ১৬। কুর’আনকে সবসময় চুমু খাওয়া।
- ১৭। কুর’আন নীচে পড়ে গেলে লবণ কাফফারা দেয়া,সালাম করা, কপালে লাগানো ইত্যাদি।
- ১৮। দুই হাতে মোসাফা করা, মোসাফা শেষে বুকে লাগানো বিদাত।
- ১৯। কারোর গায়ে পা লাগলে গাঁ ছুঁয়ে সালাম করা।
- ২০। ইছালেহ সোয়াব নামে ওয়াজ ও দোয়া করা।
আসুন আরো কিছু সমাজে প্রচলিত বিদআত জেনে নিই-
(তৃতীয় খন্ড)
- ১। কোরআন, সহীহ্ হাদীসের বাহিরে যত দোয়া, দুরুদ, জিকির, কালেমা আছে সবই বিদাত।
- ২। টুপি ছাড়া নামাজ পড়লে সোয়াব কম হয়, পাগড়ি মাথায় দিয়ে নামাজ পড়লে বেশী সোয়াব/ নেক হয় এই ধারণা করে পাগরী বা টুপি পরা বিদাত।
- ৩। রোযার সময় নাওয়াতুআন আছুম্মাগাদাম পড়া।
- ৪। কদম বুসি করা।
- ৫। খতমে ইউনুস, তাহলীল, খতমে কালিমা, বানানো দরুদ পড়া।
- ৬। ওরস পালন করা।
- ৭। জাক-জোমক ভাবে খাৎনার অনুষ্ঠান করা।
- ৮। শুধু আল্লাহ বা ইল্লাল্লাহ যিকর: এটা খুবই গর্হিত ও আপত্তিজন কাজ।
- ৯। জামায়াতবদ্ধ দরূদ বা সুরেলা সালাত-সালাম: নবীর শানে সালাত ও সালামের এই নবপদ্ধতি নিঃসন্দেহে বিদআ’ত। রাসূলুল্লাহ সা। যেভাবে উম্মাতকে দরূদ শিখিয়েছেন সেভাবেই দরূদ পড়তে হবে।
- ১০। কোন বুযুর্গের মাযারে মৃত্যুবার্ষিকী বা ওরস পালন: ওরস পালন খুবই গর্হিত ও আপত্তিজনক কাজ, যদিও পীরপন্থীদের কাছে খুবই প্রিয়।
- ১১। কবর পাকাকরণ বা সজ্জিত করা ও উৎসবের আয়োজন।
- ১২। আযান ইকামতের মধ্যে বা অন্য যেকোনো সময় রাসুল সা। এর নাম শুনলে বৃদ্ধা আঙ্গুলে চুমু দিয়ে চোখে লাগানো।
- ১৩। ঈদের নামাযের পর নেকির আশায় মুআনাকা বা কোলাকুলি করা
- ১৪। ঈদের মাঠে সালাতের আগে বয়ানের নামে আরেকটি বাংলা খুতবা দেয়াও বিদআ’ত।
- ১৫। জানাযা ও দাফনের পর কবরের উপর চার কুল, সমবেত দু’আ, বা ব্যক্তিগত ইস্তেগফার বা দুআ ছাড়া সবই বিদআ’ত।
- ১৬। দাফনের পর কবরের কাছে আযান দেয়া।
- ১৭। কবরে ফুল দেয়া, বাতি জ্বালানো (এগুলো অনেক সময় শিরক এ পরিণত হতে পারে।
- ১৮। প্রথম মহররম রাত্রিতে নেকির আশায় অনুষ্ঠান করা।
- ১৯। রমাদান মাসে “বদর দিবস” পালন করা।
- ২০। ঈদের পরে “ঈদ পূণর্মিলনী” অনুষ্ঠান করা।
আসুন আরো কিছু সমাজে প্রচলিত বিদআত জেনে নিই-
(চতুর্থ খন্ড)
- ১। আজানের সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর নাম আসলে চোখে দুই বৃদ্ধ আঙুলি দিয়ে দুই চোখের মধ্যে লাগিয়ে চুমু খাওয়া।
- ২। মসজিদে নববীর সবুজ গম্বুজ দেখা মাত্রই দুরূদ ও সালাম পাঠ করা ।
- ৩। কোন ইসলামী মাহফিলের দুআ, দুরূদ ও যিকরের সওয়াব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – এর কবরে, সকল ওলিদের রুহে ও মৃতদের কবরে পাঠিয়ে দেয়।
- ৪। সুন্নতী পোশাকের নামে বিশেষ ধরনের পোশাক পরা ।
- ৫। নতুন নতুন দুরূদ এর আবিস্কার করা এবং তা পড়া। ১৮। আশেকে রাসূল বলে দাবী করা । জসনে জুলুস করা।
- ৬। বালাগাল উলা বি কামালিহি, কাশাফাদ্জা বি জামালিহি…। ইত্যাদি বলা বিদ’আত ।
- ৭। সালাতুল আওয়াবীন নামে মাগরিবের পরে ৬ রাকাত সলাত আদায় করা(এই নামাজ অন্য সময় পড়তে হয়, মাগরিবের সময় নয়।
- ৮। সালাতের পর আমল করে মাথায় বা কপালে হাত রাখা ।
- ৯। উমরী কাযা সালাত আদায় করা।
- ১০। খুতবা বা অন্য সময় লাল বাতি জ্বালিয়ে রাখা এবং লিখে রাখা যে। লাল বাতি জ্বলন্ত অবস্থায় সালাত আদায় করা নিষেধ।
- ১১। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কবরে গিয়ে কান্নাকাটি করাকে সওয়াব মনে করা।
- ১২। জামাত শুরু হয়ে গেলেও বা ইকামত হয়ে গেলেও সুন্নাত পড়া।
- ১৩। সফরে কসর না পড়ে নিয়ম মত সালাত আদায় করা।
- ১৪। সালাতের কাতারে শিশুদের রাখা মাকরূহ মনে করা।
- ১৫। সালাত শেষে জায়নামাযকে চুমু খাওয়া।
- ১৬। সালাত শেষে জায়নামাযের কোনা ভাজ করে রাখা।
- ১৭। সালাত শেষে অতিরিক্ত একটি সাজদা দেয়া ।
- ১৮। । আশুরার দিন সাতদানার শিরণী পাকান সওয়াবের কাজ মনে করা।
- ১৯। ভুল হলে তওবা তওবা বলে দুই গালে থাপ্পর দিয়ে তওবা করা।
- ২০। খাবার আগে ওযু করলে দারিদ্র দূর হয় বলে মনে করা
আসুন আরো কিছু সমাজে প্রচলিত বিদআত জেনে নিই-
(পঞ্চম খন্ড)
- ১। দাফন না করা পর্যন্ত পরিবারের লোকদের না খেয়ে থাকা ।
- ২। কবরের উপরে খাদ্য ও পানীয় রেখে দেয়া। যাতে লোকেরা তা নিয়ে যায় ।
- ৩। মৃতের ঘরে তিন রাত, সাত রাত (বা ৪০ রাত। ব্যাপী আলো জেলে রাখা।
- ৪। কাফনের কাপড়ের উপরে দুআ-কালেমা ইত্যাদি লেখা।
- ৫। এই ধারণা করা যে, মৃত ব্যক্তি জান্নাতী হলে ওজনে হালকা হয় ও দ্রুত কবরের দিকে যেতে চায়।
- ৬। জানাযার পিছে পিছে উচ্চৈঃস্বরে যিকর ও তিলাওয়াত করতে করতে চলা।
- ৭। জানাযা শুরুর প্রাক্কালে মৃত কেমন ছিলেন বলে লোকদের কাছ থেকে সমস্বরে সাক্ষ্য নেয়া ।
- ৮। জানাযার সালাতের আগে বা দাফনের পরে তার শোকগাথা বর্ণনা করা।
- ৯। জুতা পাক থাকা সত্ত্বেও জানাযার সালাতে জুতা খুলে দাঁড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করা।
- ১০। কবরে মৃতের উপরে গোলাপ পানি ছিটানো ।
- ১১। কবরের উপরে মাথার দিক থেকে পায়ের দিকে ও পায়ের দিক থেকে মাথার দিকে পানি ছিটানো । অতঃপর অবশিষ্ট পানিটুকু কবরে ঢালা ।
- ১২। তিন মুঠি মাটি দেয়ার সময় ১ম মুঠিতে ‘মিনহা খালাক্বনা-কুম’ ২য় মুঠিতে ‘ওয়া ফীহা নুঈদুকুম” এবং ৩য় মুঠিতে ‘ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা’ বলা অথবা ‘আল্লাহুম্মা আজিরহা মিনাশ শায়ান”…পাঠ করা (ইবনু মাজাহতে বর্ণিত এই হাদীসটি যঈফ। ।
- ১৩। কবরে মাথার দিকে দাঁড়িয়ে সূরা ফাতিহা ও পায়ের দিকে দাঁড়িয়ে সুরা বাকারার শুরুর অংশ পড়া।
- ১৪। সূরা ফাতিহা, কলর, কাফিরূন, নছর, ইখলাছ, ফালাক ও নাস এই সাতটি সূরা পাঠ করে দাফনের সময় বিশেষ দু’আ পড়া।
- ১৫। প্রতি জুমআয় কিংবা সোম ও বৃহস্পতিবারে নির্দিষ্ট করে পিতা-মাতার কবর যিয়ারত করা।
- ১৬। এছাড়া আশূরা, শবে মিরাজ, শবেবরাত, রমাদান ও দুই ঈদে বিশেষভাবে কবর যিয়ারত করা।
- ১৭। কবরের সামনে হাত জোড় করে দাঁড়ানো ও সূরা ফাতিহা ১ বার, ইখলাছ ১১ বার কিংবা সুরা ইয়াসীন ১ বার পড়া ।
আসুন আরো কিছু সমাজে প্রচলিত বিদআত জেনে নিই-
(ষষ্ঠ খন্ড)
- ১। কবরে চুম্বন করা ।
- ২। কবরে রুমাল, কাপড় ইত্যাদি বরকত মনে করে নিক্ষেপ করা ।
- ৩। কবরের উপর শামিয়ানা টাঙ্গানো।
- ৪। কবরের গায়ে বরকত মনে করে হাত, পেট ও বুক লাগানাো।
- ৫। মৃত্যুর সাথে সাথে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে বলে ধারণা করা ।
- ৬। ত্রিশ পারা কুরআন (বা সূরা ইয়াসীন। পড়ে এর সওয়াবসমূহ মৃতের নামে বখশে দেয়া । যাকে কুরআনখানী বলে ।
- ৭। কুরআন পাঠকারীকে উত্তম খানা-পিনা ও টাকা-পয়সা দেয়া বা এ বিষয়ে অছিয়ত করে যাওয়া ।
- ৮। কাফিরুন, ইখলাছ, ফালাক ও নাস এই চারটি ‘কুল’ সূরার প্রতিটি ১ লক্ষ বার পড়ে মৃতের নামে বখশে দেয়া । যাকে ‘কুলখানী’ বলে ।
- ৯। আযান শুনে নেকী পাবে বা গোঁর আযাব কম হবে ভেবে মসজিদের পাশে কবর দেয়া ।
- ১০। মৃত ব্যক্তির কবরের পাশে আলো জ্বেলে ও মাইক লাগিয়ে রাত্রি ব্যাপী উচ্চৈঃস্বরে কুরআন খতম করা।
- ১১। সালাত, কিরাআত ও অন্যান্য দৈহিক ইবাদত সমূহের নেকী মৃতদের জন্য হাদিয়া দেয়া । যাকে সওয়াব রেসানী’ বলা হয় । ১২। আমল সমূহের সওয়াব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামে (বা অন্যান্য নেককার মৃত ব্যক্তিদের নামে। বখশে দেয়া। যাকে ইসালে সওয়াব’ বলা হয় ।
- ১৩। নেককার লোকদের কবরে গিয়ে দু’আ করলে তা কবুল হয়, এই ধারণা করা ।
- ১৪। জানাযার সময় স্ত্রীর নিকট থেকে মোহরানা মাফ করিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা।
- ১৫। ঐ সময় মৃতের কাযা সলাত সমূহের বা উমরী কাযার কাফফারা স্বরূপ টাকা আদায় করা।
- ১৬। দাফনের পরে কবরস্থানে গবাদি-পশু যবহ করে গরীবদের মধ্যে গোশতবিতরণ করা।
- ১৭। লাশ কবরে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় নিয়ম করে তিনবার নামানো।
- ১৮। মৃতের শোকে কাপড় ছেড়া, গায়ে চড় মারা।
- ১৯। মৃতের বাড়িতে গেলে ফিরে এসে নিজের গোসল করতে হয় ।
- ২০। মৃতের বাড়িতে এক রাত্রি থাকলে তিন রাত্রি থাকতে হয়।
আসুন আরো কিছু সমাজে প্রচলিত বিদআত জেনে নিই-
(সপ্তম খন্ড)
- ১। মৃতের বিছানা ও খাট ইত্যাদি ৭দিন পর্যন্ত একইভাবে রাখা ।
- ২। কবরের আযাব মাপের উদ্দেশ্যে কাবার বা কোন পীরের কবরের গিলাফের অংশ কিংবা তাবিজ লিখে দাফন করা ।
- ৩। কবরের উপরে একটি বা চার কোণে চারটি কাচা খেজুরের ডাল পোতা বা কোন গাছ লাগানো যে, এর প্রভাবে কবর আযাব হালকা হবে ।
- ৪। মৃত স্বামীর এবং মৃত স্ত্রীর মুখ না দেখা।
- ৫। স্ত্রী বা স্বামী কর্তৃক মৃত স্বামী বা স্ত্রীকে গোসল করানো নিষেধ করা ।
- ৬। মৃত ব্যক্তির রূহ চল্লিশদিন পর্যন্ত বাড়িতে আসে বিশ্বাস রাখা ।
- ৭। দশদিনে রুটি হালুয়া বাটা।
- ৮। জানাযা নিয়ে যাওয়ার সময় উচ্চৈস্বরে যিকর করা ।
- ৯। মৃতের সামনে চিৎকার করে কাঁদা।
- ১০। কুরবানীর সময় মুখে নিয়্যত উচ্চারণ করে পশু কুরবানী করা ।
- ১১। কুরবানীর পশুর সামনে কে কে কুরবানী করছে তাদের নামের তালিকা পাঠ করা এবং নাম কম পড়লে সেখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম বসিয়ে দেয়া।
- ১২। কুরবানীর মাংস শুকিয়ে বা ফ্রিজে রেখে তা মহররম মাসে খাওয়া।
- ১৩। দু’আ করার সময় ১বার সুরা ফাতিহা, ৭বার ইসতিগফার, ৩বার সুরা ইখলাস ও ১১বার দুরুদ শরীফ পাঠ করে দু’আ শুরু করার নিয়ম করা ।
- ১৪। ওয়াজ আল আখিরা কালামিনা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ বলে দু’আ শেষ করতে হবে বলে মনে করা।
- ১৫। দুআ শেষ করে দুই হাত দিয়ে মুখ মুছা জরুরী মনে করা।
- ১৬। বরকতের জন্য সীনা খতম পড়ানো।
- ১৭। বিপদ আপদ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য দুরূদে তাজ পড়া, দুরূদে তুনাজ্জিনাহ পড়া, খতমে জালালী পড়া, খতমে ইউনুস পড়া, খতমে তাহলিল পড়া।এগুলো সব মানুষের বানানো দুরূদ।
- ১৮। মৃত্যু পথযাত্রীর মৃত্যু তাড়াতাড়ি হওয়ার জন্য খতমে খাজেগান পড়া।
- ১৯। সওয়াবের উদ্দেশ্যে দলাইলুল খাইরাত পাঠ করা ।
- ২০। কুরআনে নিয়ম করে চুমু খাওয়া, বুকে ও কপালে স্পর্শ করা। কুরআন ছুয়ে শপথ করা ।
আসুন আরো কিছু সমাজে প্রচলিত বিদআত জেনে নিই-
(অষ্টম খন্ড)
- ১। আয়াতুল কুরসী পড়ে বুকে ফু দেয়া (পড়া যাবে কারণ এর অনেক ফজিলত কিন্তু বুকে ফু দেওয়া যাবে না। ।
- ২। মহিলাদের কুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা করা এবং পুরুষদের সম্মুখে উচ্চস্বরে তিলাওয়াত করা ।
- ৩। কুরআন তিলাওয়াত শোনার সময় নেকির আশায় হঠাৎ বিনা কারণে ঢুকরে কেঁদে ওঠা । অর্থ বুঝে কাঁদলে ঠিক আছে।
- ৪। সম্মিলিতভাবে দু’আ করার সময় বলা যে মজলিসে যে তোমার প্রিয় বান্দা অথবা বে-গুনাহ মাসুম বাচ্চা আছে তাদের উসিলায় অথবা তুমি যে হাত পছন্দ কর তার উসিলায় আল্লাহ আমাদের দু’আ কবুল কর ।
- ৫। সূরা ইয়াসীন একবার পড়লে দশবার কুরআন খতমের সওয়াব পাওয়া যায় এবং সূরা ইয়াসীন গরম সূরা’ বলে মনে করা।
- ৬। খানার উপর বরকতের জন্য সূরা কুরাইশ পড়া।
- ৭। দু’আ করার সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা জরুরী মনে করা ।
- ৮। কুরআন তিলাওয়াত করে নিয়ম করে সাদাকাল্লাহুল আজীম বলা জরুরী মনে করা ।
- ৯। খতমে আম্বিআ।
- ১০। মাজারে কুরআন পাঠ।
- ১১। কারী ও হুজুর ভাড়া করে এনে খতম পড়ানো।
- ১২। পীর ওলিদের কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্যে দূর-দূরান্তে সফর করা।
- ১৩। সওয়াব পাওয়ার উদ্দেশ্যে কাবা শরীফ, মসজিদে নব্বী, মসজিদে আকসা ছাড়া অন্য কোথাও সফর করা ।
- ১৪। সওয়াবের আশায় মদিনার সাত মসজিদের যিয়ারত করা।
- ১৫। নিজের পরিবার, প্রতিবেশী ও এলাকায় দাওয়াত না দিয়ে দূর-দূরান্তে দ্বীনের দাওয়াতী কাজে বের হওয়া।
- ১৬। ওযূ করার সময় গর্দান/ঘাড় মসেহ করা।
- ১৭। ইসতেনজার পানির সাথে ঢিলা-কুলখ নেয়া ওয়াজীব মনে করা ।
- ১৮। ওযূতে প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার সময় কতগুলো নির্দিষ্ট দু’আ পড়া।
- ১৯। স্বপ্নে পাওয়া তরিকায় নফল ইবাদত করা।
- ২০। বরকতের উদ্দেশ্যে পীরকে টাকা, গরু-ছাগল, চাল-ডাল ইত্যাদি দেয়া(এটা অনেক সময় শিরক এ পরিণত হয়। ।
আসুন আরো কিছু সমাজে প্রচলিত বিদআত জেনে নিই-
(নবম খন্ড)
- ১। নাপাক কাপড় সাত বার না ধুলে পাক হবে না মনে করা । (এটা ঠিক আছে যে শুধু কুকুরের লালা লাগলে একবার মাটি দিয়ে পরে সাতবার পানি দিয়ে ধুতে হবে।
- ২। চারটি মাযহাবের মধ্যে যে কোন একটি মাযহাব হুবহু মানা ফরয, ওয়াজিব অথবা সুন্নাত মনে করা।
- ৩। মুসলিমদের মধ্যে বিভিন্ন দল তৈরী করা।
- ৪। ইসলামের ইলমকে শরীয়ত, তরিকত, মারিফত ও হাকিকত এই চার ভাগে ভাগ করা।
- ৫। রাজতন্ত্রের ন্যায় বংশানুক্রমে পীরের ওয়ারিস হওয়া।
- ৬। পীর-ওলি বা বুজুর্গানের নিকট বরকত হাসিল করার উদ্দেশ্যে তাদের শরীর, হাত-পা টিপে দেয়া।
- ৭। বরকতের উদ্দেশ্যে পীরের আধা-খাওয়া প্লেট থেকে খাবার খাওয়া।
- ৮। ছয় লতিফার যিকর করা। শুধু আল্লাহ শব্দের যিকর করা ।
- ৯। শুধু ইল্লাল্লাহ শব্দের যিকর করা।
- ১০। মাফি কালবি গাইরুল্লাহ, লাইলাহাইল্লাল্লাহ নূর মুহাম্মাদ সাল্লল্লাহ বলে। যিকর করা ।
- ১১। পীর-ওলিদের হুজুর কেবলা বলা, হুজুরে পাক বলা বা আব্বাহুজুর বলা ।
- ১২। আল্লাহকে পাওয়ার জন্য জংগলে চলে যাওয়া।
- ১৩। পীরকে কদমবুসি করা, আর কদমবুসি করার সময় মাথা নিচু হলে এটা শিরকে পরিণত হয়ে যাবে।
- ১৪। পীরের গোসলের পানিকে অতি পবিত্র এবং শিফা মনে করা বিদ’আত ও শিরক।
- ১৫। হজ্জে প্রত্যেক তাওয়াফে বা সায়ীতে নির্দিষ্ট দু’আ পড়া।
- ১৬। মক্কা-মদীনা, আরাফা, মুযদালিফা, বদর ও ওহুদের মাটি, গাছ, পাথর ইত্যাদি সংগ্রহ করে বরকতস্বরূপ দেশে নিয়ে যাওয়া ।
- ১৭। হাজ্জ বা ওমরার সময় ছাড়া অন্য সময়ে মাথা কামানো সুন্নাত মনে করা।
- ১৮। হাজ্জ করে নিজের নামের সাথে নিজে নিজে আলহাজ্জ উপাধি লাগানো।
- ১৯। হাজ্জ, উমরাহ অথবা যিয়ারতে এসে মদীনা শরীফে ৮ দিনে ৪০ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ওয়াজিব মনে করা ।
- ২০। হাজ্জ করতে হবে ঘরে বসেই আর তা হবে রূহানী জগতের মাধ্যমে, এই ধরনের বিশ্বাস থাকা।
আসুন আরো কিছু সমাজে প্রচলিত বিদআত জেনে নিই-
(দশম খন্ড)
- ১। পীরের কলবের ভিতরেই আছে কাবা। তাই পীরের সেবা করলেই হাজ্জ হয়ে যাবে, এসব কথায় বিশ্বাস করা ।
- ২। ঢাকার টুঙ্গির বিশ্ব ইজতেমাকে দ্বিতীয় হাজ্জ বলা বা মনে করা এবং ইহরামের কাপড় পরে সেখানে উপস্থিত হওয়া।
- ৩। ঢাকার টুঙ্গির বিশ্ব ইজতেমাকে গরিবের হাজ্জ মনে করা । (বিদ’আত এবং শিরক। ৪। ওহুদ পাহাড়ের মাটি এনে তা শিফা হিসেবে ব্যবহার করা বিদআত ও শিরক।
- ৫। যমযম কূপের পানি এনে তা আবার পীরসাহেব বা হুজুর কেবলা দ্বারা পানির মধ্যে ফু দিয়ে তা বিশেষ কোন উদ্দেশ্যে দেয়া।
- ৬। প্রত্যেক ফরজ সালাতের জামাতের পর নিয়ম করে সম্মিলিতভাবে হাত তুলে মুনাজাত করা।
- ৭। ইলিয়াস আলীর ৩, ৭, ১০, ২১, ৪০, ৪১, ১২০ দিনের চিল্লা দেওয়া।
- ৮। মদীনার ‘বাকী’ কবরস্থানকে ‘জান্নাতুল বাকী” বলা বিদআত।
- ৯। উমরাহ করতে গিয়ে মসজিদুল হারামে প্রবেশের পর তাওয়াফ না করে প্রথমে দুই রাকআত তাহ্ইয়াতুল মসজিদ পড়া।
- ১০। অনেকে বিদায়ী তাওয়াফ শেষ করে ফেরার সময় কাবা ঘরের দিকে মুখ করে কবর পূজারীদের মত পিছন দিকে হেঁটে বের হন, এটা বিদ’আত।
- ১১। বিভিন্ন নামে নামে তাওয়াফ করা। যেমন- মায়ের নামে, ছেলের নামে ইত্যাদি বিদআত।
- ১২। মসজিদে নববীর খুঁটিকে ‘হানড়বা খুঁটি’ ‘আয়িশা খুঁটি ইত্যাদি মনে করে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করা ও এসব এর উসীলায় দু’আ করা বিদআত ।
- ১৩। আলী মসজিদ, আবুবকর মসজিদ ইত্যাদিতে বরকত মনে করে সালাত আদায় করা বিদআত ।
- ১৪। ফাতেমা (রা.। র কবুতর মনে করে গম ছিটানো বিদ’আত ।
- ১৫। ’বাকী’ কবরস্থানে যাদেরই কবর হবে তারা জান্নাতে যাবে, এধারণা বিদআত।
- ১৬। হাজ্জের সাদা কাপড়গুলো জমজমের পানি দিয়ে ধুয়ে রাখা এবং কবরের আজাব লাঘবের উদ্দেশ্যে কাফনের কাপড় হিসেবে ব্যবহার করা।
আসুন আরো কিছু সমাজে প্রচলিত বিদআত জেনে নিই-
(এগারো তম খন্ড)
- ১। সমাজে প্রচলিত হিল্লা বিয়ে।
- ২। বিবাহ বার্ষিকী বা Marriage Anniversary পালন করা ।
- ৩। কারো পায়ের সাথে বা গায়ের সাথে পা লাগলে কদমবুসি করা ।
- ৪। আত্মীয়স্বজন ও গুণীদের পা ছুয়ে সালাম করা (কদমবুসি করা। ।
- ৫। দাঁড়ী-পাল্লা বা মাপার জিনিস পায়ে লাগলে বা হাত থেকে নিচে পড়ে গেলে সালাম করতে হবে, না হলে লক্ষ্মী চলে যাবে।
- ৬। কুরআন হাতে নিয়ে বা তিলাওয়াত করে নিয়ম করে তাকে সালাম করতে হয় ।
- ৭। বই হাত থেকে মাটিতে পরে গেলে তাকে উঠিয়ে সালাম করতে হয় না হলে পড়ালেখা হবে না।
- ৮। তসবীহ পড়ার পর তসবীহ দানা মুখে চুমু খেয়ে সালাম করতে হয়।
- ৯। রাস্তা-ঘাটে কোথাও কোন আরবী লিখা কাগজ পেলে তা উঠিয়ে সালাম করা (হতে পারে সেটা আরবী পত্রিকা বা অন্য কিছু। ।
- ১০। রমাদানের সাতাশের রাতকে নির্দিষ্টভাবে লাইলাতুল কদরের রাত মনে করা। এছাড়া এই রাতে ওমরা করা ।
- ১১। খাওয়ার সময় লবণ দিয়ে খাওয়া আরম্ভ করাকে সুন্নাত মনে করা ।
- ১২। সাইরেন, ঢোল, মুখের সুরে সেহরী বা ইফতারের জন্য ডাকা সওয়াব মনে করা এবং চাঁদা নেয়া।
- ১৩। স্বপ্নের ফয়সালা মেনে নেয়া ।
- ১৪। সওয়াবের উদ্দেশ্যে তসবীহ ব্যবহার বা সর্বদা সওয়াবের উদ্দেশ্যে হাতে তসবীহ রাখা ।
- ১৫। মহররমের নামে তাজিয়া মিছিল বের করা ও মাতম করা ইত্যাদি।
- ১৬। কবরকে ‘মাযার” বলা। যেমন পাগলা বাবার মাযার, লেংটা বাবার মাযার ইত্যাদি।
- ১৭। আল্লাহর নাম বা কুরআনের কোন আয়াত অংকে Convert করা । যেমন, ৭৮৬ বা 786.
- ১৮। যে গ্রাম দিয়ে একজন আলেম হেটে যাবে সেই গ্রামের কবরে ৪০ দিন পর্যন্ত আযাব হবে না মনে করা।
- ১৯। মুছাফা করার পর হাত বুকে লাগানো বিদআত ।
- ২০। একত্রে তিন তালাক দেয়া।
মহাণ আল্লাহ সকল প্রকার শিরক বিদআত থেকে আমাদের হেফাজত করুন। আমিন।
পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam। এর সাথেই থাকুন।
[সংগ্রহিত]