(১) ভগ্নাংশ কাকে বলে?
ভগ্নাংশ কাকে বলে: দুটি পূর্ণ সংখ্যাকে অনুপাত বা ভাগ করলে যে রাশি পাওয়া যায় তাকে ভগ্নাংশ বা Fraction বলে। ধরি, a ও b দুটি পূর্ণ সংখ্যা। তাহলে, a/b কে বলা হয় ভগ্নাংশ।
এককথায়, যার লব ও হর আছে তাকে ভগ্নাংশ বলে।
আরও সহজে যদি বলি, দুটি পূর্ণ সংখ্যাকে অনুপাত বা বিভক্ত করলে যে সংখ্যা পাওয়া যায়, তাকে ভগ্নাংশ বলে। যেমন- ১টি কলাকে সমান দুটি অংশে ভাগ করলে এর প্রত্যেকটি ভাগ বা অংশই হল একটি ভগ্নাংশ। একে ১/২ বা ২ ভাগের এক অংশ অথবা ২ এর ১ অংশ পড়া হয়।

ভগ্নাংশের উপরের সংখ্যাটিকে বলে লব আর নিচের সংখ্যাটিকে বলে হর।
কোন ভগ্নাংশকে এক দ্বারা গুণ বা ভাগ করলে ভগ্নাংশের পরিবর্তন হয় না।
কোন ভগ্নাংশের লব শূণ্য হলে উক্ত ভগ্নাংশের মান শূণ্য হয়।
(২) ভগ্নাংশ কত প্রকার?
ভগ্নাংশ সাধারণত দুই প্রকার। যথা-
- সাধারণ ভগ্নাংশ
- দশমিক ভগ্নাংশ
ক) গঠন অনুসারে সাধারণ ভগ্নাংশ কত প্রকার ও কি কি?
প্রকৃতি/গঠন অনুসারে সাধারণ ভগ্নাংশ তিন প্রকার। যথা-
- প্রকৃত
- অপ্রকৃত
- মিশ্র
প্রকৃত ভগ্নাংশ: যে ভগ্নাংশের লব ছোট হর বড় তাকে প্রকৃত ভগ্নাংশ বলে।
যেমন- ৪/৫ এবং ২/৩
অর্থাৎ, হর > লব
অপ্রকৃত ভগ্নাংশ: যে ভগ্নাংশের লব বড় হর ছোট তাকে অপ্রকৃত ভগ্নাংশ বলে।
যেমন- ৫/২ এবং ৭/৩
অর্থাৎ, হর < লব
মিশ্র ভগ্নাংশ: পূর্ণ সংখ্যার সাথে প্রকৃত ভগ্নাংশ যুক্ত থাকলে তাকে মিশ্র ভগ্নাংশ বলে।
বিঃদ্রঃ সকল মিশ্র ভগ্নাংশ অপ্রকৃত ভগ্নাংশ।
খ) দশমিক ভগ্নাংশ কত প্রকার ও কি কি?
দশমিক ভগ্নাংশ দুই প্রকার। যথা-
- সসীম দশমিক ভগ্নাংশ
- অসীম দশমিক ভগ্নাংশ
সসীম দশমিক ভগ্নাংশ: যে সকল দশমিক ভগ্নাংশে দশমিক বিন্দুর ডানে সসীম সংখ্যক অংক থাকে তাদেরকে সসীম দশমিক ভগ্নাংশ বলে।
যেমন- ১৫/২=৭.৫। এখানে দশমিক সংখ্যার পর একটা নির্দিষ্ট সংখায় বের হয়ে ভাগ শেষ হয়ে গেছে মানে দশমিক সংখ্যাটা সসীমতায় আছে। তাই একে সসীম দশমিক ভগ্নাংশ বলে।
অসীম দশমিক ভগ্নাংশ: কোনো দশমিক ভগ্নাংশ এর মধ্যে দশমিক বিন্দুর পর অঙ্কগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটলে তাকে অসীম দশমিক ভগ্নাংশ বলে।
অর্থাৎ, যেমন ২০ কে ৬ ভাগ করলে, ৩.৩৩৩ এরকম একই সংখ্যা বার বার পুনরাবৃত্তি হবে। এগুলি অসীম দশমিক ভগ্নাংশ।
(৩) ভগ্নাংশ কাকে বলে সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য

- সরল অঙ্ক করার সময় মিশ্র ভগ্নাংশকে অপ্রকৃত ভগ্নাংশে রূপান্তর করে নিতে হয়।
- দুটি ভগ্নাংশের হর একই হলে যে ভগ্নাংশের লব বড় সেটার মান বড়। ৫/২ এর চেয়ে ৭/২ এর মান বড়।
- দুটি ভগ্নাংশের লব একই হলে যে ভগ্নাংশের হর ছোট সেই ভগ্নাংশটি বড়। ৫/৩ এর চেয়ে ৫/২ এর মান বড়।
- যেকোনো প্রকৃত ভগ্নাংশের মান ১ থেকে ছোট হয়। যেমন ১/২ এর মান ১ এর ছোট।
- ভগ্নাংশের যোগফল বা বিয়োগফল সব সময় লঘিষ্ঠ তথা ছোট করে প্রকাশ করতে হয়। যেমন ৪/৮ কে লিখতে হবে ১/২।
- কোনো ভগ্নাংশের লবকে হর এবং হরকে লব বানিয়ে দিলে বিপরীত ভগ্নাংশ পাওয়া যায়।
(৪) ভগ্নাংশ সম্পর্কিত প্রায় জিজ্ঞাত প্রশ্ন
প্রশ্ন: প্রকৃত ও অপ্রকৃত ভগ্নাংশের মধ্যে ছোট কোনটি?
উত্তর: প্রকৃত ভগ্নাংশ।
প্রশ্ন: সমলব বিশিষ্ট ভগ্নাংশ কী?
উত্তর: যেসব ভগ্নাংশের লব একই তাদেরকে সমলব বিশিষ্ট ভগ্নাংশ বলা হয়।
প্রশ্ন:লঘিষ্ঠ আকার বলতে কী বুঝ?
উত্তর: কোনো ভগ্নাংশের লঘিষ্ঠ আকার বলতে বোঝায়, যে ভগ্নাংশটির হর ও লবের ১ ব্যতীত অন্য কোনো সাধারণ উৎপাদক না থাকে।
প্রশ্ন:একাধিক ভগ্নাংশকে লঘিষ্ঠ সমহর বিশিষ্ঠ ভগ্নাংশে কীভাবে প্রকাশ করতে হয়?
উত্তর: একাধিক ভগ্নাংশকে লঘিষ্ঠ সমহর বিশিষ্ট ভগ্নাংশে প্রকাশ করতে হলে, প্রথমে হরগুলোর লসাগু কো সাধারণ হর ধরে ভগ্নাংশগুলোকে সমহর বিশিষ্ট ভগ্নাংশে পরিণত করতে হবে।
প্রশ্ন: হর একই হলে, যে ভগ্নাংশের লব বড় সেই ভগ্নাংশটি কিরূপ?
উত্তর: হর একই হলে , যে ভগ্নাংশের লব বড় সেই ভগ্নাংশটি বড়।
প্রশ্ন: ভগ্নাংশকে ঊর্ধক্রমেসাজানো কাকে বলে?
উত্তর: ছোট থেকে বড় ক্রমে ভগ্নাংশগুলো পর পর লিকে সাজানোকে ঊর্ধক্রমে সাজানো বলে।
প্রশ্ন: ভগ্নাংশকে অধঃক্রমে সাজানো কাকে বলে?
উত্তর: বড় থেকে ছোট ক্রমে ভগ্নাংগুলো পর পর লিখে সাজানোকে অধঃক্রম সাজানো বলে।
প্রশ্ন: লব একই হলে, যে ভগ্নাংশের হর ছোট সেই ভগ্নাংশটি কিরূপ?
উত্তর: লব একই হলে যে ভগ্নাংমের হর ছোট সেই ভগ্নাংমটি বড়।
প্রশ্ন: প্রকৃত ভগ্নাংশ কাকে বলে?
উত্তর: যেসব ভগ্নাংশের লব হর অপেক্ষা ছোট সেইগুলোকে প্রকৃত ভগ্নাংশ বলা হয়।
প্রশ্ন: মিশ্র ভগ্নাংশের পূর্ণ অংশকে কী পড়া হয়?
উত্তর: মিশ্র ভগ্নাংশের পূর্ণ অংশকে সমস্ত পড়া হয়।
একাডেমিক শিক্ষা ও লেখাপড়া সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট লেখাপড়া’ (inbangla.net/lekhapora) এর সাথেই থাকুন।
অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।