Skip to content

 

২০+ মসলার নাম ও ছবি/মসলার নামের তালিকা বাংলা

মসলার নাম ও ছবি, মসলার নামের তালিকা বাংলা

বাংলাদেশে মসলা খুবই জনপ্রিয়। প্রধান প্রধান মসলার মধ্যে পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, হলুদ, ধনিয়া, আদা, গোলমরিচ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। দেশে প্রতি বৎসর ব্যবহৃত মসলার বড় অংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। উন্নত জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি ব্যবহার করে মসলার ফলন অনেকাংশে বাড়ানো সম্ভব।

নিচে মসলার নাম ও ছবি বা মসলার নামের তালিকা বাংলায় উপস্থাপন করা হলো-

(১) পেঁয়াজ

পেঁয়াজ এর ছবি
পেঁয়াজ এর ছবি

মানবসভ্যতার ইতিহাসের আদিযুগ থেকেই পিঁয়াজের ব্যবহার শুরু হয়েছে। পৃথিবীর প্রায় সব খানের সমাজেই বিভিন্ন রান্নায় পিঁয়াজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বর্তমানে কাঁচা , জমানো, আচার , চূর্ণ, কুঁচি, ভাজা, এবং শুকনো করা পিঁয়াজ ব্যবহার করা হয়। শুধু পিঁয়াজ সাধারণত সরাসরি খাওয়া হয়না, বরং পিঁয়াজ কুঁচি বা ফালি করে কাঁচা অবস্থায় সালাদএ , অথবা রান্নাতে উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। পিঁয়াজ বিভিন্ন রকমের হতে পারে – ঝাঁঝালো, মিষ্টি , তিতা।

(২) পাতা পেঁয়াজ

পাতা পেঁয়াজ এর ছবি
পাতা পেঁয়াজ এর ছবি

পাতা পেঁয়াজ একটি বনুবর্ষজীবি মসলা ফসল। এটি স্বাদে ও গন্ধে প্রায় সাধারণ পেঁয়াজের মত বিধায় পেঁয়াজের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা হয়। গাছের পুরো অংশই খাওয়া যায়। সাদা সিউডোস্টেম তরকারীতে এবং সবুজ পাতা সালাদ, স্যুপ, নুডুলস, স্যান্ডউইচ ইত্যাদিতে ব্যবহার হয়ে থাকে। এটি পরিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে, চোখের দৃষ্টিশক্তি দৃদ্ধি করে, মাথাব্যাথা, বাতের ব্যাথা, হৃদরোগ এবং ঠান্ডা জনিত রোগ উপশমে সহায়তা করে। বসতভিটাসহ মাঠ পর্যায়ে সারা বছর চাষ করা যায়। বাসাবাড়ির ছাদে টবেও চাষ করা যায়। বীজ বা কুশির মাধ্যমে বংশ বিস্তার হয়ে থাকে।

(৩) মরিচ

মরিচ এর ছবি
মরিচ এর ছবি

মরিচ বা কাঁচা লঙ্কা এক প্রকারের ফল যা মসলা হিসাবে ঝাল স্বাদের জন্য রান্নায় ব্যবহার করা হয়। ক্যাপসিকাম (Capsicum) গণের সোলানেসি (Solaneceae) পরিবারের উদ্ভিদের ফলকে সাধারণভাবে মরিচ বলা হয়ে থাকে। মরিচের ফলকে মসলা হিসাবে ব্যবহার করা হয়। মরিচের আদি নিবাস আমেরিকা মহাদেশে। তবে বর্তমানে পৃথিবীর সর্বত্র রান্না ও ঔষধি হিসাবে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

(৪) মৌরি

মৌরি মসলার ছবি
মৌরি মসলার ছবি

মৌরি (ফোনিকুলাম ভালগার) গাজর পরিবারের একটি ফুলের উদ্ভিদ প্রজাতি। এটি হলুদ ফুল এবং পালকযুক্ত পাতা সহ একটি শক্ত, বহুবর্ষজীবী ভেষজ উদ্ভিদ। এটি একটি অত্যন্ত সুস্বাদু ভেষজ যা রান্নায় ব্যবহৃত হয় এবং একই রকম স্বাদযুক্ত মৌরি সহ অ্যাবসিন্থের প্রাথমিক উপাদানগুলির মধ্যে একটি। ফ্লোরেন্স মৌরি বা ফিনোকিও হল একটি ফোলা, বাল্ব-সদৃশ স্টেম বেস সহ একটি নির্বাচন যা সবজি হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

(৫) রসুন

রসুন এর ছবি
রসুন এর ছবি

রসুন হল পিঁয়াজ জাতীয় একটি ঝাঁঝালো সবজি যা রান্নার মশলা ও ভেষজ ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। মসলা হিসেবে রসুন ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া বিভিন্ন আচার ও মুখরোচক খাবার তৈরিতে রসুনের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। রসুন বিশ্বে বাণিজ্যিক ভেষজ হিসাবে সফলতম। 

(৬) হলুদ

হলুদ মসলার ছবি
হলুদ মসলার ছবি

হলুদ গাছের শিকড় থেকে প্রাপ্ত এক প্রকারের মসলা। হলুদ গাছের শিকড়কে কয়েক ঘণ্টা সিদ্ধ করা হয়, তার পর গরম চুলায় শুকানো হয়। এরপর এই শিকড়কে চূর্ণ করে গাঢ় হলুদ বর্ণের গুঁড়া পাওয়া যায়। এই হলুদ গুঁড়া দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশের খাদ্য প্রস্তুতে ব্যবহার করা হয়। তবে ঐতিহ্যগতভাবে এই শিকড় ভালোভাবে ধৌতকরণের পানি সহযোগে বেটে নিয়ে হলুদের পেষ্ট তৈরি করা হয় যা সরাসরি রান্নায় ব্যবহার করা হয়।

(৭) ধনিয়া

ধনিয়া পাতার ছবি
ধনিয়া পাতার ছবি

ধনিয়া বা ধনে একটি সুগন্ধি ঔষধি গাছ। এটি একটি একবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এটি দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার স্থানীয় উদ্ভিদ। এর বীজ থেকে বানানো তেল সুগন্ধিতে, ওষুধে এবং মদে ব্যবহার করা হয়। বঙ্গ অঞ্চলের প্রায় সর্বত্র ধনের বীজ খাবারের মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

(৮) গোলমরিচ

গোলমরিচ মসলার ছবি
গোলমরিচ মসলার ছবি

গোল মরিচ ফলটি গোলাকার এবং পাকা অবস্থায় গাঢ় লাল বর্ণের হয়ে থাকে। এর মধ্যে মাত্র ১টি বীজ থাকে। গোল মরিচের গুঁড়া পশ্চিমা (ইউরোপীয়) খাদ্যে মসলা হিসাবে ব্যবহার করা হয় প্রাচীন কাল থেকে। তবে ভারত বর্ষের মসলাধিক্য রান্নায় এটির ব্যবহার প্রচুর। এছাড়া ঔষধী গুণাগুণের জন্যেও এটি সমাদৃত। গোল মরিচে পাইপারিন (piperine) নামের রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা থেকে এর ঝাঁঝালো স্বাদটি এসেছে।

(৯) আদা

আদা মসলার ছবি
আদা মসলার ছবি

আদা একটি উদ্ভিদ মূল যা মানুষের মসলা এবং ভেষজ ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। মশলা জাতীয় ফসলের মধ্যে আদা অন্যতম। আদা খাদ্যশিল্পে, পানীয় তৈরীতে, আচার, ঔষধ ও সুগন্ধি তৈরীতে ব্যবহার করা হয়। আদা সেই প্রথম মশালাগুলির মধ্যে একটি যা এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি করা হয়েছিল। যা মূলত মশলার বাণিজ্যের মাধ্যমে পৌঁছেছিল। প্রাচীন গ্রীস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। আদা খেলে ঠান্ডা সেরে যায়। এটি ভেষজ ঔষধ। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয়। অধিকন্ত সর্দি, কাশি, আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপায় আদা চিবিয়ে বা রস করে খাওয়া হয়।

(১০) দারুচিনি

দারুচিনি মসলার ছবি
দারুচিনি মসলার ছবি

দারুচিনি একটি মসলা বৃক্ষের নাম। স্বাভাবিক পরিবেশে এই বৃক্ষের উচ্চতা দশ থেকে পনের মিটার পর্য্যন্ত হয়ে থাকে। আদি নিবাস শ্রীলংকায়। আজ কাল ইন্দোনেশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ ও চীন প্রভৃতি দেশে ও উৎপাদিত হচ্ছে। দেখতে কিছুটা তেজপাতা বৃক্ষের মতো এই বৃক্ষের চামড়াটা মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দারুচিনির সুগন্ধ যুক্ত তৈল ও পাওয়া যায়।

(১১) তেজপাতা

তেজপাতা মসলার ছবি
তেজপাতা মসলার ছবি

তেজপাতা এক প্রকারের উদ্ভিদ, যার পাতা মসলা হিসাবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। এই গাছটি মূলত ভারত,নেপাল,ভুটান ও চীনের। গাছটি ২০ মি (৬৬ ফু) মিটারের বেশি লম্বা হতে পারে। এর বাকল থেকে যে সুগন্ধি তেল পাওয়া যায় তা সাবান উৎপাদনে কাজে লাগে।

(১২) একাঙ্গী

একাঙ্গী মসলার ছবি
একাঙ্গী মসলার ছবি

পাতা পুরু এবং গোলাকৃতি মাটির সাথে লাগানো অবস্থায় থাকে। নতুন পাতা ক্ষুদ্র রাইজোম থেকে বসন্তকালে বাড়তে শুরু করে। গ্রীষ্মকালে এক অথবা দুই ফুলটি ফুল হয়। দুই মাস পর্যন্ত ফুল ফোটে। পাতা হেমন্তকালে মরে যায় এবং রাইজোম শীতকালের সুপ্ত অবস্থায় চলে যায়। শুকনা বা তাজা রাইজোম মসলা হিসেবে রান্নাতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও মৎস শিকারের চারা/টোপ তৈরীতে এটি ব্যবহার হয়।

(১৩) চিভ

চিভ মসলার ছবি
চিভ মসলার ছবি

চিভ হলো পেঁয়াজের একটি প্রজাতি ও এক ধরনের বহুবর্ষজীবী মসলা ফসল যা মূলত চীনের শানশি প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে পাওয়া যায়। তবে চীন ছাড়াও এটি এশিয়ার অন্যান্য স্থানসহ বিশ্বব্যাপী আবাদ করা হয়।

(১৪) কালোজিরা

কালোজিরা মসলার ছবি
কালোজিরা মসলার ছবি

কালোজিরা গাছের ফল গোলাকার হয় এবং প্রতিটি ফলে ২০-২৫ টি বীজ থাকে। আয়ুর্বেদীয় , ইউনানী, কবিরাজী ও লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহার হয়। মশলা হিসাবে ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে, এটি পাঁচ ফোড়নের একটি উপাদান। বীজ থেকে পাওয়া যায় তেল।

(১৫) মেথী

মেথী মসলার ছবি
মেথী মসলার ছবি

মেথি একটি মৌসুমী গাছ। এর পাতা শাক হিসাবে খাওয়া হয়। মেথি শাক গ্রাম বাংলার মানুষের প্রিয় খাদ্য। ইউনানী, কবিরাজী ও লোকজ চিকিৎসায় বহুবিধ ব্যবহার হয়। মশলা হিসাবেও এটি প্রচুর ব্যবহার হয়। এটি পাঁচ ফোড়নের একটি উপাদান। মেথি থেকে ষ্টেরয়েডের উপাদান তৈরি হয়।

(১৬) আলুবোখারা

আলুবোখারা মসলার ছবি
আলুবোখারা মসলার ছবি

আলুবোখারা হলো শুকনা পাম ফল। এতে ক্যালরির মাত্রা খুব কম থাকে। এটি একটি বৃহৎ গুল্ম বা ছোট গাছ ফর্ম জাতীয়। এটি কাটাযুক্ত গাছ, ফুল সাদা হয়, বসন্তকাল ফোটে। ফল আকার ডিম্বাকৃতি বা গোলাকৃতি হয়। মশলা জাতীয় ফল হিসেবে বিবেচিত। পোলাও, বিরিয়ানি, রোস্ট, সালাদ, জ্যাম, জ্যালি, আচার এবং বোরহানিসহ নানা অভিজাত খাবার তৈরিতে আলু বোখারা ব্যবহার হয়।

(১৭) পান

পানের ছবি
পানের ছবি

পান হলো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের একপ্রকার লতাজাতীয় গাছের পাতা। নিশ্বাসকে সুরভিত করা এবং ঠোঁট ও জিহবাকে লাল করার জন্য মানুষ পান খায়। পানের সাথে সবসময়ই সুপারি দেয়া হয়, তবে অনেকেই সুপারি ছাড়া পান খেতে পছন্দ করেন।অনেকে জর্দা দিয়েও পান খান। পান সাধারণতঃ কোনকিছু খাওয়ার পর মুখে নিয়ে চিবুনো হয়।

(১৮) ফিরিঙ্গি

ফিরিঙ্গি মসলা এর ছবি
ফিরিঙ্গি মসলা এর ছবি

ফিরিঙ্গি বীজ অনেকটা মেথির মতো। এটি রান্নায় পাঁচফোড়নের একটি উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফিরিঙ্গি বীজ নানা প্রকার তরকারি, আচার, চাটনি ইত্যাদি স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে বেশ উপযোগী। ফিরিঙ্গির যথেষ্ট ঔষধি গুণও রয়েছে।

(১৯) পুদিনা

পুদিনা মসলার ছবি
পুদিনা মসলার ছবি

পুদিনা পাতা সুগন্ধি হিসাবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। পুদিনা জীবাণুনাশক হিসাবে কাজ করে। কাশি,অরুচি ও পাকস্থলীর প্রদাহে পুদিনা উপকারী। পুদিনা পাতার চা বেশ জনপ্রিয় পানিয়। এছাড়া পুদিনা পাতা রুপচর্চায় ও ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন প্রসাধনি এবং খাবারে বাড়তি রিফ্রেশমেন্ট তৈরি করে পুদিনা পাতা।

(২০) শলুক

শলুক মসলা এর ছবি
শলুক মসলা এর ছবি

শলুক আম্বেলিফেরি গোত্রভুক্ত অপ্রধান বীজ জাতীয় সুগন্ধি মসলা। খাবারের ঘ্রাণ ও স্বাদ বাড়াতে এর জুড়ি নেই। কনফেকশনারি ও রন্ধনশালার দৈনন্দিন খাবার তৈরিতে এটি ব্যবহার হয়ে থাকে। বিশেষ করে শীতকালে শলুকের পাতা ধনিয়া পাতার মতোই ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়। 

নাম ও তালিকা সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট নাম’ (inbangla.net/nam) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট নাম

নাম ও তালিকা সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts