Skip to content
যোনি কালো হয় কেন

যোনি কালো হওয়া একটি স্বাভাবিক শারীরিক বৈশিষ্ট্য এবং এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। বংশগত ডিএনএ, হরমোনের পরিবর্তন, ত্বকের ঘর্ষণ, বয়স বৃদ্ধি, এবং জিনগত বৈশিষ্ট্য এর মধ্যে অন্যতম। এছাড়া, কিছু ক্ষেত্রে ত্বকের মেলানিন উৎপাদন বেশি হলে যোনি কালো হতে পারে। এটি স্বাস্থ্যের জন্য কোনো সমস্যা নয়।

কালো যোনি

যোনি কালো হয় কেন, এর কিছু সম্ভাব্য কারণ হলো-

  • জিনগত কারণ: প্রত্যেকের ত্বকের রঙ আলাদা হয়, এবং যৌনাঙ্গের চামড়ার রঙও জিনের ওপর নির্ভর করে। অনেক সময় এটি পরিবার থেকে পাওয়া বৈশিষ্ট্য হতে পারে।
  • হরমোনের পরিবর্তন: গর্ভাবস্থা, মাসিক চক্র, বা হরমোনাল ওষুধের ব্যবহারের ফলে মেলানিন নামক রঙ্গক বেশি উৎপন্ন হতে পারে, যা যোনির ত্বকের রঙ কালো করে।
  • ঘর্ষণ: টাইট পোশাক পরা বা শারীরিক ক্রিয়াকলাপের কারণে ত্বকে ঘর্ষণ হলে সেই অংশের রঙ কালো হতে পারে।
  • বয়স: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের রঙে পরিবর্তন আসতে পারে।
  • ত্বকের অবস্থা: কিছু ত্বকের অবস্থা, যেমন একান্থোসিস নিগ্রিকানস, যোনির ত্বক কালো করে দিতে পারে।
  • কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে যোনির ত্বক কালো হতে পারে।

যোনির কালো দাগ সাধারণত ক্ষতিকর নয়। যোনি কালো হওয়া সাধারণত চিন্তার কোনো কারণ নয়, যদি না এর সঙ্গে অন্য কোনো সমস্যা (যেমন চুলকানি, জ্বালাপোড়া) থাকে। যদি আপনার কোনো সন্দেহ বা অস্বস্তি হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

সাধারণত, যোনির কালো দাগ কোনো রোগের লক্ষণ নয়। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি একান্থোসিস নিগ্রিকানস নামক ত্বকের অবস্থার লক্ষণ হতে পারে। এছাড়াও, যদি কালো দাগের সাথে চুলকানি, ব্যথা বা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

যোনির কালো দাগ দূর করার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে, যেমন- অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা, লেবুর রস ব্যবহার করা, বা ত্বক উজ্জ্বলকারী ক্রিম ব্যবহার করা। তবে, এই উপায়গুলো ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

পড়ুন
কত বছর বয়সে মেয়েদের যোনির চুল গজায়?

সাধারণত, যোনির কালো দাগের সাথে চুলকানি বা ব্যথা হয় না। তবে, যদি কালো দাগের সাথে চুলকানি বা ব্যথা হয়, তাহলে এটি কোনো সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

যোনির কালো দাগের কারণে সাধারণত যৌন মিলনে কোনো সমস্যা হয় না। তবে, যোনি কালো হলে অনেকের জন্য তা লজ্জা বা অস্বস্তির কারণ হয় হয়। কিছু ক্ষেত্রে, যোনির কালো দাগের কারণে আত্মবিশ্বাস কমে যেতে পারে এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে। তাই সবাই যোনি কালো হলে তা সাদা করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে থাকেন।

যদি যোনির কালো দাগের সাথে চুলকানি, ব্যথা, অস্বাভাবিক গন্ধ বা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়াও, যদি কালো দাগ নিয়ে কোনো উদ্বেগ থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

টাইট পোশাক পরিহার করা, নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, এবং ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে যোনীর কালো দাগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

বয়ঃসন্ধি, গর্ভাবস্থা বা মেনোপজের মতো হরমোনের পরিবর্তনের কারণে যোনির ত্বকের রঙ কালো হতে পারে।

FAQs

প্রশ্নঃ যোনি কালো হলে কি এটি কোনো রোগের লক্ষণ?

সাধারণত না। যোনির কালো হওয়া প্রাকৃতিক এবং হরমোন, জিন, বা ঘর্ষণের কারণে হতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি সমস্যার লক্ষণ হতে পারে-

  • ইনফেকশন: যদি রঙের পরিবর্তনের সঙ্গে চুলকানি, দুর্গন্ধ, বা অস্বাভাবিক স্রাব থাকে, তাহলে এটি ইনফেকশন (যেমন ফাঙ্গাল বা ব্যাকটেরিয়াল) হতে পারে।
  • ত্বকের রোগ: লাইকেন স্ক্লেরোসাস বা একজিমার মতো রোগে যোনির ত্বকের রঙ বদলাতে পারে।
  • হরমোনাল সমস্যা: পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) এর মতো অবস্থায় যোনির ত্বক কালো হতে পারে।

যদি শুধু রঙ কালো হয় এবং অন্য কোনো লক্ষণ না থাকে, তাহলে এটি চিন্তার কারণ নয়।

পড়ুন
ওভারিয়ান সিস্টঃ কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

প্রশ্নঃ হরমোনের পরিবর্তন কীভাবে যোনির কালো হতে প্রভাব ফেলে?

হরমোন শরীরের মেলানিন উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে, যা ত্বকের রঙের জন্য দায়ী।

  • গর্ভাবস্থা: এস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন বেড়ে গেলে মেলানিন বাড়ে, ফলে যোনি বা স্তনের চারপাশের ত্বক কালো হয়।
  • মাসিক চক্র: হরমোনের ওঠানামার কারণে কিছু সময় যোনির ত্বকের রঙে সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
  • জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল: এতে থাকা হরমোন যোনির ত্বকের পিগমেন্টেশন বাড়াতে পারে।
  • মেনোপজ: হরমোন কমে গেলে যোনির ত্বক পাতলা বা গাঢ় হতে পারে।

এটি শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তবে অস্বাভাবিক পরিবর্তন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

প্রশ্নঃ যোনির চামড়া কালো হওয়া কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?

না, শুধু যোনির কালো হওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। এটি একটি প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য। তবে-

  • যদি এর সঙ্গে ব্যথা, জ্বালা, বা স্রাব থাকে, তাহলে এটি কোনো সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ঘর্ষণ বা চাপে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।

সুস্থ থাকতে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন এবং অস্বস্তি হলে ডাক্তার দেখান।

প্রশ্নঃ কোন খাবার বা জীবনযাত্রার কারণে কি যোনির রঙ পরিবর্তন হয়?

সরাসরি খাবারের সঙ্গে যোনির রঙের সম্পর্ক নেই, তবে জীবনযাত্রা প্রভাব ফেলতে পারে-

  • ঘর্ষণ: টাইট জিন্স বা সিন্থেটিক কাপড় পরলে যোনির ত্বক কালো হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ওজন: শরীরের ভাঁজে ঘর্ষণ বেশি হলে যোনির ত্বকের রঙ বদলাতে পারে।
  • পরিচ্ছন্নতা: ঘাম বা আর্দ্রতা জমলে যোনির ত্বকের জ্বালা বা রঙ কালো হতে পারে।
  • পুষ্টি: ভিটামিন সি বা ই সমৃদ্ধ খাবার (যেমন ফল) ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, তবে রঙ সরাসরি হালকা করে না।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ত্বকের সামগ্রিক অবস্থা ভালো রাখে।

প্রশ্নঃ যোনির রঙ পরিবর্তন হওয়া কি গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক?

হ্যাঁ, গর্ভাবস্থায় যোনির রঙ পরিবর্তন হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

  • হরমোন (এস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন) বাড়লে মেলানিন বেশি তৈরি হয়।
  • যোনি, স্তনবৃন্ত, বা পেটে কালো দাগ (লিনিয়া নিগ্রা) দেখা যায়।
  • রক্ত সঞ্চালন বাড়ার কারণেও ত্বক গাঢ় হতে পারে।
পড়ুন
মেয়েদের ওভারিয়ান সিস্টঃ লক্ষণ, কারণ এবং চিকিৎসার বিকল্প

প্রসবের পর এটি অনেকটা কমে যায়, তবে পুরোপুরি আগের মতো নাও হতে পারে।

প্রশ্নঃ পোশাকের ধরন কি যোনির চামড়ার রঙের ওপর প্রভাব ফেলে?

হ্যাঁ, পোশাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে-

  • টাইট পোশাক: জিন্স বা আঁটসাঁট অন্তর্বাস ঘর্ষণ বাড়ায়, ফলে ত্বক কালো হয়।
  • সিন্থেটিক কাপড়: এগুলো ঘাম শোষে না, ত্বক আর্দ্র থাকে এবং রঙ বদলাতে পারে।
  • সুতির পোশাক: বাতাস চলাচল ভালো হয়, ঘর্ষণ কমে।

ঢিলেঢালা, আরামদায়ক পোশাক পরলে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

প্রশ্নঃ যোনির রঙ পরিবর্তন হলে কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত?

নিচের লক্ষণ থাকলে ডাক্তার দেখান-

  • চুলকানি, জ্বালা, বা ব্যথা।
  • অস্বাভাবিক স্রাব বা দুর্গন্ধ।
  • ত্বকে ফোলা, লালভাব, বা ঘা।
  • হঠাৎ খুব বেশি রঙের পরিবর্তন।

শুধু রঙ কালো হলে চিন্তা না করে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।

প্রশ্নঃ জিনগত কারণে যোনির চামড়ার রঙ কতটা নির্ভর করে?

জিন অনেকটাই নির্ধারণ করে-

  • ত্বকের রঙ (ফর্সা, শ্যামলা) জিনের ওপর নির্ভর করে, যোনির ত্বকও এর ব্যতিক্রম নয়।
  • পরিবারে যদি কালো ত্বকের প্রবণতা থাকে, তাহলে এটি স্বাভাবিক।
  • মেলানিন উৎপাদনের হারও জিনগতভাবে নিয়ন্ত্রিত।

তবে পরিবেশ, হরমোন, বা জীবনযাত্রাও প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রশ্নঃ যোনির ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য কী কী করা যায়?

  • পরিচ্ছন্নতা: হালকা গরম পানি ও সুগন্ধিমুক্ত সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন।
  • আর্দ্রতা: ঘাম বা ভেজা কাপড় এড়িয়ে ত্বক শুষ্ক রাখুন।
  • ময়েশ্চারাইজার: প্রয়োজনে হালকা, নিরাপদ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • পোশাক: সুতির, ঢিলেঢালা অন্তর্বাস পরুন।
  • অতিরিক্ত রাসায়নিক এড়ানো: সুগন্ধি সাবান বা ক্রিম ব্যবহার করবেন না।
    নিয়মিত যত্নে ত্বক সুস্থ থাকে।

মানব শরীর ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট স্বাস্থ্য’ (inbangla.net/sastho) এর সাথেই থাকুন।

অনুরোধ!! পোষ্ট ভালো লাগলে প্লিজ উপরের শেয়ার আইকনে ক্লিক করে পোষ্টটি শেয়ার করে দিন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট স্বাস্থ্য

মানব শরীর ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts