Skip to content

 

সেচ কি/সেচ কাকে বলে? সেচের পানির মূল উৎস কোনটি?

সেচ কি, সেচ কাকে বলে, সেচের পানির মূল উৎস কোনটি

(১) সেচ কি/সেচ কাকে বলে?

আমরা কি জানি, জীবের দেহে কোন উপাদানটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণে থাকে? কোন বস্তুটি ছাড়া পৃথিবীতে কোনো জীবের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। কোন পদার্থটিকে জীবের জীবন বলা হয়? সবকটি প্রশ্নের উত্তরে বলব ‘পানি’। তাহলে জীব এ পানি কোথা থেকে পায়? গাছ একটি জীব, সে পানি পায় সেচ বা বৃষ্টি থেকে। যখন পানি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হয়, তখন তা সরানোর প্রয়োজন পড়ে, যাকে নিষ্কাশন বলে। এখন আমরা পানি সেচ ও পানি নিষ্কাশন সম্পর্কে আলোচনা করব।

সেচ কি: সেচ হল জমিতে ফসল ফলানোর জন্য কৃত্রিমভাবে মাটিতে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা। স্বল্প বৃষ্টি এবং অনাবৃষ্টির সময় পানির অভাবে ফসল উৎপাদন যাতে বাধাগ্রস্থ না হয় সেজন্য গাছের বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কৃত্রিমভাবে জমিতে এই পানি সরবরাহ করা হয়।

সেচ কাকে বলে: ফসলের গাছ বড় হওয়ার জন্য জমিতে কৃত্রিম উপায়ে পানি সরবরাহ করাকেই সেচ বলা হয়।

যেকোনো জীবের বাঁচার জন্য যেমন পানি অপরিহার্য, ফসলের জন্যও তেমনি। ফসল সুন্দরভাবে বাঁচার ও ফলন দেবার জন্য মাটি থেকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি ও পানিতে দ্রবীভূত পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করে। খরা, অনাবৃষ্টি বা অন্য কোনো কারণে ফসলের জমিতে পানির আবশ্যকতা দেখা দেয়। আধুনিক কৃষিব্যবস্থায় সেচ অত্যাবশ্যক।

চিত্র- খরা কবলিত জমির ফসল
চিত্র- খরা কবলিত জমির ফসল
চিত্র- স্বাভাবিক জমির ফসল
চিত্র- স্বাভাবিক জমির ফসল

(২) সেচের পানির মূল উৎস কোনটি?

সেচের পানির মূল উৎস কোনটি: সেচের পানি প্রধানত ২টি উৎস থেকে পাওয়া যায়, যথা- ক) ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি খ) ভূগর্ভস্থ পানি।

ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি: ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানির উৎস হচ্ছে নদী, খাল, বিল, হাওর, বাঁওড়, পুকুর প্রভৃতির পানি। বৃষ্টিপাতের কারণে প্রধানত এসব পানি জমা হয়।

ভূগর্ভস্থ পানি: পক্ষান্তরে, কূপ খনন করে বা নলকূপ দ্বারা ভূ-গর্ভের পানি উত্তোলন করে সেচ দেওয়া হয়। এ পানিকেই ভূ-গৰ্ভস্থ পানি বলে। ভূ-গর্ভস্থ পানির উৎস হচ্ছে বৃষ্টির পানি।

See also  মৃত্তিকা পানি কাকে বলে? মৃত্তিকা পানির গুরুত্ব ও মৃত্তিকা পানির শ্রেনিবিভাগ
চিত্র- ধানক্ষেতে সেচের পানির বিভিন্ন উৎস
চিত্র- ধানক্ষেতে সেচের পানির বিভিন্ন উৎস

(৩) পানি সেচের প্রয়োজনীয়তা

বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু এ বৃষ্টিপাত সবসময় কাজে লাগে না। ভাই বৃষ্টির উপর নির্ভর করে ফসল চাষাবাদ করলে সবসময় ভালো ফলন পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে বর্ষাকালে বেশি বৃষ্টি হলেও শীত মৌসুমে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে। এ ছাড়া দেশের পশ্চিমাঞ্চলে বর্ষাকালেও বৃষ্টিপাত কম হয়। ফলে পানির অভাবে ফসলের ফলন কম হয়। এ অবস্থায় ফসলের ফলন বাড়ানোর জন্য পানি সেচ দিতে হয়।

প্রতিটি ফসলের বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ে পানির চাহিদায় ভিন্নতা রয়েছে। আর এই চাহিদা অনুযায়ী কালে পানি সেচ দিতে হয়।

চিত্র- শিকড়ের সাহায্যে পানি পরিশোষণ
চিত্র- শিকড়ের সাহায্যে পানি পরিশোষণ

সেচের পানির উপকারিতা-

  1. উদ্ভিদ শিকড়ের সাহায্যে পানি পরিশোষণ করে। 
  2. উদ্ভিদ মাটি থেকে পানি পরিশোষণের সাথে পুষ্টি উপাদান আহরণ করে। 
  3. সেচের মাধ্যমে মাটির তাপমাত্রা ঠিক রাখা যায়।
  4. অণুজীবের কার্যকারিতা ও পুষ্টি উপাদানের সহজলভ্যতা বৃদ্ধি পায়।

(৪) অতিরিক্ত সেচ পানি নিষ্কাশন

জমিতে অতিরিক্ত পানি জমে থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হয়। জমি থেকে এই অতিরিক্ত পানি সরিয়ে ফেলাকেই পানি নিষ্কাশন বলে।

জমিতে অতিরিক্ত পানি জমলে গাছের শিকড় অঞ্চলে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়, ফলে অনেক গাছ মারা যায়।

বিভিন্ন উদ্ভিদ, গাছ ও ফসল যেমন- বিভিন্ন শস্য, সবজি, ফুল, ফল ইত্যাদি চাষাবাদ সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট চাষাবাদ’ (inbangla.net/casabad) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট কৃষি

পশু-পাখি পালন ও চাষাবাদ সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts