Skip to content

 

ছাত্র জীবনে প্রেম ভালোবাসা থেকে দূরে থাকা জরুরি কেন?

ছাত্র জীবনে প্রেম ভালোবাসা থেকে দূরে থাকা জরুরি কেন

নিম্নে ছাত্র জীবনে প্রেম ভালোবাসা থেকে দূরে থাকা জরুরি কেন? বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হলো-

ছাত্রজীবন শুধুমাত্র অধ্যয়ন করার জীবন! এই জীবনের একটাই লক্ষ্য থাকে- কী করে ভাল রেজাল্ট করা যায়। কী করে ভাল ছাত্র বা ছাত্রী হওয়া যায়।

একটা কথা মনে রাখবে, ছাত্রজীবনে প্রেম বা ভালবাসার গুরুত্ব অত্যাধিক বন্ধু বা বান্ধবী নির্বাচনে যেমন ভুল করতে নেই- তেমনি ছাত্রজীবনে কখনও প্রেম বা ভালোবাসার হাতছানিতে সাড়া দেওয়া উচিত নয়।

ছাত্রজীবনে প্রেম বা ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হলে তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী হয়ে পড়ে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেটা জীবনের সবচাইতে ব্যর্থতা বলে পরিগণিত হয়।


এখন তোমার বয়স হয়তো তের কিংবা চৌদ্দ অর্থাৎ এটা তোমার জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। এটাকে বলে বয়ঃসন্ধিক্ষণের সময়।

এই বয়সে একটি মেয়ে বা একটি ছেলে পূর্ণবয়স্ক মানুষ হবার সিঁড়ির প্রথম ধাপে পা রাখে।

তোমার অভিভাবক যদি সত্যিকারের সচেতন হয়ে থাকেন তাহলে এই বয়সী ছেলে বা মেয়ের প্রতি সুতীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা তাদের জন্যে অবশ্য কর্তব্য। কারণ-

এই সময়েই অধিকাংশ ছাত্র বা ছাত্রীর জীবনে সৃষ্টি হয় এক অন্যরকম অনুভূতির। বিশেষ করে যেসব ছাত্র বা ছাত্রী সহশিক্ষার মাধ্যমে অধ্যয়ন করে তাদের মধ্যেই এইসব বিষয় বেশি করে দেখা যায়। আবার সহশিক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও অনেক ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যেও এই অনুভূতির স্ফূরণ ঘটে। এই স্ফূরণের নাম অপরিণত প্রেম বা ভালোবাসা।

এই সময় যদি তোমাদের ঠিকমতো গাইড করে না রাখা যায় বা তোমাদের মধ্যে অভিভাবকদের গাইডেন্স না মানার প্রবণতা থাকে তাহলে অচিরেই তোমাদের পড়াশোনার সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন বাধাগ্রস্থ হয়।


কোন ছাত্র বা ছাত্রী যত ভাল বা মেধাবীই হও না কেন তারা পড়াশোনায় ফাঁকি দিয়ে এই নতুন স্ফূরণের চিন্তাতেই বিভোর থাকে! তুমি যত ভাল ছাত্র বা ছাত্রী হও না কেন। যে কোন ধরনের প্ররোচনায় পড়ে তুমিও অসময়ের প্রেমের ফাঁদে আটকা পড়তে পার।

যে কোন ধরনের ছেলে বা মেয়ের জীবনেও এমনটি ঘটতে পারে! এটা অস্বাভাবিক নয়। এতে ব্যস্ত বা অস্থির হবার কোন কারণ নেই এইসময় নিজেকে ব্যস্ত রাখ অন্যান্য গঠনমূলক কাজে! গৃহকর্মে সহায়তা কর মা-বাবা কিংবা বড় ভাইবোনকে।

কোন ধরনের প্ররোচনায় উদ্বুদ্ধ না হয়ে সেইসব বন্ধুদের বরং পরিত্যাগ কর।

মনে রাখতে হবে, উপযুক্ত গাইডেন্সের পাশাপাশি সঠিকপথে নিজেকে পরিচালিত করার কর্তব্যও রয়েছে তোমার।

একটি কথা সবসময় তোমাকে মনে রাখতে হবে, ছাত্রজীবন শুধুমাত্র অধ্যয়ন করার জীবন। এই জীবনের একটাই লক্ষ্য থাকে কী করে ভাল রেজাল্ট করা যায়। কী করে ভাল ছাত্র বা ছাত্রী হওয়া যায়।

ছাত্রজীবনে প্রেম বা ভালোবাসা থেকে দূরে থাকার গুরুত্ব অত্যাধিক। বন্ধু বা বান্ধবী নির্বাচনে যেমন ভুল করতে নেই- তেমনি ছাত্রজীবনে কখনও প্রেম বা ভালোবাসার হাতছানিতে সাড়া দেওয়া উচিত নয়।


ছাত্রজীবনে প্রেম বা ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হলে তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী হয়ে পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেটা জীবনের সবচাইতে ব্যর্থতা বলে পরিগণিত হয়।

ছাত্রজীবনে সব ছাত্র বা ছাত্রীকেই নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয় তাদের অভিভাবকদের ওপর। তারাই এইসব ছাত্র বা ছাত্রীর পড়াশোনার যাবতীয় খরচ যোগান। সুতরাং একজন উপযুক্ত ছাত্র কখনও চাকরি করবে না।

কারণ তার পড়ালেখার খরচ যোগাবে তার পরিবার। এই সময়ে যদি সেই ছাত্র কোন মেয়েকে ভালবাসে বা কোন ছাত্রী কোন ছেলেকে ভালবাসে তবে তাদের সেই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হবার কোন কারণ নেই।

সবচেয়ে বড়ো কথা একটি নন ম্যাট্রিক কোন ছেলে বা মেয়ের সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না এই ছেলে বা মেয়ে ভবিষ্যতে কোন সঠিক পথে যেতে পারে। বা তার ভবিষ্যৎ জীবন কতটা উজ্জজ্ঞল বা অন্ধকারে ঢাকা।

সুতরাং কোন বাবা মা-ই চাইবেন না স্কুল পড়ুয়া কোন ছেলের সাথে নিজের মেয়ের বিয়ে দিতে।

ছেলেদের ক্ষেত্রে সে যত ভাল ছাত্রই হোক না কেন, তার মধ্যে একধরনের নৈরাশ্য দানা বাঁধতে থাকে। পড়াশোনা তখন তার কাছে একটা তুচ্ছ বিষয় বলে পরিগণিত হয়। ধীরে ধীরে সে নিজেকে ধাবিত করতে থাকে জীবনের অন্ধকার পথের দিকে। বিভিন্ন নেশার মাধ্যমে সে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে উজ্জজ্ঞল ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় রাস্তা থেকে।

আবার অনেকে এই বয়সেই আবেগের তাড়নায় পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেলে!

সমাজের একধরনের কুৎসিত মানসিকতার লোক আছে যারা এইসব বিষয়ে উৎসাহ প্রদান করে। তখন ঘটে যায় আরেক বিপদ, কারণ তখন সেই ছেলে বা মেয়ের জীবন এক অনিশ্চয়তার বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে যায়।

যে ছেলে বা মেয়ে তখন সত্যিকারভাবেই উপযুক্ত নয়- তারা বিয়ের পর কী করবে, কোথায় থাকবে, কেমনভাবে জীবনযাপন করবে এগুলোর চিন্তায় বিভোর হয়ে পড়ে৷

আমার দেখা এমন ছেলে মেয়েকেও চিনি যারা অল্পবয়সে এইরম ভেগে গিয়ে বিয়ে করেছে। পরবর্তীতে সেই মেয়েকে ফেলে এসেছে অন্ধকার জগতে। একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় জীবন ফেলে রেখে মেয়েটি হয়তো অন্ধকার জগতে হাজারো পুরুষের মনোরঞ্জন করছে সামান্য প্রেমের মাসুল দিতে গিয়ে।

আমি এমন অনেক ভাল ছাত্র বা ছাত্রী দেখেছি প্রেমে পড়ে যারা নিজেদের উজ্জজ্ঞল আলোকে উদভাসিত পথ থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের উজ্জজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিমিষের মধ্যে পর্যবসিত হয়েছে ব্যর্থতার অন্ধকারে।


আমার প্রতিবেশী একটি মেয়ের কথা এই প্রসঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি।

সুপ্তি নামের এই মেয়েটি এসএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ডের মেধাতালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিল। এইচএসসি পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছিল পঞ্চম। অংকে তার মার্ক এতোটাই ভাল ছিল যে, সবাই তাকে অংক নিয়েই পড়তে বলে। পরবর্তীতে সুপ্তি ইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যাথমেটিকসে অনার্স নিয়ে ভর্তি হয়েছিল। সামনে ছিল তার উজ্জজ্ঞল ভবিষ্যৎ।

কিন্তু প্রেমের অদৃশ্য টানে আজ সেই ভবিষ্যৎ হয়ে গেছে অন্ধকারে নিমজ্জিত।

আজ সে একজন ননম্যাট্রিক অশিক্ষিত ছেলের ঘরনি।

অর্থনৈতিক দিক থেকেও যে ছেলে সাবলম্বি নয়, হওয়া সম্ভবও নয়। কারণ, তার পারিবারিক অবস্থানও একেবারে নিচের দিকের কাতারে।

সুপ্তি নামের এই মেয়েটির পড়াশোনায় ইতি ঘটেছে শুধুমাত্র প্রেমের ডাকে সাড়া দিয়ে অকালে বিয়ে করার জন্যে। পড়াশোনা শেষ করার আগেই সুপ্তিকে দিতে হয়েছে চরম মূল্য।

এখন আর তার মধ্যে পড়াশোনার প্রতি সেই কমিটমেন্ট নেই। অথচ সমাজ বা সংসারকে দেবার মতো তার মধ্যে অনেককিছুই ছিল।


আমাদের দেশে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অল্প বয়সে বিয়ের ঘটনা ঘটে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের কারণে। মানুষের জীবনে এমন একটা বয়স্ থাকে যে বয়সে তার কাছে পৃথিবীটা রঙিন এক বেলুন বলে মনে হয়।

কিন্তু সে জানে না বা বুঝেও বুঝে না এই বেলুন বাস্তবতার এক খোঁচাতেই চুপসে যেতে পারে! এই বয়সে কোন পরিণতির ধার তারা ধারে না। মনে করে বিয়েতেই বুঝি তাদের শান্তি : বিয়েটাই বুঝি প্রেমের সার্থক পরিণতি!

আবার অনেক ছেলে মেয়ে আছে যারা স্কুল জীবনেই একাধিক ছেলে বা মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এতে করে পরস্পরের মধ্যে একধরনের প্রতিহিংসার সৃষ্টি হয়।

ফলশ্রুতিতে বন্ধুত্বের মধ্যে হিংস্রতা দেখা দেয়। খুনোখুনি পর্যন্ত ঘটে যায় এই ধরনের বিষয়কে কেন্দ্র করে!


আমার স্কুলের একটি মেয়ে (নাম প্রকাশ করতে পারছি না বলে দুঃখিত)। ক্লাস সিক্স থেকে আমার স্কুলে সে ভর্তি হয়েছে। ক্লাসে সে ফার্স্ট গার্ল। যে কোন বিষয় সে খুব সহজে বুঝতে পারে।

সে যখন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী তখন দশম শ্রেণীর একটি ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। যেহেতু আমার স্কুলটা কো-এডুকেশন। এই কারণে এসব বিষয়ে প্রতিটি শিক্ষককে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হয়। মেয়েটির সম্পর্কও আমাদের কাছে ধরা পড়ে যায়। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মেয়েটিকে বোঝাতে চেষ্টা করি। কিন্তু মেয়েটি বুঝতে চায় না।

তার পরিবারকে বিষয়টা জানালে তারা প্রথম প্রথম বোঝাতে চেষ্টা করে। মারধোর করে। কিন্তু মেয়েটি কোন কিছুতেই বুঝতে চায় না। বাড়ির কড়া শাসন উপেক্ষা করে ছেলেটির সাথে মিলিত হয় বিভিন্ন পার্কে বা বন্ধুদের কোন ফাঁকা বাড়িতে।

মেয়েটির পরিবারের লোকজন বিষয়টা নিস্পত্তির স্বার্থে সবচাইতে খারাপ কাজটি করে বসে। তারা মেয়েটির পড়াশোনা বন্ধ করে চটজলদি এক আত্মীয়ের ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়।

মেয়েটির উজ্জজ্ঞল একটা ভবিষ্যতের ওখানেই ইতি ঘটে। বর্তমানে মেয়েটি চার সন্তানের জননী।

অল্পবয়সে বিয়ে এবং বাচ্চার মা হবার কারণে স্বাস্থ্যগত দিক থেকে সে হয়ে পড়েছে দুর্বল। রোগ তার লেগেই আছে। সন্তানরাও খুব একটা সুস্থ বা সবল নয়। সংসারে এইসব বিষয় নিয়ে সর্বদা তার অশান্তি বিরাজ করছে।

মাত্র কিছুদিন আগে আমার কাছে এসেছিল, তার বড়ো ছেলেটাকে আমার স্কুলে একটু কম খরচে ভর্তি করাতে। তার বর্তমান অবস্থা দেখে আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছি!

এই রকম ঘটনা শুধু একটা নয়, খুঁজলে অহরহ এইধরনের ঘটনা দেখা যাবে। আমাদের দেশে একজন মানুষকে প্রাপ্তবয়ষ্ক বলে তখনই স্বীকার করে নেয়া হয় যখন সে আঠার বছর বয়সী হয়।

এর কারণ হলো মানবিক পরিসংখ্যানে আঠারো বছরের আগে একজন মানুষের বুদ্ধিমত্তার বা নিজের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবার মতো পরিপূর্ণ ক্ষমতা অর্জিত হয় না বলেই ধরে নেয়া হয়৷


আমাদের দেশে একজন মানুষ ভোটার হবার যোগ্যতা অর্জন করে আঠারো বছর বয়স পুরো হলে!

সুতরাং তুমি যখন স্কুলের ছাত্র বা ছাত্রী তখন তার বয়স কখনই আঠারো বছর বা তার বেশি হতে পারে না। সুতরাং তুমি মানসিকভাবেই প্রাপ্তবয়স্ক নও। নিজের জীবনে প্রেম সংক্রান্ত বা বিয়ে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তুমি এখনই নিতে পার না।

সর্বোপরী তোমাকে মনে রাখতে হবে, ছাত্রজীবনে সব ছাত্র বা ছাত্রীকেই নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয় তাদের অভিভাবকদের ওপর। তারাই এইসব ছাত্র বা ছাত্রীর পড়াশোনার যাবতীয় খরচ যোগান। সুতরাং একজন উপযুক্ত ছাত্র কখনও চাকরি করবে না। কারণ তার পড়ালেখার খরচ যোগাবে তার পরিবার।

এই সময়ে যদি সেই ছাত্র বা ছাত্রী যদি কোন ধরনের অযাচিত ভালোবাসার ফাঁদে আটকা পড়ে তাহলে তাদের সেই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হবার কোন কারণ নেই ৷

সবচেয়ে বড়ো কথা একটি নন ম্যাট্রিক কোন ছেলে বা মেয়ের সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না এই ছেলে বা মেয়ে ভবিষ্যতে কোন পথে যেতে পারে। বা তার ভবিষ্যৎ জীবন কতটা উজ্জজ্ঞল বা অন্ধকারে ঢাকা।

সুতরাং কোন বাবা মা-ই চাইবেন না স্কুল পড়ুয়া কোন ছেলের সাথে নিজের মেয়ের বিয়ে দিতে। বরং সম্পর্কটা জানাজানি হয়ে গেলে এইসব ছেলে বা মেয়ের প্রেমে নেমে আসে কালো যবনিকার আবরণ : এতে করে ব্যাপক প্রভাব পড়ে উক্ত ছেলে বা মেয়ের ওপর। কারণ এই বয়সের একটা অন্ধ প্রেমের তাড়নায় তারা পরস্পরকে ভালবেসেছে। কোন ভাল চিন্তা তাদের চেতনায় নেই। সেই সময় যদি তারা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাহলে তার প্রভাব তো তাদের ছাত্রজীবনে পড়বেই।

অনেক ভাল ছাত্র বা ছাত্রীও এই প্রেম ভালোবাসার প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারে না। পরিণতিতে তাদের জীবনে নেমে আসে এক ভয়াবহ বিপর্যয়।


সুতরাং তুমি যদি সত্যিকার অর্থেই ভাল ছাত্র বা ছাত্রী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চাও তাহলে তোমার মন থেকে এই ধরনের অপ্রাপ্ত প্রেমের চিন্তা দূর করে দিতে হবে, তোমার মধ্যে এই বিষয়ের প্রতি একটা স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করতে হবে।

তোমাকে বুঝতে হবে, প্রতিটি বাবা-মা চান তাঁর ছেলেমেয়েরা যাতে সুখে থাকে, শান্তিতে থাকে। বাবা-মা বা শিক্ষক-শিক্ষিকা তোমাদের প্রেমে বাধা প্রদান করে এইজন্য যে, যাতে করে তোমাদের উজ্জজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত না হয়।

একটি কথা মনে রাখবে, তুমি যদি সার্থকভাবে ছাত্রজীবন সুন্দরভাবে শেষ করতে পার তাহলে জীবনে সত্যিকারভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে, আর তখন ভাল কোন সুন্দরী মেয়ে বা প্রতিষ্ঠিত কোন সুন্দর ছেলেকে আপন করে পেতে তোমাদের কোন বাধাই থাকবে না।

অভাব এলে ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালিয়ে যায় এই কথাটা আমি জীবনের নানা অভিজ্ঞতা থেকে জেনেছি।

তোমরা যারা ভাল ছাত্র বা ছাত্রী তাদের মধ্যে এই ধরণের সচেতনতা বোধ বৃদ্ধি করতে হবে যাতে করে তোমরা এই অপরিণত প্রেম বা ভালোবাসার অদৃশ্য হাতছানিতে সাড়া না দাও! তোমাদের উচিত এই ধরনের প্রেমের ডাকে সাড়া না দিয়ে নিজের পড়াশোনা সঠিকভাবে চালিয়ে যাওয়া!

মেয়েদের একটা বিষয়ে জেনে রাখা উচিত, তাদের বাবা মা পড়াশোনার শেষে একটা উপযুক্ত পাত্রের সাথেই তাদের বিয়ে দেবেন। এটাই নিয়ম। কিন্তু যদি মেয়েটি পড়াশোনা শেষ করার আগেই অপ্রাপ্ত প্রেমের হাতছানিতে সাড়া দিয়ে ফেলে তাহলে সে সত্যিই নিজের সর্বনাশ ডেকে আনবে।


আরেকটা কথা এই প্রসঙ্গে না বলে পারছি না। ‘সংসার ভাঙা বা বিয়ে ভাঙার একটা পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অধিকাংশ কেসই রয়েছে অল্পবয়সে বিয়ে বা প্রেমের বিয়ে সংক্রান্ত! এইসব বিয়ে অতি অল্পতেই ভেঙে যাবার সম্ভাবনা থাকে।

সুতরাং ছেলে বা মেয়ে উভয়কেই বলছি। ছাত্রজীবনে প্রেমের অশনী সংকেতে সাড়া না দিয়ে পড়াশোনায় মনোযোগী হও। তাহলেই তোমার পরিবার শান্তিতে থাকবে। তুমিও লাভ করবে পরীক্ষায় ভাল ফলাফল।

সবচাইতে বড়ো কথা- ছাত্রকালে প্রেম ভালোবাসা থেকে দূরে থাকা তোমার জন্যে, তোমার পরিবারের জন্য সবচাইতে মঙ্গলজনক।

[সূত্র: সেরাজুম মুনিরা মিতা]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net

Quality information to the point!View Author posts

You cannot copy content of this page