একটা যন্ত্রনাদায়ক পতঙ্গ হলো মশা। এরা খুব বিরক্তকর তাছাড়া নানান রকম রোগ জীবানু ছড়ায়। এ মশা অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হতে পারে। মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ফাইলেরিয়া, পীত জ্বর, জিকা ভাইরাস ইত্যাদি মারাত্মক রোগ হতে পারে।
স্প্রে,কয়েল, অ্যারোসল কোনকিছুতেই মশা তাড়ানোর সহজ নয়। তাছাড়া এগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। এ কারণে প্রাকৃতিক উপায়ে মশা তাড়ানোর ব্যবস্থা করা উচিত। চলুন তাহলে জেনে নেই প্রাকৃতিক উপায়ে মশা তাড়ানোর ১১টি উপায়।
নিম্নে মশা তাড়ানোর ১১ টি কার্যকরী উপায় তুলে ধরা হলো-
ক) লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহার
লেবু ছোট ছোট করে কেটে ভেতরের অংশে অনেকগুলো লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর ভেতর লবঙ্গের সম্পূর্ণ অংশ ঢুকাবেন শুধু মাথার দিকের অংশ বাইরে থাকবে। পরে লেবুর টুকরোগুলো প্লেটে করে ঘরের কোনায় কোনায় রেখে দিন। এতে করে কিছুদিন মশার উপদ্রব থেকে রেহাই পাবেন আপনি চাইলে এটি জানালার গ্রিলেও রাখতে পারেন। এতে করে মশা ঘরে ঢুকবে না।
খ) নিমের তেলের ব্যবহার
নিম গাছের মশা তাড়ানোর একটি বিশেষ গুণ রয়েছে। তাছাড়া নিমের তেল ত্বকের জন্যও বেশ ভালো। তাই নিমের তেল ব্যবহার করে আপনি একসাথে দুইটা উপকার পেতে পারেন। সমপরিমাণ নিমের তেল ও নারকেল তেল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন এতে করে দেখবেন মশা আপনার কাছে আসবে না। তাছাড়া ত্বকে এলার্জি ইনফেকশনজনিত সমস্যা থাকলে দূর হবে।
গ) পুদিনার ব্যবহার
একটি গ্লাসের অল্প পানি নিয়ে এতে ৫ থেকে ৬ গাছি পুদিনা খাবার টেবিলে রেখে দিন। ১৩ দিন পর পর পানি পাল্টিয়ে দেবেন। জার্নাল অফ বায়োরিসোর্স টেকনোলজির গবেষণার মতে পুদিনা পাতার রয়েছে মশা দূরে রাখার ক্ষমতা। শুধু মশা না অন্যান্য পোকামাকড়ও দূর করে।
তাছাড়া পুদিনা পাতা ছেঁচে পানিতে ফুটিয়ে নিন।পরে এই পানির ভাপ পুরো ঘরের ছড়িয়ে দিন। দেখবেন সব মশা পালিয়েছে। চাইলে পুদিনার তেলও গায়ে মাখতে পারেন।
ঘ) হলুদ বৈদ্যুতিক আলো
মশার উপদ্রব কমাতে চাইলে ঘরের বৈদ্যুতিক আলোটি হলুদ সেলোফানে জড়িয়ে দিন। ফলে হলুদ আলো হবে। দেখবেন মশা কমে গেছে। কারণ মশা হলুদ আলো সহ্য করতে পারে না।
ঙ) নিম পাতা পোড়ান
কয়লা বা কাঠ কয়লার আগুনে নিমপাতা পোড়ালে যে ধোঁয়া হয় তা মশা তাড়ানোর জন্য খুবই উপকারী।
চ) ফ্যান চালু রাখুন
মশারা খুব হালকা আর ফ্যানের স্পিড ঘণ্টায় প্রায় দুই মাইল। তাই আপনার বাসার যেসব স্থানে থেকে মশারা খুব সহজেই ঘরে প্রবেশ করে সেসব স্থানে মশাদের আগমনের সময়ে আপনার টেবিল ফ্যান বা পেডাল ফ্যানটি চালু রাখুন। এতে করে মশার হাত থেকে রক্ষা পাবেন আর গরমের দিন আরামও পাবেন।
ছ) কালো, নীল ও লাল কাপড় এড়িয়ে চলুন
মশারা কালো, নীল ও লাল কাপড় বেশি পছন্দ করে। তাই এসব পোশাক এড়িয়ে চলুন। আপনি অবাক হলেও এটাই সত্যি। কিছু কিছু প্রজাতির মশা রয়েছে যারা যারা গাঢ় রঙের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়। এ কারণে ঘর ঠান্ডা রাখুন এবং হালকা রঙের পোশাক পড়ুন।
জ) কর্পূরের ব্যবহার
কর্পূরের গন্ধ মশা একেবারে সহ্য করতে পারে না। আপনি যে কোন ফার্মেসিতে গিয়ে কর্পূরের ট্যাবলেট কিনতে পারেন। একটি 50 গ্রামের কর্পূরের ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিতে পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এরপর এটি ঘরের কোনায় রেখে দিন। তাৎক্ষণিকভাবে মশা দূর হয়ে যাবে। দুইদিন পর পর পানি পাল্টিয়ে দেবেন।
ঝ) সুগন্ধি ব্যবহার করুন
মশারা সুগন্ধি সহ্য করতে পারেনা। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শরীরে আতর, সুগন্ধি বা লোশন মেখে ঘুমাতে পারেন এতে মশা অনেক কম ধরবে।
ঞ) রসুনের স্প্রে করুন
মশা তাড়ানোর জন্য একটি কার্যকরী উপায় হচ্ছে রসুনের স্প্রে। ৫ ভাগ পানিতে ১ ভাগ রসুনের রস মেশান। মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে শরীরের যেসব স্থানে কামড়াতে পারে সেসব স্থানে স্প্রে করুন। এতে করে মশা সহজে কাছে আসবেনা।
ট) পানি জমিয়ে রাখবেন না
খেয়াল রাখবেন কোথাও যেন পানি জমে না থাকে। ঘরে আনাচে-কানাচে কিংবা উঠানে পানি জমে থাকলে মশারা বংশবিস্তার করতে পারে। তাই যেসব জায়গায় পানি জমে তা সরিয়ে ফেলুন। এতে মশারা বংশবিস্তার করতে পারবে না।
বন্ধুরা আজ এখানেই থাকলো। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।