Skip to content

লজ্জা/সংকোচ ও নার্ভাসনেস দূর করার উপায়

লজ্জা বা সংকোচ ও নার্ভাসনেস দূর করার উপায়

(১) লজ্জা/সংকোচ দূর করার উপায়

লজ্জা, ভয় এ দুই থাকতে নয়। এই দুটি আত্মবিশ্বাসের প্রতিবন্ধক।

লজ্জা বলতে এখানে বেহায়াপনা বা নির্লজ্জ আলেচরণে বুঝানো হচ্ছেনা, লজ্জা বলতে সংকোচকে বোঝাচ্ছি।

লাজুক লোকেরা চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারে না। তারা লোকের সামনাসামনি হতে ভয় পায়। লজ্জার সঙ্গে মনেও ভয় জড়িত।

লজ্জা কেন, না কিছু চাইলে আমার মান যাবে। কিন্তু দেহের শর্ত তোমায় প্রথমে, দেহের ক্ষুধা মিটোবার জন্যই কিছু চাইতেই হবে।

শিশু না কাঁদলে মা তাকে স্তন্যপান করায় না। এমনকী যে শিশু নিজে থেকে কিছু চায় না মা তাকে ঠিক সময় খেতে দিতে ভুলে যায় অথবা খেতে দিলেও তার প্রয়োজন মত দেয় না।

অলিভার টুইস্ট অনাথ আশ্রমে বরাদ্দের চেয়ে আর একটু বেশী চেয়েছিল তার জন্য তাকে হেনস্তা হতে হয়েছিল। কিন্তু বাস্তব জগতে যে কিছু চাইনা তাকে নিজে থেকে লোকে কিছু দিতে চায় না। কারণ এটা মনে ভাবা অন্যায় নয় অযাচিতভাবে লোক যখন অনেক কিছু পেয়ে যায় তখন সে তার মর্যাদা দেয় না। সেগুলো অনাদরে অবহেলায় পড়ে থাকতে পারে।

ভালবাসার পাত্রকে আমরা না চাইতে অনেক কিছু দিয়ে থাকি, কিন্তু সেই উপহার অনেক সময় অবহেলায় পড়ে থাকে। এমনকী দেহের কামনা মেটাতে গেলেও নারীর অথবা পুরুষের একজনকে আগ বাড়িয়ে এসে চাইতে হয়। তা নাহলে মুখে লজ্জা থাকলে পেটের ও মনের খিদে থেকেই যায়।

(২) নার্ভাসনেস দূর করার উপায়

নার্ভাসনেসের ঠিক বাংলা হয় না। নার্ভাসনেস মানে হলো অল্পতে ঘাবড়ে যাওয়া। আমরা জানি বহু মানুষই এক একটা পরিস্থিতিতে নার্ভাস হয়ে পড়ে। তখন তাঁর হাত-পা ঘামে। রগ দপদপ করে। চোখে অনেকে ঝাপসা দেখেন। কারও কারও গা বমি বমি করে। মাথা ঘোরে। অনেক জানা জিনিসও ভুলে যান।

See also  মনের শক্তি বাড়াতে অটো সাজেশান পদ্ধতি

সাধারণতঃ পরীক্ষা হলে অনেক ছাত্রছাত্রী নার্ভাস হয়ে পড়ে। অনেকে পরীক্ষার আগে পেট খারাপ হয়। জ্বর এসে যায়। জানা জিনিষ মনে আসে না।

চাকরির ইন্টরভিউ দিতে এসে অনেকে জানা জিনিষ গুছিয়ে বলতে পারে না। কেউ কেউ তোতলাতে থাকে।

আর একধরনের নার্ভাসনেস আসে নতুন অভিনেতা ও আনাড়ি বক্তাদের। স্টেজে উঠে জনতার দিকে তাকালেই তাঁরা ঘাবড়ে যান। তাঁদের পাঠ মনে পড়ে না। বক্তৃতার পয়েন্ট মনে আসে না। একই বক্তব্য বার বার রিপিট করন। খেই হারিয়ে ফেলেন। একে বলে স্টেজ ভীতি বা stage fright।

বিশাল ব্যক্তিত্বের লোকও অনেক সময় ঘাবড়ে যায়। কিন্তু জনতার মুখোমুখি না হয়ে তারা দিব্যি বক্তৃতা দিয়ে যেতে পারে।

কোন বিরাট সাফল্যের মুখোমুখি হলেও লোকে নার্ভাস হয়। বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় যিনি প্রথম হন তখন আনন্দে প্রায়ই তিনি কেঁদে ফেলেন। কান্না ইমোশনেরই প্রকাশ। প্রত্যাশার সাফল্যে অল্পক্ষণের জন্য তাঁকে স্বাভাবিক ভাবে পরিচালিত করতে ব্যর্থ হয় উৎসবের প্রবল আনন্দে লোকে পাগলের মত নাচতে থাকে এবং স্বল্পকালের জন্য হিস্টরিক আচরণ করে।

নার্ভাসনেস কাটানোর প্রধান মাধ্যম হচ্ছে বাবা মা। একমাত্র বাবা-মাই পারে তার সন্তানের মধ্যে থেকে নার্ভাসনেস কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে সাহায্য করতে। ছোটবেলা থেকে শিশুদের আবৃত্তি নাটক ও নাচ-গানে অংশ নিতে দিতে হবে যাতে তারা স্টেজ ফ্রি হয়।

যারা এখন লোকসমক্ষে কিছু বলতে গেলে লজ্জিত হয়ে পড়ো তাদের সবসময় কল্পনা করে নেওয়া উচিত একঘর লোকের সামনে সে কিছু না কিছু বলছে। নার্ভাসনেস কাটিয়ে ওঠার জন্যে তোমাদের বয়সীদের উচিত বাড়িতে দরজা বন্ধ করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অভিব্যক্তি ও সংলাপ প্র্যাকটিস করা। স্কুল কলেজে যারা ভাল বক্তা হতে চাও তাদেরও এইভাবে প্র্যাকটিস করতে হবে।

অনেকে ইংরাজিতে বক্তৃতা দিতে গেলে নার্ভাস হয়ে পড়ে। একমাত্র ক্রমাগত অনুশীলন দ্বারাই এই বিষয়ে ব্যুৎপত্তি অর্জন করতে হয়। কিন্তু নিজেকে অন্যদের চেয়ে বেশী চালাক ভাবা যেমন বোকামির পরিচয় তেমনি অন্যদের তুলনায় নিজেকে বোকা ভাবা আরও বোকামির পরিচয়। আলাদা করে কিছু বলতে যাবার আগে প্রশ্ন করলে ধীরে ধীরে তোমার নার্ভাস ভাবটা কাটবে।

Leave a Reply

nv-author-image

শাহরিয়ার হোসেন

আমি শাহরিয়ার হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। বর্তমানে আমি একজন ফুল-টাইম ব্লগার এবং ডিজিটাল কনটেন্ট ক্রিয়েটর। আমি প্রতিনিয়ত মানুষের জন্য উপকারী নতুন কিছু লেখার চেষ্টা করি। আশা করি, সবাই আমাকে আপনাদের দোয়ায় রাখবেন। ধন্যবাদ।View Author posts