অনেক ভাই/বোন আছেন যারা গুগলে সার্চ করে থাকেন যেমন- azan in bangla, azan bangla, আজান বাংলা, আজান বাংলা উচ্চারণ, আযান বাংলা, আজান আরবি, আযানের দোয়া, azaner dua, আজানের দোয়া, azaner dua bangla, আযানের জবাব, azaner jobab, azan er dua, আজানের জবাব কিভাবে দিবো? ইত্যাদি বিষয়, তো তারদের জন্যই আজকের এই পোষ্টটি। আপনারা শেষ অবধি পড়লে উপকৃত হবেন ইংশাআল্লাহ।
(১) আজান শব্দের অর্থ কি?
আযান আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো ডাকা, আহবান করা, ঘোষণা করা।
শরিয়তের পরিভাষায় নির্ধারিত আরবি বাক্যসমূহের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে উচ্চকন্ঠে নামাযে আহবান করাকে আযান বলে।
আযান ইসলামের প্রতীক। আযানের ধ্বনি শুনে মুসলমানেরা সালাতের প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে। মুসলমানদের কাছে আযানের গুরুত্ব অপরিসীম। সালাতে আযান ও ইকামত দেওয়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। মুয়াক্কাদা অর্থ যা পালনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
সালাত ফরয হওয়ার পর পবিত্র মক্কা নগরীতে আযান ছাড়াই সালাত পড়া হতো। প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে তথায় মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদে মুসলমানদের সালাতে অংশগ্রহণের জন্য একত্রিত করতে আযানের প্রচলন হয়।
আযানের শব্দগুলো অহীর মাধ্যমে প্রাপ্ত। ইসলামের প্রথম মুয়াযযিন ছিলেন হযরত বেলাল (রা.)। আযানের বহু গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে।
মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) … তালহা ইবনু ইয়াহইয়ার চাচা থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন,
“আমি (একবার) মু’আবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ানের (রাঃ) কাছে ছিলাম। মু’আযযিন এসে তাকে সালাত (নামায/নামাজ) এর জন্য ডাকল। মু’আবিয়া (রাঃ) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন মুয়াযযিনদের ঘাড় সকলের চেয়ে লম্বা হবে (অর্থাৎ তাদেরকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করা হবে।)।”
(সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৭৩৮ নং)
কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ)… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
“যখন সালাতের আযান দেয়া হয় তখন শয়তান বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পিছন ফিরে দৌড় দেয়, যাতে সে আযানের ধ্বনি শুনতে না পায়। আযান শেষ হলে আবার ফিরে আসে। আর যখন ইকামাতের তাকবীর বলা হয় তখন আবার পিছন দিকে ফিরে দৌড় দেয়। ইকামাত শেষ হলে ফিরে আসে এবং মানুষের অন্তরে ওয়াসওয়াসা (ধোঁকা) দেয়। সে তাকে এমন সব জিনিসের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যা সে ইতিপূর্বে মনেও করেনি। ফলে সে কয় রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করল তা ঠিক মনে করতে পারে না।”
(সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৭৪৫ নং)
(২) আজান বাংলা উচ্চারণ/azan in bangla
নামাযের সময় হলে পূতপবিত্র হয়ে কোনো উঁচু স্থানে কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে (দুই কানের মধ্যে শাহাদাত আঙুলদ্বয় প্রবেশ করিয়ে) উঁচুস্বরে আযানের নিম্নোক্ত বাক্যগুলো থেমে থেমে উচ্চারণ করতে হয়।
ক্রমিক | আজান বাংলা উচ্চারণ | আজান বাংলা অর্থ | আবৃত্তি |
১ | আল্লাহু আক্বার্ | আল্লাহ মহান | ৪ বার |
২ | আশ্হাদু-আল্ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ | আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই | ২ বার |
৩ | আশ্হাদু-আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ্ | আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসুল | ২ বার |
৪ | হাইয়া আলাস্ সালাহ্ | এসো সালাতের দিকে | ২ বার |
৫ | হাইয়া আলাল্ ফালাহ্ | এসো সফলতার দিকে | ২ বার |
৬ | আল্লাহু আকবার্ | আল্লাহ মহান | ২ বার |
৭ | লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ | আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই | ১ বার |
বিশেষ দ্রষ্টব্য: শুধু ফজরের আজানে ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ দুই বার বলার পরে “আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম” (অর্থ: ঘুম হতে নামাজ উত্তম) বাক্যটি ২ বার বলতে হয়। এর পর যথারীতি অন্যন্য ওয়াক্তের আজানের মত করে শেষ হয়।
(৩) আজান আরবি/আযান আরবি
আজান আরবি | আজান বাংলা উচ্চারণ | আজান বাংলা অর্থ |
اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ | আল্লা-হু আকবার আল্লা-হু আকবার | আল্লাহ সর্ব শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ সর্ব শ্রেষ্ঠ |
اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ | আল্লা-হু আকবার আল্লা-হু আকবার | আল্লাহ সর্ব শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ সর্ব শ্রেষ্ঠ |
أَشْهَدُ أَن لاَّ إلَهَ إِلاَّ اللهُ | আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ | আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই |
أَشْهَدُ أَن لاَّ إلَهَ إِلاَّ اللهُ | আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ | আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই |
أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ | আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লা-হ | আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর রসূল |
أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ | আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লা-হ | আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর রসূল |
حَيَّ عَلَى الصَّلاَةِ | হাইয়া ‘আলাছ ছলা-হ’ | ছলাতের জন্য এসো |
حَيَّ عَلَى الصَّلاَةِ | হাইয়া ‘আলাছ ছলা-হ’ | ছলাতের জন্য এসো |
حَيَّ عَلَى الْفَلاَحِ | হাইয়া ‘আলাল ফালা-হ | কল্যাণের জন্য এসো |
حَيَّ عَلَى الْفَلاَحِ | হাইয়া ‘আলাল ফালা-হ | কল্যাণের জন্য এসো |
اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ | আল্লা-হু আকবার – আল্লা-হু আকবার | আল্লাহ সর্ব শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ সর্ব শ্রেষ্ঠ |
لآ إلَهَ إِلاَّ اللهُ | লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ | আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই |
ফজরের আযানে, حَيَّ عَلَى الْفَلاَحِ (হাইয়া ‘আলাল ফালা-হ) দুই বার বলার পরে, নিম্নবর্নিত ২ টা বাক্য বেশি ব্যবহৃত হয়-
اَلصَّلاَةُ خَيْرٌ مِّنَ النَّوْمِ | আসস্বলা-তু খাইরুম মিনান্ নাওম | ঘুম থেকে ছলাত উত্তম |
اَلصَّلاَةُ خَيْرٌ مِّنَ النَّوْمِ | আসস্বলা-তু খাইরুম মিনান্ নাওম | ঘুম থেকে ছলাত উত্তম |
(৪) আযান দেওয়ার নিয়ম/আজান কিভাবে দেয়?
- মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে আযান দেবে। আর ইকামত দেবে মসজিদের ভেতরে দাঁড়িয়ে।
- যার গলার আওয়াজ ভালো এবং আযানের জন্য কোন বিনিময় চান না, মুয়াযযিন হওয়ার জন্য তারই অগ্রাধিকার।
- আযানের পূর্বে ওযু করে নেওয়া সুন্নাত (তিরমিযী)। তবে ওযু ছাড়াও আযান দেওয়া জায়েয।
- অতঃপর কাবা শরীফের দিকে মুখ করে দাঁড়াবে। (তিরমিযী)
- দুই আঙুল দুই কানের ছিদ্রের মধ্যে ঢুকিয়ে নেবে। তবে কোন আঙুল ঢুকাবে তা হাদীসে উল্লেখ নেই। অতএব যেকোন আঙুল ঢুকানো যায়।
- প্রতিবারই ‘হাইয়্যা আলাস-সালাহ’ বলার সময় মুখমণ্ডল ডান দিকে এবং ‘হাইয়্যা আলফালাহ’ বলার সময় মুখমণ্ডল বামদিকে ঘুরাবে, তবে দেহ ঘুরাবে না। (আবু দাউদ: ৫২০)।
- উঁচু স্থানে (বা মিনারায়) দাঁড়িয়ে আযান দেওয়া উত্তম। (আবু দাউদ)
- আউয়াল ওয়াক্তে আযান দেবে, দেরি করবে না।
- অতঃপর সাধ্যমতো উচ্চৈঃস্বরে জোরালো কণ্ঠে ধীর ও শান্তভাবে উপরে বর্ণিত শব্দে আযান দেবে।
- আজানের পর সহিহ্ হাদীসে উল্লিখিত আজানের দরুদ ও দোয়া পাঠ করা।
(৫) আজানের জবাব/azaner jobab
যারা আজান শুনবেন তাদের জন্য আজানের জবাবে মু’আযযিনের অনুরূপ বলা মুস্তাহাব।
আজানের জবাব দেওয়ার পদ্ধতি হলো- মুয়াজ্জিন প্রত্যেকটি বাক্য বলে থামার পর শ্রোতা ওই বাক্যটি নিজেও অনুরূপভাবে বলবে। কিন্তু মুয়াজ্জিন ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময় শ্রোতা ‘লা হাওলা ওয়া লা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলবে। এটাই বিশুদ্ধ অভিমত।
ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদূরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে,
“রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন তোমরা আযান শুনবে তখন মু-আযযিন যা বলে তাই বলবে।”
(সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৭৩৪ নং)
ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) ….. উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুওয়াযযিন যখন “আল্লাহু আকবার, আল্লা-হু আকবার” বলে তখন তোমাদের কোন ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে তার জবাবে বলেঃ “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার”। যখন মুওয়াযযিন বলে “আশহাদু আল লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ” এর জবাবে সেও বলেঃ “আশহাদু আল লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ”। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্ল-হ” এর জবাবে সে বলেঃ “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্ল-হ”। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ “হাইয়্যা আলাস সলা-হ” এর জবাবে সে বলেঃ “লা-হাওলা ওয়ালা- কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ”। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ “হাইয়্যা ’আলাল ফালা-হ” এর জবাবে সে বলেঃ “লা- হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ”। অতঃপর মুওয়াৰ্যযিন বলেঃ “আল্লা-হু আকবার, আল্লাহু আকবার” এর জবাবে সে বলেঃ “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার”। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ “লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ” এর জবাবে সে বলেঃ “লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ”। আযানের এ জবাব দেয়ার কারণে সে বেহেশতে যাবে।”
(সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৭৩৬ নং)
(৬) আজানের দোয়া/azaner dua
মুহাম্মাদ ইবনু সালামা আল মুরাদী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছেন,
“তোমরা যখন মু’আযযীনকে আযান দিতে শুনবে, তখন সে যা বলে তাই বলবে। তারপর আমার ওপর দুরূদ পাঠ করবে। কারণ যে আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার বিনিময়ে তার ওপর দশবার রহমত নাযিল করেন। পরে আল্লাহর কাছে আমার জন্য ওসীলার দুআ করবে। ওসীলা হল জান্নাতের একটি বিশেষ স্থান, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কোন এক বান্দাকে দেয়া হবে। আমি আশা করি যে, আমিই হব সেই বান্দা। যে আমার জন্য ওসীলার দুআ করবে, তার জন্য আমার শাফাআত ওয়াজিব হয়ে যাবে।”
(সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৭৩৫ নং)
আযান শেষ হলে নিম্নোক্ত দরুদ ও দোয়া পাঠ করতে হয়।
ক) সহিহ্ হাদিসে বর্ণিত আজানের দোয়া-১
আযানের দোয়া: আল্লাহুম্মা রববা হাজিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাহ, ওয়াস সালাতিল কাইমাহ, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদিলাহ, ওয়াবআছহু মাকামাম মাহমুদানিল্লাজি ওয়াআদতাহ।
আলী ইবনু আইয়্যাশ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“যে ব্যাক্তি আযান শুনে দু’আ করেঃ
আরবি-
اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ
উচ্চারণ-
আল্লাহুম্মা রববা হাজিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাহ, ওয়াস সালাতিল কাইমাহ, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদিলাহ, ওয়াবআছহু মাকামাম মাহমুদানিল্লাজি ওয়াআদতাহ।
অর্থ-
হে আল্লাহ-এ পরিপূর্ণ আহবান ও সালাতের প্রতিষ্ঠিত মালিক, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ওয়াসীলা ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী করুন এবং তাঁকে সে মাকেমে মাহমূদে পৌছিয়ে দিন যার অঙ্গিকার আপনি করেছেন।
কিয়ামতের দিন সে আমার শাফা’আত লাভের অধিকারী হবে।”
(সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৮৭ নং)
খ) সহিহ্ হাদিসে বর্ণিত আজানের দোয়া-২
আজানের দোয়া: আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা-ল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু রাজিতু বিল্লাহি রাব্বা ওয়া বি মুহাম্মাদিন রাসুলা ওয়া বিলইসলামি দীনা।
মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যে ব্যাক্তি মু-আযযিনের আযান শুনে নিম্নের দুঁআটি পাঠ করে তার গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়ঃ
আরবি-
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا
উচ্চারণ-
আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা-ল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু রাজিতু বিল্লাহি রাব্বা ওয়া বি মুহাম্মাদিন রাসুলা ওয়া বিলইসলামি দীনা।
অর্থ-
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসুল। আমি সন্তুষ্ট আল্লাহকে রব হিসেবে পেয়ে এবং মুহাম্মাদ কে রাসুল হিসেবে পেয়ে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পেয়ে।”
(সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৭৩৭ নং)
গ) আজানের দোয়াতে বানোয়াট বাক্য যুক্ত করা
আযানের জওয়াবে কয়েকটি বাক্য বাড়তিভাবে চালু হয়েছে, যা থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন,
“যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার নামে মিথ্যারোপ করলো, সে জাহান্নামে তার ঠিকানা করে নিল ।”
(সহীহ বুখারী, ইলম অধ্যায়)
উপরে উল্লিখিত সহিহ্ হাদিসে বর্ণিত আযানের দোয়া-১ এর মাঝে মানুষের যোগ করা কয়েকটি বাক্য হলো-
- অত্র হাদীসে উল্লিখিত দোয়ার শেষাংশে ‘ইন্নাকা লা তুখলিফুল মী’আদ’।
- বায়হাক্বীতে (১ম খণ্ডের ৪১০ পৃঃ) বর্ণিত আযানের দু’আর শুরুতে ‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আস-আলুকা বি হাক্কি হা-যিহিদ দা’ওয়াতে’।
- ইমাম তাহাভীর শারহু মা’আনিল আসার-এ বর্ণিত ‘আ-তি সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদান’।
- ইবনুস সুন্নীর ‘ফী আমালিল ইয়াওমি ওয়াল লায়লাহ’ গ্রন্থে ‘ওয়াদ দারাজাতার রাফী’আহ’।
- রাফী’ঈ প্রণীত ‘আল মুহাররির’ গ্রন্থে আযানের দু’আর শেষে বর্ণিত ‘ইয়া আরহামার রা-হিমীন’।
- রেডিও ও বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে প্রচারিত দু’আয় ‘ওয়ারযুকনা শা’আতাহূ ইয়াওমাল ক্বিয়ামাহ’ বাক্যটি যা যোগ করা হয়েছে তার কোন ভিত্তি নেই ।
আযানের জওয়াবে প্রচলিত বাড়তি বিষয়গুলো অবশ্যই পরিত্যাজ্য। অতিরিক্ত শব্দগুলো সহীহ সূত্রে প্রমাণিত নয়। (দেখুন→ মুহাদ্দিস শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী কৃত ‘ইরওয়াইল গালীল, ১ম খণ্ড ২৬০-২৬১ পৃষ্ঠা হাদীস নং ২৪৩)
Queries discussed: azan in bangla, azan bangla, আজান বাংলা, আজান বাংলা উচ্চারণ, আযান বাংলা, আজান আরবি, আযান উচ্চারণ, আযানের উচ্চারণ, আজানের অর্থ, আযান দেওয়ার নিয়ম, আজান কিভাবে দেয়, আযান অর্থ কি, আযান আরবিতে, আযান আরবি, azan, azaner jobab, আযান লিরিক্স, আযানের দোয়া, azaner dua, আজানের দোয়া, azaner dua bangla, আযানের দোয়া বাংলা অর্থসহ, azan er dua, azan dua bangla, azaner doa, আযানের দোয়া বাংলা উচ্চারণ, azan doa, আযানের দোয়া বাংলা অর্থ, আযানের দোয়ার বাংলা অর্থ, আযানের শেষে দোয়া, আযানের দোয়া বাংলা, আযানের দোয়া বাংলায়, আযানের পরের দোয়া বাংলা, আযানের দোয়া আরবি, আযানের জবাব, azaner jobab, azan er dua, আজানের জবাব কিভাবে দিবো, আজানের দুআ, আযানের জবাব ও দোয়া, ফজরের আযানের জবাব, আযানের শেষে দোয়া, আযানের জবাব দেওয়ার নিয়ম, আযানের জবাব দেওয়ার ফজিলত, আজানের উত্তর ও দোয়া, আযানের উত্তর ও দোয়া, আজানের ফজিলত, আজানের জবাব বাংলা।
পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।