(১) ঈমান শব্দের অর্থ কী?
ঈমান শব্দটি আমনুন মূল ধাতু থেকে নির্গত। যার অর্থ- বিশ্বাস করা, আস্থা স্থাপন, স্বীকৃতি দেওয়া, নির্ভর করা, মেনে নেওয়া ইত্যাদি।
(২) ঈমান কাকে বলে?
ইসলামি পরিভাষায়, শরিয়তের যাবতীয় বিধি-বিধান অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং তদনুযায়ী আমল করাকে ঈমান বলে।
ঈমানের পরিচয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,
ঈমান হচ্ছে “আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ, রাসুলগণ, পরকাল এবং ভাগ্যের ভালো-মন্দের (ভালো-মন্দ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকেই হয়) প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।”
(মুসলিম শরীফ)
(৩) ঈমান কী?
প্রকৃতপক্ষে, ইসলামের মূল বিষয়গুলোর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাসকেই বলা হয় ঈমান।
ঈমানের মূল বিষয়গুলো আল্লাহর বাণী আল-কুরআন ও রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর পবিত্র হাদিসে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
ঈমানের অতীব গুরুত্বপূর্ণ মূল বিষয় সাতটি, যা প্রতিটি ঈমানদার ব্যাক্তি বিশ্বাস ও মান্য করেন। এই সাতটি বিষয় যথাক্রমে: ১. আল্লাহ, ২. ফেরেশতা, ৩. কিতাব, ৪. রাসুল, ৫. কিয়ামত, ৬. তাকদির ও ৭. পরকাল ইত্যাদি এর উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখা।
ঈমানে মুফাসসালে বলা হয়,
“আমি ঈমান আনলাম আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবগুলোর প্রতি, তাঁর রাসুলগণের প্রতি, আখিরাতের প্রতি, তকদিরের প্রতি যার ভালো-মন্দ আল্লাহ তায়ালার নিকট থেকেই হয় এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের প্রতি।”
(শুআবুল ঈমান)
(৪) মুমিন কাদের বলা হয়?
বর্ণিত ইসলামের মূল বিষয়গুলোর প্রতি প্রতি সুদৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস ব্যতীত ঈমানদার হওয়া যায় না। যিনি এগুলোতে পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করেন, তাকে বলা হয় মুমিন।
(৫) ঈমান ও ইসলামের সম্পর্ক
ঈমান ও ইসলাম দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা। ঈমান অর্থ বিশ্বাস। ইসলামের মূল বিষয়গুলোর প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকৃতি ও তদনুযায়ী আমল করাকে ঈমান বলা হয়।
অন্যদিকে ইসলাম অর্থ আত্মসমর্পণ, আনুগত্য ইত্যাদি। মহান আল্লাহর যাবতীয় আদেশ নিষেধ বিনাদ্বিধায় মেনে নেওয়ার মাধ্যমে তাঁর প্রতি পূর্ণাঙ্গরূপে আত্মসমর্পণ করার নাম হলো ইসলাম।
ঈমান ও ইসলামের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান। এদের একটি ব্যতীত অন্যটি কল্পনাও করা যায় না। এদের একটি অপরটির উপর গভীরভাবে নির্ভরশীল।
ঈমান ও ইসলামের সম্পর্ক গাছের মূল ও শাখা-প্রশাখার মতো। ঈমান হলো গাছের শিকড় বা মূল আর ইসলাম তার শাখা-প্রশাখা। মূল না থাকলে শাখা-প্রশাখা হয় না। আর শাখা-প্রশাখা না থাকলে মূল বা শিকড় মূল্যহীন। তদ্রূপ ঈমান ও ইসলাম একটি অন্যটি ব্যতীত পূর্ণাঙ্গ হয় না।
ঈমান মানুষের অন্তরে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, অনুরাগ ও তাঁর সন্তুষ্টি লাভের বাসনা সৃষ্টি করে। আর তাতে ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে সজীব ও সতেজ হয়ে পরিপূর্ণ সৌন্দর্যে বিকশিত হয় ইসলাম।
ইসলাম হলো ঈমানের বহিঃপ্রকাশ। ঈমান হলো অন্তরের সাথে সম্পৃক্ত। আর ইসলাম বাহ্যিক আচার-আচরণ ও কার্যাবলির সাথে সম্পৃক্ত। যেমন- আল্লাহ, রাসুল, ফেরেশতা ইত্যাদি বিষয়ে বিশ্বাস করা হলো ঈমান। আর সালাত, যাকাত, হজ ইত্যাদি বিষয় পালন করা হলো ইসলাম।
প্রকৃতপক্ষে, ঈমান ও ইসলাম একটি অপরটির পরিপূরক। দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করতে হলে ঈমান ও ইসলাম উভয়টিকেই পরিপূর্ণভাবে স্বীয় জীবনে বাস্তবায়ন করতে হবে।
(৬) ঈমানের ৭ টি মূল বিষয়
ঈমান অর্থ বিশ্বাস। একজন মুসলিমকে ঈমানের কতগুলো মূল বিষয়ে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে হয়। এগুলো আল-কুরআন ও হাদিস দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। এ বিষয়গুলোতে বিশ্বাস ব্যতীত কেউই মুমিন বা মুসলিম হতে পারে না। এরূপ বিষয় মোট ৭টি। এগুলো হলো:
ক) আল্লাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস
- আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয়।
- তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ বা মাবুদ নেই।
- তিনি সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা ও রক্ষাকর্তা।
- তিনি সকল গুণের আধার।
- তাঁর সত্তা ও গুণাবলি তুলনাহীন।
- সমস্ত প্রশংসা ও ইবাদত একমাত্র তাঁরই জন্য নির্ধারিত।
ঈমানের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় হলো আল্লাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস। আল্লাহ তায়ালার প্রতি এরূপ বিশ্বাস স্থাপন ঈমানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
খ) ফেরেশতাগণের প্রতি বিশ্বাস
- ফেরেশতাগণ মহান আল্লাহর এক বিশেষ সৃষ্টি।
- তাঁরা নুরের তৈরি।
- তাঁরা সবসময় আল্লাহ তায়ালার ইবাদত ও হুকুম পালনে নিয়োজিত।
- তাঁদের সংখ্যা অগণিত। তাঁরা নারীও নন, পুরুষও নন।
- তাঁরা পানাহার ও জৈবিক চাহিদা থেকে মুক্ত।
ফেরেশতাগণের প্রতি প্রতি এরূপ বিশ্বাস রাখা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত।
গ) আসমানি কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস
- আসমানি কিতাবসমূহ আল্লাহ তায়ালার বাণী। এগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে নিজ পরিচয় প্রদান করেছেন।
- নানা আদেশ-নিষেধ, বিধি-বিধান, সুসংবাদ, সতর্কবাণী ইত্যাদিও এগুলোর মাধ্যমেই এসেছে।
- আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুলগণের নিকট এসব কিতাব পাঠিয়েছেন। দুনিয়াতে বহু আসমানি কিতাব নাজিল করা হয়েছে।
- আল-কুরআন হলে সর্বশেষ আসমানি কিতাব, যার মাধ্যমে পূর্বে সকল আসমানি কিতাব কে রহিত করা হয়েছে।
- আল-কুরআনের সংরক্ষণণৈর দায়িত্ব মহান আল্লাহ নিজে নিয়েছেন, তিনি এইটকে কিয়ায়াত সির্বদা বিকৃুত মুক্ত রাখবেন ও সংরক্ষণ করবেন।
এ সমস্ত কিতাবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা আবশ্যক।
ঘ) নবি-রাসুলগণের প্রতি বিশ্বাস
- মানব জাতির হিদায়াতের জন্য আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে বহু নবি-রাসুল প্রেরণ করেছেন।
- নবি-রাসুলগণ ছিলেন আল্লাহ তায়ালার মনোনীত বান্দা। সকল সৃষ্টির মধ্যে তাঁরাই সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী।
- আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে তাঁরা মানব জাতিকে মহান আল্লাহর পথে ডেকেছেন, সত্য ও ন্যায়ের পথ দেখিয়েছেন, ইহকালীন ও পরকালীন শান্তি ও মুক্তির দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।
- মুহাম্মদ সাঃ হলেন সর্বশেষ নবি ও রাসুল।
নবি-রাসুলগণের প্রতি এরূপ বিশ্বাস রাখা ঈমানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ৷
ঙ) আখিরাতে বিশ্বাস
- আখিরাত হলো পরকাল। আখিরাতের জীবন চিরস্থায়ী। এ জীবনের শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই।
- সেখানে মানুষকে দুনিয়ার জীবনের সকল কাজকর্মের হিসাব দিতে হবে। কবর, হাশর, মিযান, সিরাত, জান্নাত, জাহান্নাম ইত্যাদি আখিরাত জীবনের এক একটি পর্যায়।
- দুনিয়াতে ভালো কাজ করলে মানুষ জান্নাত লাভ করবে। আর ঈমান না আনলে, অসৎ কাজ করলে মানুষের স্থান হবে ভীষণ আযাবের স্থান জাহান্নাম।
আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা অপরিহার্য।
চ) তকদিরে বিশ্বাস
- তকদির অর্থ হলো নির্ধারিত পরিমাণ, ভাগ্য বা নিয়তি। আল্লাহ তায়ালা মানুষের তকদিরের নিয়ন্ত্রক। তিনিই তকদিরের ভালোমন্দ নির্ধারণকারী।
- মানুষ যা চায় তা-ই সে করতে পারবে না। বরং মানুষ শুধু তার কাজের জন্য চেষ্টা সাধনা করবে। অতঃপর ফলাফলের জন্য আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করবে। যদি চেষ্টা করার পরও কোনো কিছু না পায় তবে হতাশ হবে না। আর যদি পেয়ে যায় তবুও খুশিতে আত্মহারা হবে না। বরং সবর (ধৈর্য) ধারণ করবে ও শোকর (কৃতজ্ঞতা) আদায় করবে।
- আর তকদিরের ভালোমন্দ একমাত্র আল্লাহ তায়ালার হাতে।
মনে প্রাণে এরূপ বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ মূল বিষয়।
ছ) মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে বিশ্বাস
- মৃত্যুর সাথে সাথেই মানুষের জীবন শেষ হয়ে যায় না। বরং মানবজীবন দুইভাগে বিভক্ত। ইহকাল ও পরকাল।
- ইহকাল হলো দুনিয়ার জীবন। আর পরকাল হলো মৃত্যুর পরবর্তী জীবন।
- আল্লাহ তায়ালা মানুষকে মৃত্যুর পর আবার জীবিত করবেন। সে সময় সকল মানুষ হাশরের ময়দানে একত্রিত হবে।
- আল্লাহ তায়ালা সেদিন বিচারক হিসেবে মানুষের সকল কাজের হিসাব নেবেন। অতঃপর মানুষকে তার ভালো কাজের জন্য পুরস্কার স্বরূপ জান্নাতে ও মন্দকাজের শাস্তিস্বরূপ জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে।
সুতরাং মৃত্যুর পর আমরা সবাই পুনরায় জীবিত হব এ বিশ্বাস রাখা ঈমানের অপরিহার্য বিষয়।
(৭) মানবিক মূল্যবোধ বিকাশে ঈমানের গুরুত্ব
ঈমান অর্থ বিশ্বাস। ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর প্রতি বিশ্বাসকেই সাধারণত ঈমান বলা হয়।
আর মানবিক বলতে মানব সম্বন্ধীয় বুঝায়। অর্থাৎ যেসব বিষয় একমাত্র মানুষের বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলি হওয়ার যোগ্য তাই মানবিক মূল্যবোধ। অন্যকথায় যেসব কর্মকাণ্ড, চিন্তা-চেতনা মানুষ ও মানব সভ্যতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তাই মানবিক মূল্যবোধ।
মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব। এ হিসেবে মানুষের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও কর্মকাণ্ড সবই উন্নত ও সর্বোত্তম হওয়া উচিত। পশুর ন্যায় কাজকর্ম, লোভ-লালসা ইত্যাদি মানবিকতার আদর্শ নয়। যদি কোনো মানুষ এ আদর্শ থেকে দূরে সরে গিয়ে পশুর ন্যায় আচরণ করে তবে সে মানবিক মূল্যবোধকে বিনষ্ট করে।
মানুষের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বকে সমুন্নত রাখার জন্য উত্তম গুণাবলি ও আদর্শ অনুশীলনের মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ রক্ষা করা যায়। মানবিক মূল্যবোধ বিকাশে ঈমানের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঈমান নানাভাবে মানুষের মানবিকতার বিকাশ সাধন করে থাকে।
ঈমানের মূলকথা হলো- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।
“আল্লাহ ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই, মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসুল।”
(কালেমা তাইয়্যেবা)
এই কালিমার তাৎপর্য হলো-
- আল্লাহ তায়ালাই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, প্রতিপালক ও মাবুদ।
- তিনি ব্যতীত প্রশংসা ও ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই।
- তিনি ব্যতীত আর কারও সামনে মাথা নত করা যাবে না।
উক্ত কালিমা মানুষকে আত্মমর্যাদাশীল করে। এ কালিমায় বিশ্বাসী ব্যক্তি শুধু আল্লাহ তায়ালার সামনে মাথা নত করে। পৃথিবীর অন্য কোনো সৃষ্টির সামনে মাথা নত করে না বা আত্মসমর্পণ করে না। ফলে মানুষের মর্যাদা সমুন্নত হয়, মানবিক মূল্যবোধ বিকশিত হয়।
ঈমান মানুষকে সত্য ও সুন্দরের পথে পরিচালনা করে। নৈতিক জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করে। মুমিন ব্যক্তি সর্বদাই মানবিকতা ও নৈতিকতার ধারক হয়। অন্যায় অত্যাচার ও অনৈতিক কার্যকলাপ ঈমানের সম্পূর্ণ বিপরীত।
পূর্ণাঙ্গ ঈমানদার ব্যক্তি কখনোই মানবিকতা ও মনুষ্যত্বের বিপরীত কাজ করতে পারে না। বরং মুমিন ব্যক্তি সবসময়ই নীতি-নৈতিকতা ও মানবিকতার আদর্শ অনুসরণ করে। সাম্য, মৈত্রী, ভ্রাতৃত্ব, সহযোগিতা, সহমর্মিতা ইত্যাদি সৎগুণাবলির চর্চা করে।
কুফর, নিফাক, শিরক ইত্যাদি ঈমানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এ সমস্ত বিষয় মানুষের মধ্যে অসৎ কার্যাবলির বিকাশ ঘটায়। এগুলোর প্রভাবে মানবসমাজে অকৃতজ্ঞতা, অবিশ্বাস, মিথ্যাচার, ওয়াদা খেলাপ, ঝগড়া- ফাসাদ, বিদ্রোহ ইত্যাদি জন্ম নেয়।
যেমন মুনাফিক সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“আর আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিঃসন্দেহে মুনাফিকরা মিথ্যাবাদী।”
(সূরা আল-মুনাফিকুন, আয়াত ০১)
ঈমান মানুষকে নৈতিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করে-
- ঈমান মন্দ অভ্যাস ও অশ্লীল কার্যাবলি থেকে বিরত রাখে।
- ঈমান মানুষকে দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহির ব্যাপারে সতর্ক করে।
- ঈমানদার ব্যক্তি সবসময় মনে রাখেন যে, তাঁকে একদিন আল্লাহ তায়ালার সামনে হাজির হতে হবে। সেদিন আল্লাহ তায়ালা সব কাজকর্মের হিসাব চাইবেন।
অতএব এ জবাবদিহির ভয়ে মুমিন ব্যক্তি সব ধরনের অমানবিক ও অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“আর যে ব্যক্তি তার প্রভুর সামনে দণ্ডায়মান হওয়ার ভয় করে এবং নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত থাকে। নিশ্চয়ই জান্নাতই হলো তার বাসস্থান।”
(সূরা আন-নাযিয়াত, আয়াত ৪০-৪১)
মানবিক মূল্যবোধ ও ঈমান পারস্পরিক গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। ইসলামের মৌলিক বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে ব্যক্তি ঈমানদার হয়ে ওঠে। জীবনযাপনে সে নিজ খেয়ালখুশির পরিবর্তে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশনার অনুসারী হয়। ফলে সে সবধরনের অন্যায়, অবিচার ও অনৈতিকতা বাদ দিয়ে সুন্দর ও উত্তম আদর্শের অনুশীলন করে থাকে। এভাবে ঈমান মানুষের মধ্যে মানবিকতা ও মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটায়।
পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।