Skip to content

 

কর্মবিমুখতা কী? এর কুফল ও পরিহারের গুরুত্ব

কর্মবিমুখতা কী এর কুফল ও পরিহারের গুরুত্বসমূহ

(১) কর্মবিমুখতা কী?

কর্মবিমুখতা বলতে কাজ না করার ইচ্ছাকে বোঝায়। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোনো কাজ না করে অলস বা বেকার বসে থাকাকে কর্মবিমুখতা বলা হয়।

কোনো অক্ষম ব্যক্তি যদি কোনো কাজ করতে না পারে তবে তা কর্মবিমুখতা নয়। যেমন- অন্ধ, বধির বা প্রতিবন্ধীরা শারীরিক কারণে সবধরনের কাজ করতে সমর্থ নয়।

বরং যোগ্যতা ও সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অলসতা বা অন্য কোনো কারণে স্বেচ্ছায় কোনো কাজ না করে বেকার বসে থাকা হলো কর্মবিমুখতা।

(২) কর্মবিমুখতার কুফল

  • মানবজীবনে কাজের কোনো বিকল্প নেই। জীবনে বড় হওয়ার জন্য, জীবিকা উপার্জনের জন্য মানুষকে বহু কাজ করতে হয়। সময়মতো যথাযথভাবে এসব কাজ সম্পাদনের উপরই মানুষের উন্নতি ও সফলতা নির্ভর করে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি বা জাতি কর্মবিমুখ সে ব্যক্তি বা জাতি কখনো উন্নতি করতে পারে না।
  • কর্মবিমুখতা একটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্য, কলঙ্ক স্বরূপ। কর্মবিমুখতা মানুষের মধ্যে অলসতা সৃষ্টি করে। এতে মানুষ অকর্মণ্য হয়ে পড়ে। মানুষের কর্মস্পৃহা, কর্মক্ষমতা লোপ পায়।
  • বলা হয় ‘অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা’ । অলস ব্যক্তিরা নানা অসৎ ও অনৈতিক চিন্তা ও কর্মে ব্যাপৃত থাকে। অনেক সময় সন্ত্রাস সৃষ্টি, ছিনতাই, রাহাজানি ইত্যাদি অসৎ ও পাপকার্যে জড়িয়ে পড়ে। ফলে সামাজিক অবক্ষয় দেখা দেয়।
  • কর্মবিমুখতার ফলে মানুষের মেধা, শক্তি ও সময়ের অপচয় হয়। কর্মবিমুখ বেকারকে কেউ ভালোবাসে না। কেউ তার সাথে বন্ধুত্ব বা আত্মীয়তার সম্পর্ক করতে চায় না।
  • কর্মবিমুখতা মানুষের আত্মসম্মানবোধ লোপ করে। অন্যের অর্থে জীবনযাপন করার মানসিকতা তৈরি হয়। এতে মানুষ হতাশ হয়ে পড়ে। অনেক সময় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

(২) কর্মবিমুখতা পরিহারের গুরুত্ব

ইসলাম কল্যাণের ধর্ম। মানুষের অকল্যাণ হয় এমন কোনো বিধান বা আচার-আচরণ ইসলাম সমর্থন করে না। কর্মবিমুখতা মানবজীবনে অভিশাপ স্বরূপ। ইসলামে এর কোনো স্থান নেই।

See also  আখলাকে যামিমাহ কি/বলতে কি বুঝায়? বর্জনীয় কেন/কুফল? আখলাকে যামিমাহ উদাহরণ

ইসলামে মানুষকে কাজ করার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা ইবাদত পালনের পরপরই কর্মক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“অতঃপর সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর।”

(সূরা আল-জুমুআ, আয়াত ১০)

হাদিসে জীবিকা অর্জনের জন্য কাজকেও ফরজ ঘোষণা করা হয়েছে।

মহানবি (সাঃ) বলেছেন,

“হালাল উপায়ে জীবিকা অন্বেষণ করা ফরজের পর আরও একটি ফরজ কাজ”। (বায়হাকি) জীবিকা অর্জনের জন্য কাজ করার প্রয়োজন অনস্বীকার্য। এজন্য বসে থাকলে চলবে না। বরং নিজ উদ্যোগে কাজ করার জন্য ইসলামে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “নিজ হাতে উপার্জিত খাদ্যের চেয়ে উত্তম খাদ্য কেউ কোনোদিন খায়নি।”

(বুখারি)

ইসলামে কর্মবিমুখতার কোনো সুযোগ নেই। বরং জীবিকা অর্জনের জন্য যেকোনো হালাল শ্রমকেই উৎসাহিত করা হয়েছে।

নবি-রাসুলগণের জীবনী পড়লে জানা যায় যে, তাঁরা জীবিকা উপার্জনের জন্য নানা কাজ করেছেন। হযরত আদম (আঃ) কৃষি কাজ করতেন, হযরত দাউদ (আঃ) কামারের কাজ করতেন, আমাদের নবি (সাঃ) ব্যবসা করতেন। জীবিকার প্রয়োজনে তাঁরা ছাগলও চরিয়েছেন। সুতরাং কোনো শ্রমই ছোট নয়।

হযরত উমর (রা.) বলেছেন, “তোমাদের কেউ যেন জীবিকা উপার্জনের চেষ্টায় নিরুৎসাহিত হয়ে বসে না থাকে“।

আমাদের অনেকে পড়ালেখা শেষ করে বেকার বসে থাকে। এরূপ বেকারত্ব ঠিক নয়। বরং যার যার সামর্থ্যানুযায়ী কাজ করা দরকার। এতে শরীর মন ভালো থাকে। আল্লাহ তায়ালাও সন্তুষ্ট হন।

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts

You cannot copy content of this page