নিম্নে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক নিয়ে কিছু কথা তুলে ধরা হলো-
শিক্ষক হলেন আদর্শ জাতি গঠনের কারিগর। পিতা-মাতার পরই শিক্ষকের মর্যাদা। শিক্ষক পরম ভক্তি ও শ্রদ্ধার পাত্র। পিতা-মাতা সন্তানকে জন্ম দিয়ে শুধু লালন-পালন করেন। পক্ষান্তরে শিশুদেরকে প্রকৃত মানুষরূপে গড়ে তোলেন একজন শিক্ষক।
শিক্ষার্থীরা অনুকরণপ্রিয়। কাজেই একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের যে শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন, শিক্ষার্থীরা তাই শিখবে। শিক্ষার্থীদের জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কী হবে শিক্ষকরাই ছোট বেলায় তা শিখিয়ে দেন।
শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় নিয়ম-কানুন, আদব-কায়দা, শিষ্টাচার, বিনয়, নম্রতা, নিয়মানুবর্তিতা, দয়া, সহানুভূতি ইত্যাদি শিক্ষা দিয়ে থাকেন, যা তারা পরিণত বয়সে কাজে লাগিয়ে সার্বিক উন্নতি লাভ করে। ছাত্রদের সার্বিক কল্যাণ কামনায় শিক্ষকগণ যেভাবে ত্যাগের পরিচয় দেন তার জন্য শিক্ষকগণের যথাযথ সম্মান করা আমাদের কর্তব্য।
ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক হলো আত্মার সম্পর্ক। এটি পিতা-পুত্রের সম্পর্কের ন্যায়। পিতা যেমন সর্বদা পুত্রের কল্যাণ কামনা করেন ও তাকে কল্যাণের পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করেন, শিক্ষকও তেমনি তাঁর ছাত্রের কল্যাণ কামনা করেন ও তাকে সৎ পথ দেখান।
পুত্র তার পিতা থেকে সম্পদের উত্তরাধিকারী হয়, অন্যদিকে ছাত্রও তার শিক্ষক থেকে জ্ঞানের উত্তরাধিকারী হয়। পুত্র যেমন পিতা থেকে প্রাপ্ত সম্পদের পরিচর্যা করে বড় সম্পদশালী হতে পারে, শিক্ষার্থীও তেমনি শিক্ষক থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান সমৃদ্ধ করে বড় জ্ঞানী হতে পারে।
নবি ও রাসুল (আঃ) গণ হলেন শিক্ষক আর তাঁদের উম্মত হলো তাঁদের ছাত্র। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই উম্মতের জ্ঞানীদেরকে নবিদের উত্তরাধিকারী বলেছেন।
তিনি বলেন,
“আলেমগণ (জ্ঞানীরা) হলেন নবিদের উত্তরাধিকারী। তাঁরা সম্পদ ও মালের উত্তরাধিকারী নন, বরং তাঁরা হলেন জ্ঞানের উত্তরাধিকারী।”
(তিরমিযি)
সুতরাং পুত্র ও পিতার মাঝে যেমন উত্তরাধিকারের সম্পর্ক আছে। ছাত্র-শিক্ষকের মাঝেও তেমন সম্পর্ক বিদ্যমান। তাই আমরা এই সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হব।
ইসলামের চতুর্থ খলিফা বলেছেন,
“যার কাছে আমি একটি শব্দও শিখেছি আমি তার দাস। তিনি ইচ্ছা করলে আমাকে বিক্রি করতে পারেন কিংবা আযাদ করে দিতে পারেন কিংবা ইচ্ছা করলে দাস বানিয়েও রাখতে পারেন।”
হযরত আলি (রা.)
তাই তাঁর মতে, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক হলো ভৃত্য-মুনিব সম্পর্ক। এক বিনম্র শিক্ষার্থীর দৃষ্টিতে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের এ বিষয়টি ফুটে উঠেছে।
বস্তুত ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক হবে সুন্দর, যেখানে অকৃত্রিম শ্রদ্ধা, স্নেহ ও ভালোবাসা বিরাজ করবে।
পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।