Skip to content

 

জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত

জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত

প্রিয় দ্বীনী ভাই-বোন! আজকের এই পোষ্টটিতে আলোচনা করব জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত সমূহ, জামাতে নামাজ পড়া কী, জামাতে নামাজ পড়াতে ইমামের দায়িত্ব ও কর্তব্য কী এবং জামাতে নামাজ পড়তে মুক্তাদির কর্তব্য কী এসকল বিষয় নিয়ে। আশা করি শেষ অবধি সাথেই থাকবেন।

(১) জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত সমূহের বর্ণনা

নিম্নে সাতটি জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত তুলে ধরা হলো। যথা-

১ নং জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত হলো: জামাতের সাথে ফরজ নামাজ পড়লে ২৭ গুণ বেশি সওয়াব লাভ।

জামাআতে সালাত আদায়ের ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে মহানবি (সা.) বলেছেন,

“জামাআতে সালাত আদায়ের মাহাত্ম্য একাকী সালাত আদায়ের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি।”

(বুখারি ও মুসলিম)

২ নং জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত হলো: যিনি জামাতে নামাজের প্রতি অধীর আগ্রহী ব্যক্তির আল্লাহর আরশের নিচে ছায়া লাভ।

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন,

“সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা’আলা সেদিন আরশের নিচে ছায়া প্রদান করবেন, যেদিন আল্লাহর ছায়া ব্যতীত আর কোনো ছায়া থাকবে না। তাদের মধ্যে একজন হলো ঐ ব্যক্তি যার আত্মা মসজিদের সাথে লাগানো সম্পৃক্ত থাকে। অর্থাৎ সালাত ও জামাআতের প্রতি অধীর আগ্রহী ব্যক্তি।”

(বুখারি ও মুসলিম)

৩ নং জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত হলো: জামাতের জন্য মসজিদে বসে থাকা অবস্থায় ফিরিশতাগণ দোয়া লাভ।

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“তোমাদের কেউ যতক্ষণ তার সালাতের স্থানে থাকে তার উযূ (ওজু/অজু/অযু) ভঙ্গ না হওয়া পর্যন্ত তার জন্য ফিরিশতাগণ এ বলে দোয়া করতে থাকে যে, ইয়া আল্লাহ! আপনি তাঁকে মাফ করে দিন, ইয়া আল্লাহ! আপনি তার উপর রহম করুণ। আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যাক্তির সালাতই তাকে বাড়ি ফিরে যাওয়া থেকে বিরত রাখে, সে সালাতরত আছে বলে গণ্য হবে।”

(সহীহ বুখারী, আযান অধ্যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬২৬ নং)

৪ নং জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত হলো: দিন প্রথম তাকবিরের সঙ্গে জামাতে নামাজ পড়লে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ।

হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

“যে ব্যক্তি ৪০ দিন পর্যন্ত তাকবিরে উলার (প্রথম তাকবিরের) সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে দুটি পুরস্কার দান করবেন। এক. জাহান্নাম থেকে মুক্তি। দুই. মুনাফিকের তালিকা থেকে তার নাম কেটে দেবেন।”

(তিরমিজি)

৫ নং জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত হলো: জামাতে নামাজের জন্য মসজিদে যেতে প্রতি কদমে সাওয়াব লাভ।

মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু হাওশাব (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“হে বনী সালিমা! তোমরা কি (স্বীয় আবাস স্থল থেকে মসজিদে আসার পথে) তোমাদের পদচিহ্নগুলোর সাওয়াবের কামনা কর না? ইবনু মারিয়াম (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বনী সালিমা গোত্রের লোকেরা নিজেদের ঘর-বাড়ী ছেড়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বসতি স্থাপন করতে চেয়েছিল। আনাস (রাঃ) বলেন, কিন্তু মদিনার কোন এলাকা একেবারে শূন্য হওয়াটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পছন্দ করেন নাই। তাই তিনি বললেনঃ তোমরা কি (মসজিদে আসা যাওয়ায়) তোমাদের পদচিহ্নগুলোর সাওয়াব কামনা কর না?”

(সহীহ বুখারী, আযান অধ্যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬২৩ নং)

৬ নং জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত হলো: জামাতে প্রথম কাতারে নামাজ পড়তে পারলে বিশেষ সওয়াব লাভ।

কুতাইবা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“ … মানুষ যদি আযান দেওয়া, প্রথম কাতারে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করার কী ফযীলত তা জানত, কুরআহর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছাড়া সে সুযোগ না পেত, তাহলে কুরআহর মাধ্যমে হলেও তারা সে সুযোগ গ্রহণ করত আর আওয়াল ওয়াক্ত (যোহরের সালাতে যাওয়ার) কী ফযীলত তা যদি মানুষ জানত, তাহলে এর জন্য তারা অবশ্যই সর্বাগ্রে যেত। আর ইশা ও ফজরের সালাত (জামা’আতে) আদায়ে কী ফযীলত, তা যদি তারা জানত তা হলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা (জামা’আতে) উপস্থিত হতো।”

(সহীহ বুখারী, আযান অধ্যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬২২ নং)

৭ নং জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত হলো: জামাতে নামাজ পড়তে মসজিদ থেকে বাড়ির দূরত্ব যত বেশি সওয়াব তত বেশি লাভ।

মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“(মসজিদ থেকে) যে যত বেশি দূরত্ব অতিক্রম করে সালাতে আসে, তার তত বেশি সাওয়াব হবে। আর যে ব্যাক্তি ইমামের সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, তার সাওয়াব সে ব্যাক্তির চাইতে বেশি, যে একাকী সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে।”

(সহীহ বুখারী, আযান অধ্যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬২১ নং)

(২) জামাতে নামাজ পড়া কী?

জামাতে নামাজ পড়া হুকুম কি?

মুসলমান পুরুষদের জন্য জামা’আতে সালাত আদায় করা ওয়াজিব। যার উপর আমল করলে সাওয়াব পাওয়া যাবে আর পরিত্যাগ করলে শাস্তি পেতে হবে।

জামাত শব্দের অর্থ কি?

জামাআত শব্দটি আরবি। এর শাব্দিক অর্থ হলো একত্রিত হওয়া, জনসমাবেশ, সমবেত হওয়া ইত্যাদি।

জামাতে নামাজ পড়া কাকে বলে?

শরিয়তের দৃষ্টিতে নির্ধারিত সময়ে নির্ধারিত স্থানে মুসলিম সম্প্রদায়ের ইমামের পেছনে সমবেত হয়ে সালাত আদায় করাকে জামাআতে সালাত আদায় বলা হয়।

জামাতে নামাজ পড়তে হলে নুন্যতম কতজন মানুষের প্রয়োজন হয়?

দু’ব্যক্তি বা তার বেশি হলেই জামাতে নামাজ আদায় করতে হয়।

মূসা’দ্দাদ (রহঃ) … মালিক ইবনু হুওয়াইরিস (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

“যখন সালাতের সময় হয়, তখন তোমাদের দু’জনের একজন আযান দিবে ও ইকামত বলবে। তারপর তোমাদের দু’জনের মধ্যে যে অধিক বয়স্ক সে ইমামতি করবে।”

(সহীহ বুখারী, আযান অধ্যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬২৫ নং)

ইসলামে জামাতে নামাজ পড়ার মাহাত্ম ও গুরুত্ব কেমন?

ইসলামে জামআত বা সমবেতভাবে সালাত আদায় করার গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কুরআন ও হাদিসের বিভিন্নস্থানে জামাআতবদ্ধ হয়ে সালাত আদায়ের প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

মহান আল্লাহ বলেন,

“তোমরা রুকুকারীদের সাথে রুকু করো।”

(সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৪৩)

এখানে মূলত জামাআতে সালাত আদায় করাকে নির্দেশ করা হয়েছে। আমরা যদি রাসুলে করিম (সা.) এর জীবনের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো তিনি কখনো জামাআত ছাড়েননি।

মুসলিম উম্মাহর সর্বোত্তম আদর্শ নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সারা জীবন জামাতের সঙ্গেই নামাজ আদায় করেছেন। এমনকি তাঁর ইন্তিকালের আগ মুহূর্তে অসুস্থতার সময়ও তিনি জামাত ছাড়েননি। সাহাবায়ে কেরামেরও পুরো জীবন জামাতে নামাজ আদায় করেছেন।

এমনকি জামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব বুঝাতে নবীজি (সা.) তো এতটুকুও বলেছেন,

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম! আমার ইচ্ছা হয়, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে আদেশ দেই, তারপর সালাত (নামায/নামাজ) কায়েমের নির্দেশ দেই, এরপর সালাতের আযান দেওয়া হোক, তারপর এক ব্যাক্তিকে লোকদের ইমামতি করার নির্দেশ দেই। এরপর আমি লোকদের কাছে যাই এবং তাদের (যে সকল মুসলিম জামা’আতে সালাতে শামিল হয় নাই) ঘর জ্বালিয়ে দেই। যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম! যদি তাদের কেউ জানত যে, একটি মাংসহীন মোটা হাঁড় বা ছাগলের ভালো দুটি পা পাবে তাহলে অবশ্যই সে ইশার জামা’য়াতেও হাযির হত।”

(সহীহ বুখারী, আযান অধ্যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬১৬ নং)

“আমার তো মনে চায় মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বলব এবং কাউকে নামাজ পড়াতে বলব আর আমি আগুনের অঙ্গার নিয়ে যাব, যে আজান শুনার পরও মসজিদে জামাতে হাজির হওয়ার জন্য বের হয়নি- তার ঘর জ্বালিয়ে দিই।”

(সহীহ বুখারি ও মুসলিম)

উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … উম্মে দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

“একদিন আবূ দারদা (রাঃ) রাগান্বিত অবস্থায় আমার নিকট আসলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কিসে তোমাকে রাগান্বিত করেছে? তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! মুহাম্মদসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের মধ্যে জামা’আতে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা ব্যতিত তাঁর তরীকার আর কিছুই দেখছি না।”

(সহীহ বুখারী, আযান অধ্যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬২০ নং)

বিশিষ্ট মুসলিম মনীষী সাঈদ ইবনে মুসায়্যিব (রহ.) পঞ্চাশ বছর সময় ধরে ফরয সালাতে কোন মানুষের ঘাড় দেখেননি। অর্থাৎ তিনি প্রথম কাতারে শামিল ছিলেন। আর ইবনে সামাআহ (রহ.) বলেন, চল্লিশ বছর পর্যন্ত আমার তাকবিরে উলা তথা প্রথম তাকবির ছোটেনি। শুধুমাত্র সে দিন ছাড়া যে দিন আমার মায়ের ইন্তেকাল হয়েছিল। অতএব কখনো কেউ মসজিদে জামাআতে শরিক হতে অপারগ হলে একাকী সালাত আদায় না করে বাসায় পরিবার পরিজনকে সাথে নিয়ে সালাত আদায় করা উত্তম।

জামাআতে সালাত আদায় করার ফলে মুসল্লিদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব, মহব্বত, ঐক্য ও সম্প্রীতি সৃষ্টি হয়। তাই মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও অধিক সাওয়াব পাওয়ার আশায় প্রত্যেক মুমিন বান্দার জামাআতে সালাত আদায় করা একান্ত প্রয়োজন।

(২) জামাতে নামাজ পড়াতে ইমামের দায়িত্ব ও কর্তব্য কী?

ইমাম শব্দের অর্থ নেতা। ইমাম সালাত পরিচালনা করেন। জামাআতে সালাত আদায়ের সময় মুসল্লিগণ যাকে অনুসরণ করে সালাত আদায় করে তিনিই ইমাম।

ইমামতি করা দ্বীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ যা স্বয়ং নবি করিম (সা.) সারা জীবন করে গেছেন। অতঃপর তাঁর মৃত্যুর পর চার খলীফা তা সম্পাদন করেছেন। মুসলিম সমাজের উত্তম ব্যক্তিরাই সাধারণত এই পবিত্র দায়িত্বটি পালন করে থাকেন।

পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ইসলামের দ্বিতীয় রোকন। মহান আল্লাহ জামাআতবদ্ধভাবে সালাত আদায় করার আদেশ করেছেন। আর সেই আদেশ ইমাম ব্যতীত বাস্তবায়িত হয় না।

মহানবি (সা.)-এর আমলেও প্রত্যেক এলাকায় মসজিদে বা সাময়িক কোনো স্থানে একজন ইমামের নেতৃত্বে সালাত আদায় হতো। উপস্থিত মুসল্লিদের মধ্যে সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তির ইমামতি করাই নিয়ম। তবে সময় মতো উপযুক্ত ইমাম পাওয়া যায় না বলে এখন মসজিদে সুনির্দিষ্ট ইমাম নিয়োগ করা হয়ে থাকে।

ইমামের দায়িত্ব ও কর্তব্য-

ইমামতি সাধারণ কোনো পেশা নয়। এর রয়েছে অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য। সেবার মানসিকতা নিয়েই এ পেশায় আত্মনিয়োগ করা উচিত। একজন ইমাম শুধু মসজিদের ইমাম নন, তিনি সমাজেরও ইমাম। তিনি মানুষ, মনুষ্যত্ব ও সমাজ নিয়ে ভাবেন।

ইমামের মূল দায়িত্ব হলো, সালাতে নেতৃত্ব দেওয়া। নামাজের যাবতীয় দিক খেয়াল রাখা একজন ইমামের জন্য অবশ্য কর্তব্য। সালাতে কাতার ঠিক করা। সালাত যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত করা।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,

“তোমাদের কেউ লোকদের ইমামতি করলে সে যেন সালাত সংক্ষেপ করে। কেননা তাদের মধ্যে ছোট বালক, দুর্বল ও অসুস্থ লোক থাকতে পারে।”

(বুখারি)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেন,

“তোমরা তোমাদের মধ্যকার উত্তম ব্যক্তিকে তোমাদের ইমাম নিয়োগ করবে। কারণ তিনি হবেন তোমাদের পক্ষে তোমাদের প্রতিপালকের প্রতিনিধি।”

(দারাকুতনি)

ইমামকে হতে হবে সকলের আস্থাভাজন। মুসল্লিদের সালাত শুদ্ধ হচ্ছে কি না তিনি তা খেয়াল রাখবেন। যারা সালাত পালন করে না, তাদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে মসজিদে আনার ব্যবস্থা করবেন। ইমামের সংস্রবে থেকে মুসল্লিরা ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য, সহমর্মিতা ও অন্যান্য নৈতিক গুণ অর্জন করবে।

(৩) জামাতে নামাজ পড়তে মুক্তাদির কর্তব্য কী?

যারা ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে তাঁকে অনুসরণ করে সালাত আদায় করে তারাই মুক্তাদি।

মুক্তাদি ইমামের পেছনে ইকতিদা করবে। মনে মনে এই নিয়ত করবে যে, ‘আমি এই ইমামের পেছনে সালাত আদায় করছি।’ সালাতের যাবতীয় কাজে মুক্তাদি ইমামের অনুসরণ করবে।

মুক্তাদির কর্তব্য-

ইকামত হওয়ার সাথে সাথে সালাতে দাঁড়িয়ে যাবে। ফরয সালাতের ইকামত হলে সুন্নাত পড়বে না। নিজ দায়িত্বে কাতার সোজা করবে। সামনের কাতারগুলো আগে পূরণ করবে। কাতারের মধ্যকার ফাঁকা জায়গা না রেখে একে-অপরের সাথে মিলিয়ে দাঁড়াবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

“যে ব্যক্তি কাতারে মিলিয়ে দাঁড়ায়, আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক রাখেন। আর যে মিলিয়ে দাঁড়ায় না আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।”

(আবু দাউদ)

দুই কাতারের মাঝে ব্যবধান বেশি রাখবে না। সামনের কাতারে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে। পরে এসে মানুষ ডিঙিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করবে না। ইমামের পেছনে দাঁড়াবে ও তাঁকে অনুসরণ করবে। রুকু, সিজদা, বসা বা উঠা কোনোটাই ইমামের আগে আগে করবে না। সব কাজ ইমামের অব্যবহিত পরে করবে। যদি ইমাম ভুল করেন, তবে নিকটবর্তী মুক্তাদি সংশোধন করে দেবেন। এক্ষেত্রে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে ইমামকে সতর্ক করবেন অথবা ভুল আয়াত শুদ্ধভাবে পড়ে তাকে সাহায্য করবেন।

মহাল আল্লাহ আমাদেরকে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত সমূহ অর্জন করার তৌফিক দান কুরন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

Queries discussed: নামাজ পড়ার ফজিলত, জামাতে নামাজ পড়া কী, জামাতে নামাজ পড়াতে ইমামের দায়িত্ব ও কর্তব্য, জামাতে নামাজ পড়তে মুক্তাদির কর্তব্য।

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts

You cannot copy content of this page