Skip to content

 

মিতব্যয়িতা কী, কাকে বলে? মিতব্যয়িতার গুরুত্ব

মিতব্যয়িতা কী, কাকে বলে মিতব্যয়িতার গুরুত্ব

(১) মিতব্যয়িতা কী, কাকে বলে?

মিতব্যয়িতা আখলাকে হামিদাহ-র অন্যতম দিক। মিতব্যয়িতা হলো প্রয়োজন অনুসারে ব্যয় করা, পরিমিতিবোধ, কথা-বার্তা, কাজ-কর্মে যথার্থতা, মাল-সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ইত্যাদি। সাধারণত ধন-সম্পদের যথাযথ ও প্রয়োজন মাফিক ব্যবহারকে মিতব্যয়িতা বলা হয়। অর্থাৎ যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই খরচ করা, কম বা বেশি না করা।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের স্রষ্টা ও প্রতিপালক। তিনি আমাদের বহু নিয়ামত দান করেছেন। এ সমস্ত নিয়ামত ও ধন-সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করা আমাদের কর্তব্য। এক্ষেত্রে অপব্যয়-অপচয় বা কৃপণতা করা যাবে না। বরং যখন যা প্রয়োজন সেরূপ ব্যয় করার মধ্যেই সফলতা রয়েছে। প্রয়োজনমাফিক সম্পদের এই ব্যবহারই মিতব্যয়িতা; এটি অপচয় ও কৃপণতার মাঝামাঝি পন্থা ৷

(২) মিতব্যয়িতার গুরুত্ব

মিতব্যয়িতা একটি গুরুত্বপূর্ণ চারিত্রিক গুণ। এটি মানবসমাজে শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনে। পক্ষান্তরে কৃপণতা ও অপচয় সমাজে নানা অশান্তির সৃষ্টি করে।

অপচয়কারীর সম্পদ দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়। ফলে সে নানা অভাব-অনটন, দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়। অন্যদিকে কৃপণতা মানুষের মধ্যে মনোমালিন্য ও শত্রুতার জন্ম দেয়। সমাজে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করে। মিতব্যয়িতা মানুষকে অপচয় ও কৃপণতার কুফল থেকে রক্ষা করে।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

“ব্যয় করার ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তার লক্ষণ।”

(মুসনাদে আহমাদ)

মিতব্যয়ী ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার নিয়ামতের যথাযথ ব্যবহার করেন। ফলে তিনি বহু সাওয়াবের অধিকারী হন।

একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

“হে আদম সন্তান! তুমি যদি তোমার প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ সৎকাজে খরচ কর, তবে তোমার কল্যাণ হবে। আর যদি তা আটকে রাখ তবে তোমার অকল্যাণ হবে। তবে তোমার প্রয়োজন পরিমাণ সম্পদ রেখে দিলে তোমাকে তিরস্কার করা হবে না।”

(তিরমিযি)

মিতব্যয়িতা মুমিনের গুণ। প্রকৃত ইমানদারগণ শুধু নিজ প্রয়োজনমাফিক খরচ করেন। তারা কৃপণতাও করেন না। আবার অপচয়ও করেন না। তাঁরা মিতব্যয়ী। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ দ্বারা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য ব্যয় করেন।

See also  পরিচ্ছন্নতা কী, কাকে বলে? দৈহিক, পোশাকের ও পরিবেশের পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব

আল-কুরআনে আল্লাহ তায়ালা তাঁর একনিষ্ঠ বান্দাদের পরিচয় দিয়ে বলেছেন,

“আর যখন তারা ব্যয় করে তখন তারা অপচয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না। বরং তারা এতদুভয়ের মধ্যপন্থা অবলম্বন করে।”

(সূরা আল-ফুরকান, আয়াত ৬৭)

আল্লাহ আরও বলেন,

“তুমি তোমার হাত তোমার গ্রীবায় আবদ্ধ করে রেখো না এবং তা সম্পূর্ণ প্রসারিত ও করো না, তাহলে তুমি তিরস্কৃত ও নিঃস্ব হয়ে পড়বে।”

(সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৯)

আমাদের প্রিয়নবি (সাঃ) ছিলেন মিতব্যয়িতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি তাঁর ও পরিবারের জন্য প্রয়োজনমাফিক খরচ করতেন। এতে তিনি যেমন আরাম আয়েশ ও বিলাসিতা করতেন না তেমনি কৃপণতাও করতেন না। অতিরিক্ত সম্পদ তিনি দান করে দিতেন। সাহাবিগণ, ওলিগণের জীবনী থেকেও আমরা এ শিক্ষা লাভ করি।

একটি হাদিসে মহানবি (সাঃ) বলেছেন,

“সুসংবাদ ঐ ব্যক্তির জন্য যাকে ইসলামের দিকে হিদায়াত করা হয়েছে, তার প্রয়োজনমাফিক জীবনোপকরণ আছে এবং সে এতে তুষ্ট রয়েছে।”

(তিরমিযি)

মিতব্যয়িতা মানুষকে নানা সৎগুণে ভূষিত করে। লোভ-লালসা, অপচয়-অপব্যয়, কৃপণতা, অলসতা, আরামপ্রিয়তা ইত্যাদি খারাপ অভ্যাস থেকে তাকে বাঁচিয়ে রাখে। মিতব্যয়িতা আল্লাহ তায়ালার নিকট পছন্দনীয়।

আমরা সকলে জীবনযাপনে মিতব্যয়ী হব। সবধরনের অপচয়, কৃপণতা ও বিলাসিতা থেকে দূরে থাকব। তাহলে আমাদের জীবন সুন্দর হবে।

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts

You cannot copy content of this page