Skip to content

সূরা বাকারার ৩৮ ও ৩৯ এর অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও শিক্ষা

সূরা বাকারার ৩৮ ও ৩৯ এর অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও শিক্ষা

প্রিয় দ্বীনি ভাই-বোন, এ পাঠটি শেষ অবধি পড়লে আপনি- এই পাঠ শেষে ৩৮ ও ৩৯ নং আয়াতের অনুবাদ ব্যাখ্যা ও শিক্ষাসমূহ সম্পর্কে জানতে পারবেন।

নিম্নে সহজ সংক্ষিপ্তভাবে সূরা বাকারার ৩৮ ও ৩৯ নং আয়াতের অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও শিক্ষা তুলে ধরা হলো-

অনুবাদ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

৩৮.قُلْنَا ٱهْبِطُوا۟ مِنْهَا جَمِيعًا فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُم مِّنِّى هُدًى فَمَن تَبِعَ هُدَاىَ فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ

কুলনাহ বিতূমিনহা-জামী‘আন ফাইম্মা- ইয়া’তিইয়ান্নাকুম মিন্নী হুদান ফামান তাবি‘আ হুদা-ইয়া ফালা-খাওফুন ‘আলাইহিম ওয়ালা-হুম ইয়াহঝানূন।

আমি বললাম, তোমরা সকলেই এখান থেকে নেমে যাও। সুতরাং পরে যখন আমার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট কোন পথ নির্দেশ আসবে, তখন যারা আমার নির্দেশ অনুসরণ করবে তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। 
৩৯.وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ وَكَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَآ أُو۟لَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِ هُمْ فِيهَا خَٰلِدُونَ

ওয়াল্লাযীনা কাফারূ ওয়াকাযযাবূবিআ-য়া-তিনাউলাইকা আসহা-বুন্না-রি হুম ফীহা-খা-লিদূ ন।

হুওয়াল্লাযী খালাকালাকুম মা-ফিল আরদিজামী‘আন ছু ম্মাছ তাওয়াইলাছছামাই ফাছাওওয়া-হুন্না ছাব‘আ ছামা-ওয়া-তিওঁ ওয়া হুওয়া বিকুল্লি শাইয়িন ‘আলীম।

এবং যারা কুফরি করবে এবং আমার নিদর্শনাবলিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে তারাই দোযখবাসী এবং তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।

ব্যাখ্যা ও শিক্ষা

৩৮ নং আয়াতের ব্যাখ্যা ও শিক্ষা

হযরত আদম (আ) ও হজরত হাওয়া (রা)-কে সৃষ্টি করার মূল উদ্দেশ্যই ছিল পৃথিবীতে আল্লাহর খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা। পৃথিবীতে পাঠানোর পূর্বে তাঁদেরকে পরীক্ষা করার জন্য বেহেশ্তে রাখা হয়েছিল। হযরত আদম (আ) ও হাওয়া (রা) আল্লাহর নিষেধাজ্ঞার কথা ভুলে গিয়ে অভিশপ্ত শয়তানের প্ররোচনায় নিষিদ্ধ গাছের ফল ভক্ষণ করে আল্লাহর বিরাগভাজন হন। ফলে তাঁদের দেহ থেকে বেহেশ্তী পোশাক খসে পড়ল এবং আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকে বেহেশ্ত থেকে পৃথিবীতে নেমে আসতে নির্দেশ দিলেন।

কিন্তু আদম (আ) ও হাওয়া (রা) নিজেদের কৃত অপরাধের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে আল্লাহ তাদেরকে আশ্বস্ত করে বললেন, পৃথিবীতে তোমাদের কাছে আমার পক্ষ থেকে জীবন বিধান (হিদায়াত) পৌঁছবে।

এ আয়াত থেকে আমরা যে গ্রহণ করতে পারি তা হচ্ছে-

▣ যারা আল্লাহর সেই জীবন বিধান অনুযায়ী কর্মপন্থা নির্ধারণ করে নিজেদেরকে সেদিকে পরিচালিত করবে, তাদের জন্য কোন ভয় নেই কিংবা তারা দুঃখিতও হবে না। অর্থাৎ তারা আমার সন্তুষ্টি লাভ করে পুনরায় তাদের মূল আবাসস্থল বেহেশ্তে ফিরে আসতে পারবে।

▣ যারা আল্লাহর প্রেরিত জীবনব্যবস্থা ও পথনির্দেশনা মোতাবেক তাদের জীবন পরিচালনা করবে না, তারা মুক্তি পাবে না। জাহান্নামই হবে তাদের স্থায়ী ঠিকানা।

৩৯ নং আয়াতের ব্যাখ্যা ও শিক্ষা

আল্লাহ তা‘আলা আদম (আ) ও হাওয়া (আ.)-এবং ইবলিসকে ঊর্ধ্ব জগৎ হতে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেওয়ার সময়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন যে, নিশ্চয় পৃথিবীতে আমার তরফ থেকে হিদায়াতের বাণী সম্বলিত কিতাব ও নবী-রাসূলগণের আগমন ঘটবে। তোমরা যদি সে হিদায়াতের বাণী অনুসরণ কর এবং নবী-রাসূলগণকে মেনে চল, তাহলে তোমাদের কোন ভয় নেই, তোমাদের কোন চিন্তা থাকবে না। তোমরা অনন্ত সুখের জান্নাতের অধিবাসী হবে। সেখানে তোমরা চিরকাল সুখে শান্তিতে বসবাস করবে। আর যদি তোমরা আমার সেসব হিদায়াতের বাণী ও নিদর্শনাবলিকে এবং নবী-রাসূলগণকে অস্বীকার কর, সে সবকে মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান কর তাহলে তোমাদের পরিণাম শুভ হবে না। তোমরা হবে জাহান্নামের অধিবাসী। আর সেখানেই তোমরা চিরকাল অবস্থান করবে।

এ আয়াত থেকে আমরা যে গ্রহণ করতে পারি তা হচ্ছে-

▣ পৃথিবীতে মানুষ এসেছে একটি সীমিত সময়ের জন্য।

▣ মানুষের পৃথিবীর জীবন পরিচালনার দিক নির্দেশনা হিসেবে মানুষের কাছে আসবে আল্লাহর পক্ষ থেকে হিদায়াত।

▣ আল্লাহর সেই হিদায়াত ও নবী-রাসূলগণকে মেনে চলার মধ্যেই মানুষের ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি নিহিত।

▣ আর যদি কেউ তা অস্বীকার করে তবে সে হবে কাফির ।

▣ কাফিরদের দুনিয়ার জীবন হবে সংকীর্ণ, বিপর্যস্ত এবং অশান্তিতে ভরপুর। আর আখিরাতে এদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম, সেখানে তারা চিরকাল শাস্তি ভোগ করবে।

▣ অতএব আমরা আল্লাহর বিধানকে মেনে চলব এবং কখনো নাস্তিকদের মত হব না। তাহলেই আমরা মুক্তি পাব।

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts