(১) শরিয়ত বা শরীয়াহ অর্থ কী?
শরিয়ত আরবি শব্দ। এর অর্থ পথ, রাস্তা। এটি জীবনপদ্ধতি, আইন-কানুন, বিধি-বিধান অর্থেও ব্যবহৃত হয়। ব্যাপক অর্থে শরিয়ত হলো এমন সুদৃঢ় ও সুস্পষ্ট পথ, যা অনুসরণ করলে মানুষ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নিজ গন্তব্যে পৌছতে পারে।
(২) শরিয়তবা শরীয়াহ কাকে বলে?
ইসলামি পরিভাষায়, ইসলামি কার্যনীতি বা জীবনপদ্ধতিকে শরিয়ত বলা হয়।
অন্যকথায়, ইসলামি আইন-কানুন বা বিধি-বিধানকে একত্রে শরিয়ত বলা হয়। অর্থাৎ মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সাঃ) যেসব আদেশ-নিষেধ ও পথনির্দেশনা মানুষকে জীবন পরিচালনার জন্য প্রদান করেছেন তাকে শরিয়ত বলে।
(৩) শরিয়ত বা শরীয়াহ কী?
ইসলাম শুধু একটি ধর্মই নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এটি সর্বজনীন ও সর্বকালীন বিধি-বিধানের সমষ্টি। বিশ্বাসগত বিষয়গুলোর পাশাপাশি মানবজীবনের আচরণগত সমস্ত দিকও ইসলামে আলোচনা করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির সার্বিক কল্যাণের জন্য নানা বিধি-বিধান ও আচার-আচরণগত দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। মহান আল্লাহ প্রদত্ত এসব বিধি-বিধানই হলো শরিয়ত।
আমাদের জন্য ইসলামি শরিয়তের পরিচয় ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানা আমাদের সবার জন্য জরুরি।
শরিয়ত সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“অতঃপর আমি আপনাকে শরিয়তের উপর প্রতিষ্ঠিত করেছি। সুতরাং আপনি তার অনুসরণ করুন। আর আপনি অজ্ঞদের খেয়ালখুশির অনুসরণ করবেন না।”
(সূরা আল-জাসিয়া, আয়াত ১৮)
(৪) শরিয়ত বা শরীয়াহ এর বিষয়বস্তু ও পরিধি
শরিয়তের বিষয়বস্তু ও পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক। এটি হলো মানবজাতির জন্য সার্বিক ও পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা।
মানব জীবনের সকল বিষয়ের বিধি-বিধান ও নির্দেশনা এতে বিদ্যমান।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম, তোমাদের উপর আমার নিয়ামত পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে দীন হিসেবে মনোনীত করলাম।”
(সূরা আল-মায়িদা, আয়াত ৩)
সুতরাং বোঝা গেল যে, ইসলামি শরিয়তের বিষয়বস্তু ও পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক।
মুসলিম মনীষীগণ শরিয়তের বিষয়বস্তুকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন। যথা-
- আকিদা বা বিশ্বাসগত বিধি-বিধান।
- নৈতিকতা ও চরিত্র সংক্রান্ত রীতি-নীতি।
- বাস্তব কাজকর্ম সংক্রান্ত নিয়মকানুন।
বস্তুত মানুষের সবধরনের আচার-আচরণ, চিন্তা-চেতনা উপরিউক্ত তিনটি বিষয়ের আওতাভুক্ত। ফলে মানুষের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় সকল কাজই শরিয়তের অন্তর্ভুক্ত। শরিয়তের নির্দেশনার বাইরে কোনো কাজই নেই।
(৫) শরিয়ত বা শরীয়াহ এর গুরুত্ব
মানবজীবনে শরিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। শরিয়ত হলো মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রদত্ত আদেশ-নিষেধ ও বিধি- বিধান। সুতরাং শরিয়ত মেনে চললে আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসুল খুশি হন।
অন্যদিকে, শরিয়ত অস্বীকার করা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসুলকে অস্বীকার করার নামান্তর। কোনো মুসলমান এরূপ কাজ করতে পারে না। এমনকি শরিয়তের এক অংশ পালন করা আর অন্য অংশ অস্বীকার করাও মারাত্মক পাপ (কুফর)। যে ব্যক্তি এরূপ করে তার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“তোমরা কী কীতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? তোমাদের যারা এরূপ করে তাদের একমাত্র প্রতিফল হলো পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা। আর কিয়ামতের দিন তারা কঠিনতম শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে।”
(সূরা আল-বাকারা, আয়াত ৮৫)
শরিয়ত হলো জীবন পরিচালনার দিকনির্দেশনা। এর দ্বারা জীবনের নানা ক্ষেত্রে ইসলামি বিধি-নিষেধ জানা যায়।
কোনটি হালাল, কোনটি হারাম ইত্যাদি জানা যায়। ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল ইত্যাদি বিষয়ের জ্ঞানও শরিয়তের শিক্ষার মাধ্যমেই লাভ করা যায়। উত্তম চরিত্র ও নৈতিকতার নানা শিক্ষাও শরিয়তে বিবৃত রয়েছে। সুতরাং সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে জীবন পরিচালনার জন্য শরিয়ত অপরিহার্য।
তাছাড়া শরিয়ত আমাদের ইবাদতের পদ্ধতি ও নিয়ম-কানুন শিক্ষা দেয়। সালাত, যাকাত, সাওম, হজ ইত্যাদি কীভাবে, কোথায়, কোন সময়ে আদায় করতে হয় তাও শরিয়তের বর্ণনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। আত্মিক পরিশুদ্ধি অর্জনের উপায়, পারিবারিক ও সামাজিক সম্প্রীতি ইত্যাদিও শরিয়তের আওতাভুক্ত।
অতএব, মানুষের সার্বিক জীবনাচরণে শরিয়তের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
(৬) শরিয়ত বা শরীয়াহ এর ভিত্তি ও উৎসসমূহ
শরিয়ত হলো ইসলামি জীবনপদ্ধতি। এটি আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসুলের আদেশ-নিষেধ ও দিকনির্দেশনার সমষ্টি। অতএব, শরিয়ত এর প্রধান উৎস দুটি। যথা- আল-কুরআন ও আল-হাদিস বা সুন্নাহ।
পরবর্তীতে কুরআন ও সুন্নাহ এর স্বীকৃতি ও নির্দেশনার ভিত্তিতে শরিয়তের আরও দুটি উৎস নির্ধারণ করা হয়। এগুলো হলো ইজমা ও কিয়াস। সুতরাং আমরা বলতে পারি- শরিয়ত এর উৎস চারটি। যথা-
- আল-কুরআন (الْقُرْآنُ)
- সুন্নাহ
- ইজমা
- কিয়াস
(৭) শরিয়ত বা শরীয়াহ এর ১ম উৎস: আল-কুরআন
শরিয়তের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান উৎস হলো আল-কুরআন। ইসলামি শরিয়তের সকল বিধি-বিধানের মূল উৎসই আল- কুরআন। এর উপরই ইসলামি শরিয়তের ভিত্তি ও কাঠামো প্রতিষ্ঠিত। আল-কুরআন শরিয়তের অকাট্য ও প্রামাণ্য দলিল। মানব জীবনের প্রয়োজনীয় সকল বিষয়ের সমাধানসূচক মূলনীতি ও ইঙ্গিত আল-কুরআনে বিদ্যমান।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“আমি আপনার প্রতি কিতাব নাজিল করেছি প্রত্যেক বিষয়ের স্পষ্ট ব্যাখ্যা স্বরূপ।”
(সূরা আন-নাহল, আয়াত ৮৯)
আল-কুরআন আল্লাহ তায়ালার পবিত্র বাণী। এটি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব। আল্লাহ তায়ালা হযরত জিবরাইল (আঃ)-এর মাধ্যমে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর এ কিতাব নাজিল করেন। এ কিতাব আরবি ভাষায় নাজিলকৃত। ইসলামি শরিয়তের প্রধান উৎস হিসেবে আল-কুরআনে মানবজাতির জীবন পরিচালনার সুস্পষ্ট মূলনীতি ও নির্দেশনা বিদ্যমান।
মহান আল্লাহ বলেন,
“আর অবশ্যই আমি মানুষের জন্য এ কুরআনে বিভিন্ন উপমা বিশদভাবে বর্ণনা করেছি।”
(সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৮৯)
কুরআন মজিদ সহজ ও সাবলীল ভাষায় নাজিলকৃত। এতে কোনোরূপ অস্পষ্টতা, বক্রতা, কিংবা জটিলতা নেই। বরং এতে খুবই সুন্দর ও সরল ভাষায় নানা বিষয়ের বর্ণনা করা হয়েছে। অতি সাধারণ মানুষও এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন,
“আমি তো কুরআনকে আপনার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।”
(সূরা আদ-দুখান, আয়াত ৫৮)
আল-কুরআন এর অবতরণ:
আল-কুরআন আল্লাহ তায়ালার কালাম। এটি ‘লাওহে মাহফুজ’ বা সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“বস্তুত এটি সম্মানিত কুরআন। সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ।”
(সূরা আল-বুরূজ, আয়াত ২১-২২)
আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম কদরের রাতে গোটা কুরআন মজিদ লাওহে মাহফুজ থেকে ‘বায়তুল ইযযাহ’ নামক স্থানে নাজিল করেন। বায়তুল ইযযাহ হলো প্রথম আসমানের একটি বিশেষ স্থান।
মহানবি (সাঃ) হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকা অবস্থায় মহান আল্লাহর নির্দেশে জিবরাইল (আঃ) আল-কুরআনের সূরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াত নিয়ে তথায় মহানবি (সাঃ)-এর নিকট অবতরণ করেন। এটাই ছিল দুনিয়াতে আল-কুরআনের প্রথম নাজিলের ঘটনা। এরপর বিভিন্ন সময় ও প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে মহানবি (সাঃ)-এর প্রতি কুরআন নাজিল হয়।
এভাবে মহানবি (সাঃ)-এর জীবদ্দশায় মোট ২৩ বছরে সম্পূর্ণ কুরআন নাজিল হয়। এটি একসাথে নাজিল হয়নি। বরং অল্প অল্প করে প্রয়োজনানুসারে নাজিল হতো। কখনো ৫ আয়াত, কখনো ১০ আয়াত, কখনো আয়াতের অংশবিশেষ, আবার কখনো একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা একসাথে নাজিল হতো।
আল্লাহ তায়ালা এ প্রসঙ্গে বলেন,
“আর আমি খণ্ড-খণ্ডভাবে কুরআন নাজিল করেছি যাতে আপনি তা মানুষের নিকট ক্রমে ক্রমে পাঠ করতে পারেন আর আমি তা ক্রমশ নাজিল করেছি।”
(সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ১০৬)
অন্যান্য আসমানি কিতাবের ন্যায় আল-কুরআন একসাথে নাজিল করা হয়নি। তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল ইত্যাদি একসাথে পূর্ণাঙ্গ আকারে নাজিল করা হয়েছিল। কিন্তু আল-কুরআন এর ব্যতিক্রম। এটি আল-কুরআনের বিশেষ মর্যাদার পরিচায়ক।
মক্কার কাফিররা এ সম্পর্কে রাসুল (সাঃ)-কে প্রশ্ন করলে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“কাফিররা বলে, তাঁর উপর সমগ্র কুরআন একবারে অবতীর্ণ হলো না কেন? আমি এভাবেই অবতীর্ণ করেছি আপনার হৃদয়কে তার দ্বারা মজবুত করার জন্য এবং আমি তা ক্রমে ক্রমে স্পষ্টভাবে আবৃত্তি করেছি।”
(সূরা আল-ফুরকান, আয়াত ৩২)
আল-কুরআন আল্লাহ তায়ালার বাণী। জিবরাইল (আঃ)-এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা অল্প অল্প করে মহানবি (সাঃ)-এর ২৩ বছরের নবুওয়াতি জীবনে পূর্ণরূপে নাজিল করেন।
(৮) শরিয়ত বা শরীয়াহ এর ২য় উৎস: সুন্নাহ
ক) পরিচিতি
শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস হলো সুন্নাহ। সুন্নাহ অর্থ রীতিনীতি।
ইসলামি পরিভাষায়, মহানবি (সাঃ)-এর বাণী, কর্ম ও তাঁর সমর্থিত রীতিনীতিকে সুন্নাহ বলে। সুন্নাহকে হাদিস নামেও অভিহিত করা হয়। সুন্নাহ হলো আল-কুরআনের ব্যাখ্যা স্বরূপ।
আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদে বিভিন্ন বিষয়ের সংক্ষিপ্ত মূলনীতি বর্ণনা করেছেন। আর মহানবি (সাঃ) তাঁর সুন্নাহর মাধ্যমে এসব বিধি-বিধান ও বিষয়সমূহ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“আর আমি আপনার প্রতি কুরআন নাজিল করেছি, মানুষকে সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য যা তাদের প্রতি নাজিল করা হয়েছে।”
(সূরা আন-নাহল, আয়াত ৪৪)
একটি উদাহরণের মাধ্যমে এ বিষয়টি স্পষ্ট হতে পারে।
যেমন আল-কুরআনে বলা হয়েছে,
“তোমরা সালাত কায়েম কর।”
(সূরা আল-আনআম, আয়াত ৭২)
কিন্তু কোথায়, কীভাবে, কোন সময়ে সালাত আদায় করতে হবে এর কোনো পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা আল-কুরআনে পাওয়া যায় না। বরং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি সালাতের সমস্ত নিয়মকানুন তাঁর হাদিস বা সুন্নাহ এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ করেছেন। এভাবে আল-কুরআনের নির্দেশ ও সুন্নাহর বর্ণনার মাধ্যমে সালাত প্রতিষ্ঠা হয়।
মূলত, সুন্নাহ বা হাদিস হলো আল-কুরআনের পরিপূরক। আল-কুরআনে একে শরিয়তের দলিল হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
আল্লাহ বলেন,
“রাসুল তোমাদের যা দেন তা তোমরা গ্রহণ কর আর তোমাদের যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।”
(সূরা আল-হাশর, আয়াত ৭)
সুতরাং প্রমাণিত হয় যে, সুন্নাহ বা হাদিস শরিয়তের অন্যতম দলিল ও উৎস। আল-কুরআনের পরই এর স্থান।
খ) আল-হাদিস
হাদিস অর্থ কথা বা বাণী।
ইসলামি পরিভাষায়, হাদিস বলতে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর বাণী, কর্ম ও মৌনসম্মতিকে বোঝানো হয়।
হাদিসের দুটি অংশ: একটি সনদ ও অপরটি মতন।
হাদিসের রাবি পরম্পরাকে সনদ বলা হয়। যিনি হাদিস বর্ণনা করেন তাঁকে বলা হয় রাবি বা বর্ণনাকারী। হাদিস বর্ণনায় হাদিসের রাবিগণের পর্যায়ক্রমিক উল্লেখ বা বর্ণনা পরম্পরাই সনদ । আর হাদিসের মূল বক্তব্য বা মূল অংশকে বলা হয় মতন। হাদিস শাস্ত্রে সনদ ও মতন উভয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গ) হাদিসের প্রকারভেদ
মতন বা হাদিসের মূল বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে হাদিসকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
- কাওলি
- ফি’লি এবং
- তাকরিরি
কাওলি হাদিস:
রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর বাণীসূচক হাদিসকে কাওলি হাদিস বলা হয়। অর্থাৎ মহানবি (সাঃ)-এর পবিত্ৰ মুখনিঃসৃত বাণীকে কাওলি বা বাণীসূচক হাদিস বলে।
ফি’লি হাদিস:
ফি‘লি শব্দের অর্থ কাজ সম্বন্ধীয়। যে হাদিসে মহানবি (সাঃ)-এর কোনো কাজের বিবরণ স্থান পেয়েছে তাকে ফি’লি বা কর্মসূচক হাদিস বলা হয়।
তাকরিরি হাদিস:
তাকরিরি অর্থ মৌন সম্মতি জ্ঞাপক। রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর অনুমোদনসূচক হাদিসই হলো তাকরিরি হাদিস। অর্থাৎ সাহাবিগণ রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর সামনে কোনো কথা বলেছেন কিংবা কোনো কাজ করেছেন কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তা নিজে করেননি এবং তাতে বাধাও দেননি বরং মৌনতা অবলম্বন করে তাতে সম্মতি বা অনুমোদন দিয়েছেন। এরূপ অবস্থা বা বিষয়ের বর্ণনা যে হাদিসে এসেছে সে হাদিসকে তাকরিরি বা সম্মতিসূচক হাদিস বলা হয়।
সনদ বা রাবির পরম্পরার দিক থেকে হাদিস আবার তিন প্রকার। যথা-
- মারফু
- মাওকুফ
- মাকতু
মারফু হাদিস:
যে হাদিসের সনদ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) পর্যন্ত পৌঁছেছে তাকে মারফু হাদিস বলা হয়।
মাওকুফ হাদিস:
যে হাদিসের সনদ সাহাবি পর্যন্ত পৌছে শেষ হয়ে গেছে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) পর্যন্ত পৌঁছেনি এরূপ হাদিসকে মাওকুফ হাদিস বলে।
মাকতু হাদিস:
যে হাদিসের সনদ তাবিঈ পর্যন্ত পৌঁছেছে তাকে মাকতু হাদিস বলে।
অন্যকথায়, যে হাদিসে কোনো তাবিঈর বাণী, কাজ ও মৌন সম্মতি বর্ণিত হয়েছে তাকে মাকতু হাদিস বলা হয়।
প্রকৃতপক্ষে, শরিয়তে আরও বহু প্রকারের হাদিস দেখা যায়। আমরা পরবর্তীতে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আরও একটি পো/ষ্টে আরৈাকপাত করব, ইংশাআল্লাহ।
ঘ) হাদিসে কুদসি
হাদিসের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকার হলো হাদিসে কুদসি। কুদসি শব্দের অর্থ পবিত্র। এ প্রকার হাদিস সরাসরি আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পৃক্ত।
ইসলামি পরিভাষায়, যে হাদিসের শব্দ ও ভাষা রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিজস্ব, কিন্তু তার অর্থ, ভাব ও মূলকথা আল্লাহ তায়ালার নিকট থেকে ইলহাম বা স্বপ্নযোগে প্রাপ্ত, তাকে হাদিসে কুদসি বলে।
সংক্ষেপে, যে হাদিসের মূল কথা আল্লাহ তায়ালার নিকট থেকে প্রাপ্ত এবং মহানবি (সাঃ) নিজের ভাষায় তা উম্মতকে জানিয়ে দিয়েছেন সেটাই হাদিসে কুদসি। হাদিসে কুদসির ভাব, অর্থ ও মূলকথা আল্লাহ তায়ালার হলেও তা আল-কুরআনের অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং এটি হাদিস হিসেবে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী।
(৯) শরিয়ত বা শরীয়াহ এর ৩য় উৎস: আল-ইজমা
ক) পরিচয়
শরিয়তের তৃতীয় উৎস হলো ইজমা। ইজমা আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ- একমত হওয়া, ঐক্যবদ্ধ হওয়া, মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করা ইত্যাদি। ব্যবহারিক অর্থে কোনো বিষয় বা কথায় ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলে।
ইসলামি পরিভাষায়, শরিয়তের কোনো বিষয়ে একই যুগের মুসলিম উম্মতের পুণ্যবান মুজতাহিদগণের (গবেষক) ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলা হয়।
ইজমা মহানবি (সাঃ)-এর পরবর্তী যেকোনো যুগে হতে পারে। সাহাবিগণ থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্ত প্রতিটি যুগেই ইজমা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। ইজমা কুরআন-সুন্নাহ সমর্থিত হওয়া আবশ্যক। কুরআন-সুন্নাহর মূলনীতি বিরোধী কিংবা কোনো অন্যায় ও পাপ কাজে ইজমা হয় না। ইজমা আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত মুসলমানদের জন্য এক বিশেষ মর্যাদা ও নিয়ামত।
খ) ইজমার উৎপত্তি:
ইজমা বা ঐকমত্যের ভিত্তিতে কোনো সমস্যার সমাধান করা কিংবা নতুন বিধান প্রবর্তন করা কোনো নতুন ঘটনা নয়। বরং রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর সময় হতেই এর ব্যবহার বা প্রচলন লক্ষ করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) স্বয়ং বিভিন্ন বিষয়ে সাহাবিগণের পরামর্শ নিতেন। অতঃপর তাঁদের মতামতের আলোকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
“আর তাদের কাজকর্ম সম্পাদিত হয় পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে।”
(সূরা আশ-শুরা, আয়াত ৩৮)
এভাবেই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইজমার বৈধতা, দৃষ্টান্ত ও আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে সাহাবিগণের যুগে এর পূর্ণাঙ্গ প্রচলন ঘটে। খলিফাগণ নতুন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে সর্বপ্রথম আল-কুরআনে এর সমাধান খুঁজতেন। তাতে খুঁজে না পেলে মহানবি (সাঃ)-এর হাদিসের মাধ্যমে সমাধান করতেন। আর যদি হাদিসেও সে সমস্যার সুস্পষ্ট কোনো সমাধান না পেতেন তখন তাঁরা বিশিষ্ট সাহাবিগণের মতামত নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সমাধান দিতেন।
যেমন- হযরত আবু বকর (রা.)-এর সময়ে সাহাবিগণের ঐকমত্যের মাধ্যমেই কুরআন সংকলনের কাজ শুরু করা হয়। দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রা.)-এর সময়ে বিশ রাকআত তারাবি-এর সালাত জামাআতের সাথে আদায় করার ব্যাপারে সাহাবিগণের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবে পরবর্তী যুগগুলোতেও ইজমার মাধ্যমে নানা সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করা হয়েছে।
গ) ইজমার হুকুম ও কার্যকারিতা
ইজমা শরিয়তের তৃতীয় উৎস। বিধি-বিধান নির্ধারণে ইজমা অকাট্য দলিল হিসেবে সাব্যস্ত। সাধারণভাবে ইজমার ভিত্তিতে প্রণীত বিধানের উপর আমল করা ওয়াজিব।
ঘ) ইজমার গুরুত্ব ও বৈধতা
ইসলামি শরিয়তে ইজমা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল-কুরআন ও হাদিসের পরই এর স্থান। এটি শরিয়তের তৃতীয় উৎস ও অকাট্য দলিল। আল-কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিস দ্বারা ইজমার বৈধতা প্রমাণিত।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির জন্য তোমাদের আবির্ভাব।”
(সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১১০)
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে,
“এভাবে আমি তোমাদের এক মধ্যপন্থী জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি যাতে তোমরা মানবজাতির জন্য সাক্ষ্যদাতা হতে পার।”
(সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৪৩)
উপরিউক্ত আয়াতদ্বয়ে উম্মতে মুহাম্মদি তথা মুসলিম জাতিকে শ্রেষ্ঠ ও মধ্যপন্থী উম্মত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা ইজমার পরোক্ষ দলিল স্বরূপ।
মুসলিম মুজতাহিদগণ একমত হয়ে কোনো বিষয়ে ফয়সালা করলে তার বিরোধিতা করা চরম পাপ।
আল্লাহ তায়ালা এ প্রসঙ্গে বলেন,
“সৎপথ প্রকাশিত হওয়ার পরও কেউ যদি রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনগণের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, তবে আমি তাকে ঐ দিকেই ফিরিয়ে দেব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব।”
(সূরা আন-নিসা, আয়াত ১১৫)
উক্ত আয়াতে মুমিনদের অনুসৃত পথ বলতে মুসলিমদের ঐকমত্য বা ইজমা এর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
আমাদের প্রিয়নবি (সাঃ) বলেছেন,
“মুসলমানগণ যা ভালো বলে মনে করে তা আল্লাহ তায়ালার নিকটও ভালো”
(তাবারানি)
এ হাদিস দ্বারাও ইজমা তথা মুসলমানদের ঐকমত্যের গুরুত্ব প্রমাণিত।
মহানবি (সাঃ) বলেছেন,
“আল্লাহ তায়ালা আমার উম্মতকে নিশ্চয়ই গোমরাহির উপর জমায়েত করবেন না। আল্লাহর হাত (রহমত ও সাহায্য) দলবদ্ধ থাকার উপর রয়েছে। যে ব্যক্তি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে সে বিচ্ছিন্ন হয়ে (অবশেষে) দোযখে যাবে।”
(তিরমিযি)
ইজমা শরিয়তের অন্যতম দলিল। এর বৈধতা কুরআন-হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এর বিধানের উপর আমল করা আবশ্যক।
(১০) শরিয়ত বা শরীয়াহ এর ৪র্থ উৎস: আল-কিয়াস
ক) পরিচয়
শরিয়তের চতুর্থ উৎস হলো কিয়াস। কিয়াস শব্দের অর্থ অনুমান করা, তুলনা করা, পরিমাপ করা ইত্যাদি।
ইসলামি পরিভাষায় কুরআন ও সুন্নাহর আইন বা নীতির সাদৃশ্যের ভিত্তিতে বিচার-বুদ্ধি প্রয়োগ করে পরবর্তীতে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান দেওয়াকে কিয়াস বলে।
অন্য কথায়, কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমাতে যে সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় না ইসলামি মূলনীতি অনুযায়ী বিচার-বুদ্ধি প্রয়োগ করে সে সমস্যার সমাধান করাই হলো কিয়াস।
খ) কিয়াসের গুরুত্ব
কিয়াস ইসলামি শরিয়তের অন্যতম উৎস। ইজমার পরই এর স্থান। ইসলামি শরিয়তের পূর্ণাঙ্গতার জন্য কিয়াসের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। মানবজীবন ও সমাজ সতত পরিবর্তনশীল। পরিবর্তন ও বিবর্তনের ধারায় জগতে নতুন নতুন সভ্যতা-সংস্কৃতির উন্মেষ ঘটে। ফলে নতুন নতুন জিজ্ঞাসা, সমস্যা ও জটিলতার সৃষ্টি হয়। এ সমস্ত সমস্যার সমাধান সভ্যতা ও সংস্কৃতির আলোকেই করতে হয়। ইসলাম অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মতভাবে এসব সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। কেননা, ইসলাম একটি গতিশীল জীবনব্যবস্থা। এটি পূর্ণাঙ্গ ও সর্বজনীন জীবন-বিধান। কিয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী সকল মানুষের জন্য পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা এতে দেওয়া হয়েছে। কুরআন ও হাদিসে শরিয়তের বিষয়গুলো এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন এগুলোর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে সর্বযুগে সর্বকালে সমস্ত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়। আর এ পদ্ধতির নামই কিয়াস। সুতরাং শরিয়তের পূর্ণাঙ্গতার জন্য কিয়াস অপরিহার্য।
আল-কুরআন ও হাদিসে কিয়াসকে শরিয়তের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“অতএব, হে চক্ষুষ্মানগণ! তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।”
(সূরা আল-হাশর, আয়াত ২)
এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মুসলিমদের চিন্তা ও গবেষণা করে শিক্ষা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর কিয়াস মুসলিম জ্ঞানীদের চিন্তা-ভাবনারই ফল।
কিয়াস শরিয়তের সর্বনিম্ন স্তর। যখন কোনো বিষয়ে আল-কুরআন, হাদিস ও ইজমায় পরিষ্কারভাবে সমাধান পাওয়া যায় না তখনই কিয়াস প্রযোজ্য হয়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবিগণকে কিয়াস করার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়,
মহানবি (সাঃ) যখন হযরত মুআয ইবনে জাবাল (রা.)-কে ইয়েমেনের বিচারক হিসেবে প্রেরণ করেন তখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, “যখন কোনো সমস্যার উদ্ভব হবে তখন তুমি কীভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে?” হযরত মুআয (রা.) বললেন, আল্লাহর কিতাব অনুসারে। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, “যদি আল্লাহর কিতাবে তা না পাও, তবে?” তিনি বললেন, তাহলে নবির সুন্নাহ মোতাবেক। রাসুল (সাঃ) পুনরায় বললেন, “যদি তাতেও না পাও, তাহলে?” হযরত মুআয (রা.) বললেন, তা হলে আমি আমার বিবেক বুদ্ধি প্রয়োগ করে সিদ্ধান্ত প্রদান করব। তাঁর উত্তর শুনে নবি (সাঃ) বললেন, “সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তাঁর রাসুলের দূত দ্বারা এমন উত্তর প্রদান করালেন যাতে তাঁর রাসুল সন্তুষ্ট হলেন।”
(আবু দাউদ)
উপরোক্ত কুরআনের আয়াত ও রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর হাদিসে স্পষ্টভাবে কিয়াস বা গবেষণার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। সুতরাং কিয়াস যে শরিয়তের অন্যতম উৎস এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই ৷
গ) কিয়াসের নীতিমালা
রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর ইন্তিকালের পর খুলাফায়ে রাশেদিনের যুগে কিয়াসের মাধ্যমে নতুন নতুন সমস্যার সমাধান করা হতো। পরবর্তী যুগে কিয়াসের ব্যবহার আরও ব্যাপক হয়ে ওঠে। তবে নিজের খেয়ালখুশি মতো স্বার্থপরভাবে কিয়াস করা বৈধ নয়।
শরিয়তের ইমামগণ কিয়াস করার ব্যাপারে কতিপয় নীতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এগুলো হলো-
- যেসব বিষয়ের সমাধান কুরআন, হাদিস ও ইজমায় পাওয়া যায় সেসব বিষয়ে কিয়াস করা যাবে না।
- কিয়াস কখনোই কুরআন-সুন্নাহ ও ইজমার বিরোধী হবে না।
- কিয়াসের পদ্ধতি ও আইন মানুষের জ্ঞানের পরিসীমার মধ্যে থাকতে হবে।
- কুরআন, হাদিস ও ইজমা দ্বারা প্রবর্তিত আইনের মূলনীতি বিরোধী কোনো আইন তৈরি করা কিয়াসের আওতা বহির্ভূত।
প্রকৃতপক্ষে, কিয়াস ইসলামি শরিয়তের একটি বিজ্ঞানসম্মত ও যৌক্তিক উৎস। কিয়াস ইসলামি আইনকে গতিশীল করেছে ও সর্বজনীনতা দান করেছে। এর মাধ্যমে বর্তমান বিশ্বায়নের নতুন নতুন বিষয়ের বিধান দেওয়া সম্ভব।
আল্লাহ তায়ালা ও মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) -এর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা, সকল কাজে তাঁদের আনুগত্য করা, শরিয়তের অন্যতম দাবি। এগুলোর পরিপূর্ণ আনুগত্য ও অনুসরণের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতের সার্বিক সফলতা লাভ করা যায়।
পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।