(১) সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণসহ অর্থ একত্রে
بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ বিস্মিল্লাহির রাহ্মানির রাহীম পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি) قُلْ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ। বলুন (হে নবি), তিনি আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, ٱللَّهُ ٱلصَّمَدُ আল্লাহুস সামাদ। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। তিনি কাউকে জন্ম দেননি; কেউ তাঁকে জন্ম দেননি, وَلَمْ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدٌۢ ওয়ালাম ইয়াকুল লাহু কুফুওয়ান আহাদ। আর তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।
(২) সূরা ইখলাস আরবি
بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ • قُلْ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ • ٱللَّهُ ٱلصَّمَدُ • لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ • وَلَمْ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدٌۢ
(৩) surah ikhlas bangla
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম • কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ। • আল্লাহুস সামাদ। • লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। • ওয়ালাম ইয়াকুল লাহু কুফুওয়ান আহাদ।
(৪) সূরা ইখলাসের বাংলা অর্থ/অনুবাদ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম • বলুন (হে নবি), তিনি আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, • তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, • তিনি কাউকে জন্ম দেননি; কেউ তাঁকে জন্ম দেননি, • আর তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।
(৫) surah ikhlas bangla picture HD
(৬) surah ikhlas uccharon audio mp3
(৭) surah ikhlas bangla uccharon o ortho video mp4
(৮) সূরা ইখলাস এর ফজিলত
সূরা ইখলাস-এর ভাব ও মর্মার্থ বুঝে পড়লে তাতে বান্দার অন্তরে আল্লাহর গুণাবলী গেঁথে যাবে। মনে প্রাণে ওই ব্যক্তি হয়ে উঠবে শিরকমুক্ত ঈমানের অধিকারী হবে। আর তার বিনিময়ে সে লাভ করবে দুনিয়া ও পরকালের অনেক উপকারিতা ও ফজিলত।
সূরা ইখলাস এর ফযিলত সম্পর্কে মহানবি (সা.) বলেছেন,
“এই সূরাটি কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।”
(বুখারি ও মুসলিম)
অন্য এক হাদিসে এসেছে,
“জনৈক ব্যক্তি রাসুল (সা.) এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এ সূরাটি খুব ভালোবাসি। উত্তরে নবি করিম (সা.) বললেন, এর ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।”
(তিরমিযি)
আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করে, তা তাকে বালা-মুসিবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট।”
(আবু দাউদ)
(৯) সূরা ইখলাস/সূরা এখলাছ পরিচিতি
‘ইখলাস’ অর্থ হলো- একনিষ্ঠতা, নিরেট খাঁটি বিশ্বাস, ভক্তিপূর্ণ উপাসনা। দুনিয়ার সব বিশ্বাস থেকে মুক্ত হয়ে শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার একত্ববাদের ওপর খাঁটি ও নিরেট বিশ্বাসী হওয়াকে ইখলাস বলে।
সূরা আল-ইখলাস আল-কুরআনের একটি ছোট সূরা; কিন্তু এর ফযিলত ও তাৎপর্য অত্যন্ত বেশি।এ সূরাটি পবিত্র মক্কা নগরীতে নাযিল হয়। এটি আল- কুরআনের ১১২তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৪টি।
এই সূরায় তওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণার পর আল্লাহর সন্তানসন্ততি আছে বলে যে ভ্রান্ত ধারণা করা হয়, তার প্রতিবাদ করা হয়েছে। আল্লাহ সব অভাবের অতীত এবং তাঁর কোনো তুলনা নেই।
আল্লাহ্র অস্তিত্ব ও সত্তার সবচেয়ে সুন্দর ব্যাখ্যা রয়েছে। এটি কুরআনের অন্যতম ছোট একটি সূরা হিসেবেও বিবেচিত হয়ে থাকে। এই সূরাটি কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।
এ সূরাটিতে মহান আল্লাহ নিজের পরিচয় নিজে তুলে ধরেছেন।
(১০) সূরা ইখলাসের শানে নুযুল বা নাযিলের কারণ
মক্কার মুশরিকরা মূর্তিপূজা করত। তারা আল্লাহ তা’আলার পরিচয় সম্পর্কে জানত না। একবার তারা মহানবি (সা.) এর নিকট আল্লাহ তা’আলার বংশ পরিচয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। এদের প্রশ্নের জবাবে আল্লাহ তা’আলা এ সূরা নাযিল করেন।
অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে, মুশরিকরা আরো প্রশ্ন করেছিল, আল্লাহ তা’আলা কিসের তৈরি- স্বর্ণ, রৌপ্য না অন্য কিছুর? তাদের এ সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আল্লাহ তা’আলা এ সূরা নাযিল করেন।
(১১) সূরা ইখলাসের বিষয়বস্তু
আল্লাহ তাআলা তার পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে সূরা ইখলাসের ৪ আয়াতের মাধ্যমে ৪টি বিষয় তুলে ধরেছেন। যথা-
- আল্লাহ এক। এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার একত্ববাদের সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন।
- তিনি অমুখাপেক্ষী। এ আয়াতে তিনি কোনো কিছুতেই মুখাপেক্ষী নন। কারো কাছে তার কোনো প্রয়োজন নেই। সব কিছুতেই তিনিই যথেষ্ট।
- তার জন্ম-সৃষ্টিতে কারো কোনো হাত নেই। তিনি কারো জনক নন আবার তাকে কেউ জন্ম দেননি। তিনি জন্ম-সৃষ্টি দেয়া ও হওয়া থেকে পূত-পবিত্র এবং মুক্ত।
- জন্মের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই এবং চতুর্থ আয়াতে বলা হয়েছে, তিনি অতুলনীয়। চারটি আয়াতের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো, তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদ।
- তার সমকক্ষ কেউ নেই। অর্থাৎ তিনি যে এক ও একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। তার ওপর তাকিদ করা হয়েছে, সত্যয়ন করা হয়েছে যে, তার সমকক্ষ কেউ নেই।
(১২) সূরা ইখলাসের তাফসির/ব্যাখ্যা
এ সূরাটিতে আল্লাহ তা’আলার তাওহিদ বা একত্ববাদের কথা বর্ণিত হয়েছে। এতে আল্লাহ তা’আলা সম্পর্কে মুশরিক ও কাফিরদের বিভিন্ন প্রশ্নের ও ভ্রান্ত বিশ্বাসের জবাব দেওয়া হয়েছে।
সূরাটিতে সংক্ষিপ্তরূপে আল্লাহ তা’আলার পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে।
আল্লাহ তা’আলা এক ও অদ্বিতীয়। তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ। সবকিছু তিনি একাই সৃষ্টি করেছেন এবং একাই নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি কারো সাহায্যের মুখাপেক্ষী নন। বরং সৃষ্টিজগতের সবকিছুই তাঁর মুখাপেক্ষী। আর তাঁর কোন কিছুরই প্রয়োজন নেই। তিনি সকল প্রয়োজনের উর্ধ্বে।
যারা আল্লাহর বংশ পরিচয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিল, তাদের জবাবে আল্লাহ তা’আলা বলেন, তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ তিনি কারও সন্ধান নন এবং তাঁরও কোন সন্তান নেই। তিনি একক ও অদ্বিতীয়। বিশ্বজগতে কেউ তাঁর সমকক্ষ বা সমতুল্য নয় এবং আকার-আকৃতিতে তাঁর সাথে সামঞ্জস্য রাখে না।
আমরা আল্লাহ তা’আলার একত্ববাদে বিশ্বাস করব। তাঁর সাথে কাউকে শরিক করব না। এই সূরাটিকে ভালোবাসবো এবং বেশি বেশি তিলাওয়াত করার চেষ্টা করব।
(১৩) সূরা ইখলাসের শিক্ষা
- আল্লাহ একক ও অদ্বিতীয়।
- সবাই তাঁর মুখাপেক্ষী, তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন।
- তাঁর স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, মাতাপিতা কেউই নেই।
- তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সর্বশক্তিমান।
- তাঁর সমকক্ষ বা সমতুলা কেউ নেই।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সূরা ইখলাসের ভাব ও মর্মার্থ নিজেদের মধ্যে ধীর বিশ্বাস স্থাপন করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর একত্ত্ববাদ ও ক্ষমতায় পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত মর্যাদা ও ফজিলত লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আলোচিত/উত্তরিত অনুসন্ধানসমূহ: সূরা ইখলাসের, সুরা ইখলাস, surah ikhlas bangla, সুরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণ, সূরা এখলাছ, সূরা ইখলাস এর বাংলা অর্থ, ইখলাস সূরা, সূরা ইখলাস এর বাংলা অনুবাদ, সুরা ইখলাস এর বাংলা অর্থ, সূরা ইখলাস আরবি, সুরা ইখলাস বাংলা, সূরা ইখলাসের তাফসীর, সূরা ইখলাস বাংলা, সুরা ইখলাস আরবি, সুরা ইখলাস বাংলা অনুবাদ, সূরা ইখলাস এর শানে নুযুল, সূরা ইখলাস এর বাংলা, সুরা ইখলাস বাংলা অর্থ সহ, সূরা ইখলাস এর বাংলা অর্থ সহ, সুরা ইখলাস অর্থ সহ, সূরা ইখলাসের শিক্ষা, সূরা ইখলাস বাংলা অনুবাদ, সূরা ইখলাস বাংলা অনুবাদ সহ, সুরা ইখলাস বাংলা অর্থ, কুল হু আল্লাহু আহাদ।
পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।