Skip to content

surah takasur bangla: সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ, তাকাসুর সুরা অনুবাদ ও অর্থসহ

surah takasur bangla, সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ, তাকাসুর সুরা অনুবাদ ও অর্থসহ

(১) সূরা তাকাসুর/তাকাসুর সুরা পরিচিতি

সূরার প্রথম আয়াতে বর্ণিত তাকাসুর শব্দ থেকে এ সূরার নামকরণ করা হয়েছে সূরা আত-তাকাসুর ৷ এটি পবিত্র কুরআনের ১০২তম সূরা। এটি পবিত্র মক্কা নগরীতে অবতীর্ণ হয়। এর আয়াত সংখ্যা ৮টি।

তাকাসুর অর্থ প্রচুর ধনসম্পদ সঞ্চয় করা বা প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা করা, অবৈধ পন্থায় সম্পদ সংগ্রহ করা এবং আল্লাহর নির্ধারিত আবশ্যিক দায়-দায়িত্ব পালনে সম্পদ ব্যয় না করা।

(২) surah takasur bangla/surah takasur in bangla

بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
বিস্‌মিল্লাহির রাহ্‌মানির রাহীম
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)
 
أَلْهَىٰكُمُ ٱلتَّكَاثُرُ‎
আলহা-কুমুত্তাকা-ছু র।
প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে,
 
حَتَّىٰ زُرْتُمُ ٱلْمَقَابِرَ
হাত্তা-ঝুরতুমুল মাকা-বির।
এমনকি, তোমরা কবরস্থানে পৌছে যাও।
 
كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ‎
কাল্লা-ছাওফা তা‘লামূন।
এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
 
ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ‎
ছু ম্মা কাল্লা-ছাওফা তা‘লামূন।
অতঃপর এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
 
كَلَّا لَوْ تَعْلَمُونَ عِلْمَ ٱلْيَقِينِ‎
কাল্লা-লাও তা‘লামূনা ‘ইলমাল ইয়াকীন।
কখনই নয়; যদি তোমরা নিশ্চিত জানতে।
 
لَتَرَوُنَّ ٱلْجَحِيمَ‎
লাতারাউন্নাল জাহীম।
তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখবে,
 
ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ ٱلْيَقِينِ‎
ছু ম্মা লাতারাউন্নাহা-‘আইনাল ইয়াকীন।
অতঃপর তোমরা তা অবশ্যই দেখবে দিব্য প্রত্যয়ে,
 
ثُمَّ لَتُسْـَٔلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ ٱلنَّعِيمِ‎
ছু ম্মা লাতুছআলুন্না ইয়াওমাইযিন ‘আনিন্না‘ঈম।
এরপর অবশ্যই সেদিন তোমরা নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।

(৩) সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ

বিস্‌মিল্লাহির রাহ্‌মানির রাহীম
1. আলহা-কুমুত্তাকা-ছু র।
2. হাত্তা-ঝুরতুমুল মাকা-বির।
3. কাল্লা-ছাওফা তা‘লামূন।
4. ছু ম্মা কাল্লা-ছাওফা তা‘লামূন।
5. কাল্লা-লাও তা‘লামূনা ‘ইলমাল ইয়াকীন।
6. লাতারাউন্নাল জাহীম।
7. ছু ম্মা লাতারাউন্নাহা-‘আইনাল ইয়াকীন।
8. ছু ম্মা লাতুছআলুন্না ইয়াওমাইযিন ‘আনিন্না‘ঈম।

(৪) সূরা আত তাকাসুর বাংলা অনুবাদ/অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)
1. প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে,
2. এমনকি, তোমরা কবরস্থানে পৌছে যাও।
3. এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
4. অতঃপর এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
5. কখনই নয়; যদি তোমরা নিশ্চিত জানতে।
6. তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখবে,
7. অতঃপর তোমরা তা অবশ্যই দেখবে দিব্য প্রত্যয়ে,
8. এরপর অবশ্যই সেদিন তোমরা নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।

(৫) সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ ছবি

সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ ছবি

(৬) takasur surah bangla uchhron MP3 audio

(৭) surah at takasur bangla MP4 video

(Creative Commons Attribution license@https://www.youtube.com/@TheReminders)

(৮) সূরা আত তাকাসুর এর ফজিলত

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) একদা সাহাবিগণকে বলেন,

“তোমাদের মধ্যে এমন ক্ষমতা কারো নেইযে সে দৈনিক এক হাজার আয়াত তিলাওয়াত করবে। উত্তরে তারা বললেন, হ্যা এক হাজার আয়াত পাঠ করার শক্তি কয়জনেরই বা আছে? অতঃপর রাসুল (সাঃ) বললেন, তোমাদের কেউ কি প্রতিদিন সূরা তাকাসুর পাঠ করতে পারবে না? উল্লেখ্য, প্রতিদিন এই সূরা একবার পাঠ করা এক হাজার আয়াত তিলাওয়াত করার সমান।”

(মাযহারি)

(৯) সূরা তাকাসুর এর শানে নুযুল

কুরাইশের শাখাগোত্র ছিল বনু আবদি মানাফ, বনু কুসাই ও বনু সাহম। এদের প্রত্যেক গোত্র অপর গোত্রকে লক্ষ্য করে বলত, কি নেতৃতৃ, কি ক্ষমতা কিংবা জনসংখ্যা সবদিক থেকেই আমরা তোমাদের উপরে। এতে করে প্রথমে বনু আবদি মানাফই সবার উপরে প্রমাণিত হলো। শেষে সবাই বলল, আমাদের মধ্যে যারা মারা গেছে তাদেরকেও হিসাব করব। কাজেই তারা কবরস্থানে গিয়ে হাজির হলো এবং কোনটা কার কবর তা বলে বলে গুনতে শুরু করল। এবার বনু সাহমের সংখ্যায় তিন পরিবার বেশি হলো । কেননা জাহিলি যুগে তাদের জনসংখ্যা বেশি ছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই সূরা নাজিল হয়।

See also  surah ikhlas bangla: সূরা ইখলাস বাংলা উচ্চারণসহ অর্থ/অনুবাদ

(১০) সুরা তাকাসুর এর ব্যাখ্যা/তাফসীর

এ সূরায় ধন-সম্পদের মোহ ও প্রতিযোগিতা সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

মানুষ স্বভাবতই, ধন-সম্পদ, টাকা-পয়সা ইত্যাদির প্রতি লোতী। প্রাচুর্য লাভের জন্য পরস্পর প্রতিযোগিতায় লিস্ত থাকা অবস্থাতেই মানুষের মৃত্যু এসে যায় অথচ সে মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য কোনো প্রস্ততিই নিতে পারে না।

কিন্তু এরূপ করা ঠিক নয়। কেননা ধন-সম্পদ হলো ক্ষণস্থায়ী বিষয় এগুলোর প্রতি মোহ মানুষকে আচ্ছনন করে রাখে। অথচ আখিরাতের সাফল্য ও কল্যাণ এগুলোর তুলনায় কতোইনা উত্তম।

মানুষের উচিত দুনিয়ার তুলনায় আখিরাতকে প্রাধান্য দেওয়া মানুষ যদি আখিরাতের বাস্তবতাকে উপলক্ধি করত তবে কখনোই দুনিয়ার প্রচূ্যের প্রতি আকৃষ্ট হতো না।

মৃত্যুর পর মানুষ আখিরাতকে বুঝতে পারবে । আখিরাতের নানা বিষয় চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করবে। অথচ সে তখন কিছুই করতে পারবে না। বরং দুনিয়ায় প্রাপ্ত নিয়ামত সম্পর্কে সে জিজ্ঞাসিত হবে। দুনিয়ার লোভ-লালসা ও অন্যায়-অনৈতিকতার জন্য সে জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করবে ।

(১১) সূরা তাকাসুর এর শিক্ষা

তাকাসুর সুরা থেকে আমরা যেই ৫টি শিক্ষা ও নির্দেশনা পাই তা হলো-

ক) শরিয়ত নির্ধারিত আবশ্যিক দায়-দায়িত্ব পালন, সামর্থ্য অনুযায়ী দান সদকা ও নেক কাজে ব্যয় না করে সম্পদ জমিয়ে রাখা অন্যায়। সম্পদ আল্লাহই দান করেন; সম্পদ লাভ করলে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত এবং তার নির্দেশিত পথে সম্পদ ব্যয় করা উচিত।

খ) প্রতিটি মানুষকেই কবরে যেতে হবে, দুনিয়ার সব লোভ-লালসার ইতি ঘটবে মৃত্যু ও কবরে পৌঁছার মাধ্যমে।

রাসুল (সা.) বলেছেন,

আদম সন্তান যদি দুটি মাঠভর্তি সম্পদের অধিকারী হয়, তাহলে সে তৃতীয় মাঠভর্তি সম্পদ খুঁজে বেড়াবে। মাটি ছাড়া কিছুই তার পেট পূর্ণ করতে পারবে না। যে ব্যক্তি তওবা করে আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন।

(সহিহ মুসলিম: ১০৪৮)

মৃত্যুক্ষণ উপস্থিত হওয়ার আগেই দুনিয়ার মোহ ও লোভ-লালসা থেকে তওবা করা উচিত।

See also  surah adiyat bangla: সূরা আদিয়াত বাংলা উচ্চারণ

গ) কবরের আজাব সত্য; দুনিয়ার জীবনে অন্যায় ও পাপাচার করে থাকলে কবরের জগতে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। কবরের আজাবের বিশ্বাস ও ভয় যেন আমাদের অন্তরে থাকে।

ঘ) মৃত্যুর পর প্রত্যেককেই আবার জীবিত করা হবে। প্রত্যেকেই হিসাব-নিকাশ ও বিচারের মুখোমুখি হবে, জাহান্নামের শাস্তির ভয়াবহতা দেখবে এবং নিজের কৃত ভালো বা মন্দ কাজ অনুযায়ী প্রতিদান বা শাস্তি পাবে।

ঙ) বিচার দিবসে দুনিয়ার জীবনের ভোগ-বিলাস ও আরাম-আয়েশ সম্পর্কে মানুষকে প্রশ্ন করা হবে যে আল্লাহর এত বিপুল নেয়ামতের কী কৃতজ্ঞতা তারা আদায় করেছে! তাই আল্লাহ সম্পদ ও সচ্ছলতা দান করলে তার কৃতজ্ঞতা আদায়ের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী দান সদকা করা উচিত, অসচ্ছল ও অভাবীদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

অতএব, আমরা ধন-সম্পদের প্রতি লোত-লালসা করব না। বরং বৈধভাবে প্রয়োজনমতো ধন-সম্পদ উপার্জন করব। আর আল্লাহু তায়ালার নির্দেশনামতো খরচ করব। অন্যায়ভাবে ধন-সম্পদ প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা করব না।

সর্বদা মাথায় রাখব-

  • সম্পদের পরার প্রতি মোহাচ্ছন্ন থাকা উচিত নয়। এটি মানুষকে আখিরাত ভুলিয়ে দেয়।
  • অন্যায়ভাবে ধন-সম্পদ উপার্জনকারী জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।
  • আখিরাতে সকল কাজের হিসাব নেওয়া হবে।

আলোচিত/উত্তরিত অনুসন্ধানসমূহ: সূরা তাকাসুর, surah takasur bangla, সূরা তাকাসুর বাংলা উচ্চারণ, তাকাসুর সুরা, সুরা তাকাসুর এর তাফসীর, surah takasur in bangla, সূরা তাকাসুর বাংলা, সূরা তাকাসুর এর তাফসীর, সূরা তাকাসুর এর শানে নুযুল, সূরা তাকাসুর এর শিক্ষা, takasur surah bangla, সূরা আত তাকাসুর বাংলা অনুবাদ, সূরা আত তাকাসুর এর ফজিলত, সূরা তাকাসুর এর ফজিলত, সূরা আত তাকাসুর, তাকাসুর শব্দের অর্থ কি, surah at takasur bangla, সুরা তাকাসুর এর ফজিলত, সূরা তাকাসুর বাংলা অর্থ সহ।

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts