নিম্নে শহীদ মিনার বা কোন স্মৃতিস্তম্ভে মোমবাতি জ্বালানো সম্পর্কে ইসলামের বিধান সমপর্কে আলোচনা করা হলো-
শহীদ মিনারে বা কোন স্মৃতিস্তম্ভে মোমবাতি বাতি প্রজ্জ্বল প্রচলন ইসলামী শরীয়ত দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশংসনীয় কোন বিষয় নয়।
দেশের প্রতি ভালোবাসা, মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা, মাতৃভূমি, দেশ এবং মানুষের জন্য, মজলুম মানুষের রক্ষার জন্য যারা জীবন বাজি রেখেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা করবার কথাও ইসলাম আমাদেরকে বলে। কিন্তু সেই শ্রদ্ধা ভালোবাসা প্রকাশের যেই প্রক্রিয়া সেটা যেন যথাযথ হয়, শরিয়া সিদ্ধ হয়, সেটিই ইসলাম বলে। এমন কোন কাজ যে কাজের আসলে বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নাই, ধর্মীয় কোন ভিত্তি নেই, সেটা কোন অবস্থাতে আসলে গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা।
ধরুন কিছু মানুষ মারা গেছে, তাদেরকে স্মরণ করে সারা দেশ ব্যাপী লক্ষ লক্ষ টাকা শহীদ মিনার তৈরি করলাম, সেই শহীদ মিনারে আমরা যদি শত শত মোমবাতি দেই, হাজার হাজার টাকা খরচ করে ফুল রাখি, তাতে মৃত মানুষদের কোন উপকারে আসবে না, এটি না বৈজ্ঞানিকভাবে তার কোন উপকার আসার কোন সুযোগ আছে, না ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে উপকার আসার সুযোগ আছে।
বরং এই টাকা দিয়ে যদি আমরা গরিব দুঃখিদেরকে দান করি, আর শহীদদের সওয়াবের নিয়ত করে, যে তাদের তরফ থেকে দান করছি, তাহলে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তারা আল্লাহর কাছে সাওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ। সেই সাথে তাদের স্মরণঅর্থে আমরা যদি সেই গরীব মানুষের জন্য কাজ করি, কোন কল্যাণমূলক কাজ করি বা তাদের পরিবারের জন্য আমরা কিছু করতে পারি সেটাও যৌক্তিক এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক। এই জায়গা থেকে এ জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভে মোমবাতি জ্বালানো কিংবা ফুল দেওয়া ইসলামে দৃষ্টিকোণ থেকে অনর্থক কাজ।
বরং কোন কোন ক্ষেত্রে এটা শির্কের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। কেউ এখানে পূজো করতে যায় না, পূজার নিয়তও করে না, সেজন্য এটা সরাসরি শির্ক হবে না; কিন্তু শির্কের যে আয়োজন সেখানে মোমবাতি, ফুল এগুলো থাকে; মুশরিকরা যেরকম শির্কে লিপ্ত তারা যেরকম করেন এখানে অনেকটা তার সাথে সাদৃশ্য হয়। তারা প্রতিমার সামনে দেন এখানে আমরা একটা স্তম্ভ তৈরি করে স্তম্ভের সামনে দিচ্ছি ব্যাপারটা অনেকটা কাছাকাছি এই সাদৃশ্য গ্রহণ থেকে আমাদের বিরত থাকা দরকার। এ ব্যাপারে প্রশিদ্ধ কোন আলেমদের সারা বিশ্বব্যাপী কারো কোন ভিন্ন মত নেই।
আমাদের আজকাল জাগতিক অনেক বিষয় আছে যে বিষয়গুলোর ব্যাপারে হালাল হারাম বা বিচার করার মতো কোন হিতাহিত জ্ঞানও আমাদের নেই, জ্ঞান চর্চার সাংস্কৃতি আমরা মুসলিমরা হারিয়ে ফেলেছি, তাই আমরা সমাজের মূল স্রোতে গা ভাসিয়ে অনেকেই কিন্তু অনেক গুনাহে লিপ্ত হয়ে যাচ্ছি।
[সূত্র: Shaikh Ahmadullah]