এই আর্টিকেলটি অধ্যয়নে আপনি- হাদিসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন বলতে পারবেন; কুরআনের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে হাদিসের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবেন; অনুসরণীয় আদর্শ হিসেবে হাদিসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারবেন। আদর্শ জীবন গঠনে হাদিসের শিক্ষা সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
(১) হাদিসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
কুরআন মাজীদের পরেই হাদিসের স্থান এবং এ হিসেবে হাদিস ইসলামি শরীআতের দ্বিতীয় উৎস। হাদিস হচ্ছে রাসূল (স)-এর জীবনালেখ্য ও কুরআনের ব্যাখ্যা। তাই ইসলামি শরীআতে হাদিসের গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কুরআনে যে সমস্ত হুকুম-আহকাম সংক্ষেপে বর্ণিত হয়েছে, সেগুলোর বিস্তারিত বিবরণ হাদিসে রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ সালাত ও যাকাতের কথা বলা যেতে পারে। কুরআনে শুধু বলা হয়েছে, ‘সালাত কায়েম কর এবং যাকাত দাও।’ কিন্তু কীভাবে সালাত কায়েম করতে হবে এবং কীভাবে যাকাত দিতে হবে তার বিস্তারিত বিবরণ কুরআনে নেই। তাঁর হাদিসে এর ব্যাখ্যা ফুটে ওঠেছে। হাদিস ও সুন্নাহর মাধ্যমেই আমরা এ সমস্ত বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ জানতে পারি। সুতরাং উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য হাদিস শিক্ষা করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
ক) দৈনন্দিন জীবনে হাদিসের গুরুত্ব
মহান আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রাসূল সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত হওয়া এবং ইসলাম সম্পর্কিত যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করার জন্যই হাদিস অপরিহার্য। উম্মতে মুহাম্মদীর দৈনন্দিন চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া, পোশাকপরিচ্ছদ ইত্যাদি সকল কাজেই হাদিসের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সর্ববিষয়ে হাদিসের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, তালাক, ব্যবসায়বাণিজ্য, বিচার-আচার, যুদ্ধ-বিগ্রহ, সন্ধি-চুক্তি, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক ক্রিয়াকর্মের প্রত্যেকটি বিষয় সম্পাদনের জন্য হাদিসের প্রয়োজন। হাদিসকে অস্বীকার করার অর্থ হল ইসলামকেই অস্বীকার করা।
কেননা আল্লাহ ঘোষণা করেন,
“হে মানবজাতি! রাসূল তোমাদেরকে যা দেন তা গ্রহণ করো এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো।”
(সূরা হাশর, আয়াত নং ৭)
তাই হাদিসের বিধানগত গুরুত্ব হচ্ছে- তা শরীআতের বিধান নির্ধারণ ও নীতিমালা প্রণয়ন করে।
খ) অনুসরণীয় আদর্শ
ইসলামি শরীআতের নিরিখে মহানবীর (স) আদেশ-নিষেধ, তাঁর যাবতীয় কর্মকান্ড, কথা-বার্তা-তথা গোটা জীবনই উম্মাহর জন্য অনুসরণীয় আদর্শ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আল্লাহ রাসূলের জীবনে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ।”
(সূরা আহযাব, আয়াত নং ২১)
রাসূল প্রেরণের উদ্দেশ্যও তাই।
মহান আল্লাহ বলেন,
“রাসূলকে অনুসরণের জন্যই প্রেরণ করেছি।”
(সূরা নিসা, আয়াত নং ৬৪)
“বলুন, অনুসরণ কর আল্লাহ ও রাসূলের।”
(আলে ইমরান, আয়াত নং ৩২)
সুতরাং রাসূলের আনুগত্যের জন্য তাঁর সামগ্রিক জীবন তথা হাদিসের প্রামাণ্য দলিল অনুসরণ করা ঈমানদার হওয়ার জন্য অপরিহার্য।
গ) কুরআন বুঝার জন্য হাদিসের গুরুত্ব
হাদিসের ব্যাখ্যা ব্যতীত মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের সকল বিধি-বিধান সঠিক ও যথাযথভাবে বুঝা সম্ভব নয়। সুতরাং কুরআনের মর্ম সঠিকভাবে বুঝতে হলে নবী (স) যে ব্যাখ্যা করেছেন তা অবশ্যই জানতে হবে। কারণ রাসূলে করীম (স)- এর সমস্ত জীবনই কুরআনের ব্যাখ্যা।
হাদিসে এসেছে, ‘একবার হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা)-এর নিকট কিছু লোক এসে রাসূলুল্লাহ (স)- এর চরিত্র সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কী কুরআন পড় না? তাঁরা বললেন, হাঁ। তখন তিনি বললেন, কুরআনই তাঁর চরিত্র।’
অতএব হাদিস ছাড়া রাসূল (স) কে জানা, বুঝা ও অনুসরণের কোন উপায় নেই। সুতরাং রাসূলের অনুকরণ ও অনুসরণের জন্যও হাদিসের একান্ত প্রয়োজন।
ঘ) ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে হাদিসের গুরুত্ব
হাদিস ইসলামের ইতিহাসের প্রামাণ্য উৎস। হাদিস পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ দ্বারা ইতিহাস চর্চার পথ উন্মোচিত হয়েছে। হাদিস বর্ণনাকারী অগণিত ব্যক্তির জীবন, কর্মতৎপরতা ও চরিত্র উদঘাটন করতে গিয়ে বিপুলায়তন নতুন তথ্যের ভিত্তিতে ইসলামের ইতিহাস গড়ে ওঠেছে। হাদিসের মাধ্যমে সমকালীন আরবসহ সমগ্র বিশ্ব পরিস্থিতি ও জীবন যাত্রার তথ্য মিলে। এ ছাড়াও পৃথিবীর আদি ইতিহাসের অনেক নির্ভুল-সঠিক তথ্যও এর মাধ্যমে পাওয়া যায়।
ঙ) হাদিস জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎস
হাদিস কেবল মহানবীর (স) জীবন ও উপদেশের সংকলনই নয়; বরং এটা তাঁর সকল কর্মতৎপরতার পূর্ণাঙ্গ দলিল। ধর্ম, যুদ্ধ, শান্তি, বৈদেশিক নীতি, অর্থনীতি, রাজনীতি, যুদ্ধের নিয়ম-কানুন, রীতি-নীতি সবই হাদিসের অন্তর্ভুক্ত।
জ্ঞানবিজ্ঞানের উৎস হিসেবে হাদিসের গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা তুলে ধরে শাহ ওয়ালী উল্লাহ (র) লিখেন,
“ইলমে হাদিস সকল প্রকার জ্ঞান-বিজ্ঞানের তুলনায় অধিক উন্নত, উত্তম এবং দ্বীন ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের ভিত্তি। হাদিস সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও তাঁর সাহাবিদের কথা, কাজ ও সমর্থন বিধৃত। বস্তুত হাদিস অন্ধকারে আলোক স্তম্ভ, যেন সর্বদিক উজ্জ্বলকারী পূর্ণ শশী। যে এর অনুসারী হবে, একে আয়ত্ত করবে, সে সুপথ প্রাপ্ত হবে; সে লাভ করবে বিপুলায়তন কল্যাণের ফলগুধারা।”
(হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা)
দৈনন্দিন জীবনে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের ন্যায় মহানবী (স)-এর হাদিসেরও অপরিসীম গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এ গুরুত্ব ও প্রয়োজনের কথা উপলব্ধি করে হাদিস শিক্ষার প্রতি যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।
(২) আদর্শ জীবন গঠনে হাদিসের শিক্ষা
ক) আদর্শ জীবন গঠনে হাদিসের শিক্ষা
হাদিস মুসলিম মিল্লাতের এক অমূল্য সম্পদ। ইসলামি শরী‘আতের দ্বিতীয় উৎস। হাদিসকে বাদ দিয়ে ইসলামি জীবন ব্যবস্থা কল্পনা করা যায় না। ইসলামের দৃষ্টিতে রাসূলের আদেশ-নিষেধ, তাঁর যাবতীয় কাজ-কর্ম, কথা-বার্তা এককথায় তাঁর মুখ নিঃসৃত বাণী ও কর্মময় জীবন ইসলামি শরী‘আতের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। হযরত মুহাম্মাদ (স) প্রেরণের উদ্দেশেই ছিল, তাঁকে মানুষ সকল কাজে ও ব্যাপারে অনুসরণ করে চলবে, তাঁর বাস্তব জীবনধারাকে অনুসরণ করবে।
আল-কুরআনে বলা হয়েছে-
“আমি রাসূল পাঠিয়েছি এই জন্যে যে, আল্লাহর অনুমিক্রমে তাঁকে অনুসরণ করা হবে।”
(সূরা নিসা, আয়াত নং ৬৪)
রাসূলের আনুগত্য ও অনুসরণ করে চলার জন্য আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেন,
“হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর।”
(সূরা আনফাল, আয়াত নং ২০)
রাসূলের অনুগত্য করা বলতে রাসূলের আদেশ নিষেধ ও অনুসৃত রীতি-নীতি মেনে চলা। আল্লাহর আদেশ-নিষেধ আলকুরআনে আছে। রাসূলের আদেশ নিষেধ ও তাঁর মুখ নিঃসৃত বাণী- তাঁর হাদিসে বিদ্যমান রয়েছে।
আমরা জানি, আল-কুরআনে জীবন বিধানের মুলনীতি সংক্ষেপে বলা হয়েছে। আর মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (স) সেই হুকুম-আহকামের ব্যাখ্যা ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি দেখিয়েছেন যা হাদিসে বর্ণিত রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, আল্লাহ তা‘আলা নামায আদায় করা ফরয করে দিয়েছেন, কিন্তু এর পদ্ধতি আল-কুরআনে উল্লেখ নেই।
হযরত জীবরাঈল (আ) মহানবী (স) এর কাছে এসে নামযের ওয়াক্ত ও পদ্ধতি জানিয়ে দিয়েছেন। মহানবী (স) সাহাবা কিরাম (রা) কে শিখিয়ে গেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা সালাত আদায় কর, যেভাবে আমাকে সালাত আদায় করতে দেখ।’
রাসূলের (স) রেখে যাওয়া মহান হাদিস বাদ দিলে ইসলামি শরীআতের ওপর আমল করা সম্ভব হবে না। মহান আল্লাহ মানুষের ওপর রাসূলের অনুসরণ আবশ্যক করেছেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“রাসূল তোমাদের যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ করো আর যা নিষেধ করে তা থেকে বিরত থাক।”
(সূরা হাশর, আয়াত নং ৭)
রাসূল (স) এর নিঃসৃত বাণী যা আহাদীসুল আহকাম হিসেবে পরিচিত- এরূপ হাদিসের সংখ্যা হচ্ছে ৩০০০। এই তিনহাজার বিধান হাদিসগ্রন্থসমূহে লিপিবদ্ধ আছে। এই বিপুল সংখ্যক বিধান সম্বলিত হাদিস-ই প্রমাণ করে যে হাদিসের গুরুত্ব কতটুকু।
রাসূল (স) নিজের খেয়ার খুশী মতো কোন কথা বলেন না। তিনি যা বলেন তা তাঁর ওপর ওহী নাযিল হওয়ার পরই বলেন।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“তিনি মনগড়া কথা বলেন না, এ তো ওহী যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ হয়।”
(সূরা নাজম, আয়াত নং ৩)
রাসূলের হাদীসও পরোক্ষভাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী। আল-কুরআন যেমন সরাসরি ওহী হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছে; আল-হাদিস সরাসরি ওহী না হলেও পরোক্ষ ওহী। সুতরাং আল-কুরআনকে যেমন অস্বীকার করা যায় না, আল-হাদিসকে তেমনি অস্বীকার করা যায় না। আল-কুরআনের বিধানাবলির ওপর আমল যেমন ফরয, আল-হাদিসের বিধানাবলীর ওপর আমল করাও জরুরি। কেননা আল্লাহ তা‘আলা মহানবী (স) কে আইন প্রণেতা, ব্যাখ্যাদাতা ও রূপকার হিসেবে প্রেরণ করেছেন।
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (স.) যথাযথভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে আল্লাহর বিধান পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। ইসলাম জানতে-বুঝতে ও ইসলামি জীবন ব্যবস্থার ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে রাসূলের হাদিস বা আদর্শের কোন বিকল্প নাই।
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (স) সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। অন্ধকার সমাজে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে সমাজ থেকে দুঃখন্ডদুর্দশা বিদায় করে দিয়েছেন। সমাজকে সকল প্রকার কলুষমুক্ত রাখার জন্য আইন বিধান- দিয়েছেন যা মহান হাদিস হিসেবে পরিচিত। বর্তমান সমাজকে অন্যায়, অবিচার, ও নির্যাতন থেকে মুক্ত রাখার জন্য রাসূল (স) এর হাদিস জীবনে অনুসরণ ও বাস্তবায়ন একান্ত অপহার্য।
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (স) কুরআন মাজিদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আয়াতের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করেছেন। হাদিস গ্রন্থসমূহের তাফসীর অধ্যায়সমূহই তার প্রমাণ। যে সব আয়াতের সঠিক অর্থ সাহবায়ে কিরাম (রা) বুঝতে পারতে না তা নিয়ে তারা চিন্তিত হয়ে পড়তেন। রাসূল (স) সে সব আয়াতের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করে সাহাবীদের উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা দূর করেছেন।
উদাহরণস্বরূপ সহীহ বুখারীর একটা হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি-
যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে কোন প্রকার জুলমের সাথে মিশ্রিত করে নাই।”
(সূরা আনআম, আয়াত নং ৮২)
এ আয়াত যখন নাযিল হলো তখন এটা সাহাবীদের মাঝে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাড়ায়। তারা এ আয়াতের সঠিক তাৎপর্য জানার জন্য রাসূল (স) এর নিকট জিজ্ঞেস করেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মাঝে এমন কে আছে যে, তার ঈমানকে জুলুমের সাথে মিশ্রিত করেনি? তাঁদের এ প্রশ্ন শুনে রাসূল (স) বুঝতে পারলেন যে, সাহাবী কিরামের নিকট এই আয়াতটি অত্যন্ত দুর্বোধ্য মনে হয়েছে।
তখন আল্লাহর রাসূল সাহাবীদের বললেন, তোমরা যেরূপ ধারণা করেছে, আয়াতের অর্থ তা নয়। এখানে যুলুম অর্থ শিরক। তোমরা কি শোন নাই, লোকমান তার পুত্রকে বলেছেন,
“হে প্রিয় পুত্র! আল্লাহর সাথে শিরক করিও না, নিশ্চয় শিরক এক বিরাট যুলুম।”
(সূরা লোকমান, আয়াত নং ১৩)
রাসূল (স) এর নিকট আয়াতের প্রকৃত ব্যাখ্যা জানতে পেরে সাহাবীগণ প্রশান্তি লাভ করলেন। এ কারণে আল-কুরআনের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা জানার জন্য বিশ্ব মুসলিম রাসূলের হাদিসের মুখাপেক্ষী। রাসূলের (স) ব্যাখ্যা ব্যাতীত আল-কুরআনের সঠিক তাৎপর্য জানার জন্য নির্ভরযোগ্য কোন উপায় সূত্র নেই।
ইসলামী জীবনাদর্শের প্রতি বিশ্বাসীদের জন্য হালাল-হারাম নির্ধারণের দায়িত্ব রাসূলের ওপর অর্পিত হয়েছে। রাসূল (স) এই কাজ আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে আঞ্জাম দিয়েছেন।
আল-কুরআনে বলা হয়েছে,
“তিনি তাদের জন্য পবিত্র জিনিস সমূহ হালাল করেন, তাদের জন্য অপবিত্র ও নিকৃষ্ট জিনিস হারাম করেন।”
(সূরা আরাফ, আয়াত নং ১৫৭)
প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত আলেচনার দ্বারা আমরা হাদিসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা এবং আদর্শ জীবন গঠনে হাদিসের শিক্ষা সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা অর্জন করলাম।
রাসূলের যাবতীয় আদেশ-নিষেধ, উপদেশ এবং তাঁর ঘোষিত হালাল হারামের বিধান মেনে চলা সকল মুসলিমের কর্তব্য। তাঁর এই সকল কাজের বিস্তারিত রেকর্ড হাদিসের মাঝে লিপিবদ্ধ আছে।
প্রতিটি মুসলিমের জীবনে হাদিস অধ্যয়ন, অনুশীলন এবং বাস্তবায়ন অপরিহার্য। হাদিস ব্যতীত ইসলামি শরী‘আতের ওপর চলা ও অবিচল থাকা সম্ভব নয়। তাছাড়া আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগী করাও সম্ভব নয়। তাই আদর্শ জীবন-যাপন করতে হলে রাসূলের হাদিস অনুসরণ অপরিহার্য।
[সূত্র: ওপেন স্কুল]