Skip to content

ইমাম মুসলিম (র) সংক্ষিপ্ত জীবনী

ইমাম মুসলিম (র) সংক্ষিপ্ত জীবনী

নিম্নে ইমাম মুসলিম (র) সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হলো-

ইমাম মুসলিম (র) জন্ম ও শৈশব

ইমাম মুসীলম র.

সিহাহ সিত্তাহ বা ছয়খানি বিশুদ্ধ হাদিস গ্রন্থের অন্যতম গ্রন্থ সহীহ মুসলিম শরীফের প্রণেতার পুরো নাম হলোঃ আবুল হুসাইন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশাইরী আন-নিশাপুরী। তিনি হিজরি ২০৪ সনে (মোতাবেক ৮১৯ খ্রি.) খুরাসানের অন্তর্গত নিশাপুর নগরে জন্মগ্রহণ করেন।

শিক্ষা জীবন

হাদিসের ওপর প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করার পর ১৮ বছর বয়স হতে তিনি পূর্ণমাত্রায় হাদিস শিক্ষা শুরু করেন। হাদিস শিক্ষার জন্যে তাকে দুনিয়ার এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে ছুটে যেতে হয়েছে। তিনি ইরাক, হিজাজ, সিরিয়া, মিসর প্রভৃতি শহরে গমন করে সে স্থানে অবস্থানকারী বড় বড় মুহাদ্দিসের নিকট হাদিস শিক্ষা করেন।

শিক্ষকবৃন্দ

ইমাম মুসলিম (র) সমসাময়িক কালের শ্রেষ্ঠ উস্তাদগণের সাহচর্য লাভ করার সুযোগ লাভ করেন। তাদের মধ্যে ইমাম বুখারী, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল, ইসহাক ইবন রাহওয়াই প্রমুখ অন্যতম। তিনি নিশাপুরেই বুখারীর শিষ্যত্ব লাভ করেছিলেন। হাদিস শাস্ত্রে তাঁর পান্ডিত্য ও জ্ঞানের গভীরতা সম্বন্ধে তাঁর ছাত্র ও শিক্ষক সবাই একমত।

তাঁর ছাত্রবৃন্দ

সে সময়কার বড় বড় মুহাদ্দিসগণ তাঁর নিকট হাদিস শিক্ষা গ্রহণ করেন। তাঁর ছাত্রদের মাঝে যাঁরা অন্যতম তারা হলেন আবু হাতিম আর-রায়ী, মূসা ইবন হারুন, ইমাম তিরমিযি (র) প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।

মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব

ইমাম মুসলিম (র) অত্যন্ত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন লোক ছিলেন। তিনি কোন তোষামোদীর প্রশংসায় প্রভাবিত হননি। তাই তিনি বিশিষ্ট ব্যক্তি হাতিম আর রাযী, মূসা ইবনে হারুন, আহমদ ইবনে সালামা সহ অনেকের নামই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি সরাসরি উস্তাদগণের নিকট শ্রুত এবং গৃহীত তিন লক্ষ হাদিস যাচাই বাছাই করে রচনা করেন অমর গ্রন্থ সহীহ মুসলিম।

হাদিস শাস্ত্রে অবদান

সহীহ মুসলিম

হাদিস শাস্ত্রে ইমাম মুসলিমের অবদান আকাশচুম্বী। এই মহাপন্ডিতের অধিকাংশ সংকলনই হাদিস সংক্রান্ত। এর অন্যতম সহীহ মুসলিম। সহীহ মুসলিম ছাড়া তাঁর অন্যান্য গ্রন্থগুলো হলো-১. আল-মুসনাদুল কাবীর, ২. কিতাব আল-আসমা, ৩. কিতাব আল-জামি, ৪. কিতাব আল-তামীম, ৫. কিতাব আল-ইলম।

ইমাম মুসলিমের সহীহ মুসলিম সহীহ ও শুদ্ধতার বিচারে এ গ্রন্থখানি বুখারীর পরেই শ্রেষ্ঠ তম। তিনি কেবল নিজের জ্ঞান বুদ্ধিতেই এ হাদিসগ্রন্থ সংকলন করেননি বরং পন্ডিতদের পরামর্শ নিয়েছেন।

ইমাম মুসলিমের বলেন, ‘কেবল আমার বিবেচনায়ই সহীহ হাদিসসমূহ কিতাবে সন্নিবেশিত করিনি বরং সেসব হাদিসই সন্নিবেশ করেছি যাদের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণ একমত।’

তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে অবিশ্রান্ত পরিশ্রম ও সাধনা করে এ গ্রন্থখানি প্রণয়ন করেন। সহীহ মুসলিমে মোট ‘বার হাজার’ হাদিস সন্নিবেশিত আছে। তবে একাধিকবার উদ্ধৃত হাদিস বাদ দিলে এর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় চার হাজার।

সহীহ মুসলিম গ্রন্থের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে ইমাম মুসলিম (র) নিজে বলেন, ‘মুহাদ্দিসগণ দুইশত বছর পর্যন্ত যদি হাদিস লিখতে থাকেন তবুও তাদেরকে অবশ্যই এই সনদযুক্ত বিশুদ্ধ গ্রন্থের ওপর নির্ভর করতে হবে।’

চরিত্র

তিনি উন্নত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। তিনি যে একজন উন্নত চরিত্র, উচ্চ মর্যাদা এবং বিশাল জ্ঞানের ভান্ডার ছিলেন এ প্রসঙ্গে সকল মনীষীই একমত। পরনিন্দা ও পরশ্রীকাতরতাকে তিনি অত্যন্ত ঘৃণা করতেন। সকলের মঙ্গল কামনা ছিল তাঁর চরিত্রের ভূষণ।

ইন্তেকাল

ইমাম মুসলিম (র) ৫৭ বছর বয়সে ২৬১ হিজরিতে নিশাপুরে ইন্তেকাল করেন। তাঁকে নিশাপুরে সমাহিত করা হয়।

সারসংক্ষেপ

ইমাম মুসলিম (র) হাদিস জগতে অন্যতম দিশারী। তাঁর বিস্ময়কর সাধনার বদৌলতে আমরা সহীহ হাদিস পেয়েছি। হাদীস শাস্ত্রে ইমাম মুসলিমের অবদান আকাশ চুম্বী। তাঁর রচিত মুসলিম সহীহ ও শুদ্ধতার বিচারে বুখারীর পরেই শ্রেষ্টতম। তিনি ছিলেন উন্নত চরিত্রের অধিকারী। ৫৭ বছর বয়সে তিনি নিশাপুরে ইন্তেকাল করেন।

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts