Skip to content

দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ আরবি সহ অর্থ এবং ফযিলত

দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ আরবি সহ অর্থ এবং ফযিলত

দুরূদ শব্দের আরবি হচ্ছে সালাত। সালাত শব্দের অর্থ হলো দুরূদ বা শুভকামনা, তাসবীহ, গুণকীর্তন, রহমত, দয়া, করুণা, ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রর্থনা করা ইত্যাদি। দুরুদ শরীফ এমন একটি সম্ভাষণ যা মুসলমানরা নির্দিষ্ট বাক্যাংশ পড়ে ইসলামের সর্বশেষ নবী মহানবী হযরত মোহাম্মদের (সাঃ) শান্তির প্রার্থনার উদ্দেশ্যে পাঠ করা হয়। তো চলুন জেনে নেই দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ আরবি সহ অর্থ এবং ফযিলত।

তাশাহহুদের পর আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করতে হয়। দুরূদ শরীফ পাঠ করা ছাড়া নামাজ হয় না। তাই আমাদের উচিত বুঝে শুনে শুদ্ধভাবে দুরূদ শরীফ পাঠ করা।

(১) দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ আরবি সহ অর্থ

দুরুদ শরীফ আরবি:

ٱللَّٰهُمَّ صَلِّ عَلَىٰ مُحَمَّدٍ وَعَلَىٰ آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَعَلَىٰ آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ ٱللَّٰهُمَّ بَارِكْ عَلَىٰ مُحَمَّدٍ وَعَلَىٰ آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَعَلَىٰ آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ

দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ: 

আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন, কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মদিউ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মদিম, কামা বারাকতা আলা ইবরাহীমা, ওয়া আলা আলি ইবরাহিমা, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।

দুরুদ শরীফ বাংলা অর্থ:

হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর বংশধরের প্রতি রহমত নাযিল করো যেমন রহমত নাযিল করেছিলে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর বংশধরের প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রশংসনীয় ও মর্যাদাবান। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর বংশধরের প্রতি বরকত নাযিল করো যেমন বরকত নাযিল করেছিলে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর বংশধরের প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রশংসনীয় ও মর্যাদাবান।

দুরুদ শরীফ ছবি ডাউনলোড:

দুরুদ শরীফ আরবি
দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ
দুরুদ শরীফ বাংলা অর্থ

(২) অর্থসহ ছোট দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ

ছোট দরুদ শরীফ সলাতে পড়া যাবে না। সালাত ব্যতীত অন্য সকল সময় সংক্ষিপ্ত দরুদ হিসেবে এগুলো পড়া যাবে।

সাহাবী উকবা ইবনু আমির (রা) বলেন, 

“এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে এসে বসল এবং বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকে কিভাবে সালাম জানাব তা আমরা জানি। কিন্তু আমরা আপনার উপর কিভাবে ‘সালাত’ তথা দরূদ পাঠ করব? আমাদেরকে তা বলে দিন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম (কিছুক্ষণ) চুপ থাকলেন, এমনকি আমরা ভাবলাম যদি প্রশ্নকারী প্রশ্ন না করতো, তাহলে অনেক ভাল হত! তারপর নবী (সাঃ) বললেন, তোমরা আমার উপর সালাত (দুরুদ) পাঠ করার জন্য বলো-

اللهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَبىّ الأُمِيِّ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ

বাংলা উচ্চারণ: 

আল্লাহুম্মা সল্লি আ’লা মুহা’ম্মাদিনিন-নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আ’লা আলি মুহা’ম্মাদিন কামা সল্লাইতা আ’লা ইবরাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইবরাহীম, ইন্নাকা হা’মীদুম-মাজীদ।

বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! আপনি নিরক্ষর নবী মুহা’ম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে রহমত প্রেরণ কর, যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। নিশ্চয় তুমি মহান এবং প্রশংসিত।”

(ইসমাঈল কাযী, হাদীস নং ৫৯)

(৩) ছোট দরুদ শরীফ আরবি

ছোট দুরুদ সম্পর্কে যায়েদ ইবনু খারিজাহ (রা) বলেন,

“আমি নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে (দুয়া ও দুরুদের ব্যাপারে) প্রশ্ন করলাম। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা আমার উপর সালাত (দরূদ) পড় এবং অনেক বেশী দুয়া করার জন্য চেষ্টা কর। (আমার জন্য দুরুদ পড়ার জন্য তোমরা) এইভাবে বলো-

الَّلهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সল্লি আ’লা মুহাম্মাদিওঁ-ওয়া আ’লা আলি মু’হাম্মাদ।

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি মুহা’ম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর রহমত বর্ষণ কর।”

(সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-১২২৫)

(৪) সবচাইতে ছোট দুরুদ

সবচাইতে ছোট দুরুদ

সবচাইতে ছোট যেই দুরুদ হলো-

صلى الله عليه وسلم

বাংলা উচ্চারণ: সল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম।

বাংলা অর্থ: আল্লাহ তাঁর (মুহা’ম্মদের) প্রতি সালাত (দয়া) ও সালাম (শান্তি) বর্ষণ করুন।

اللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلَى نَبَيِّنَا مُحَمَّدٍ

বাংলা উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আ’লা নাবিয়্যিনা মুহা’ম্মাদ।

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমাদের নবী মুহাম্মাদের উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন।

(৫) দুরুদ শরীফ কখন পড়তে হয়?

দুরুদ শরীফ কখন পড়তে হয়

নবী (সাঃ) বলেছেন,

“যে ব্যক্তি সকাল বেলা আমার উপর দশবার দরুদ পাঠ করবে এবং বিকাল বেলা দশবার দরুদ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন সে আমার সুপারিশ দ্বারা সৌভাগ্যবান হবে।”

(ইমাম তাবরানী হাদীসটি দুইটি সনদে সংকলন করেছেন, যার একটি সনদ হাসান; মাজমাউ’য যাওয়ায়েদ-১০/১২০; সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব-১/২৭৩)

এরকম দোয়া ও দরুদ সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। অনেক দোয়া ও দুরুদের মাঝে সরাসরি শিরক ও কুফরি কথাও উল্লেখ আছে। অনেকে এগুলো পাঠ করছে। তাই এখনি এসব থেকে সাবধান হতে হবে।

(৬) কয়েকটি বানোয়াট দরুর শরীফ ও দো’য়ার বইয়ের নাম

নিম্নে কয়েকটি দুরুদ শরীফের নাম দেওয়া হলো যেগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট-

  • দুরুদে হাজারী
  • দুরুদে নারিয়া
  • দুরুদে মাহী
  • দুরুদ তাজ
  • দুরুদে লাখী
  • দুরুদে তুনাজ্জিনা ইত্যাদি।

এসব দরূদ মানুষের বানানো। এগুলো পড়লে কোন সওয়াব বা লাভ নেই বরং বেদআত। এতে গুনাহ হবে। দুরুদ শরীফের মাঝে সবচেয়ে উত্তম হলো দরুদে ইব্রাহীম। এটা আমরা নামাজে পড়ি। একবার এ দরুদ পড়ে আল্লাহ তা’আলা ১০ বার রহমত করেন।

মূলত মা-বোনেরা ওযীফার বই থেকে বেদআতী দোয়াগুলো বেশি পড়ে থাকে। আপনারা এসব বই পড়বেন না। যেসব হাদিস সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত সেসব দোয়া পাঠ করুন।

নিম্নে কয়েকটি দো’য়ার বইয়ের নাম উল্লেখ করা হলো যেগুলোর কোন দলিল নেই-

  • আহাদ নামা
  • দুয়ায়ে গাঞ্জুল আরশ
  • হাফতে হাইকল
  • হিজবুল বাহার্ ইত্যাদি।

এ বইগুলোতে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত বা মানুষের বানানো দোয়া এক করে দোয়ার মত করে বানানো হয়েছে। নবী (সাঃ) এসব করেন নি এবং এসব করার অনুমোদনও দেন নি। এভাবে উল্টা পাল্টা জিনিস তেলাওয়াত করার কারণে কোরআনের অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়। ফলে এগুলো তেলাওয়াত করা বেদআত।

(৭) দরুদ শরীফ পড়ার নিয়ম

দরুদ শরীফ পড়ার নিয়ম

দরুদপাঠ হচ্ছে নবীর উপর সালাম পেশ করা। দুরুদ ফারসী শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে- আল্লাহ তাআ’লার কাছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য রহমত, বরকত ও শান্তির জন্য দোয়া করা।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি দরুদ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন।

পবিত্র কোরআনে এসেছে,

“অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি দরুদ প্রেরণ করেন। হে মুমিনরা! তোমরাও তাঁর প্রতি যথাযথ দরুদ ও সালাম পেশ করো।”

(সূরা আহজাব, আয়াত-৫৬)
  • জীবনে একবার দরুদ-সালাম পাঠ করা ফরজে আইন।
  • দরুদ-সালাম অত্যন্ত আন্তরিকতা ও ভালোবাসার সঙ্গে খুব ধীরস্থিরভাবে চুপি চুপি পড়া উচিত।
  • দরুদ শরীফ পড়ার সময় অধিক নড়াচড়া, মাথা দুলানো, চিৎকার বা উঁচু আওয়াজ করা যাবে না।
  • একই বৈঠকে একাধিকবার নবী (সা.)-এর নাম উচ্চারিত হলে প্রথমবার সবার জন্য দরুদ পাঠ করা আবশ্যক (ওয়াজিব)।
  • নবীজি (সা.)-এর নাম এক বৈঠকে বারবার লিখলে প্রথমবার দরুদ লিখা আবশ্যক (ওয়াজিব)।

অজু ছাড়া যে দুরূদ পড়া যাবে না এমন নয়। যে কোনো অবস্থায় দরুদ শরীফ পাঠ করা যাবে। বিশেষ করে অজু অবস্থায় এবং আদবের সঙ্গে দরুদ পড়া উত্তম।
জুমা বা ঈদের খুতবায় নবী (সা.)-এর নাম এলে মনে মনে দরুদ পড়বে, মুখে উচ্চারণ করবে না। এছাড়া নিম্নোক্ত অবস্থায় দরূদ পড়া যাবে।

  • নবীজির রওজা শরিফ জিয়ারত ও তার নাম বলা বা শোনার সময়।
  • মসজিদে প্রবেশের সময় ও বের হওয়ার সময়।
  • কোনো বৈঠক থেকে ওঠার সময়।
  • দোয়া বা মোনাজাতের আগে ও পরে।
  • আজানের পর দোয়ার আগে।
  • অজুর শেষে, চিঠিপত্র বা অন্য কিছু লিখার আগে।
  • কোরআন তেলাওয়াত বা অন্য কোনো বইপুস্তক পাঠের আগে।
  • দুনিয়া-আখিরাতের কল্যাণ ও সব রকমের বিপদ-আপদ, বালা-মুসিবত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সব সময় বেশি করে দরুদ পড়ুন।

(৮) দুরূদ শরীফের ফজিলত

দুরূদ শরীফের ফজিলত

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কোন জাতির জন্য আবির্ভূত হন নি, তিনি সারা বিশ্বের জন্য রহমত স্বরূপ। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“আর আমি তো আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি।”

(সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াত)

এতে বুঝা যাচ্ছে যে নবী (সাঃ) আমাদের জন্য রহমত।

নিম্নে দুরূদ শরীফ পাঠের ফজিলত নিয়ে আলোচনা করা হলো-

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, 

“কিয়ামতের দিন আমার সঙ্গী হওয়ার সবচেয়ে অধিক উপযুক্ত সেই ব্যক্তি,যে আমার প্রতি সবচেয়ে বেশি দরূদ শরীফ পাঠ করে।

(তিরমিজী শরিফ) 

নবী (সাঃ)আরও ইরশাদ করেন, 

“ঐ ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটে থাকবে, যে আমার উপর বেশি বেশি দুরূদ শরীফ পাঠ করে।”

(তিরমিজী শরিফ) 

তিনি মহানবী (সাঃ) আরও বলেন, 

“যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দুরূদ শরীফ পাঠ করবে আল্লাহ তা‘আলা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন, তার দশটি গুনাহ মাফ করবেন এবং দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। ”

(মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-২০৫৬)

উবাইদুল্লাহ বিন উমর কাওয়ারী রহ. বর্ণনা করেন, 

আমার প্রতিবেশী একজন কতিব ছিলেন। তার ইনতিকালের পর স্বপ্নে তার সাথে আমার সাক্ষাৎ হল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহ তাআলা আপনার সাথে কিরূপ আচরণ করেছেন? তিনি উত্তর দিলেন- আমাকে মাফ করে দিয়েছেন। আমি কারণ জিজ্ঞাসা করায় তিনি উত্তরে বললেন, কিতাব লেখার সময় যখনই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক আসত, তখনই হুযুরের নামের সাথে সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লেখা আমার অভ্যাস ছিল। এর বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা আমাকে এমন নিয়ামত দান করেছেন, যা কোন চোখ কখনো দেখেনি, কোন কান কখনো শুনেনি, কোন অন্তর কখনো তার কল্পনাও করেনি। (সুবাহানাল্লাহ)।

(মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-২০৫৬)

নবী করিম (সাঃ) ইরশাদ করেন,

“যে ব্যক্তি সকালে আমার উপর দশবার দুরূদ পড়বে এবং সন্ধ্যায় দশবার দুরূদ পড়বে কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য সুপারিশ করব।”

(ত্ববারানী আউসাত, হাদীস নং-৫২৩; নাসায়ী সুনানে কুবরা, হাদীস নং-৯৮৯০)

হযরত আবু উমামা (রা.) হতে বর্ণিত, 

হযরত রসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মানুষের যে দল কোনো মজলিসের কাজ শেষ করে আল্লাহপাকের জিকর ও দরূদ পাঠ না করে সেখানে থেকে উঠে পড়বে তাদের ওই মজলিস তাদের জন্য দুঃখ-কষ্টের কারণ হবে। 

এ সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে, 

“নিশ্চয়ই আল্লাহ নবির উপর রহমত নাজিল করেন এবং ফেরেশতারা তাঁর জন্য রহমতের দোয়া করেন। সুতরাং হে মুমিনগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরূদ পড় এবং অধিক পরিমাণে সালাম পাঠাও।”

(সুরা আহজাব, আয়াত ৫৬)

জুমার দিনে বেশি বেশি দুরুদ শরীফ পড়ার ফজিলত:

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে, জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ পড়তে বলা হয় এর কারণ কি?

চলুন তাহলে এর উত্তর জেনে নেই।

শুক্রবারের করণীয় কাজের মধ্যে অন্যতম হলো রাসূল (সাঃ) এর প্রতি অধিক দুরূদ শরীফ পাঠ করা।

এ সম্পর্কে আউস বিন আউস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

“তোমাদের দিন সমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুমার দিন। এই দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনে তাকে মৃত্যু দেওয়া হয়েছে, এই দিনে সিংগায় ফুঁ দেওয়া হবে এবং মহা বিপর্যয়ও (কিয়ামত) ঘটবে এই দিনেই। তাই এই দিনে তোমরা বেশি বেশি আমার উপর দরুদ পাঠ করবে; কেননা তোমাদের দরুদ আমার উপর পেশ করা হয় জুমার দিনে। তখন সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করল যে, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি কবরে গলে শেষ হওয়ার পরেও কিভাবে আপনার উপর দরুদ পেশ করা হয়? তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা মাটির জন্য নবীদের দেহ ভক্ষণ করা হারাম করে দিয়েছেন।”

(মিশকাত হা/১৩৫৯; সনদ ছহীহ; ‘ছালাত’ অধ্যায় ‘জুম‘আ’ অনুচ্ছেদ)

তাই বলা যায়, নবী (সাঃ) এর প্রতি সালাম ও দুরূদ শরীফ পাঠ করলে মুমিন বান্দাদের জন্য সৌভাগ্যের সব দরজা খুলে যাবে। দুরূদবিহীন মুমিন বান্দার কোনকিছুই আল্লাহর দরবারে পৌঁছায় না। তাই আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) এর উপর বেশি বেশি দুরূদ পাঠ করা উচিত।

তো আজকের মতো এখানেই থাকলো। দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ আরবি সহ অর্থ এবং ফযিলত নিয়ে লেখা এই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

[By: Israt Jahan]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts