ayatul kursi bangla: আয়াতুল কুরসি হলো পবিত্র কুরআনের সূরা আল-বাকারার ২৫৫নং আয়াত। এটি আল-কুরআনের সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ আয়াত। আয়াতুল কুরসিতে ১০টি বাক্য রয়েছে।
কুরসি শব্দের অর্থ একবস্তুর সাথে অন্য বস্তুর মিলানো। এ জন্য চেয়ার বা আসনকে কুরসি বলা হয়। কেননা আসনে অনেক কাঠকে একত্র করা হয়।
কুরসি শব্দের অন্য অর্থ হলো সাম্রাজ্য, মহিমা, জ্ঞান ও সিংহাসন। এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালার পরিচয়, ক্ষমতা, মহিমা ও গৌরবের কথা অত্যন্ত স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এ জন্য এ আয়াতকে আয়াতুল কুরসি বলা হয়।
হাদিস অনুসারে আয়াতুল কুরসিকে কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত হিসেবে গণ্য করা হয়। আয়াতটিকে কুরআনের অন্যতম শক্তিশালী আয়াত হিসাবে বিবেচনা করা হয় কারণ কেউ যখন এটি পাঠ করে, তখন সে আল্লাহর মাহাত্ম্য নিশ্চিত করে বলে বিশ্বাস করা হয়।
যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা এই আয়াতটি পাঠ করবে সে জ্বিন ও শয়তানদের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকবে; এটি দৈনিক আদখার নামেও পরিচিত। জ্বিন ও শয়তান থেকে মুক্তি ও সুরক্ষার জন্য এটি ঝাড়ফুঁকে ব্যবহৃত হয়। যেহেতু এটি বিশ্বাস করা হয় যে আয়াতটি আধ্যাত্মিক বা শারীরিক সুরক্ষা প্রদান করে, তাই প্রায়শই মুসলমানরা ভ্রমণে বের হওয়ার আগে ও ঘুমাতে যাওয়ার আগে এটি পাঠ করে। আয়াতটি সারাদিনের জন্য খাবিস (জ্বিনদের দ্বারা যৌন নিপীড়ন) থেকে সুরক্ষা এবং বেঁচে থাকার জন্যও ব্যবহৃত হয়।
প্রত্যেক নামাজের পর আয়াতটি পাঠ করলে জান্নাতে প্রবেশ করা যাবে বলে বিশ্বাস করা হয়।
(১) ayatul kursi arbi
আয়াতুল কুরসির আরবি: ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلْحَىُّ ٱلْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُۥ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَّهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ مَن ذَا ٱلَّذِى يَشْفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذْنِهِۦ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَىْءٍ مِّنْ عِلْمِهِۦٓ إِلَّا بِمَا شَآءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَلَا يَـُٔودُهُۥ حِفْظُهُمَا وَهُوَ ٱلْعَلِىُّ ٱلْعَظِيمُ
(২) ayatul kursi bangla uccharon
আয়াতুল কুরসির বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহু লা ইলা-হা ইল্লা হু (ওয়া) আল হাইয়্যুল কাইয়ুম। লা তা’খুযুহু সিনাতুঁও ওয়ালা নাউম। লাহু মা-ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়ামা ফিল আরদ্ব। মান জাল্লাজি ইয়াশফা’উ ইনদাহু ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম। ওয়ালা ইয়ুহিতুনা বিশাইইম মিন্ ইলমিহি ইল্লা বিমা-শাআ। ওয়াসি‘আ কুরসিয়্যুহুস সামা-ওয়াতি ওয়াল আরদ্ব। ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা ওয়া হুয়াল আলিয়্যূল আজিম।
(৩) ayatul kursi bangla ortho
আয়াতুল কুরসির বাংলা অর্থ : আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তারই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে যে তাঁকে সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পেছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলোর তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান।
(৪) ayatul kursi bangla, arabic o ortho akshathe
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ
দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে।
1. | اللهُ لا إلهَ إِلَّا هُوَ ’আল্-লাহু লা ’ইলাহা ’ইল্-লা হু(ওয়া) আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। |
2. | اَ۬لۡحَىُّ اَ۬لۡقَيُّومُ ’আল্-হাই-য়ু ল্-কাই-য়ুম্(উ) তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী। |
3. | لَا تَاخُذُهُۥ سِنَةٌ وَلَا نَوۡمٌ লা-তা’খুযুহু সিনাতুঁ ও্-ওয়ালা নাউম্(উঁ) তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করে না। |
4. | لهُ مَا فِي السَّمَواتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ লাহু-মা ফি স্-সামাওয়াতি ওয়ামা ফি ল্-’আর্দ্(ই) আসমান ও জমিনে যা কিছু রয়েছে সমস্ত তাঁরই। |
5. | مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَةٌ إِلَّا بِإِذْنِهِ মাঁং যাল্-লাযি ইয়াশ্ফা‘উ ‘ইন্দাহু ’ইল্লা বি’ইয্নিহ্(ই) কে আছে এমন, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট সুপারিশ করবে? |
6. | يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ইয়া‘লামু মা বাইনা ’আইদিহিম্ ওয়ামা খাল্ফাহুম্ তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু আছে সবই তিনি জানেন। |
7. | وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ওয়ালা ইউ হি-তুনা বিশা’ই ইমমিন্ ‘ইল্মিহি ’ইল্-লা বিমা শা’(আ) তিনি যা ইচ্ছা করেন, তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কোনো কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারে না। |
8. | وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَوتِ وَالْأَرْضَ ওয়াসি‘আ কুর্সিইয়ু-হু স্-সামাওয়াতি ওয়াল্’আর্দ্(আ) তাঁর কুরসি আসমান ও পৃথিবীময় পরিব্যাপ্ত। |
9. | وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ওয়ালা ইয়া’উদুহু হিফ্যুহুমা আর এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না। |
10. | وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ ওয়াহুওয়া ল্-‘আলিই-ইয়ু ল্-‘আজিম(উ) আর তিনি অতি মহান, সর্বশ্রেষ্ঠ। |
(৫) ayatul kursi bangla and English
নিচের টেবিলে ayatul kursi bangla ও englidh উচ্চারণ তুলে ধরা হয়েছে।
ayatul kursi bangla: | ayatul kursi english: |
আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হু(ওয়া) | Allahu laaa ilaaha illaa huw |
আল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম | al haiyul qai-yoom |
লা তা’খুযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাঊম | laa taakhuzuhoo sinatunw wa laa nawm; |
লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্ব | lahoo maa fissamaawaati wa maa fil ard |
মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ’ ই’ন্দাহূ ইল্লা বিইজনিহ | man zallazee yashfa’u indahooo illaa be iznih |
ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম | ya’lamu maa baina aideehim wa maa khalfahum |
ওয়ালা ইউহিতূনা বিশাইয়্যিম্ মিন ‘ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ | wa laa yuheetoona beshai ‘immin ‘ilmihee illa be maa shaaaa |
ওয়াসিআ’ কুরসিইয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি | wasi’a kursiyyuhus samaa waati wal arda |
ওয়ালা ইয়াউ’দুহূ হিফযুহুমা | wa la ya’ooduho hifzuhumaa |
ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়্যুল আ’জিম | wa huwal aliyyul ‘azeem |
(৬) ayatul kursi bangla fhojilot
আয়াতুল কুরসি অত্যন্ত বরকতময় আয়াত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এ আয়াতকে সবচেয়ে উত্তম আয়াত বলে অভিহিত করেছেন।
মহানবি (সাঃ) বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পাঠ করে, তার জন্য বেহেশতে প্রবেশের পথে একমাত্র মৃত্যু ব্যতীত আর কোনো বাধা থাকে না।’
(নাসাই)
অর্থাৎ মৃত্যুর সাথে সাথেই সে বেহেশতের আরাম-আয়েশ উপভোগ করতে শুরু করবে।
অন্য হাদিসে মহানবি (সাঃ) বলেন,
যে ব্যক্তি প্রভাতে ও শয়নকালে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে সর্বপ্রকার বিপদাপদ থেকে রক্ষা করবেন।
(তিরমিযি)
অপর এক হাদিসে এসেছে,
একদা, রাসুল (সাঃ) উবাই ইবনে কা’বকে জিজ্ঞাসা করলেন- কুরআনের কোন আয়াতটি সবচাইতে শ্রেষ্ঠ ও গুরুত্বপূর্ণ। উবাই (রা.) বললেন, তা হলো আয়াতুল কুরসি। উত্তর শুনে রাসুল (সাঃ) তা সমর্থন করলেন এবং বললেন- হে আবুল মুনযির [উবাই (রা.)-এর ডাকনাম] এ উত্তম জ্ঞানের জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।
(সহিহ্ মুসলিম)
(৭) ayatul kursi er tatporjo
এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালার পরিচয় অতি সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালার গুণাবলি ও ক্ষমতা এ আয়াতে স্পষ্টরূপে ফুটে উঠেছে।
আমরা যদি ayatul kursi bangla অর্থ বুঝার চেষ্টার করি, দেখব আয়াতের প্রথমেই বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালাই একমাত্র ইলাহ, তিনি ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই। সকল ইবাদত ও প্রশংসা একমাত্র তাঁরই জন্য নির্ধারিত। তিনি অনাদি অনন্ত। তিনি চিরকাল ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। তাঁর জ্ঞান অসীম, সকল কিছুই তাঁর জ্ঞানের আওতাধীন। তিনি মহান সত্তা। আসমান জমিনের বিশালতা তাঁর কাছে কিছুই না। তিনি ক্লান্তি, নিদ্রা, তন্দ্রা ইত্যাদির ঊর্ধ্বে। এককথায় তিনিই সর্বশক্তিমান, সকল শক্তির আধার, মহান, সর্বশ্রেষ্ঠ।
(৮) ayatul kursi pather upokarta
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিকট থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন হাদীস থেকে আমরা আয়াতুল কুরছি পাঠের বিভিন্ন উপকার সম্পের্কে জানতে পারি।
যেমন-
- যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার মৃত্যুর সময় সহজভাবে জান কবজ করা হবে।
- যারা পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তাদের জন্যে জান্নাতে যেতে মৃত্যু ব্যতীত আর কোনো বাধা থাকবে না। অর্থাৎ মৃত্যুর সাথে সাথেই সেই ব্যক্তি আল্লাহর জান্নাতের শান্তি উপভোগ করতে থাকবে।
- যে ব্যক্তি ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, আল্লাহ তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করে দিবেন এবং সে ফেরেশতা সারা রাত তাকে পাহারা দিবে এবং দুষ্ট জীন ও শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবে। ইত্যাদি।
তাই আমাদের শুদ্ধভাবে ayatul kursi bangla uccharon করতে জানা থাকা একান্তই প্রয়োজন।
আল্লাহ্ আমাদেরকে আয়ুতল কুরসি মুখস্ত এবং নিয়মিত পাঠ করার তাওফিক দান কারুন এবং এর গুরুত্ব অনুধাবন করে আমাদের জীবন গড়ার তাওফিক দান কারুন (আমিন)।
(৯) ayatul kursi bangla hidis
ইবনুল আসকার মুক্ত দাস থেকে ইবনুল আসকার সূত্রে বর্ণিত, তিনি ইবনুল আসকাকে বলতে শুনেছেন, নবি মুহাম্মাদ মুহাজিরদের (হিজরত করে মক্কা থেকে যারা মদিনায় গিয়েছিলেন) আঙিনায় তাঁদের নিকট আসলেন। তখন এক ব্যক্তি তাঁকে প্রশ্ন করলো, কুরআনের কোন আয়াতটি সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ? নবি মুহাম্মাদ বলেন, ‘আল্-লাহু লা ’ইলাহা ’ইল্-লা হু ওয়া ’আল্-হাই-য়ু ল্-কাই-য়ুম্…’ (আয়াতুল কুরসির প্রথমাংশ)।
(সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং-৪০০৩)
আসমা বিনতে ইয়াযিদ থেকে বর্ণিত, নবি মুহাম্মাদ বলেছেন, আল্লাহর মহান নামসমূহ এই দুই আয়াতের মধ্যে নিহিত আছে: (অনুবাদ) ‘আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী…’ (২:২৫৫) এবং ‘আর তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য…’ (২:১৬৩)।
(সুনান আদ-দারেমী, হাদিস নং-৩৪২৮)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রতিটি জিনিসের একটি চূড়া থাকে। কোরআনের চূড়া সুরা বাকারা। তাতে এমন একটি আয়াত আছে, যা কোরআনের অন্য আয়াতের ‘নেতা’। সেটা হলো আয়াতুল কুরসি।’
(সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং-৩১১৯)
আবু উমামাহ আল-বাহিলি থেকে বর্ণিত, নবি মুহাম্মাদ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজ শেষে আয়াতুল কুরসি পড়ে, তাঁর জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া অন্য কোনোকিছু বাধা হবে না’।
(সুনানে নাসায়ি, হাদিস নং-৯৯২৮)
আবু আইয়ুব আনসারি থেকে বর্ণিত, তাঁর একটি তাক ছিল তাতে তিনি শুকনো খেজুর রাখতেন। কিন্তু শয়তান জ্বিন এসে রাতে তা নিয়ে যেতো। তিনি নবি মুহাম্মাদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানালেন। মুহাম্মাদ বললেন, “যাও, এটিকে যখন দেখবে বলবে, বিসমিল্লাহ্, রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাকে ডেকেছেন, চলো। আবু আইয়ুব এটিকে আটক করলেন। এটি তখন শপথ করলো যে পুনর্বার তা করবে না। ফলে তিনি এটিকে ছেড়ে দিলেন। অনন্তর তিনি মুহাম্মাদের কাছে এলেন। মুহাম্মাদ জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার বন্দী কী করলো?” আবু আইয়ুব বললেন যে সেই জ্বিন শপথ করে বললো যে পুনর্বার তা করবে না। অতঃপর মুহাম্মাদ বললেন, “সে মিথ্যা বলেছে। আর তাঁর অভ্যাসই হলো মিথ্যা বলা।” আবু আইয়ুব সেটিকে আরেকবার আটক করলেন এবারও সে শপথ করলো যে পুনর্বার আর আসবে না। ফলে তিনি এটিকে ছেড়ে দিলেন। অনন্তর মুহাম্মাদের কাছে এলেন। মুহাম্মাদ জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার বন্দী কী কাজ করলো?” আবু আইয়ুব বললেন যে জ্বিনটি আবার কসম করেছে সে আর করবে না। মুহাম্মাদ পুনরায় একই কথা বললেন যে তাঁর অভ্যাসই হলো মিথ্যা বলা। পরে আবু আইয়ুব আবার জ্বিনটিকে আটক করলেন এবং বললেন, “এবার তোমাকে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে না নিয়ে আর ছাড়বো না।” জ্বিনটি বললো, “আমি আপনাকে একটি বিষয় স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। তা হলো আপনার ঘরে আয়াতুল কুরসি পড়বেন। তাহলে আপনার কাছে শয়তান বা অনিষ্টকর অন্য কিছু আসতে পারবে না।” অনন্তর তিনি মুহাম্মাদের কাছে এলেন এবং মুহাম্মাদ জিজ্ঞেস করলন, তোমার বন্দি কী করলো? জ্বিনটি আবু আইয়ুবকে যা বলেছিল সে সম্পর্কে মুহাম্মাদকে জানালেন। অতঃপর মুহাম্মাদ বললেন, “এবার সে সত্য বলেছে, যদিও সে মিথ্যাবাদী।”
(সুনান তিরমিজী, হাদিস নং-২৮৮০)
উবাই ইবনে কাব হতে বর্ণিত, তাঁর এক খেজুর রাখার থলি ছিল। সেটায় ক্রমশ তাঁর খেজুর কমতে থাকতো। একরাতে সে পাহারা দেয়। হঠাৎ যুবকের মতো এক জন্তু দেখা গেলে, তিনি তাকে অভিবাদন জানালেন। সে অভিবাদনের উত্তর দেয়। ইবনে কাব জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কী? জিন না মানুষ?” সে বলে, “জ্বিন।” ইবনে কাব তাঁর হাত দেখতে চান। জ্বিন দাবি করা লোকটি তাঁর হাত দেয়। ইবনে কাবের মতে, তাঁর হাত ছিল কুকুরের হাতের মতো আর চুল ছিল কুকুরের চুলের মতো। তিনি বলেন, “এটা জ্বিনের চেহারা।” জন্তুটি তথা জ্বিনটি বলে, “জ্বিন সম্প্রদায়ের মধ্যে আমি সবচেয়ে সাহসী।” ইবনে কাব জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার আসার কারণ কী?” সে বলে, “আমরা শুনেছি আপনি সদকা পছন্দ করেন, তাই কিছু সদকার খাদ্যসামগ্রী নিতে এসেছি।” ইবনে কাব বলেন, “তোমাদের থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?” সে বলে, সূরা আল-বাকারার এই আয়াতটি – ‘’আল্-লাহু লা ’ইলাহা ’ইল্-লা হু ওয়া ’আল্-হাই-য়ু ল্-কাই-য়ুম্…’ (আয়াতুল কুরসির প্রথমাংশ), যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এটি পড়বে, সকাল পর্যন্ত আমাদের থেকে পরিত্রাণ পাবে। আর যে ব্যক্তি সকালে এটি পড়বে, সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের থেকে নিরাপদে থাকবে।” সকাল হলে তিনি নবি মুহাম্মাদের কাছে আসেন এবং ঘটনার খবর দেন। মুহাম্মাদ বলেন, “সে সত্য বলেছে।”
(জিয়াদ্দিন আল মাকদাসি, হাদিস নং-১২৬০)
নবি মুহাম্মাদ বলেছেন, “যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত শয়তান থেকে রক্ষা পাবে এবং যে সন্ধ্যায় পাঠ করবে সে সকাল পর্যন্ত নিরাপদ থাকবে।”
(আল-হাকিম, হাদিস নং-১/৫৬২)
মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল কর্তৃক বর্ণিত যে, হুমায়দাহ আল-বারিকী আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ হতে বলেন, “আল্লাহ্ আকাশ ও পৃথিবীতে আয়তুল কুরসি অপেক্ষা মহান আর কিছু সৃষ্টি করেন নি।”
(সুনান তিরমিজী, হাদিস নং-২৮৮৪)
মুগীরা ইবনু সুবাঈ’ হতে বর্ণিত, যিনি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসের সাথীদের একজন ছিলেন, তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি [রাতে] ঘুমানোর সময় সূরা আল-বাকারার দশটি আয়াত পাঠ করবে, তবে সেই ব্যক্তি কুরআন ভুলে যাবে না [আয়াত দশটি হলো]: এর (সুরা আল-বাকারা) প্রথম চারটি আয়াত, আয়াতুল কুরসি ও এর পরবর্তী দুইটি আয়াত এবং শেষের তিনটি আয়াত।
(সুনান আদ-দারেমী, হাদিস নং-৩৪২৪)
শয়নকালে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার হেফাজতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযুক্ত থাকে। যাতে শয়তান তার নিকটবর্তী হতে না পারে। (বুখারি) হযরত আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত: রাসুল (সা.) বলেছেন: সুরা বাকারায় একটি শ্রেষ্ঠ আয়াত রয়েছে, যে ঘরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করা হবে সেখান থেকে শয়তান পালাতে থাকে।
(মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদিস নং-২১০৩)
(১০) uposonhar
এই আলোচনা থেকে আমরা ayatul kursi bangla uccharon জানতে ও পড়তে পড়তে সক্ষম হয়েছি এবং জানতে পেয়েছি যে, আয়াতুল কুরসি পবিত্র কোরআনের সব থেকে ফিজিলত পূর্ণ একটি আয়াত। যার সাহাজ্জে আমরা জিন জাতি সহ দুনিয়ার বালা মসিবত থেকে বেছে থাকতে পারি। এবং প্রতি ফরজ নামাজের শেষে আয়াতুল কুরসি পাঠে আমাদের জান্নাতে যাওয়ার মদ্ধে মৃত্যু ছাড়া আর কোন বাধা থাকবে না।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পড়ার এবং প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর অবশ্যই পড়ার তাওফিক দান করুন, আমিন।
আমার এই ayatul kursi bangla বিষয়ক লিখাটি ভাল লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিয়ে আপনিও সওয়াবের ভাগিদার হবেন।
এই পোস্টটি আপনার পরিবার ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান থাকলো। এই ইসলামের দাওয়াত আমাদের কেয়ামতের ময়দানে সন্মানিত করবে, ইনশাআল্লাহ।
#ayatul kursi bangla #ayatul kursi bangla uccharon #ayatul kursi bangla ortho #ayatul kursi bangla fojilot #ayatul kursi bangla hadis
পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।