Skip to content

আমের জাতের নাম ও গাছের বৈশিষ্ট্য

আমের জাতের নাম ও গাছের বৈশিষ্ট্য

আম বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ও উপাদেয় ফল। আমকে ফলের রাজা বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এটি বাংলাদেশের জাতীয় বৃক্ষ।

বাংলাদেশে প্রায় সব জেলাতেই আমের চাষ হয়। জলবায়ু ও মাটির অধিক উপযোগিতার কারণে উৎকৃষ্ট মানের আম উৎপাদন প্রধানত বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোতে সীমাবদ্ধ ছিল। এ সব অঞ্চলে অনেক পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস আম। তবে বর্তমানে চাষোপযোগী উন্নত জাত উদ্ভাবিত হওয়ায় এসব অঞ্চলের বাইরে অন্যান্য জেলাতেও বাণিজ্যিকভাবে আম উৎপাদন শুরু হয়েছে।

স্বাদ, গন্ধ, পুষ্টিমান ও ব্যবহার বৈচিত্রে আম তুলনাহীন। পাকা আমে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যারোটিন বা ভিটামিন ‘এ’ এবং খনিজ পদার্থ থাকে। ভিটামিন ‘এ’-এর দিক থেকে আমের স্থান পৃথিবীর প্রায় সকল ফলের উপরে।

নিম্নে বিভিন্ন প্রকার আমের জাতের নাম ও গাছের বৈশিষ্ট বর্ণনা করা হলো-

(১) বারি আম-১ (মহানন্দা)

‘বারি আম-১’ প্রতি বছর ফল ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি জাত। আমের এই আগাম জাতটি বাংলাদেশে চাষ করার জন্য ১৯৯৬ সালে অনুমোদন করা হয়।

বারি আম-১ (মহানন্দা)
বারি আম-১ (মহানন্দা)
  • গাছের আকৃতি মাঝারী। পাতার আকৃতি লম্বাটে। পুষ্পমঞ্জরীর আকৃতি পিরামিডের মতো।
  • ফল প্রায় গোলাকার।
  • ফলের গড় আকার দৈর্ঘ্য ৭.৬ সেমি, প্রস্থ ৬.৭ সেমি, পুরুত্ব ৫.৯ সেমি।
  • পাকা ফলের রং আকর্ষণীয় হলদে।
  • ফলের ওজন ১৯০-২১০ গ্রাম।
  • ফলের শাঁস গাঢ় হলদে, সুগন্ধযুক্ত, মধ্যম রসালো, আঁশহীন ও মিষ্টি (টিএসএস ১৯%) এবং শাঁস ফলের ৭০%।
  • ফলের খোসা পাতলা ও মসৃণ।
  • প্রতি বছর নিয়মিত ফল দেয়।
  • মাঘ মাসে (মধ্য জানুয়ারি-মধ্য ফেব্রুয়ারি) গাছে ফুল আসে।
  • ফল আহরণের সময় জ্যৈষ্ঠ মাসের ২য় সপ্তাহ (মে মাসের শেষ সপ্তাহ)।
  • গাছপ্রতি ফলের সংখ্যা ৭০০-৮০০টি।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ১৫ টন।
  • বাংলাদেশে সর্বত্রই মহানন্দা চাষ করা যায়। তবে ফলের বোঁটা শক্ত ও ঝড়ো হাওয়া সহনশীল বিধায় দেশের পূর্বাঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী।
  • মহানন্দা রপ্তানিযোগ্য জাত বলে এর বাগান করে বেশি লাভবান হওয়া যায়।

(২) বারি আম-২

‘বারি আম-২’ প্রতি বছর ফল ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন রঙিন উচ্চ ফলনশীল জাত। দেশের ভিতর থেকে সংগৃহীত জার্মপ্লাজমের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জাতটি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষের জন্য ১৯৯৬ সালে অনুমোদন করা হয়।

বারি আম-২
বারি আম-২
  • এ জাতের আম দেখতে খুবই আকর্ষণীয়, ত্বকের রং গাঢ় হলদে।
  • এ জাতের আম কেটে ফালি করে খাওয়া যায়।
  • বারি আম-২ জাতটি মাঝ-মৌসুমী।
  • ফুল আসার সময় ফাল্গুনের ১ম সপ্তাহ (মধ্য-ফেব্রুয়ারি)।
  • ফল আহরণের সময় আষাঢ়ের ১ম সপ্তাহ (জুনের ৩য় সপ্তাহ)।
  • ফলের আকৃতি উপবৃত্তাকার।
  • ফলের গড় আকার দৈর্ঘ্য ৯.৭৫ সেমি, প্রস্থ ৭.২৫ সেমি এবং পুরুত্ব ৬.১০ সেমি।
  • ফলের ওজন ২৪০-২৬০ গ্রাম।
  • ফলের শাঁস গাঢ় হলদে, মধ্যম রসালো, আঁশহীন ও কম মিষ্টি (টিএসএস ১৭.৫০%) এবং শাঁস ফলের ৬৯%।
  • ফলের খোসা মধ্যম পুরুত্ব ও মসৃণ।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ২২ টন।
  • জাতটি বাংলাদেশে সর্বত্রই চাষের উপযোগী।
  • এটি একটি রপ্তানিযোগ্য জাত।
See also  আম চাষের পদ্ধতি ও আম গাছের পরিচর্যা

(৩) বারি আম-৩

দেশের আম জগতে ‘বারি আম-৩’ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবর্তন। বিদেশ থেকে সংগৃহীত জাতটি বাংলাদেশের জলবায়ুতে উপযোগিতা যাচাইয়ের পর চাষের জন্য ১৯৯৬ সালে অনুমোদন করা হয়।

বারি আম-৩
বারি আম-৩
  • গাছ তুলনামূলকভাবে খাটো ও খাড়া।
  • পাতার আকৃতি ডিম্বাকার বর্ষাকৃতি, পুষ্পমঞ্জরীর আকৃতি পিরামিডের মতো।
  • ফল লম্বাটে ডিম্বাকৃতির হয়।
  • ফলের গড় আকৃতি দৈর্ঘ্য ৮.৩ সেমি, প্রস্থ ৬.০ সেমি এবং পুরুত্ব ৫.৮ সেমি।
  • পাকলে হলুদাভ সবুজ রঙ ধারণ করে।
  • ফলের ওজন ২১০-২২০ গ্রাম।
  • ফলের শাঁস গাঢ় কমলা রঙের হয়।
  • ফল পাকলে সুস্বাদু, সুগন্ধযুক্ত বেশ মিষ্টি (টিএসএস ২৩.৪০%) হয়।
  • আঁশহীন, মধ্যম রসালো, শাঁস ফলের ৭১%।
  • ফলের খোসা মধ্যম পুরুত্ব ও মসৃণ।
  • প্রতি বছর ফলদানকারী নাবী জাত।
  • ফুল আসে ফাল্গুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে (ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ), ফল আহরণের সময় আষাঢ়ের ৩য় সপ্তাহ (জুলাইয়ের ১ম সপ্তাহ)।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ২০ টন।
  • জাতটি বাংলাদেশের সব এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষের উপযোগী।

(৪) বারি আম-৪ (হাইব্রিড আম)

দীর্ঘদিন চেষ্টা করে সংকরায়ণের মাধ্যমে ‘বারি আম-৪’ নামে একটি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। জাতটি জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক বাংলাদেশে চাষাবাদের জন্য ২০০৩ সালে অনুমোদন লাভ করে।

বারি আম-৪ (হাইব্রিড আম)
বারি আম-৪ (হাইব্রিড আম)
  • এটি নিয়মিত ফলদানকারী একটি উচ্চ ফলনশীল, মিষ্টি স্বাদের নাবি জাত।
  • ফজলী আম শেষ হওয়ার পর এবং আশ্বিনা আমের সাথে অর্থাৎ মধ্য শ্রাবণ থেকে শ্রাবণের শেষে (জুলাই শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্ট ১ম সপ্তাহ) এ জাতের আম পাকে।
  • বারি আম-৪ এর ফল আকারে বেশ বড় (৬০০ গ্রাম), প্রায় গোলাকৃতি, শাঁস হলদে, খেতে খুব মিষ্টি (টিএসএস ২৪.৫%)।
  • এ জাতের আম কাঁচা অবস্থাতেও খেতে মিষ্টি।
  • আমের শাঁস দৃঢ় হওয়ায় পাকার পরও বেশ কয়েকদিন ঘরে সংরক্ষণ করা সম্ভব।
  • ফলের শাঁস গাঢ় হলদে বর্ণের, আঁশহীন ও রসালো।
  • আঁটি ছোট ও খোসা পাতলা, শাঁস ফলের ৮০%।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ২০ টন।
  • জাতটি বাংলাদেশের সব এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষের উপযোগী।

(৫) বারি আম-৫

দেশের ভিতর থেকে সংগৃহীত জার্মপ্লাজম পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জাতটি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষের জন্য ২০১০ সালে ‘বারি আম-৫’ নামে অনুমোদন করা হয়।

বারি আম-৫
বারি আম-৫
  • এটি নিয়মিত ফলদানকারী উচ্চ ফলনশীল আগাম জাত। আমের আহরণ মৌসুম দীর্ঘায়িত করতে জাতটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
  • গাছ বড় ও খাড়া।
  • ফাল্গুন মাসে গাছে মুকুল আসে এবং জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম দিকে (মে মাসের ৩য় সপ্তাহ) ফল আহরণ উপযোগী হয়।
  • ফল মাঝারী (২৩০ গ্রাম), ডিম্বাকার, উজ্জ্বল হলুদ বর্ণের ও খেতে মিষ্টি (টিএসএস ১৯%), খাদ্যোপযোগী অংশ ৭০%।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ১৫-২০ টন।
  • জাতটি রপ্তানিযোগ্য।
See also  আম গাছ লাগানোর নিয়ম ও আম চাষ পদ্ধতি

(৬) বারি আম-৬

‘বারি আম-৬’ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনটিস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত একটি মধ্য-মৌসুমী জাত। প্রদর্শনীর মাধ্যমে সংগ্রহ করে নির্বাচন পদ্ধতির মাধ্যমে ২০১০ সালে জাতটি অবমুক্ত করা হয়।

বারি আম-৬
বারি আম-৬
  • এটি নিয়মিত ফলধারী একটি সুস্বাদু ও উচ্চ ফলনশীল জাত।
  • গাছ মধ্যম আকৃতির ও মধ্যম খাড়া।
  • ফাল্গুন মাসে গাছে মুকুল আসে এবং জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষের দিকে ফল আহরণ উপযোগী হয়।
  • ফল লম্বাটে ডিম্বাকৃতির, মধ্যম আকারের, গড় ওজন-২৮০ গ্রাম, লম্বায় ৯.৯ সেমি ও প্রস্থে ৯.৫ সেমি, পুরুত্বে ১১.৩ সেমি।
  • পাকা ফলের রং হলুদাভ সবুজ, চামড়া পাতলা ও শাঁসের রং হলুদ, স্বাদে মিষ্টি (টিএসএস ২১%), শাঁস আঁশবিহীন, আঁটির ওজন ৪০ গ্রাম, খোসার ওজন ৪২ গ্রাম, ভক্ষণযোগ্য অংশ ৭২% এবং সংরক্ষণ ক্ষমতা ভালো
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ১৬ টন।

(৭) বারি আম-৭

‘বারি আম-৭’ বিএআরআই উদ্ভাবিত একটি রঙিন মাঝ মৌসুমী জাত। স্থানীয় জার্মপ্লাজম থেকে বাছাই পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন করে ২০১০ সালে জাতটি অবমুক্ত করা হয়।

বারি আম-৭
বারি আম-৭
  • এটি সুস্বাদু, উচ্চ ফলনশীল ও নিয়মিত ফলধারী জাত।
  • গাছ মধ্যম আকৃতির, মধ্যম ছড়ানো।
  • ফল গোলাকার, আকারে মধ্যম, গড় ওজন ২৯০ গ্রাম, লম্বায় ৯.৫ সেমি ও প্রস্থে ৮.১ সেমি, পুরুত্বে ৬.২ সেমি।
  • পাকা ফলের রং লাল আভাযুক্ত হলুদ ও শাঁসের রং হলুদ।
  • স্বাদ হালকা মিষ্টি (টিএসএস ১৮%), শাঁস হালকা আঁশবিহীন, আঁটির ওজন ৩৩ গ্রাম, খোসার ওজন ৩২ গ্রাম, ভক্ষণযোগ্য অংশ ৭৭% এবং সংরক্ষণ ক্ষমতা খুব ভাল (৯-১১ দিন)।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ২০-২৫ টন।
  • অত্যন্ত আকর্ষণীয় রং ও ভালো গুণাবলীর জন্য এ জাতের আম বিদেশে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে।

(৮) বারি আম-৮

‘বারি আম-৮’ বিএআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত একটি বহুভ্রƒণী (পলিএ¤¦্রায়োনিক) নাবি জাত। পাহাড়ী এলাকা হতে সংগ্রহ করে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন করে ২০১০ সালে জাতটি অবমুক্ত করা হয়।

বারি আম-৮
বারি আম-৮
  • এটি সুস্বাদু ও উচ্চ ফলনশীল নিয়মিত ফলধারী জাত।
  • গাছ তুলনামূলকভাবে খাটো ও ছড়ানো।
  • প্রতিবছর ফল দেয়, ফল লম্বাটে ডিম্বাকৃতির, আকারে মধ্যম, গড় ওজন ২৭০ গ্রাম, লম্বায় ১১.৩ সেমি ও প্রস্থে ৭.০ সেমি, পুরুত্বে ৬.০ সেমি।
  • পাকা ফলের রং হলুদ, চামড়া পাতলা ও শাঁস কমলা বর্ণের, স্বাদ মিষ্টি (টিএসএস ২২%), শাঁস আঁশবিহীন, আঁটির ওজন ২৬ গ্রাম, খোসার ওজন ৫০ গ্রাম, ভক্ষণযোগ্য অংশ ৭০% এবং সংরক্ষণ ক্ষমতা অন্যান্য জাতের তুলনায় ৫-৭ দিন বেশি।
  • জাতটি পলিএম্ব্রায়োনিক হওয়ায় বীজ থেকে মাতৃ গুণাগুণ সম্পন্ন চারা উৎপাদন করা যায়।
  • দেশের সব এলাকায় এমনকি ঝড় প্রবণ উপকূলীয় অঞ্চলেও চাষোপযোগী।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ২০-২৫ টন।

(৯) বারি আম-৯ (কাঁচা মিঠা)

প্রতি বছর ফলদানকারী একটি উচ্চ ফলনশীল আগাম জাত। নির্বাচন পদ্ধতির মাধ্যমে ২০১১ সালে জাতটি অবমুক্ত করা হয়।

See also  আমের ও জলপাই এর আচারের রেসিপি এবং আচার তৈরি করার পদ্ধতি
বারি আম-৯ (কাঁচা মিঠা)
বারি আম-৯ (কাঁচা মিঠা)
  • গাছ বড় ও মধ্যম খাড়া।
  • মাঘ মাসে গাছে মুকুল আসে এবং বৈশাখ মাসের শেষভাগে কাঁচা অবস্থায় খাওয়ার জন্য ফল আহরণ উপযোগী হয়।
  • উপবৃত্তাকার এ ফলের গড় ওজন ১৬৬ গ্রাম, কাঁচা ফলের শাঁস সাদা, আঁশহীন, মধ্যম মিষ্টি (টিএসএস ১১%), খাদ্যোপযোগী অংশ ৬৮%।
  • সাত বছর বয়স্ক গাছে হেক্টরপ্রতি ফলন ১.৩৫ টন।
  • রাজশাহী অঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী।

(১০) বারি আম-১০

বারি আম-১০
বারি আম-১০
  • উচ্চ ফলনমীল, মাঝ মৌসুমী জাত।
  • প্রতি বছর নিয়মিত ফল ধরে।
  • ১০-১২ বছর বয়সের প্রতিটি গাছে ২৯০টি ফল ধরে যার ওজন ৭২.৫ কেজি।
  • ফল আঁশবিহীন এবং খুব মিষ্টি (টিএসএস ১৬%)।
  • ফল মাঝারি আকৃতির এবং গড় ওজন ২৫০ গ্রাম।
  • ফল ওভাল আকৃতির এবং পাকা ফল হালকা সবুজ হয়ে থাকে।
  • ফল সংগ্রহের উপযুক্ত সময় হল জুনের ২য় সপ্তাহ।
  • ফলের শাঁস গাঢ় হলুদ রঙের হয়ে থাকে। ফলের খাদ্যোপযোগী অংশ শতকরা ৬৪ ভাগ।
  • এ জাতের আমে উল্লেখযোগ্য কোন রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় না।

(১১) বারি আম-১১

বারি আম-১১
বারি আম-১১
  • বাংলাদেশের প্রথম অনুমোদিত বারমাসী আমের জাত, যা বছরে তিনবার ফল প্রদান করে।
  • ফাল্গুন, জ্যৈষ্ঠ ও ভাদ্র মাসে গাছে মুকুল আসে এবং জ্যৈষ্ঠ, আশ্বিন ও মাঘ মাসের ফল আহরণ উপযোগী হয়।
  • ফল আয়তাকার ও লম্বাটে। ফলের গড় ওজন ৩২০ গ্রাম।
  • ফলের শাঁস কমলা, আঁশবিহীন, রসালো ও সুস্বাদু। টিএসএস ১৮.৫৫%।

(১২) বারি আম-১২

প্রতি বছর ফল ধারণ ক্ষমতাসম্পন একটি অতি নাবী জাত ‘বারি আম-১২’। আমের এই নাবী জাতটি বাংলাদেশে চাষ করার জন্য ২০১৯ সালে অনুমোদন করা হয়।

বারি আম-১২
বারি আম-১২
  • গাছের আকৃতি বড়। পাতার আকৃতি লম্বাটে। পুষ্পমঞ্জরীর আকৃতি পিরামিডের মতো।
  • ফল প্রায় ডিম্বাকৃতি। ফলের গড় আকার দৈর্ঘ্যে ১১.৪ সেমি, প্রস্থে ১০.৮ সেমি, পুরুত্বে ৮.৪ সেমি।
  • পাকা ফলের রং হলুদাভ সবুজ। ফলের গড় ওজন ৪৩৫ গ্রাম।
  • ফলের শাঁস কমলা রঙের, সুগন্ধযুক্ত, মধ্যম রসালো, আঁশহীন ও বেশ মিষ্টি (টিএসএস ২৩%) এবং শাঁস ফলের শতকরা ৮২ ভাগ।
  • ফলের খোসা পাতলা ও মসৃণ।
  • ফাল্গুণ (ফেব্রুয়ারি-মার্চ) মাসে গাছে ফুল আসে।
  • ফল আহরণের সময় শ্রাবণ মাসের মধ্যভাগ (আগষ্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ)।
  • ৬ বছর বয়সের প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ৯৮ টি।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ৪.৩ টন।
  • এটি বাংলাদেশে উত্তরাঞ্চলে চাষের উপযোগী তবে দেশের অন্যন্য অঞ্চলেও এটি চাষ করা যেতে পারে।
  • নাবী জাত হওয়ার কারনে এটি চাষের জন্য বিশেষ পরিচর্য্যা নিতে হয়। এটি ফলের মাছি পোকা ও শুকনা ক্ষত বা Anthracnose রোগের প্রতি কিছুটা সংবেদনশীল। এছাড়া অতি বৃষ্টিতে এটির চামড়া শুটি মোল্ড রোগের কারনে কালো হয়ে যেতে পারে।
  • আমের গুটি বাধার ৫০-৬০ দিন পরে ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমকে ফলের মাছি পোকা, শুকনা ক্ষত রোগ ও আম কালো হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করা যায়।
  • এই জাতটি অতি নাবী হওয়ায় এটি চাষ করে বেশ লাভবান হওেয়া যায়।

[সূত্র: বিএআরআই]

Tags:

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট কৃষি

পশু-পাখি পালন ও চাষাবাদ সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts