কৃষি ও বৃক্ষ সম্পর্কে সাধারণভাবে দেশের আপামর জনসাধারণকে সচেতন করার পাশাপাশি এ বিষয়ে আগ্রহী করে তোলার লক্ষে কৃষি বিষয়ক আধুনিক প্রযুক্তি যেমন: উন্নত ফসলের জাত, আধুনিক চাষাবাদের কলাকৌশল, আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি, কৃষকের উৎপাদিত দর্শনীয় কৃষি সামগ্রী, বিভিন্ন প্রকারের ফল-ফসল ও বৃক্ষের চারা সর্বসাধারণের মাঝে প্রদর্শন ও বিক্রি করার জন্য উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে যে মেলার আয়োজন করা হয় তাকে কৃষি ও বৃক্ষ মেলা বলে অভিহিত করা হয়।
সাধারণভাবে কৃষি ও বৃক্ষ মেলায় জনসাধারণের মাঝে কৃষি ও বৃক্ষ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে ফুলফল-ফসল সম্পর্কিত উন্নত জ্ঞান সম্প্রসারণ, ফসল ও বৃক্ষের চারা উৎপাদন, রোপণ ও সুষ্ঠ ব্যবহারের আগ্রহ সৃষ্টির প্রয়াস চালানো হয়।
এ পাঠ শেষে আপনি- কৃষি মেলা কি? কৃষি মেলা কাকে বলে? কৃষি মেলার উদ্দেশ্য ও গুরুত্বের বর্ণনা জানতে পারবেন। বৃক্ষ মেলা কাকে বলে? বৃক্ষ মেলা উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব কী তা অনুধাবন করতে পারবেন।
(১) কৃষি মেলা কি? কৃষি মেলা কাকে বলে? কৃষি মেলার উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব
ক) কৃষি মেলা কি: মেলা হচ্ছে দেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্য প্রদর্শনী, আকর্ষনীয় পণ্যের বেচাকেনা ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের একটি কৌশল। কাজেই যে মেলায় কৃষি পণ্য প্রদর্শন, বিক্রয় ও কৃষকদের মাঝে এতদবিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টির আয়োজন করা হয় তাকে কৃষি মেলা বলে।
সাধারণত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগেই প্রতিবছর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এ মেলার বাস্তবায়ন হয়ে থাকে।
খ) কৃষি মেলা কাকে বলে: কৃষি ও বৃক্ষ মেলা বর্ত মান বাংলাদেশের সমাজ জীবনে একটি প্রয়োজনীয় আনুসঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই প্রতিবছর একটি নিদিষ্ট সময়ে এ মেলাগুলো নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সাধারণভাবে যে মেলায় সচরাচর বিরল ও উন্নতজাতের কৃষি সামগ্রী, কৃষি প্রযুক্তি ও উপকরণ প্রদর্শন ও বেচাকেনা হয় তাকেই কৃষি মেলা বলে।
গ) কৃষি মেলার উদ্দেশ্য
- কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট, ব্যক্তি উদ্দ্যোগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তি এ মেলায় প্রদর্শন করা।
- উদ্ভাবিত উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তিসমূহ সরাসরি প্রদর্শনপূবর্ ক এগুলো গ্রহণের মাধ্যমে লাভবান হওয়ার ব্যাপারে জনগণকে উৎসাহিত করা।
- কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ও উদ্ভাবিত কলাকৌশলের মূল্যায়নের মাধ্যমে তাদেরকে এ ধরণের উদ্ভাবনে আরও আগ্রহী করে তোলা।
- সাধারণ জনগণকে পুরানো অলাভজনক পদ্ধতির পরিবতের্ আধুনিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতির সুফল গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা।
- শস্য উৎপাদন ও সংরক্ষণে পরিবেশবান্ধব জৈবিক পদ্ধতির ভালোমন্দ হাতে কলমে প্রদর্শন করা।
- উন্নত প্রজাতির গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির জাত প্রদর্শনের মাধ্যমে কৃষকদের আর্থিক লাভের বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করা।
- সম্পর্কিত খামার ব্যবস্থাপনার সফল সম্পর্কে প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাস্তব জ্ঞান দেওয়া।
ঘ) কৃষি মেলার গুরুত্ব
সরকার কৃষি সম্পকির্ ত সামাজিক কলাকৌশল জনগণের দোরগোড়ায় পৌছানোর জন্য কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর, মাৎস্য ও পশুপালন অধিদপ্তরসহ কৃষি সম্পর্কিত সব ধরনের গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও কৃষির উন্নয়ন ও কৃষি সম্পদের বিপণনের জন্য কৃষি মেলা ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। কারণ মেলা অনুষ্ঠানের সময় ক্রেতা-বিক্রেতা ছাড়াও শুধু বিনোদনের জন্য ব্যাপক সংখ্যক মানুষের সমাগম হওয়ায় মেলায় প্রদর্শিত পণ্য ও প্রযুক্তিসমূহ সাধারণ মানুষের নজর কাড়ে। জনে জনে আলোচনার ফলে বিষয়টি অধিক সংখ্যক মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। এমন নানাবিধ কারণে কৃষি মেলার গুরুত্ব অত্যধিক।
(২) বৃক্ষ মেলা কি/বৃক্ষ মেলা কাকে বলে? বৃক্ষ মেলা উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব
ক) বৃক্ষ মেলা কি/কাকে বলে: যে মেলায় বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের চারা উৎপাদন, রোপণ, সংরক্ষণ ও সুষ্ঠ ব্যবহারের আগ্রহ সৃষ্টির প্রয়াস চালানো হয় তাকে বৃক্ষ মেলা বলা হয়।
খ) বৃক্ষ মেলার উদ্দেশ্য
- বৃক্ষ রোপণে জনগণের সচেতনতা সৃষ্টি করা।
- জনগনকে বৃক্ষের সৌন্দর্য্য উপভোগের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের সমাহার ঘটানো ও এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা।
- জনগণকে বৃক্ষ রোপণে আগ্রহী করে তোলার জন্য তাদের প্রয়োজনানুযায়ী চারা সরবরাহ করা।
- আধুনিক জ্ঞান সমৃদ্ধ পুস্তিকা, লিফলেট, প্যামলেট, ফোল্ডার ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণকে আগ্রহী করে তোলা।
- কাঠের বহুবিধ ব্যবহার এবং এর নান্দনিক দিক জনসাধারণের মাঝে তুলে ধরা।
- বৃক্ষরোপণ ও চাষের মাধ্যমে অর্থনৈতিক লাভের বিষয় প্রচার করা।
- বৃক্ষরাজি সম্প্রাসারণের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে জনগণের মনোযোগ আকর্ষণ করা।
গ) বৃক্ষ মেলার গুরুত্ব
দেশের বনভূমি সংকুচিত হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে বৃক্ষ সম্পদ বাড়ানোর জন্য বৃক্ষ মেলার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সরকারীভাবে বন বিভাগ বৃক্ষ রোপণকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করার লক্ষে ১৯৯৪ সন থেকে দেশব্যাপী বৃক্ষ মেলার প্রবর্তন করে। তারপর থেকে প্রতিবছর ঢাকায় বৃক্ষ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জনগণের স্বতস্ফুর্ত অংশ গ্রহণে এ মেলা মুূখরিত হয়ে উঠেছে। প্রতিবছরই লাখ লাখ চারা বিক্রি হচ্ছে এবং বৃক্ষ রোপণ অভিযানকে স্বার্থক ও সফল করে তুলছে।
- বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে এ মেলার গুরুত্ব অপরিসীম। জনগণ এ মেলাসমূহের কারণে বৃক্ষ রোপণে আগ্রহী হওয়ায় দেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে।
- জনবহুল আমাদের এদেশে চাহিদার তুলনায় বৃক্ষ সম্পদ অপ্রতুল। এ পরিস্থিতিতে বৃক্ষ সম্পদ বাড়ানো একান্ত প্রয়োজন যা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে আমাদেরকে বৃক্ষ রোপণ ও সংরক্ষণ করে এ সম্পদকে বাড়াতে হবে। তাই জনগনকে উদ্ভুদ্ধ করে বনায়নে সম্পৃক্ত করার জন্যই বৃক্ষ মেলার আয়োজন একান্ত প্রয়োজন।
- বৃক্ষ রোপণ মৌসুমে জনসাধারণ অনেক সময় ভালো চারা না পেয়ে নিম্নমানের চারা রোপণ করেন। সেজন্য বৃক্ষ মেলার মাধ্যমে ভালো চারার সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ব্যাপক ভিত্তিতে এ মেলা অনুষ্ঠানের প্রয়োজন রয়েছে।
- কৃষি মেলার মাধ্যমে কৃষক ও সাধারণ জনগণ আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি খুব সহজেই হাতের নাগালে পেয়ে যায় আর বৃক্ষ মেলার মাধ্যমে বিচিত্র প্রজাতির গাছ পালার সাথে পরিচিত হওয়ায় মানুষ ব্যাপকভাবে বৃক্ষ রোপণে উৎসাহিত হয়। ফলে পরিবেশের উন্নয়ন ঘটে।
- জনসাধারণকে কৃষি, বন, বনায়নের গুরুত্ব ও পরিবেশের উপর বনের প্রভাব সম্পর্কীয় ধারণাবাস্তবিকভাবে প্রদানের একটি উৎকৃষ্ট প্রচেষ্টা হলো কৃষি ও বৃক্ষ মেলা। এ ধরণের মেলা পরিদর্শনের ফলে সরেজমিনে বৃক্ষ প্রজাতি নির্বাচনের সরাসরি ধারণা জম্নে। এতে করে পারিবারিক ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাগান সৃজনের আগ্রহ সৃষ্টি হয়। ফলে পরিবারের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভবনা তৈরী হয় এবং পরিবেশরও উন্নয়ন হয়।
বৃক্ষ রোপণ আন্দোলনকে জোরদার করণের জন্য প্রতিবছর পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উদ্দোগে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের ও স্থানীয় সরকারের সহযোগিতায় উপজেলা ও জাতীয় পর্যায়ে বৃক্ষ মেলা ও বৃক্ষ রোপণ সপ্তাহের আয়োজন করা হয়ে থাকে। নিম্নে উপজেলা ও জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত বৃক্ষমেলা সম্মন্ধে আলোচনা করা হলো।
(৩) উপজেলা পর্যায়ের কৃষি ও বৃক্ষমেলা
গ্রামীণ জনগণকে বৃক্ষ রোপণে উৎসাহিত করার জন্য প্রত্যক বছর দেশের প্রতিটি উপজেলায় বৃক্ষ ও কৃষি মেলার আয়োজন করা হয়। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উদ্দ্যোগে প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সার্বিক তত্বাবধানে সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিসার ও বৃক্ষমেলার আয়োজন করে থাকেন। অনেক সময় প্রতিটি জেলায় অবস্থিত বন বিভাগ কর্তৃক জেলা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষ মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। মেলাসমূহ সাধারণত ৩-৭ দিন ব্যাপি অনুষ্ঠিত হয়। এসব মেলায় বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ বৃক্ষের চারার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার ফসলের জাত কৃষি পণ্য, উৎপাদন উপকরণ, কৃষি প্রযুক্তি ও বিক্রয় করা হয়।
উপজেলা বৃক্ষ মেলার বৈশিষ্ট্য হলো-
- উপজেলা পর্যায়ে জুন-জুলাই মাসে প্রতিবছর কৃষি ও বৃক্ষ মেলা অনুষ্টিত হয়।
- সাধারণত উপজেলা কৃষি বিভাগ এবং বন বিভাগের তত্ত্ববধানে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পৃষ্ঠপোষাকতায় মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
- এ মেলায় কৃষকদের উৎপাদিত ভালোমানের ফল, ফসল, কৃষি উপকরণাদি প্রদর্শিত হয়।
- মেলায় কৃষি সম্প্রাসারণ বিভাগ, বনবিভাগ, সরকারি ও বেসরকারী নার্সারী বিভিন্ন প্রকারের বৃক্ষের চারা ও বৃক্ষ রোপণের প্রযুক্তি কৃষকদেরকে প্রদর্শন করেন।
- মেলায় জনসমাগম বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরণের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
- মেলায় কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী নিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত হয় সেজন্য আকর্ষনীয় পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়।
(৪) জাতীয় পর্যায়ে বৃক্ষ মেলা ও বৃক্ষ রোপণ সপ্তাহ
জাতীয় পর্যায়ে বৃক্ষমেলা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবছর ৫ই জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত ঢাকার শেরেবাংলা নগরে বাণিজ্য মেলার মাঠের বিশাল চত্বরের সুপরিসর স্থানজুড়ে এ মেলার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বন অধিদপ্তর মাসব্যাপী এ বৃক্ষমেলার আয়োজন করে থাকে।
বৃক্ষমেলার মূল উদ্দেশ্য হল বৃক্ষে রাপণকে একটি অভিযানে রূপান্তরিত করার জন্য জনমানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। এ উদ্দেশ্যকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিবছর ৫ জুন বিশ্বপরিবেশ দিবসে এ মেলার উদ্বোধন করেন।
মেলার তাৎপর্য বৃহত্তর গণমানুষের কাছে পৌছানোর লক্ষ্যে বর্ণাঢ্য র্যালী, ব্যানার, ফেস্টুন, পোষ্টার, স্টিকার দিয়ে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া বেতার টেলিভিশনে অনুষ্টান, ভিডিও ছবি প্রদর্শন, পত্র পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে বৃক্ষ রোপণে জনগণ এর আগ্রহ সৃষ্টির সর্বাত্মক প্রচেষ্ট চালানো হয়।
এ মেলা আয়োজনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন প্রজাতির বনজ, ফলদ ও ভেষজ উদ্ভিদের প্রদর্শনী, বিপণন ও রোপণে মানুষকে উৎসাহিত করা। নগরবাসীর আগ্রহ সৃষ্টির জন্য এ মেলায় প্রচুর অর্ণামেন্টাল গাছ পালার সমরোহ ঘটানো হয় যাতে মানুষ এগুলোর সাথে পরিচিত হতে পারে।
সারাদেশ থেকে বড় বড় নার্সারীসহ, বৃক্ষ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশ গ্রহণ করে। ইদানিংকালে মাসব্যাপী এ বৃক্ষমেলায় কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন প্রজাতির বনজ, ফলজ, ভেষজ ও অর্ণামেন্টাল গাছের চারা বিক্রয় হয়। এই সাথে চলে ব্যাপক বৃক্ষ রোপণ অভিযান। সাধারণ মানুষ ছাড়াও এই সময়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উদ্দ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে বৃক্ষ রোপণ করা হয়। বিগত তিনদশকে এ বৃক্ষমেলার কারণেই বৃক্ষ রোপণের হার যেমন বেড়েছে, গাছপালার পরিমাণও বেড়েছে।
জাতীয় পর্যায় ছাড়াও দেশের বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষ মেলার আয়োজন সারাদেশের ব্যাপক সংখ্যক জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। ফলে মেলা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য সহজেই অর্জিত হয়। মেলার পাশাপাশি বৃক্ষ রোপণ সপ্তাহ পালন করায় বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক জায়গায় বৃক্ষ রোপণের পাশাপাশি জনসাধারণের ব্যক্তি উদ্যোগে প্রচুর পরিমানে বৃক্ষ রোপণের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
উপরোক্ত আলোচনাটিতে আমরা কৃষি ও বৃক্ষ মেলা, কৃষি মেলা কি, কৃষি মেলা কাকে বলে, বৃক্ষ মেলা কি বা বৃক্ষ মেলা কাকে বলে, এসব মেলার উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত হলাম।
বর্তমানে বৃক্ষ রোপণ একটি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশ উন্নয়নের আন্দোলনে পরিনত হয়েছে। বাংলাদেশের সরকারও বৃক্ষ রোপণকে একটি জাতীয় কর্মসূচী হিসেবে ঘোষনা করেছে। তাই বৃক্ষ রোপণের এ কর্মসূচীকে সামগ্রিকভাবে সার্থক করে তুলতে হলে বৃক্ষ মেলার মাধ্যমে চারার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
কৃষি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট কৃষি’ (inbangla.net/krisi) এর সাথেই থাকুন।