Skip to content

 

খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি

খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি

দেশের জনসংখ্যা বাড়ার কারণে মাছের চাহিদাও অনেক বেড়েছে। বিভিন্ন কারণে বাজারে মাছের সরবরাহ কমে যাচ্ছে। মাছের চাহিদা পূরণের জন্য মৎস্য বিশেষজ্ঞরা মূল্যবান পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অনেক পরামর্শের মধ্যে খাঁচায় মাছের চাষ একটি।

বর্তমানে মুক্ত জলাশয়ে বাঁচায় মাছ চাষের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। খাঁচায় মাছের চাষ আমাদের দেশে নতুন হলেও উত্তর আমেরিকায় অনেক আগে থেকেই এর ব্যবহার চলে এসেছে। ইন্দোনেশিয়া, করে কম্বোডিয়া প্রভৃতি দেশেও এর প্রচলন আছে।

বাংলাদেশে খাঁচায় মাছ চাষ মৎস্য বিশেষজ্ঞদের একটি অনুমোদিত প্রযুক্তি। যেসব এলাকায় নদী-নালা, হাওর, খাল-বিল আছে সেসব এলাকার কৃষকেরা এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে পারেন। নদীতে বা বিলে বা যে কোনো উন্মুক্ত জলাশয়ে খাঁচা বানিয়ে পুকুরের আকার দেওয়া যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, খাঁচায় মাছের চাষ করে একদিকে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মেটানো যায়, অপরদিকে এই মাছ বাজারে বিক্রি করে অর্থ লাভ করা যায়।

নিম্নে খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হলো-

চিত্র- খাঁচায় মাছ চাষ
চিত্র- খাঁচায় মাছ চাষ
  1. খাঁচা তৈরির প্রথমেই চারদিকে চারটি খুঁটি দিয়ে এবং আড়াআড়ি বাঁশ বেঁধে খাঁচার আয়তাকার কাঠামো তৈরি করা হয়।
  2. এরপর বাঁচার কাঠামোর চারদিকে এবং উপরে-নিচে জাল দ্বারা আবৃত করে খাঁচা তৈরি করা হয়।
  3. পরে খাঁচাটি তুলে নদীতে বা হাওরে নিয়ে মাটিতে শক্ত করে বাঁশের খুঁটি পুঁতে এর সাথে বেঁধে দিতে হয়।
  4. বাঁচার উপরের দিকে মাছের খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়।
  5. খাঁচা ছোট, মাঝারি ও বড় হতে পারে। ছোট আকারের খাঁচার মাপ হচ্ছে দৈর্ঘ্য ৩ মিটার, গ্রন্থ ২ মিটার এবং গভীরতা ২ মিটার।
  6. ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে মাছ চাষের জন্য খাঁচার আকার এর চেয়েও দ্বিগুণ বা তিনগুণ আকারের হতে পারে। মাছের খাঁচা যে শুধু আয়তাকার হবে তা নয়। আবার গোলাকারও হতে পারে।
  7. লম্বা বাঁশের ফ্রেম বানিয়ে এর সাথে ঘন ছিদ্রযুক্ত নেট বা জাল লাগিয়ে অনেকগুলো খোপের মাছের খাঁচা তৈরি করা যায়। বিভিন্ন খোপে বিভিন্ন মাছের চাষ করা যেতে পারে।
  8. স্রোতহীন বা কম স্রোতের পানিতে খাঁচা বসাতে হবে। বেশি স্রোতে বাঁচার ব্যবস্থাপনা কঠিন ও ব্যয়সাধ্য।
  9. খাঁচা খুঁটি বা প্লাটফর্ম দ্বারা বসাতে হবে। খুঁটির চেয়ে প্লাটফর্ম বেশি ভালো।
  10. তেলের ড্রাম দ্বারা প্লাটফর্ম তৈরি করা যায়। প্লাটফর্ম ব্যবহার করলে যেকোনো গভীরতায় খাঁচা বসানো যায়।
  11. খাঁচায় মাছের চাষ হলো নিবিড় চাষ। এ জন্য সুষম খাদ্য অত্যাবশ্যক।
  12. বাংলাদেশে খাঁচায় তেলাপিয়া, নাইলোটিকা ও কার্প জাতীয় মাছ চাষ করা যায়।
  13. খাঁচা বড় হলে পাঙ্গাস মাছও চাষ করা যায়। তবে এদের মাঝে তেলাপিয়ার চাষ লাভজনক। তেলাপিয়া চাষ করতে হলে প্রতি ১ ঘনমিটার বাঁচার ২০০-৩০০ পোনা ছাড়তে হবে।
  14. গমের ভুসি ও ফিশমিল যথাক্রমে ৮৫% ও ১৫% হারে মিশিয়ে মাছকে খাদ্য হিসাবে দিতে হবে। প্রতিদিন খাদ্যের পরিমাণ থাকবে মাছের দেহের ওজনের ৬-৭%। বাঁচার তলার সবটুকু অংশ পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে তাতে খাদ্য দিতে হবে।
  15. খাঁচার জান পলি ও শেওলায় ভর্তি হয়ে যেতে পারে। এমন হলে যথাসময়ে ব্রাশ বা বাঁশের শলার ঝাঁটা দিয়ে জাল পরিষ্কার করতে হবে।
  16. প্রতি ৩ মাস অন্তর একটি ১ ঘন মিটার খাঁচা হতে ২০ কেজি তেলাপিয়া উৎপাদন করা সম্ভব।

[সূত্র: এনসিটিবি]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts

You cannot copy content of this page