আমরা জানি, ডিম একটি ভঙ্গুর ও পচনশীল দ্রব্য।
বাড়িতে বা খামারে দুইধরনের ডিম উৎপাদন করা হয়। বাচ্চা ফুটানোর জন্য যে ডিম উৎপাদন করা হয় তাকে বীজ ডিম এবং খাবার জন্য যে ডিম উৎপাদন করা হয় তাকে খাবার ডিম বলা হয়।
বীজ ডিম উৎপাদনের জন্য মোরগের দরকার হয় কিন্তু খাবার ডিম উৎপাদনের জন্য মোরগের দরকার হয় না।
নিম্নে ডিম সংগ্রহ ও বাছাই করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
(১) ডিম সংগ্রহ
ডিম পাড়ার পর দ্রুত সংগ্রহ, বাছাই ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
খাঁচায় ডিম পাড়া মুরগি নিজের ডিম নষ্ট করতে পারে না এবং ডিমগুলো পরিক্ষার-পরিচ্ছন্ন থাকে।
অন্যদিকে মেঝেতে বা লিটারে পালনকারী অনেক মুরগি বাসায় ডিম না পেড়ে লিটারে পাড়ে। অনেক সময় এটি তার অভ্যাসে পরিণত হয়। লিটারে পাড়া ডিমে ময়লা লেগে যায় এবং পরিষ্কার করতে অসুবিধা হয়। তা ছাড়া লিটারে ডিম পাড়ার সময় পাতলা খোসার ডিম অনেক সময় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। লিটারে ডিম পাড়ার আরেকটা সমস্যা হচ্ছে মুরগির ডিম খাওয়া। এটি একবার সৃষ্টি হলে তা বদঅভ্যাসে রূপ নেয়।
মুরগির ডিম দিনে ২ বার সংগ্রহ করতে হবে। দুপুর ১২.০০ ঘটিকা ও বিকাল ৪.০০ ঘটিকায় ডিম সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু হাসের ডিম মাত্র একবার সংগ্রহ করা হয়। কারণ হাস সকাল ৯.০০ ঘটিকার মধ্যে ডিম পাড়ে।
(২) ডিম বাছাই
ডিম সংগ্রহ করার পর তা বাছাই করা হয়। বীজ ডিমের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক ডিম যেমন- অতিবড়, অতিছোট, গোলাকৃতি ও লম্বা আকারের ডিম বাদ দিতে হবে। তা ছাড়া অধিক ময়লাযুক্ত ডিম, ফাটা ও পাতলা খোসার ডিম ফুটানোর জন্য নির্বচন করা হয় না।
কোনো খাবার ডিম বেশি ময়লাযুক্ত হলে পানি দিয়ে ধোয়া যায়।
খাবার ডিম বা বীজ ডিম বাছাই করার পর প্লাস্টিক ট্রেতে সাজাতে হবে। ট্রেতে ডিম বসানোর সময় ডিমের মোটা অংশ উপরের দিকে ও সবু অংশ নিচের দিকে দিতে হবে। এরপর ট্রে-সহ ডিমকে ঠাণ্ডা স্থানে সংরক্ষণ করা হয়।
বীজ ডিম দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে ৫০-৫৫০ ফারেনহাইট (১০-১২০ সে.) তাপমাত্রায় অর্থাৎ ঠাণ্ডা স্থানে সংরক্ষণ করতে হয়।
খাবার ডিম মাটির হাঁড়িতে বা ডিমে তেল মাখিয়ে অনেক দিন রাখা যায়। কিন্তু বীজ ডিম গরমকালে ৩-৫ দিন ও শীতকালে ৭ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হয়।
(৩) ডিম বাছাইয়ের সময় গ্রেডিং করা
আমাদের বাংলাদেশে হালি বা ভজন হিসেবে ডিম বিক্রি হয়। বাজারে ওজন হিসেবে ডিম বিক্রি হয় না। বড় ডিমে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়। তাই ওজন অনুসারেই ডিম বিক্রি হওয়া উচিত।
ডিম বাছাইয়ের সময় আকারে বা ওজন অনুসারে ডিমকে নিমলিখিতভাবে ভাগ করা হয়ে থাকে-
ডিমের গ্রেডিং তালিকা (মুরগি):
আকার | একটি ডিমের ওজন (গ্রাম) |
অতি বড় | ৬০ গ্রামের অধিক |
বড় | ৫৩-৫৯ গ্রাম |
মাঝারি | ৪৬-৫২ গ্রাম |
ছোট | ৩৮-৪৪ গ্রাম |
কৃষি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট কৃষি’ (inbangla.net/krisi) এর সাথেই থাকুন।