Skip to content

 

ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি

ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি

(১) ঢেঁড়সের জাত পরিচিতি ও বৈশিষ্ট্য

ক) বারি ঢেঁড়স-১

বারি ঢেঁড়স-১
বারি ঢেঁড়স-১
  • ‘বারি ঢেঁড়স-১’ নামে জাতটি ১৯৯৬ সালে অনুমোদন করা হয়।
  • গাছ ২.০-২.৫ মিটার লম্বা হয়।
  • এ জাতের গাছে প্রায় সব পত্রকক্ষেই ফুল ও ফল ধরে।
  • বীজ বপনের ৪৫ দিনের মধ্যে ফুল ফুটতে শুরু করে।
  • গাছপ্রতি ফলের সংখ্যা ২৫-৩০টি। ফল ৫ শিরা বিশিষ্ট, সবুজ এবং ১৪-১৮ সেমি লম্বা।
  • ফুল ফোটার ৫-৬ দিনের মধ্যেই ফল সংগ্রহ করতে হয় এবং পরবর্তীকালে প্রতি ১ দিন অন্তর ফল সংগ্রহ করা যায়।
  • পরিপক্ক এবং শুষ্ক বীজে বাদামী রোমশ আবরণ আছে যা এ জাতের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
  • বীজের রং বাদামী।
  • জীবনকাল বীজ বপন থেকে প্রায় ৫ মাস।
  • উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করলে হেক্টরপ্রতি ফলন ১৪-১৬ টন হয়।
  • বাংলাদেশের সর্বত্র সারা বছরই এ জাতের চাষ করা যায়।

খ) বারি ঢেঁড়স-২

বারি ঢেঁড়স-২
বারি ঢেঁড়স-২
  • উচ্চ ফলনশীল জাত।
  • এটি একটি আগাম জাত (৪০-৪২ দিনে প্রথম ফুল আসে)।
  • ফল মাঝারী আকারের লম্বাটে। সবুজ রঙের, ৫-৬ টি শিরা বিশিষ্ট।
  • ফল নরম, অল্প আঁশযুক্ত যার ১০০% ভক্ষণযোগ্য।
  • ফলের গড় ওজন ১৩-১৬ গ্রাম।
  • প্রতি গাছে ৩২-৩৮ টি ফল ধরে।
  • গড় ফলন প্রায় ১৭-২১ টন/হেক্টর।

(২) ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি ধারাবাহিক বর্ণনা

ক) জলবায়ু ও মাটি

  • ঢেঁড়সের জন্য অপেক্ষাকৃত উচ্চ তাপমাত্রা প্রয়োজন। শুষ্ক ও আর্দ্র উভয় অবস্থায় ঢেঁড়স জন্মানো যায়। সাধারণত খরিফ মৌসুমেই এর চাষ হয়ে থাকে।
  • দোআঁশ মাটি ঢেঁড়সের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট। প্রচুর জৈব সার প্রয়োগ করতে পারলে বেলে ধরণের মাটিতেও এর চাষ করা যায়।
  • মাটি সুনিষ্কাশিত হওয়া প্রয়োজন।

খ) বীজ বপনের সময় ও পরিমাণ

  • বাংলাদেশে সাধারণত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ঢেঁড়স লাগানো হয়। তবে বছরের অন্যান্য সময়ও সীমিতভাবে এর চাষ হয়ে থাকে।
  • প্রতি হেক্টরে বপনের জন্য ৪-৫ কেজি (১২-২০ গ্রাম/শতাংশ) বীজের প্রয়োজন হয়।

গ) জমি নির্বাচন ও তৈরি

  • সেচ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাসহ উচু জমি নির্বাচন করে ৫/৬ বার চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে।
  • মাঠে সরাসরি বীজ বপনের জন্য এক মিটার প্রস্থ বেড তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি দুটি বেডের মাঝখানে ৩০ সেমি প্রশস্থ নালা রাখতে হবে।
  • বেড সাধারণত ১৫-২০ সেমি উঁচু হবে।

ঘ) বীজ বপনের পদ্ধতি ও দূরত্ব

  • আগাম ফসলের জন্য বীজ ঘন করে বপন করতে হয়। এক্ষেত্রে সারি থেকে সারি ৪৫ সেমি এবং সারিতে ৩০ সেমি পর পর লাইনে ৩০ সেমি অন্তর বীজ বপন করা হয়।
  • সঠিক মৌসুমের চাষের জন্য অর্থাৎ বৈশাখ মাস থেকে (১৫ এপ্রিলের পর) এক মিটার প্রশস্থ বেডে ৬০ × ৪০ সেমি দুরত্বে দু’সারিতে বীজ বপন করেত হবে।
  • বীজ মাটির ২-৩ সেমি গভীরে বুনতে হয়। এক সাথে ২টি বীজ বপন করা ভাল।
  • বীজ বপনের পূর্বে ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে নিলে অঙ্কুরোদ্গম ভাল হয়।
  • বপনের পর প্রয়োজনীয় পানি সেচ আবশ্যক।
  • চারা গজানোর ৭ দিন পর সুস্থ সবল ১টি গাছ রেখে অতিরিক্ত গাছ তুলে ফেলতে হবে।

গ) সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি (প্রতি হেক্টরে)

সারমোট পরিমাণশেষ চাষের সময় দেয়উপরি প্রয়োগ: ১ম কিস্তি (বীজ বপনের ৩০ দিন পর)উপরি প্রয়োগ: ২য় কিস্তি (বীজ বপনের ৫০ দিন পর)উপরি প্রয়োগ: ৩য় কিস্তি (বীজ বপনের ৮০ দিন পর)
গোবর/কম্পোষ্ট১০ টনসব
ইউরিয়া১৫০ কেজি৭৫ কেজি২৫ কেজি২৫ কেজি২৫ কেজি
টিএসপি১০০ কেজিসব
এমওপি১৫০ কেজি৭৫ কেজি২৫ কেজি২৫ কেজি২৫ কেজি

ঙ) অন্যান্য পরিচর্যা

সময়মত নিড়ানী দিয়ে আগাছা সবসময় পরিষ্কার করে সাথে সাথে মাটির চটা ভেঙ্গে দিতে হবে। খরা হলে প্রয়োজন অনুযায়ী সেচ দিতে হবে।

[সূত্র: বিএআরআই]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts

You cannot copy content of this page