Skip to content

পারিবারিক পোল্ট্রি ও গবাদিপশুর খামার পরিকল্পনা

পারিবারিক পোল্ট্রি ও গবাদিপশুর খামার পরিকল্পনা

এই আর্টিকেলটি শেষ অবধি অধ্যয়ন করলে আপনি- পোল্ট্রি কি তা বলতে পারবেন। বাংলাদেশে পারিবারিক পোল্ট্রি খামারের বর্তমান অবস্থা বর্ণনা করতে পারবেন। গ্রাম ও শহরে ক্ষুদ্র বা ছোট আকারের পারিবারিক পোল্ট্রি ও গবাদিপশুর খামার পরিকল্পনা হাতে নিতে পারবেন। বিভিন্ন ধরনের পারিবারিক গবাদিপশুর খামারের নাম উল্লেখ করতে পারবেন। পারিবারিক পোল্ট্রি ও গবাদিপশুর খামারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ধারণা অর্জন করতে পারবেন।

(১) পোল্ট্রি কি?

পোল্ট্রি কি

পোল্ট্রি কি: অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে, প্রধানত ডিম ও মাংস উৎপাদনের লক্ষ্যে, পারিবারিক বা খামারভিত্তিতে যেসব প্রজাতির গৃহপালিত পাখি বৈজ্ঞানিকভাবে আধুনিক পদ্ধতিতে পালন করা হয় তাদেরকে একত্রে পোল্ট্রি বলে। পোল্ট্রি প্রজাতিগুলোর মধ্যে মুরগি, হাঁস, টারকি, কোয়েল, কবুতর, রাজহাঁস, তিতির ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তবে, পৃথিবীতে বাণিজ্যিকভিত্তিতে যে পরিমাণ ডিম ও মাংস উৎপাদিত হয় তার সিংহভাগই আসে মুরগি, হাঁস ও কোয়েল থেকে।

(২) পারিবারিক পোল্ট্রি খামার পরিকল্পনা

পারিবারিক পোল্ট্রি খামার পরিকল্পনা

আমাদের দেশে সেই আদিকাল থেকেই গ্রামের কৃষকরা দেশি জাতের হাঁস, মুরগি, রাজহাঁস, কবুতর ইত্যাদি পালন করে আসছে। এটি আমাদের গ্রামের কৃষ্টিরই একটি অংশ।

পারিবারিকভাবে পালিত এসব পোল্ট্রিকে তারা তেমন কোন খাদ্যও সরবরাহ করেন না। আর এগুলো তারা কোন বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোন থেকেও পোষেন না। শুধু নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করেন মাত্র।

কিন্তু বর্তমানে এ ধারণা পাল্টে গেছে। এখন পারিবারিকভিত্তিতে শুধুমাত্র গ্রামে নয়, এমনকি শহরের বাসাবাড়ির আঙ্গিনা, ছাদ, বারান্দাতেও ক্ষুদ্র থেকে ছোট আকারের পোল্ট্রি খামার গড়ে তোলা হচ্ছে।

গ্রাম বা শহরের এসব ক্ষুদ্র ও ছোট খামারে দেশি কম উৎপদানশীল জাতের পোল্ট্রি না পুষে উন্নত জাতের অধিক উৎপাদনশীল বা সংকরজাতের পোল্ট্রি পালন করা হচ্ছে।

খামারিরা তাদের আর্থিক সঙ্গতি ও সুবিধা-অসুবিধার ওপর নির্ভর করে এসব খামারে ১০- ৩০০টি পর্যন্ত পোল্ট্রি পালন করছেন।

ক) গ্রামে পালনের উপযোগী পোল্ট্রি

  • গ্রামে মুরগি, হাঁস, কবুতর ও রাজহাঁস পালন করার জন্য বেশি উপযোগী। আবদ্ধাবস্থায় পালন করলে জাপানি কোয়েলও পালন করা যায়। কারণ, একই জায়গায় মুরগির ৮ গুণ কোয়েল পালন সম্ভব।
  • বাংলাদেশে পোল্ট্রির নতুন সদস্য বৃহদাকারের টারকি গ্রামে ছেড়ে পালন করার জন্য বেশ উপযোগী। এদের মাংসের রঙ লালচে হওয়ার গরু ও খাসির মাংসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব।
  • পারিবারিকভাবে গ্রামে পালনের জন্য বিশুদ্ধ জাতের ফাইওমি মুরগি অথবা সংকরজাতের সোনালি ও রূপালি মুরগি উৎকৃষ্ট। কারণ এরা দেশি মুরগির মতোই মাঠে-ঘাটে চড়ে খেতে পারে। আবার এদেরকে আবদ্ধ বা অর্ধ-আবদ্ধ পদ্ধতিতেও পালন করা যায়। এদের থেকে বছরে ২০০-৩০০টি ডিম পাওয়া সম্ভব।
  • হাঁসের ক্ষেত্রে উন্নত জাতের খাকি ক্যাম্পবেল, ইন্ডিয়ান রানার ও জিনডিং ডিমের জন্য এবং পেকিন ও মাসকোভি মাংসের জন্য পোষা যায়।
See also  পোল্ট্রি কি? পোল্ট্রি অর্থ কি? পোল্ট্রি কাকে বলে? পোল্ট্রি বলতে কি বুঝায়? পোল্ট্রির ধারণা, গুরুত্ব, বর্তমান অবস্থা, সমস্যা ও সম্ভাবনা

খ) শহরে পালনের উপযোগী পোল্ট্রি

  • শহরে বাসাবাড়িতে পারিবারিকভাবে মূলত আবদ্ধ পদ্ধতিতেই পোল্ট্রি পোষা হয়। কাজেই এখানে পোষার জন্য মুরগি, কোয়েল, কবুতর ও টার্কিই বেশি উপযোগী।
  • শহরে হাঁস ও রাজহাঁস পালন করা সম্ভব নয়।

(৩) পারিবারিক পোল্ট্রির খামার ব্যবস্থাপনা

পারিবারিক পোল্ট্রির খামার ব্যবস্থাপনা

গ্রাম বা শহর যেখানেই পালন করা হোক না কেন পারিবারিক খামার থেকে পর্যাপ্ত উৎপাদন পেতে হলে প্রতিটি খামারিকে অবশ্যই খামার ব্যবস্থাপনার খুঁটিনাটি বিষয়গুলোর দিকে সঠিকভাবে নজর দিতে হবে।

খামার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সীমিত জ্ঞান থাকলে পোল্ট্রি থেকে কাঙ্খিত উৎপাদন পেতে সমস্যা হতে পারে। ফলে উৎপাদন ভালো হবে না। এতে অনেকেই খামার করতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। এদের দুর্দশা দেখে খামার গড়তে আগ্রহী ব্যক্তিরাও নিরুৎসাহিত হয়।

অথচ খামারিরা যদি খামার ব্যবস্থাপনার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করেন ও সে অনুযায়ী সঠিকভাবে খামারের প্রতিদিনের কাজকর্ম সম্পাদন করেন, তবে সহজেই এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠে খামারকে আর্থিকভাবে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

আর একথা মনে রাখা উচিত যে, যে কোনো ছোটখাট অবহেলা বা ভুলত্রুটিই খামারের লোকসানের জন্য যথেষ্ট।

এ কথাটি সর্বজনবিধিত যে, চিকিৎসা অপেক্ষা প্রতিরোধই শ্রেয়।

রোগব্যাধি হলে নিরাময়ের জন্য অবশ্যই চিকিৎসা করতে হবে। কিন্তু যদি রোগ হওয়ার আগেই এমন একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় যাতে রোগই না হয়, অর্থাৎ আগে থেকেই রোগ প্রতিরোধ করা যায়, তবে চিকিৎসার কোনো দরকারই পড়বে না।

পোল্ট্রি শিল্পে রোগব্যাধি চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধের ওপরই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। কারণ, এই অধিক উৎপাদনশীল ছোট্ট প্রাণীগুলোর রোগ সারানোর জন্য ওষুধ ব্যবহার করলে অনেকক্ষেত্রেই এরা রোগ থেকে সেরে উঠে সত্য, কিন্তু রোগসংক্রান্ত পীড়নের ফলে এরপর এদের থেকে আর কাঙ্খিত উৎপাদন পাওয়া যায় না। 

তাছাড়া রোগপ্রতিরোধে খামারি বা পোল্ট্রি পালনকারির বেশকিছু করণীয় কাজ আছে। এ কাজগুলো সুষ্ঠভাবে পালন করতে পারলেই পোল্ট্রি খামার রোগমুক্ত থাকবে। এগুলো নিম্নরূপ-

  • খামারে পরিচ্ছন্ন পরিবেশের সৃষ্টি করা।
  • আরামদায়ক তাপমাত্রা ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক অবস্থার উন্নয়ন, যেমন- আপেক্ষিক আর্দ্রতা, বিশুদ্ধ বাতাস ইত্যাদির ব্যবস্থা করা।
  • বিভিন্ন বয়স ও প্রজাতির পোল্ট্রি আলাদা আলাদা ঘরে পালন করা।
  • বাচ্চা বা বয়স্ক পোল্ট্রি রোগবিহীন, স্বাস্থ্যবান অংশ ও উৎস থেকে সংগ্রহ করা।
  • রোগাক্রান্ত ও স্বাস্থ্যহীন পাখি সুস্থ্য পাখিদের থেকে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি পৃথক করে ফেলা।
  • সুষম খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা।
  • ইঁদুর ও অন্যান্য ইঁদুরজাতীয় প্রাণী, কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য পশুপাখির উপদ্রব থেকে খামারকে মুক্ত রাখতে হবে।
  • পোল্ট্রিকে সময়মতো টিকা দিতে হবে।
  • মৃত পোল্ট্রি ও খামারের বর্জের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে খামারের পরিবেশ জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। এছাড়াও অন্যান্য বর্জ্য, যেমন- খালি কার্টুন, বাক্স, বোতল, ওষুধ বা টিকার খালি শিশি ইত্যাদি গর্ত করে মাটিচাপা দিতে হবে বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

(৪) গবাদিপশু কাকে বলে?

গবাদিপশু কাকে বলে

গবাদিপশু কাকে বলে: তৃণভোজী, জোড়-আঙ্গুল ও খুরযুক্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীকে গবাদিপশু বলে। গবাদি পশুর  গবাদি পশু সাধারণত মাংসের জন্য, দুগ্ধজাত দ্রব্যের জন্য এবং চামড়ার জন্য পালন করা হয়। সাধারণত গবাদিপশু বলতে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি গৃহপালিত পশুকেই বুঝায়।

See also  গবাদি পশুর রোগ ও চিকিৎসা

খামার কাকে বলে: যেখানে কৃত্রিম ভাবে যেকোন উদ্ভিদ বা প্রাণীর প্রতিপালন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য সাধন করা হয় এমন স্থাপনাকে খামার বলে।

গবাদিপশুর খামার কাকে বলে: যেখানে সুশৃঙ্খল উপায়ে পশুর সঠিক আহার যোগানো, প্রজনন ও আবাসন এবং রোগ ও পরজীবী সংক্রমণ ও অন্যন্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে অনেক গবাদি পশু একত্রে পালনের ব্যবস্থা করা হয় তাকে গবাদিপশুর খামার বলে। পশুপালনের মধ্য দিয়ে দুধ ও মাংসের লাভজনক ব্যবসা হলো গবাদিপশুর খামার প্রতিষ্ঠা।

(৫) পারিবারিক গবাদিপশুর খামার পরিকল্পনা

পারিবারিক গবাদিপশুর খামার পরিকল্পনা

হাঁস-মুরগির মতো পারিবারিক পর্যায়ে গবাদিপশু পালনও এদেশের গ্রামীণ কৃষির একটি অত্যন্ত পুরনো রীতি। বাংলাদেশে গবাদিপশুর মধ্যে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া অন্যতম।

তবে গরু ও ছাগল দেশের সর্বত্র পালন করা হলেও মহিষ ও ভেড়া সব এলাকায় নেই অথবা পালন করা হয় না। অবশ্য কোন কোন এলাকায় ভারবাহী পশু হিসেবে ঘোড়াও পালন করতে দেখা যায়।

সচরাচর অবস্থাসম্পন্ন বা ধনী গৃহস্থরাই গরু ও মহিষ পালন করে থাকেন। অধিক দামের কারণে ভূমিহীন কৃষক, বেকার ও গরীব লোকদের পক্ষে গরু ও মহিষ কেনা ও পোষা সম্ভব নয়। কিন্তু কষ্টে-শিষ্টে অবশ্যই দু’একটা ছাগল বা ভেড়া কেনা সম্ভব। তাই তাদের পক্ষে ছাগল-ভেড়া পালন করাই সহজ।

পারিবারিক গবাদিপশুর খামার সফলভাবে পরিচালনা করার জন্য খামারির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরী। বিশেষ করে পশুর জাত, উৎপাদন ক্ষমতা, বাসস্থান, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা ও টিকাদান কর্মসূচী সম্পর্কে খামারিদের সঠিক জ্ঞান রাখতে হবে।

নিম্নে পারিবারিক গবাদিপশু ২টি খামার নিয়ে আলোচনা করা হলো-

ক) পারিবারিক ছাগল-ভেড়ার খামার

  • ভূমিহীন কৃষক, বেকার যুবক ও গরীব লোকদের জন্য ছাগল ও ভেড়া পালন করা বেশ সহজ ও লাভজনক। একটি ছাগল থেকে বছরে অন্তত ৪টি বাচ্চা পাওয়া যায়। এতে সহজেই পুঁজি উঠে আসে। তাইতো ছাগলকে গরীবের গাভী বলা হয়।
  • ছাগলের মাংস অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। তাই বেশি দামে বিক্রি হয়। পুরুষ বাচ্চা ছাগল ও ভেড়া মাত্র ৮ মাস বয়সে প্রজনন উপযোগী হয়ে যায়। কাজেই মাংসের জন্য বাজারজাত করতে গরুর তুলনায় কম সময় লাগে। এতে খামারির পুঁজি উঠে আসতে সময় কম লাগে।
  • তবে পারিবারিকভাবে ছাগল বা ভেড়ার খামার গড়তে হলে ৫-১৫টির বেশি পালন করা উচিত হবে না। কারণ এতে বাড়তি লোকের প্রয়োজন পড়বে। ফলে খামার লাভজনক হবে না।

খ) পারিবারিক গরু মহিষের খামার

  • আমাদের দেশি গাভী দৈনিক ১.০-১.৫ লিটার দুধ দিতে সক্ষম। তাই দেশি গরু দিয়ে পারিবারিক দুগ্ধ খামার গড়লে কোন রকমে পারিবারিক চাহিদা মিটানো গেলেও তা থেকে বাড়তি আয় করা সম্বব নয়। সে কারণে অধিক উৎপাদনশীল ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান, জার্সি বা শাহিওয়াল সংকর জাতের গরু দিয়ে পারিবারিক দুগ্ধ খামার স্থাপন করা যেতে পারে।
  • পারিবারিক খামারে ২-৫টির বেশি গরু না রাখাই ভালো। কারণ এতে বাড়তি লোক নিয়োগ করতে হবে ও খামারের খরচ বাড়বে।
  • পারিবারিক দুগ্ধ খামার ছাড়াও ৪-৫টি ষাঁড় বাছুর কিনে বাছুর মোটাতাজা করার প্রকল্প হাতে নেয়া যেতে পারে। এতে স্বল্প সময়ে টাকা আয়ের একটি উৎসের সৃষ্টি হবে।
  • অবশ্য হাওর-বাওর ও নদী প্রধান এলাকায় দুধ ও মাংসের জন্য ৪-৫টি করে মহিষ পালন করা যেতে পারে।
See also  গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি পালন

(৬) পারিবারিক গবাদিপশুর খামারে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

পারিবারিক গবাদিপশুর খামারে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

পারিবারিক খামারে গবাদিপশুর রোগপ্রতিরোধ ও রোগ চিকিৎসা করে সুস্থ্য রাখাকেই গবাদিপশুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বলা হয়। .

‘চিকিৎসা অপেক্ষা প্রতিরোধই শ্রেয়’ কথাটি মনে রেখে খামারে যথাযথ রোগপ্রতিরোধক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। কারণ খামারে গবাদিপশু রোগাক্রান্ত হলে চিকিৎসা করে তাকে উৎপাদনে আনতে অনেক সময় লাগে। 

তাই গবাদিপশুর খামারে নিম্নলিখিতভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা করা যেতে পারে। যথা-

  • উঁচু স্থানে খামার নির্মাণ করা ও খামারের চারদিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
  • গোয়াল ঘর দক্ষিণমুখী অর্থাৎ পূর্ব-পশ্চিমে লম্বালম্বিভাবে নির্মাণ করতে হবে।
  • খামারে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ও বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • খামারে কার্যকরী পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকতে হবে।
  • খামারে মানুষ এবং বন্যপ্রাণী ও পাখির প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
  • গবাদিপশুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে।
  • সুষম খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা কর হবে।
  • খাদ্য ও পানির পাত্র সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া একত্রে পালন করলে আলাদা আলাদা ঘরে রাখতে হবে।
  • সর্বোপরি গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার জন্য উপযুক্ত ও কার্যকরী টিকাদান কর্মসূচী অনুসরণ করতে হবে।
  • মৃত পশুকে যথাযথভাবে মাটিচাপা দিতে হবে ও বর্জ্য যথাযথভাবে সরিয়ে নিয়ে খামারের পরিবেশ জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
  • খামারের পশু রোগাক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে।

প্রিয় পাঠক বন্ধু, উপরোক্ত আলেচনার মাধ্যমে আমরা পোল্ট্রি কি, পারিবারিক পোল্ট্রি খামার পরিকল্পনা, পারিবারিক পোল্ট্রির খামার ব্যবস্থাপনা, গবাদিপশু কাকে বলে, পারিবারিক গবাদিপশুর খামার পরিকল্পনা, পারিবারিক গবাদিপশুর খামারে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারলাম।

অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে, প্রধানত ডিম ও মাংস উৎপাদনের লক্ষ্যে, পারিবারিক বা খামারভিত্তিতে যেসব প্রজাতির গৃহপালিত পাখি আধুনিক পদ্ধতিতে পালন করা হয় তারাই পোল্ট্রি, যেমন- হাঁস, মুরগি, রাজহাঁস, কবুতর, কোয়েল, তিতির, টারকি ইত্যাদি। আমাদের দেশে আদিকাল থেকেই গ্রামের কৃষকরা দেশি জাতের হাঁস, মুরগি, কবুতর ইত্যাদি পালন করে আসছে।

হাঁস-মুরগির মতো পারিবারিক পর্যায়ে গবাদিপশু পালনও এদেশের গ্রামীণ কৃষির পুরনো রীতি। যদিও পারিবারিকভাবে পূর্বে দেশি জাতের পোল্ট্রি ও গবাদিপশু পালন করা হতো। কিন্তু বর্তমানে অধিক উৎপাদনশীল বিশুদ্ধ ও সংকর জাতের পোল্ট্রি ও গবাদিপশু পালন করা হচ্ছে।

যে কোন পারিবারিক পোল্ট্রি বা গবাদিপশুর খামার থেকে পর্যাপ্ত উৎপাদন পেতে হলে পোল্ট্রি ও গবাদিপশুর জাত, উৎপাদন ক্ষমতা, বাসস্থান, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও টিকাদান কর্মসূচী সম্পর্কে খামারিদের সঠিক জ্ঞান রাখতে হবে।

কৃষি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট কৃষি’ (inbangla.net/krisi) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট কৃষি

পশু-পাখি পালন ও চাষাবাদ সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts