Skip to content

পেয়ারা চাষের পদ্ধতি ও নিয়মসমূহ

পেয়ারা চাষের পদ্ধতি ও নিয়মসমূহ

পেয়ারা ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ফল।

বাংলাদেশের সর্বত্র কম বেশি এ ফল জন্মে থাকে। তবে ইতোপূর্বে পেয়ারার বাণিজ্যিক চাষ পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি, চট্টগ্রাম জেলার কাঞ্চননগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মুকুন্দপুর প্রভৃতি এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল।

সাম্প্রতিক সময়ে উন্নত জাত যেমন- কাজী পেয়ারাসহ ‘বারি পেয়ারা-২’, ‘বারি পেয়ারা-৩’ এবং ‘বারি পেয়ারা-৪’ উদ্ভাবিত হওয়ার পর দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারার চাষ হচ্ছে।

পেয়ারা
পেয়ারা

বহুবিধ গুণাগুণের সমন্বয়ের জন্য পেয়ারাকে নিরক্ষীয় এলাকার আপেল বলা হয়। টাটকা ফল হিসেবে খাওয়া ছাড়াও এ থেকে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে জ্যাম, জেলী, জুস প্রভৃতি খাদ্য তৈরি হয়।

বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে বিদেশি ফলের পাশাপাশি পেয়ারার ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

এখানে আমারা পেয়ার চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।

(১) পেয়ারার জাতের নাম পরিচিতি

ক) কাজী পেয়ারা

‘কাজী পেয়ারা’ নামক জাতটি বিদেশ হতে সংগৃহীত জার্মপ্লাজম থেকে বাছাই পদ্ধতির মাধ্যমে উদ্ভাবন করে ১৯৮৫ সালে অনুমোদন করা হয়।

কাজী পেয়ারা
কাজী পেয়ারা
  • গাছ আকারে মধ্যম।
  • বীজের গাছ লাগানোর এক বছরের মধ্যে ফল দিতে শুরু করে।
  • এ জাতটি বছরে দু’বার ফল দেয়। প্রথমবার মধ্য-ফাল্গুন থেকে মধ্য-বৈশাখ (মার্চ-এপ্রিল) মাসে ফুল আসে এবং মধ্য-আষাঢ় থেকে মধ্য-ভাদ্র (জুলাই-আগস্ট) মাসে পাকে।
  • দ্বিতীয়বার মধ্য-ভাদ্র থেকে মধ্য-আশ্বিন (সেপ্টেম্বর) মাসে ফুল আসে এবং মধ্য-মাঘ থেকে মধ্য-ফাল্গুন (ফেব্রুয়ারি) মাসে পাকে।
  • ফল আকারে বেশ বড়। ওজন ৪০০-৫০০ গ্রাম।
  • পরিপক্ক ফল হলুদাভ সবুজ এবং ভিতরের শাঁস সাদা।
  • প্রতি ফলে ৩৪০-৩৬০টি বীজ থাকে, বীজ বেশ শক্ত। হাজার বীজের ওজন ৩.৫-৪.০ গ্রাম।
  • কাজী পেয়ারা খেতে কচকচে (টিএসএস ৮-১৩%)।
  • ফল ৭-১০ দিন সাধারণ তাপমাত্রায় ঘরে সংরক্ষণ করা যায়।
  • কাজী পেয়ারার প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী অংশে ২১০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ২৮ টন।

খ) বারি পেয়ারা-২

‘বারি পেয়ারা-২’ নামে উচ্চ ফলনশীল এ জাতটি বিদেশ হতে সংগৃহীত জার্মপ্লাজম থেকে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভাবিত হয় এবং ১৯৯৬ সালে অনুমোদন করা হয়।

বারি পেয়ারা-২
বারি পেয়ারা-২
  • গাছ ছাতাকৃতি, পাতার অগ্রভাগ সুচালো।
  • জাতটি বর্ষাকালে ও শীতকালে ২ বার ফল দেয়।
  • তবে সঠিক পরিচর্যা (বিশেষ করে ফল পাতলা করা ও সার প্রয়োগ) করা হলে প্রায় সারা বছর ফল দিতে পারে।
  • ফল আকারে বেশ বড়, ওজন ৩৫০-৪০০ গ্রাম ও গোলাকার।
  • পরিপক্ক ফল হলুদাভ সবুজ এবং ভিতরের শাঁস সাদা হয়।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ৩০ টন।
  • প্রতি ফলে ৩৩০-৩৫০টি বীজ থাকে যার ওজন প্রায় ৫ গ্রাম।
  • পেয়ারা খেতে কচকচে, সুস্বাদু ও মিষ্টি (১০% টিএসএস)।
See also  পেয়ারার জেলি তৈরির পদ্ধতি/নিয়ম

গ) বারি পেয়ারা-৩

স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত জার্মপ্লাজম থেকে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে ‘বারি পেয়ারা-৩’ নামে একটি জাত জাতীয় বীজ বোর্ডের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়।

বারি পেয়ারা-৩
বারি পেয়ারা-৩
  • এটি লাল শাঁস বিশিষ্ট পেয়ারার প্রথম অনুমোদিত জাত।
  • ফলের আকার ৬.৭৫ ⨉ ৭.১০ সেমি।
  • ফলের গড় ওজন ১৮০ গ্রাম এবং টিএসএস ৮%।
  • ফলের গাত্র মসৃণ, পূর্ণ পরিপক্ক অবস্থায় হলদে সবুজ, শাঁস লাল, বীজ মধ্যম।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ২০-২২ টন।

ঘ) বারি পেয়ারা -৪

বারি পেয়ারা- ৪
বারি পেয়ারা- ৪
  • উচ্চফলনশীল, বীজবিহীন, এবং অমৌসুমী জাত।
  • গাছ খর্বাকৃতির, মধ্যম ছড়ানো ও ঝোপালো।
  • ফল সংগ্রহের উপযোগী সময় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর।
  • পরিপক্ক ফলের রং হলুদাভ সবুজ।
  • প্রতিটি ফলের গড় ওজন ২৮৪ গ্রাম।
  • ফলের শাঁস সাদা, কচকচে, সুস্বাদু (টিএসএস ৯.৫%) ও দীর্ঘ সংরক্ষণ ক্ষমতা সম্পন্ন।

(২) পেয়ারা চাষের পদ্ধতি ও নিয়ম বর্ণনা

ক) জলবায়ু ও মাটি

পেয়ারা উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুর ফল।

প্রায় সব রকমের মাটিতেই পেয়ারার চাষ করা যায়, তবে জৈবপদার্থ সমৃদ্ধ দোআঁশ মাটি থেকে ভারী এঁটেল মাটি যেখানে পানি নিষ্কাশনের বিশেষ সুবিধা আছে সেখানে পেয়ারা ভাল জন্মে।

৪.৫-৮.২ অম্লক্ষারত্বের (pH) মাটিতে পেয়ারা ভালো হয়।

খ) বংশ বিস্তার

বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার করা সবচেয়ে সহজ।

অঙ্গজ পদ্ধতিতে বংশ বিস্তার করলে সে গাছের পেয়ারা মাতৃ গাছের পেয়ারা হতে পার্থক্য হয় না। তাই ফল উৎপাদনের জন্য বীজের চারা এবং বীজ উৎপাদনের জন্য (মাতৃ গাছ) অঙ্গজ পদ্ধতিতে বংশ বিস্তার করাই উত্তম।

অঙ্গজ পদ্ধতির মধ্যে গুটি কলমই বহুল প্রচলিত।

গ) গর্ত তৈরি ও পেয়ারা চারা/কলম রোপণ পদ্ধতি

  1. এক বছর বয়সের চারা বা কলম সাধারণত ৪ মিটার দূরে দূরে লাগানো হয়।
  2. মে থেকে সেপ্টেম্বর মাস পেয়ারার চারা/কলম লাগানোর উপযুক্ত সময়। তবে পানি সেচের সুব্যবস্থা থাকলে সারা বছরই পেয়ারার চারা/কলম রোপণ করা চলে।
  3. চারা লাগাবার জন্য ৬০ ⨉ ৬০ ⨉ ৪৫ সেমি আকারের গর্ত করে প্রতি গর্তে ১০-১৫ কেজি পচা গোবর অথবা আবর্জনা পচা সার, ২৫০ গ্রাম টিএসপি, ২৫০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে গর্ত ভর্তি করে ১০-১৫ দিন রেখে দিতে হবে।
  4. চারা/কলম রোপণের পূর্বে গর্তের মাটি পুনরায় উলটপালট করে এর ঠিক মাঝখানে খাড়াভাবে চারাটি লাগিয়ে চারার চারদিকের মাটি হাত দিয়ে চেপে ভালভাবে বসিয়ে দিতে হয়।
  5. চারা রোপণের পর শক্ত খুঁটি পুঁতে খুঁটির সাথে চারাটি বেঁধে দিতে হবে যাতে বাতাসে চারার কোন ক্ষতি না হয়। প্রয়োজনবোধে বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
  6. চারা রোপণের পরপরই পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।
See also  পেয়ারা গাছের পরিচর্যা, পেয়ারা গাছের বৈশিষ্ট্য ও পেয়ারা চাষ পদ্ধতি

ঘ) গাছে সার প্রয়োগ

প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি, মে ও সেপ্টেম্বর মাসে তিন কিস্তিতে গাছে সার প্রয়োগ করতে হবে।

সার একেবারে গাছের গোড়ায় না দিয়ে যতদূর পর্যন্ত গাছের ডালপালা বিস্তার লাভ করে সে এলাকার মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।

নিচের ছকে বিভিন্ন বয়সের গাছপ্রতি সারের পরিমাণ দেখানো হলো।

সারের নামগাছের বয়স ১-২ বছরগাছের বয়স ৩-৫ বছরগাছের বয়স ৬ বছর বা তদুর্দ্ধ
গোবর (কেজি)১০-১৫২০-৩০৪০
ইউরিয়া (গ্রাম)১৫০-২০০২৫০-৪০০৫০০
টিএসপি (গ্রাম)১৫০-২০০২৫০-৪০০৫০০
এম পি (গ্রাম)১৫০-২০০২৫০-৪০০৫০০

সার প্রয়োগের পর ও খরার সময় বিশেষ করে গাছে গুটি আসার সময় পানি সেচ অত্যাবশ্যক।

গাছের গোড়া থেকে মাঝে মাঝে আগাছা পরিষ্কার করা ও গোড়ার মাটি ভেঙ্গে দেয়া দরকার।

ঙ) সেচ ব্যবস্থাপনা

  • পেয়ারার চারা রোপণের সময় যদি গর্তের মাটি শুকনো থাকে তাহলে চারা গাছের গোড়ায় মাঝে মাঝে পানি দিতে হবে।
  • বৃদ্ধির প্রাথমিক অবস্থায় পেয়ারা গাছে বছরে ৮-১০ বার পানি সেচের প্রয়োজন।
  • ফলন্ত গাছে শুষ্ক মৌসুমে অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রতি ১০-১৫ দিন পর পর পানি সেচের ব্যবস্থা করলে ফল ঝরা হ্রাস পাবে এবং সাথে সাথে বড় আকারের ফল ও বেশি ফলন পাওয়া যায়।
  • গোড়ায় পানি জমে গেলে ও ঠিকমত নিষ্কাশন না হলে গাছ মরে যেতে পারে।

চ) অঙ্গ ছাঁটাই

  • অঙ্গ ছাঁটাই বলতে মরা, রোগাক্রান্ত ও অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ছাঁটাই করা বুঝায়।
  • রোপণকৃত চারা বা কলমের সুন্দর কাঠামো দেওয়ার নিমিত্ত মাটি থেকে ১.০-১.৫ মিটার উপরে বিভিন্ন দিকে ছড়ানো ৪-৫টি ডাল রেখে গোড়ার দিকের সমস্ত ডাল ছাঁটাই করতে হবে।
  • বয়স্ক গাছের ফল সংগ্রহের পর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে অঙ্গ ছাঁটাই করা হয়।
  • অঙ্গ ছাঁটাই করলে গাছে নতুন ডালপালা গজায় এবং তাতে প্রচুর ফল ধরে।

ছ) ডাল নুয়ে দেয়া

পেয়ারার খাড়া ডালে নতুন শাখা ও ফল কম হয়। এজন্য খাড়া ডাল ওজন অথবা টানার সাহায্যে নুয়ে দিলে প্রচুর সংখ্যক নতুন শাখা গজায়। এতে ফলন ও ফলের গুণগত মান বৃদ্ধি পায়।

জ) ফল পাতলাকরণ

গাছে প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক ফল আসে। ফল আকারে বেশ বড় হওয়ায় গাছের পক্ষে সব ফল ধারণ করা সম্ভব নয়। ফলের ভারে গাছের ডালপালা ভেঙ্গে যায় এবং ফল আকারে ছোট ও নিম্নমানের হয়।

See also  পেয়ারা চাষ ও পেয়ারা গাছের পরিচর্যা

এমতাবস্থায়, গাছকে দীর্ঘদিন ফলবান রাখতে ও মানসম্পন্ন ফল পেতে হলে ফল ছোট থাকা অবস্থায় (মার্বেল অবস্থা) ৫০-৬০% ফল পাতলা করা দরকার।

কলমের গাছ প্রথম বছর থেকে ফল দিতে শুরু করে। গাছের বৃদ্ধির জন্য ১ম বছর ফল না রাখাই ভাল, দ্বিতীয় বছর অল্প সংখ্যক ফল রাখা যেতে পারে। এভাবে পর্যায়ক্রমে গাছের অবস্থা বিবেচনা করে ফল রাখতে হবে।

পরিকল্পিত উপায়ে ফুল বা ফল ছাঁটাই করে প্রায় সারাবছর ‘কাজী পেয়ারা’ ও ‘বারি পেয়ারা-২’ জাতের গাছে ফল পাওয়া সম্ভব।

ঝ) ফল ঢেকে দেওয়া (Fruit bagging)

  • পেয়ারা ছোট অবস্থায় ব্যাগিং করলে রোগ, পোকা, পাখি, বাদুর, কাঠবিড়ালী ইত্যাদির আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়।
  • ব্যাগিং করা ফল অপেক্ষাকৃত বড় আকারের এবং আকর্ষণীয় হয়।
  • ব্যাগিং বাদামী কাগজ বা ছোট ছিদ্রযুক্ত পলিথিন দিয়ে করা যেতে পারে।
  • ব্যাগিং করলে সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি লাগে না বিধায় ফলে কোষ বিভাজন বেশি হয় এবং ফল আকারে বড় হয়।
  • ব্যাগিং করার পূর্বে অবশ্যই প্রতি লিটার পানির সাথে ০.৫ মিলি হারে টিল্ট ২৫০ ইসি মিশিয়ে সমস্ত ফল ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।

(৩) পেয়ারা চাষে রোগ-বালাই দমন ব্যবস্থাপনা

ক) পেয়ারার এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দমন

এ্যানথ্রাকনোজ রোগাক্রান্ত ফল
এ্যানথ্রাকনোজ রোগাক্রান্ত ফল

পেয়ারা গাছের পাতা, কান্ড, শাখা-প্রশাখা এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

কলিটোট্রিকাম গ্লয়োসপিরিডিস নামক ছত্রাক পেয়ারার এ্যানথ্রাকনোজ রোগের কারণ।

প্রথমে পেয়ারার গায়ে ছোট ছোট রঙের দাগ দেখা যায়। দাগগুলো ক্রমান্বয়ে বড় হয়ে পেয়ারার গায়ে ক্ষতের সৃষ্টি করে। আক্রান্ত ফল পরিপক্ক হলে অনেক সময় ফেটে যায়। তাছাড়া এ রোগে আক্রান্ত ফলের শাঁস শক্ত হয়ে যায়।

গাছের পরিত্যক্ত শাখা-প্রশাখা, ফল এবং পাতায় এ রোগের জীবাণু বেঁচে থাকে। বাতাস ও বৃষ্টির মাধ্যমে পেয়ারার এ্যানথ্রাকনোজ রোগ ছড়ায়।

প্রতিকার:

  1. গাছের নিচে ঝরে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
  2. গাছে ফল ধরার পর টপসিন-এম প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম অথবা টিল্ট-২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ১৫ দিন অন্তর অন্তর ৩-৪ বার ভালভাবে স্প্রে করে এ রোগ দমন করা যায়।

খ) উইল্ট বা ঢলে পড়া রোগ দমন

উইল্ট রোগে আক্রান্ত গাছ
উইল্ট রোগে আক্রান্ত গাছ

ফিউজেরিয়াম নামক মাটি বাহিত ছত্রাকের আক্রমণে এ সমস্যা হয়।

প্রথমে পাতা হলুদ হয়ে আসে এবং পরে শুকিয়ে যায়। এভাবে পাতার পর শাখা-প্রশাখা এবং ধীরে ধীরে সমস্ত গাছই ৮-১০ দিনের মধ্যে নেতিয়ে মারা যায়।

প্রতিকার:

  1. এ রোগের কোন প্রতিকার নেই। তাই একে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে।
  2. মাঠে/বাগানে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করতে হবে।
  3. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন আদিজোড় যেমন- এল ৪৯ ও পলি-পেয়ারার সাথে কলম করে এ রোগের আক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়।
  4. বাগানের মাটিতে অম্লত্বের পরিমাণ কমানোর জন্য চুন প্রয়োগ করতে হবে।

গ) সাদা মাছি পোকা দমন

সাদা মাছি আক্রান্ত পাতা
সাদা মাছি আক্রান্ত পাতা

সাধারণত শীতকালে এদের আক্রমণে পাতায় সাদা সাদা তুলার মত দাগ দেখা যায়।

এরা পাতার রস শুঁষে গাছকে দুর্বল করে। রস শোষণের সময় পাতায় মধু সদৃশ বিষ্ঠা ত্যাগ করে যার উপর শুঁটিমোল্ড নামক ছত্রাক জন্মে। এতে পাতার খাদ্য উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পায়।

প্রতিকার:

  1. আক্রান্ত পাতা ও ডগা ছাঁটাই করে ধ্বংস করতে হবে।
  2. প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম সাবান বা ২ মিলি রগর/রক্সিয়ন ৪০ ইসি মিশিয়ে ১০ দিন অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

[সূত্র: বিএআরআই]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts