ফল বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় উদ্যানতাত্ত্বিক ফসল। রং, গন্ধ, স্বাদ ও পুষ্টির বিবেচনায় আমাদের বাংলাদেশে ফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও বৈচিত্র্যময়।
ফল বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের সর্বোত্তম উৎস।
ফল রান্না ছাড়া সরাসরি খাওয়া হয় বিধায় এতে বিদ্যমান সবটুকু পুষ্টি গ্রহণ করা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন ফলে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান এন্থোসায়ানিন ও লাইকোপেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ফলের অবদান উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশ একটি আর্দ্র ও অব-উষ্ণ মন্ডলীয় দেশ। এখানে আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, সফেদা, জাম, লটকন, আনারস, লিচু, লেবু জাতীয় ফল, পেয়ারা, নারিকেল, আমড়া, তেঁতুল, বেল, আতা, শরীফা ইত্যাদি ফল ভাল জন্মে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল উৎপাদিত না হওয়ায় এর চাহিদা ও দাম বেশি থাকে।
অন্যান্য শস্যের চেয়ে ফলের দাম সাধারণত বেশি হয় বলে ফল চাষীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। যদি সংরক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত করা যায় তবে উৎপাদন মৌসুমের পরে সংরক্ষিত ফল অধিক দামে বিক্রি করা সম্ভব। অথবা উদ্বৃত্ত ফল ও ফলজাত দ্রব্য বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। তাই অধিক চাহিদার কারণে দেশে অধিক ফল উৎপাদনের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আশার কথা, সম্প্রতি স্বল্প পরিসরে আম রপ্তানি শুরু হয়েছে।
নিচে ৩৪টি ফলের নাম ও ছবি উপস্থাপন করা হলো-
(১) আম
আম বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ও উপাদেয় ফল। আমকে ফলের রাজা বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এটি বাংলাদেশের জাতীয় বৃক্ষ। বাংলাদেশে প্রায় সব জেলাতেই আমের চাষ হয়।
জলবায়ু ও মাটির অধিক উপযোগিতার কারণে উৎকৃষ্ট মানের আম উৎপাদন প্রধানত বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোতে সীমাবদ্ধ ছিল। এ সব অঞ্চলে অনেক পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস আম। চাষোপযোগী উন্নত জাত উদ্ভাবিত হওয়ায় এসব অঞ্চলের বাইরে অন্যান্য জেলাতেও বাণিজ্যিকভাবে আম উৎপাদন শুরু হচ্ছে।
স্বাদ, গন্ধ, পুষ্টিমান ও ব্যবহার বৈচিত্রে আম তুলনাহীন। পাকা আমে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যারোটিন বা ভিটামিন ‘এ’ এবং খনিজ পদার্থ থাকে। ভিটামিন ‘এ’-এর দিক থেকে আমের স্থান পৃথিবীর প্রায় সকল ফলের উপরে।
(২) কাঁঠাল
কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। আকারের দিক থেকে কাঁঠাল সবচেয়ে বড় ফল। বাংলাদেশের সব জেলাতেই কাঁঠালের চাষ হয় তবে ঢাকার উঁচু অঞ্চল, সাভার, ভালুকা, ভাওয়াল ও মধুপুর গড়, বৃহত্তর সিলেট জেলার পাহাড়ি এলাকা, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি এলাকায় সর্বাধিক পরিমাণে কাঁঠাল উৎপন্ন হয়।
কাঁঠালে প্রচুর শর্করা, আমিষ ও ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে। দামের তুলনায় এত বেশি পুষ্টি উপাদান আর কোন ফলে পাওয়া যায় না। কাঁচা ফল তরকারি, পাকলে ফল হিসেবে এবং বীজ ময়দা ও তরকারি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বীজ ভেজেও খাওয়া যায়।
(৩) কলা
উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন ফলের মধ্যে কলা একটি উৎকৃষ্ট ফল। কলা বাংলাদেশের প্রধান ফল যা সারা বছর পাওয়া যায় এবং সকলেই খাওয়ার সুযোগ পায়। বগুড়া, যশোর, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ প্রভৃতি এলাকায় ব্যাপকভাবে কলার চাষ হয়। কলার হেক্টরপ্রতি ফলন ১৫.৬০ টন।
কলা ক্যালরি, খাদ্যপ্রাণ, খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ ও সুগন্ধী এবং পুষ্টিকর ফল। ফলন অন্যান্য ফল ও ফসল অপেক্ষা অনেক বেশি। ধান, গম ও মিষ্টি আলুর চাষ করে প্রতি হেক্টরে যেখানে ১১.২, ৬.৬ ও ৩৯.৮ লক্ষ কিলো ক্যালরি খাদ্য-শক্তি উৎপন্ন হয় সেখানে কলা থেকে প্রায় ৫০.০ লক্ষ কিলো ক্যালরি পাওয়া যায়। কলার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য যে সারা বছরই উৎপন্ন হয়।
(৪) পেঁপে
পেঁপে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ফল। বাংলাদেশেও পেঁপে খুবই জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ। পেঁপের কতগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। প্রথমত এটা স্বল্পমেয়াদী, দ্বিতীয়ত ইহা কেবল ফল নয় সবজি হিসেবেও এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে, তৃতীয়ত পেঁপে অত্যন্ত সুস্বাদু, পুষ্টিকর এবং ঔষধী গুণসম্পন্ন।
বৃহত্তর রাজশাহী, পাবনা ও যশোরে উৎকৃষ্ট মানের পেঁপে উৎপন্ন হয়। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৭ টন।
আমের পরই ভিটামিন ‘এ’ এর প্রধান উৎস হল পাকা পেঁপে। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পেপেইন নামক হজমকারী উপাদান থাকে।
(৫) আনারস
বাণিজ্যিক ফল হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে আনারস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আনারস একটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল।
সিলেট, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং টাঙ্গাইল জেলায় আনারসের ব্যাপক চাষ হয়। ঢাকা, নরসিংদী, কুমিল্লা, দিনাজপুর জেলাতেও আনারসের চাষাবাদ হয়ে থাকে। মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল ও টাঙ্গাইলের মধুপুর এলাকায় আনারস একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল।
আনারস ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’, ও ‘সি’ এর একটি উত্তম উৎস।
(৬) পেয়ারা
পেয়ারা ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ফল। বাংলাদেশের সর্বত্র কম বেশি এ ফল জন্মে থাকে। তবে ইতোপূর্বে পেয়ারার বাণিজ্যিক চাষ পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি, চট্টগ্রাম জেলার কাঞ্চননগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মুকুন্দপুর প্রভৃতি এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। পেয়ারর বিভিন্ন উন্নত জাত উদ্ভাবিত হওয়ার পর দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারার চাষ হচ্ছে।
বহুবিধ গুণাগুণের সমন্বয়ের জন্য পেয়ারাকে নিরক্ষীয় এলাকার আপেল বলা হয়। টাটকা ফল হিসেবে খাওয়া ছাড়াও এ থেকে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে জ্যাম, জেলী, জুস প্রভৃতি খাদ্য তৈরি হয়। বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে বিদেশি ফলের পাশাপাশি পেয়ারার ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
(৭) কুল
স্বাদ ও পুষ্টিমূল্যের বিচারে কুল বাংলাদেশের একটি উৎকৃষ্ট ফল। বাংলাদেশের সব জেলাতেই কুলের চাষ হয় তবে রাজশাহী, কুমিল্লা, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহে উৎকৃষ্ট জাতের কুল চাষ হয়।
উল্লেখ্য কুল যখন পাকে তখন অন্যান্য অনেক ফলই পাওয়া যায় না। কুল বিভিন্ন খনিজ দ্রব্য এবং ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ এর একটি ভাল উৎস। কুল সাধারণত পাকা ও টাটকা অবস্থায় খাওয়া হয়। কুল দিয়ে সুগন্ধি চাটনি, আচার ও অন্যান্য মুখরোচক খাবারও তৈরি করা যায়।
(৮) লিচু
লিচু গন্ধ ও স্বাদের জন্য দেশ-বিদেশে বেশ জনপ্রিয়। বৃহত্তর রাজশাহী, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, পাবনা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম জেলায় বেশি পরিমাণে লিচু উৎপন্ন হয়। লিচু টিনজাত করে সংরক্ষণ করা যায়।
(৯) নারিকেল
নারিকেল বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। ব্যবহার বৈচিত্র্যে এটি একটি অতুলনীয় উদ্ভিদ। নারিকেল গাছের প্রতিটি অঙ্গই কোন না কোন কাজে লাগে। খাদ্য-পানীয় থেকে শুরু করে গৃহ নির্মাণের সরঞ্জাম, পশু খাদ্য ইত্যাদি উপকরণ নারিকেল গাছ থেকে পাওয়া যায়। এজন্য নারিকেল গাছকে স্বর্গীয় বৃক্ষ বলা হয়।
বাংলাদেশের সব জেলাতেই নারিকেল জন্মায়। তবে উপকূলীয় জেলাসমূহে এর উৎপাদন বেশি। নারিকেলের শাঁসে স্নেহ জাতীয় পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকে। ডাবের পানিতে যথেষ্ট পরিমাণে প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ রয়েছে। খাবার স্যালাইনের বিকল্প হিসেবে ডাবের পানি অত্যন্ত কার্যকরী।
(১০) কমলা
লেবুজাতীয় ফলের মধ্যে বাংলাদেশে কমলা সবচেয়ে জনপ্রিয়। এটি সুমিষ্ট, সুগন্ধযুক্ত ও ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল। সিলেট, মৌলভীবাজার, পঞ্চগড় ও পার্বত্য জেলাসমূহে কমলা ভাল জন্মে।
(১১) মাল্টা
মিষ্টি কমলা বা Sweet orange (Citrus sinensis) বাংলাদেশে মাল্টা নামে পরিচিত। কমলার সাথে এর মূল পার্থক্য হ’ল কমলার খোসা ঢিলা কিন্তু মাল্টার খোসা সংযুক্ত (টাইট)। সাইট্রাস ফসলের মধ্যে মাল্টা অন্যতম জনপ্রিয় ফল। বিশ্বের সর্বমোট উৎপাদিত সাইট্রাস ফলের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ হচ্ছে মাল্টা।
ভিয়েতনাম, উত্তর পশ্চিম ভারত ও দক্ষিণ চীন মাল্টার আদি উৎপত্তি স্থান। তবে বর্তমানে এই ফলটি বিশ্বের উষ্ণ ও অব-উষ্ণম-লীয় এলাকায় বেশি চাষাবাদ হচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ফলটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।
কমলার তুলনায় এর অভিযোজন ক্ষমতা অধিক হওয়ায় পাহাড়ী এলাকা ছাড়াও দেশের অন্যান্য এলাকায় সহজেই এটি চাষ করা যাচ্ছে। উন্নত জাত ও আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে এর উৎপাদন বহুগুণে বাড়ানো সম্ভব।
(১২) লেবু
লেবু বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সমাদৃত ফল এবং দেশের সর্বত্রই এর চাষ হয়। লেবু বাংলাদেশের সিলেট, পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও মৌলভীবাজারে বেশি জন্মে। এ ছাড়া ঢাকার ধামরাই ও মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে লেবু উৎপন্ন হয়। লেবু ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল।
(১৩) কাগজীলেবু
কাগজী লেবু (Citrus aurantifolia) একটি জনপ্রিয় লেবু জাতীয় ফল। এটি Rutaceae পরিবারভুক্ত একটি চিরহরিৎ দ্রুতবর্ধনশীল গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। স্বাদ, গন্ধ, পুষ্টিমান এবং ঔষধি গুণাগুণের ভিত্তিতে লেবু জাতীয় ফলের মধ্যে কাগজী লেবু অন্যতম।
কাগজী লেবু প্রধানত ভিটামি সি, ক্যালসিয়াম এবং আয়রন সমৃদ্ধ। গরমের দিনে তৃঞ্চা নিবারণের ক্ষেত্রে কাগজী লেবুর ‘সরবত’ অদ্বিতীয় পানীয়।
বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকায় এর কাগজী লেবুর চাষ হলেও পাহাড়ী এলাকাসহ রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, যশোর ও চট্টগ্রাম জেলায় এই লেবু বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হয়। দেশে কাগজী লেবুর অত্যাধিক চাহিদা এবং এই লেবু সারা বছরব্যাপী উৎপাদিত হয় বিধায় কাগজী লেবু বাংলাদেশে একটি সম্ভাবনাময় ফসল হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে।
(১৪) মিষ্টি লেবু
মিষ্টি লেবু কমলা, মাল্টা ও বাতাবি লেবুর মতই একটি মিষ্টি পাল্পযুক্ত লেবু জাতীয় ফল। বিদেশে মিষ্টি লেবুর রস ফল প্রক্রিয়াজাত কারখানায় ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ‘বারি মিষ্টি লেবু-১’ নামে ২০১৩ সালে মিষ্টি লেবুর একটি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে। এ জাতের পাকা ফল দেখতে আকর্ষণীয় সবুজ এবং খেতে সুস্বাদু। বেশ রসাল এবং ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ। জাতটি নিয়মিত ফলদানকারী এবং উচ্চ ফলনশীল। গাছ খাটো, ছড়ানো ও অত্যধিক ঝোপালো।
(১৫) বাতাবিলেবু
ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল বাতাবিলেবু বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় ফসল। দেশের সব এলাকাতেই এর চাষ হয় তবে সিলেটে বেশি হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে বাতাবিলেবুর মোট উৎপাদন প্রায় ৬৫ হাজার মে. টন।
(১৬) সাতকরা
সাতকরা (Citrus macroptera) একটি লেবু জাতীয় অপ্রধান ফল। অপ্রধান হলেও সিলেট অঞ্চলে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। কমলালেবু ও লেবুর মত এর রস বা শাঁস খাওয়া হয় না। ফলের খোসা বিভিন্ন ধরনের রান্নায় তরকারী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
এর খোসার সুগন্ধ রান্নার মান বৃদ্ধি করে থাকে। খোসা দিয়ে উৎকৃষ্ট মানের আচার তৈরি হয়। সাতকরা ইংল্যান্ডে রপ্তানি হয়। প্রবাসী সিলেটবাসীরাই এ ফলের সবচেয়ে বড় ভোক্তা।
(১৭) আমড়া
আমড়া একটি জনপ্রিয় ও উপাদেয় ফল। বাংলাদেশে দুই প্রজাতির আমড়া পাওয়া যায়। যেমন, বিলাতি আমড়া (Golden apple) ও দেশি আমড়া (Hogplum)। বিলাতি আমড়া দেশের প্রায় সব স্থানেই কম বেশি জন্মে তবে বরিশাল অঞ্চলে এর চাষ বেশি হয়।
আমড়া একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল। আমড়াতে প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য অংশে ৮৩ ভাগ পানি, ১.১ গ্রাম আমিষ, ১৫.০ গ্রাম শ্বেতসার, ০.১০ গ্রাম স্নেহ, ৮০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন, ০.২৮ মিলিগ্রাম থায়াসিন, ০.০৪ মিলিগ্রাম রাইবোফ্লাবিন, ৯২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ৫৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৩.৯ মিলিগ্রাম লৌহ থাকে।
বিলাতি আমড়া কাঁচা খাওয়া হয়। এটি খেতে টক-মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকে। বিলাতি এবং দেশি ২ ধরনের আমড়া থেকেই সুস্বাদু আচার, চাটনী ও জেলী তৈরি করা হয়।
(১৮) জামরুল
জামরুল বেশ রসালো এবং হালকা মিষ্টি স্বাদযুক্ত ফল। গ্রীষ্মকালে এর কদর বেশি। এটি একটি ভিটামিন বি-২ সমৃদ্ধ ফল। জামরুল বহুমূত্র রোগীর তৃষ্ণা নিবারণে উপকারী।
(১৮) সফেদা
সফেদা বাংলাদেশের একটি সুস্বাদু সমৃদ্ধ ফল। বাংলাদেশে সর্বত্রই এ ফল জন্মায় তবে বৃহত্তর বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় সফেদার চাষ বেশি হয়। সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে অতি সহজেই বাংলাদেশে সফেদার ব্যাপক চাষ করা সম্ভব। বিভিন্ন খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিটন ‘এ’ ও ‘সি’ এর একটি ভাল উৎস হচ্ছে সফেদা।
(১৯) কামরাঙ্গা
অম্লমধুর স্বাদযুক্ত এবং ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল কামরাঙ্গা আমাদের বাংলাদেশে সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ফল। দেশের সর্বত্র বাড়ির আঙ্গিনায় ২/১টি কামরাঙ্গা গাছ দেখা যায়।
গাজীপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ঢাকা, সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় কামরাঙ্গা বেশি উৎপন্ন হয়।
কামরাঙ্গা ফল হতে জ্যাম, জেলী, মোরব্বা, চাটনি, আচার ইত্যাদি তৈরি করা হয়। কামরাঙ্গা একটি রপ্তানিযোগ্য ফল হওয়ায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদের প্রচুর সম্ভবনা রয়েছে।
(২০) তৈকর
তৈকর দেশের একটি আদি ফল। বাংলাদেশের সিলেট জেলায় তৈকরের চাষ হয় এবং এ অঞ্চলে ফলটির যথেষ্ট চাহিদাও রয়েছে। বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায়ও এ ফলের চাষ সম্ভব।
ফল উপ-বৃত্তাকার ও বড়। কাঁচা ও পাকা ফলের রং যথাক্রমে সবুজ এবং হলুদ। তৈকরের ঔষধী গুণাগুণ রয়েছে।
তৈকর সিলেট জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে এযাবত উৎপাদিত হয়ে আসছে। এটি একটি অপ্রধান টক জাতীয় ফল যা তরকারীতে এবং আচার, জ্যাম, জেলী তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
(২১) লটকন
লটকন বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত অপ্রধান ফল। প্রধান কান্ড ও ডালপালা থেকে সরাসরি ফুলের মঞ্জরী বের হয়। ছড়া জাতীয় মঞ্জরীতে এক লিঙ্গিক ফুল উৎপন্ন হয় অর্থাৎ স্ত্রী ও পুরুষ গাছ আলাদা।
নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, নেত্রকোণা ও সিলেট এলাকায় উল্লেখযোগ্যভাবে এর চাষাবাদ হয়। বিভিন্ন দেশে সীমিত আকারে লটকন রপ্তানি হচ্ছে।
(২২) আমলকি
আমলকি একটি অবহেলিত কিন্তু মূল্যবান ফল। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও সিলেট এলাকায় আমলকির চাষ বেশি হয়।
আমলকি ভিটামিন ‘সি’ ও ‘ক্যালসিয়াম’ সমৃদ্ধ ফল। এ ফলে যে পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ আছে অন্য কোন ফলে তা নেই। জনসাধারণের ভিটামিন ‘সি’ এর ঘাটতি বিবেচনা করে এ ফলের প্রতি অধিক গুরুত্ব দেয়া উচিত।
দেশের প্রতিটি বসতবাড়িতে একটি আমলকি গাছ থাকা আবশ্যক। আমলকি চাষাবাদের মাধ্যমে দৈনন্দিন ভিটামিন ‘সি’ এর চাহিদা মেটানো সম্ভব। তাই এ ফলের বাণিজ্যিক চাষের গুরুত্ব রয়েছে।
(২৩) আঁশফল
আঁশফল আমাদের বাংলাদেশে একটি বিদেশি ফল। আঁশফল লিচু পরিবারভুক্ত একটি ফল। স্বাদে, গন্ধে, পুষ্টিতে লিচুর সমতুল্য হওয়া সত্ত্বেও ফলটি এ দেশে তেমন জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে আঁশফল বেশ জনপ্রিয়।
উন্নত গুণগত মানসম্পন্ন জাত না থাকায় ফলটি সর্বমহলে তেমন পরিচিত হয়ে ওঠেনি। ফল আকারে ছোট এবং খেতে সুস্বাদু। দেশের সর্বত্রই এর চাষ সম্ভব। আঁশফলে প্রচুর পরিমাণে শর্করা ও ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।
(২৪) রাম্বুতান
রাম্বুতান আকর্ষণীয়, অত্যন্ত সুস্বাদু ও রসালো ফল। সাদা, স্বচ্ছ, মিষ্টি স্বাদ ও গন্ধযুক্ত শাঁস এ ফলের ভক্ষণীয় অংশ। গায়ে লাল ও নরম কাঁটা থাকার কারণে এদের লিচু থেকে কিছুটা ব্যতিক্রম দেখায়।
মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াতেই এদের উৎপত্তিস্থল এবং দক্ষিণ চীন, ইন্দোচীন ও ফিলিপাইন পর্যন্ত এটি বিস্তৃত। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাসমূহ (যেখানে শীতের প্রকোপ তুলনামূলকভাবে কম) রাম্বুতান চাষের জন্য অধিক উপযোগী।
(২৫) স্ট্রবেরি
স্ট্রবেরি একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। মৃদু শীত প্রধান দেশে এটি স¦ল্প মেয়াদী ফল হিসেবে চাষ হয়। আকর্ষণীয় রং, গন্ধ ও উচ্চ পুষ্টিমানের জন্য স্ট্রবেরি অত্যন্ত সমাদৃত।
এতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ ছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ বিদ্যমান। ফল হিসেবে সরাসরি খাওয়া ছাড়াও বিভিন্ন খাদ্যের সৌন্দর্য ও সুগন্ধ বৃদ্ধিতেও স্ট্রবেরি ব্যবহৃত হয়।
(২৬) বিলাতিগাব
বিলাতি গাব একটি বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদ। গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের সুন্দর ও সুস্বাদু ফলগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, পিরোজপুর এবং পাহাড়ী এলাকায় বিলাতী গাব গাছ দেখা যায়। বিলাতি গাবের গাছ মাঝারী থেকে উঁচু বৃক্ষ, ফল গোলাকার।
বিলাতি গাব অনেকেই যত্ন সহকারে লাগিয়ে থাকেন। ফল হিসেবে দেশের সব এলাকায় এটি সমভাবে পরিচিত নয়। এর স্বাদ গন্ধ ও পুষ্টিমান সম্পর্কে সর্বমহলে ধারণার অভাব থাকায় সম্ভাবনাময় এ ফলটি তেমন বিস্তার লাভ করেনি।
বিলাতি গাবের ত্বক রেশমী লোমে আবৃত, রং বাদামী থেকে উজ্জ্বল লাল। ফলের শাঁস সাদাটে, আঠালো ও সুস্বাদু। পুরুষ ও স্ত্রী ফুল আলাদা গাছে হয়।
(২৭) কদবেল
দেশীয় ফলের মধ্যে কদবেল আমাদের সকলের নিকট অতি পরিচিত। টক স্বাদযুক্ত কদবেল সকল বয়সের লোকের নিকট প্রিয়।
কদবেল গাছ মাঝারী, ছড়ানো আকৃতির ঝোপালো। মধ্য বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাসে গাছে ফুল আসে এবং কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে ফল আহরণ করা যায়। ফল গোলাকৃতির, আকারে বড় এবং পাকা ফল সবুজাভ বাদামী বর্ণের। এর খোলস শক্ত ও বেলের মত খসখসে। ফলের শাঁস গাঢ় বাদামী ও মধ্যম রসালো, আঁশের পরিমাণ কম, স্বাদ টক-মিষ্টি হয়ে থাকে। ভেতরের শাঁসটি আঠালো এবং বাদামি রঙের দেখতে। শাঁসের মধ্যে ছোট সাদা বীজ থাকে। ফলে গড় ওজন ৩৪৪ গ্রাম।
কয়েতবেলের শাঁস থেকে ফলের রস তৈরি করা হয়। কয়েতবেলের শাঁস থেকে জ্যাম তৈরি হয়। এই ফলের রসে অ্যাস্ট্রিজেন্ট ধর্ম রয়েছে। পাকা ফলে কেবল সবুজ মরিচ, চিনি এবং লবণ ছড়িয়ে আচার হিসাবে ব্যবহার হয়।
(২৮) বেল
বেল (Rutaceae) পরিবারভুক্ত একটি দীর্ঘজীবী উদ্ভিদ। গাছ ঝোপালো স্বভাবের। পাতা যৌগিক, ওভেট, পত্রফলকের অগ্রভাগ সুঁচালো ও গাঢ় সবুজ বর্ণের। পত্র ঝরার সময় হালকা হলুদ বর্ণ ধারণ করে। ফুল দেখতে সাদা রঙের এবং সবসময় গুচ্ছাকারে জন্মে। ফুলে ৫টি করে মঞ্জরীপত্র, বৃত্তাংশ ও পাপড়ি বিদ্যমান। ফল আ্যম্ফিসারকা জাতীয় এবং বহুজীবী। ফল তুলনামূলকভাবে মাঝারি আকৃতির। বীজ সাধারণত গোলাকার এবং সাদা রঙের হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Aegle marmelos।
বেল উষ্ম ও অবউষ্মম-লীয় অঞ্চলের উদ্ভিদ। জাতটি পাহাড়ী এলাকাসহ বাংলাদেশের সর্বত্র চাষযোগ্য ও খরা সহিষ্ণু। বর্তমানে বেল বাংলাদেশের সর্বত্র জন্মে। এ ফলটি কাঁচা পাকা অবস্থাতেই খাওয়া যায়। তবে পাকা বেল সরবত তৈরিতে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। কাঁচা বেল পুড়ে খাওয়া হয়।
(২৯) জলপাই
জলপাই একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় টক ফল। এর বৈজ্ঞানিক নামElaeocarpus serratus। এটি সিলন অলিভ (Ceylon olive) নামেও পরিচিত। জলপাই অনেকেই জয়তুন-এর সাথে এক করে ফেলে, যদিও এ দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ফল।
জলপাই বাংলাদেশে একটি সুপরিচিত ফল। কাঁচা জলপাই বেশ পুষ্টিকর, প্রচুর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। কাঁচা ফল টাটকা, রান্না করে ও আচার তৈরী করে খাওয়া হয়। ভিটামিন সি’ জাতীয় ফল হলো জলপাই। মোটামুটি শীতকালীন সময়েই এই জলপাইয়ের দেখা পাওয়া যায়। তবে সারা বছর তো আর জলপাই পাওয়া যায় না। তাই জলপাইয়ের আচার তৈরি করে এটি অনেকদিন সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এই আচার যেকোন সময়ে ভাত, খিচুড়ির সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে। জলপাই আচারের জন্য দুর্দান্ত।
জিভে জল আনা জলপাই আচার তৈরির জন্য কাঁচা ফলগুলি প্রথমে সেদ্ধ করা হয়। তারপর কড়াইতে তেল গরম করে তাতে বিভিন্ন মসলার মধ্যে ঢেলে দিয়ে পরে চিনি ও জল দিয়ে আবার কিছুক্ষণ রান্না করার পর ঠাণ্ডা করে পরিবেশন বা সংরক্ষণ করা হয়।
(৩০) ড্রাগন ফল
এই ফলটি একাধিক রঙের হয়ে থাকে। তবে লাল রঙের ড্রাগন ফল বেশি দেখা যায়। ড্রাগন বিদেশি ফল হলেও আমাদের বাংলাদেশে দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ড্রাগন ফল বিদেশি হলেও আমাদের বাংলাদেশে এখন বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ হচ্ছে। আর সেই কারণেই দেশের বাজারে এখন প্রচুর ড্রাগন ফল পাওয়া যাচ্ছে।
ড্রাগন ফল খোসা ফেলে জুস করে খাওয়া যায়। চাইলে সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়। আবার সাধারণ ফলের মতো কেটেও খাওয়া যায়।
(৩১) নাশপাতি
ড্রাগন ফলনাশপাতি মূলত শীতপ্রধান অঞ্চলের ফল। তবে এর কোন কোন প্রজাতি বা জাত অপেক্ষাকৃত উচ্চ তাপমাত্রায়ও জন্মানো যায়। এটি বিদেশি ফল হলেও আমাদের বাংলাদেশে কম বেশি সবাই ফলটির সাথে পরিচিত।
বিদেশ থেকে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে নাশপাতি আমদানি করা হয়। দেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে এ ফলের চাষ করা সম্ভব।
(৩২) প্যাশন ফল
প্যাশন ফল বাংলাদেশে একটি অপ্রচলিত বা স্বল্প পরিচিত ফল। অনেকের কাছে এটি ট্যাং ফল নামে পরিচিত। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্রগ্রাম অঞ্চল, সিলেট, টাঙ্গাইল এবং রাজশাহী অঞ্চলে ইহা কম বেশি দেখা যায়। তবে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে আদিবাসীদের বসতবাড়িতে স্বল্পপরিসরে অনেকটা অযত্নে ও অবহেলায় ফলটির আবাদ লক্ষ্য করা যায়।
ঝুমকো লতার সমগোত্রীয় প্যাশন ফলের গাছ দীর্ঘ প্রসারী এবং বহুবর্ষজীবী। ফলের ভিতর গাত্রে অসংখ্য হলুদাভ, রসপূর্ণ থলে (Juice sac) থাকে, এগুলি ভক্ষণযোগ্য অংশ। টাটকা ফল হিসেবে খাওয়ার চেয়ে প্যাশন ফলের তৈরি শরবত বেশি উপাদেয়। বাংলাদেশের পাহাড়ী এলাকায় এবং সিলেট ও টাঙ্গাইল অঞ্চলে প্যাশন ফল চাষের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
(৩৩) তেঁতুল
আমাদের বাংলাদেশে অপ্রধান ফলের মধ্যে তেঁতুল অন্যতম। ছোট বড় সকলের কাছে বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে আচার এর জন্য তেঁতুলের কদর বেশি। টক এবং মিষ্টি দুই ধরনের স্বাদের তেঁতুল রয়েছে। তবে দেশে উৎপাদিত তেঁতুলের অধিকাংশই টক শ্রেণির।
পাকা ফল টাটকা অবস্থায় খাওয়া ছাড়াও চাটনি, সস, শরবত, আচার প্রভৃতি মুখরোচক খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
(৩৪) এ্যাভাকেডো
Avocado বা অ্যাভোকাডো হল এক ধরনের সবুজ রং বিশিষ্ট পুষ্টিকর ফল। এটি দেখতে বড় আকারের লম্বাটে পেয়ারার মতো। একেকটি ফলের ওজন প্রায় ২৫০ থেকে ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোতে দেশীয় ফল হিসেবে চাষ করা হয় ও এই অঞ্চলে বেশি জন্মায়।
সবচেয়ে বেশি পুষ্টিকর ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ফল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।অ্যাভোকাডো খাওয়া খুবই উপকারী। এটি একটি সুপারফুড। অ্যাভোকাডোতে উচ্চ ফ্যাটযুক্ত উপাদান ডিম্বাণুর স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করে। অ্যাভোকাডোগুলিতে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট (শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি ভাল ফ্যাট) বেশি থাকে যা ভাল প্রজনন স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
[সূত্র: বিএআরআই]