Skip to content

 

২০টি হাইব্রিড ভুট্টার জাত

২০টি হাইব্রিড ভুট্টার জাত

আলোচ্য বিষয়:

প্রিয় খামারি বন্ধুগণ! আপনার অনেকেই হাইব্রিড ভুট্টার জাত সমূহের তালিকা, পরিচয়, গুণ-বৈশিষ্ট্য ও ফলনসহ বিভিন্ন তথ্য জানতে চেয়ে থাকেন। তারই প্রেক্ষিতে আপনাদের জন্যই আজকের এই পোষ্ট।

আলহামদুলিল্লাহ, আমরা আলাদা আলাদা ভাবে প্রতিটি হাইব্রিড ভুট্টার জাত এর ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য আপনাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সুন্দরভাবে গুছিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

আপনি হয়তোবা জেনে থাকবেন, ভুট্টার জাত সমূহ সংগ্রহ ও বাছাইকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই) ২০০২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২০টি ভুট্টার উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাত উদ্ভাবন করেছে।

এছাড়াও, বিভিন্ন বেসরকারি কম্পানির যেমন এ সি আই লিমিটেড, ব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ, সিনজেনটা, লাল তীর সীড লিমিটেড প্রভৃতি বেসরকারি বীজ প্রতিষ্ঠান উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল প্রায় ১৬টি ভুট্টার জাতের বীজ সরবরাহ করে আসছে।

এ সমস্ত সকল (২০+২৬) = ৪৬টি ভুট্টার জাতের তথ্য আমাদের ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবেন। চলুন প্রথমেই হাইব্রিড ভুট্টার জাত সমূহের তালিকা দেখে আসি তার পর এদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানব।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ‍উদ্ভাবিত হাইব্রিড ভুট্টার জাত সমূহের তালিকা নিম্নরূপ-

ক্রমিক নংহাইব্রিড ভুট্টার জাতঅবমুক্তির সালক্রমিক নংহাইব্রিড ভুট্টার জাতঅবমুক্তির সাল
বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১২০০২১১বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১১২০০৯
বারি হাইব্রিড ভুট্টা ২২০০২১২বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১২২০১৬
বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৩২০০২১৩বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৩২০১৬
বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৪২০০২১৪বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৪২০১৭
বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৫২০০৪১৫বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৫২০১৭
বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৬২০০৬১৬বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৬২০১৮
বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৭২০০৬১৭বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৭২০১৯
বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৮২০০৭১৮বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা ১২০২০
বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৯২০০৭১৯বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড বেবি কর্ণ ১২০২০
১০বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১০২০০৯২০বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা ২২০২২

বিভিন্ন বেসরকারি বীজ কম্পানী/প্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবিত ভুট্টার জাত সমূহের তালিকা নিম্নরূপ-

ক্রমিকজাতের নামবীজ কম্পানী/প্রতিষ্ঠানের নাম
এনকে-৪০সিনজেনটা
প্রোফিটএ সি আই লিমিটেড
শাহীএ সি আই লিমিটেড
ডন-১১১এ সি আই লিমিটেড
ডন-১১২এ সি আই লিমিটেড
প্যাসিফিক-১৩৯এ সি আই লিমিটেড
কাভেরি-৩৬৯৬এ সি আই লিমিটেড
ঊত্তরণব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
উত্তরন-২ব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
১০উত্তরন সুপারব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
১১বিপ্লবব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
১২বিপ্লব-২ব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
১৩শক্তিব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
১৪শক্তি-৩ব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
১৫প্যাসিফিক-১১ব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
১৬প্যাসিফিক-৬০ব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
১৭প্যাসিফিক-২২৪ব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
১৮প্যাসিফিক ২৯৩ব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
১৯প্যাসিফিক-৫৫৫ হাইব্রিডলাল তীর সীড লিমিটেড
২০প্যাসিফিক ৯৮৪ব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ
২১প্যাসিফিক ৯৯৯ সুপারব্র্যাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ

তো নিম্নে বিএআরআই উদ্ভাবিত ২০টি হাইব্রিড ভুট্টার জাত এর নাম, পরিচিতি, গুণ-বৈশিষ্ট্য ও ফলন এর পরিমাণ ইত্যাদি তথ্যসহ সুন্দরভাবে গুছিয়ে উপস্থাপন করা হলো-

(১) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১ (ইনসেটে মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১ (ইনসেটে মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১।

ভূমিকা: থাইল্যাণ্ড থেকে সংগৃহীত ইনব্রেড থেকে বাছাইয়ের মাধ্যমে বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১ জাতটি ২০০০ সালে উদ্ভাবিত হয়।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • সিদ্ধ আসার সময় রবি মৌসুমে ৯০-৯২ দিন।
  • গাছের উচ্চতা ১৯০-২১০ সেমি।
  • মোচার উচ্চতা ১০০-১০৫ সেমি। মোচার ওজন ২৫০ গ্রাম।
  • প্রতি মোচার বীজের ওজন ২৩০ গ্রাম। প্রতি মোচায় বীজের সংখ্যা ৭৮৪টি।
  • জীবন কাল রবি মৌসুমে ১৪০-১৫০ দিন ও খরিফ মৌসুমে ১০০-১১০ দিন।
  • জাতটির দানা কমলা হলদে রঙের।
  • দানা বেশ বড়, হাজার দানার ওজন ৩৫০-৩৭৫ গ্রাম।
  • প্রথম পাতার কাণ্ড বেষ্টনিতে (Leaf sheath) মধ্যম এন্থোসায়ানিন রং (Anthocyanin colour) থাকে। দ্বিতীয় পাতার কাণ্ড বেষ্টনিতে (Leaf sheath) খুব হালকা এন্থোসায়ানিন রং (Anthocyanin colour) থাকে।

ফলন: জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ৭.৫-৯.৫ টন এবং খরিফ মৌসুমে ৬.৫- ৮.০ টন।

(২) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-২ (ইনসেটে মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-২ (ইনসেটে মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-২।

ভূমিকা: উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতটি CIMMYT হাইব্রিড ট্রায়াল থেকে বাছাইয়ের মাধ্যমে নির্বাচন করে পরবর্তীকালে সিমিট থেকে উক্ত হাইব্রিডের প্যারেন্ট লাইন সংগ্রহ করে এ জাতটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এ জাতটি ২০০২ সালের শেষ দিকে অনুমোদন লাভ করে।

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-২ জাতটি সিঙ্গল ক্রস হাইব্রিড এবং ফলন ক্ষমতা বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১ এর চেয়ে শতকরা প্রায় ১০ ভাগ বেশি।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • গাছগুলি বেশ সবল ও সতেজ।
  • সিঙ্ক আসার সময় রবি মৌসুমে ৮০-৮৫ দিন।
  • গাছের উচ্চতা ১৮৫-২০০ সেমি।
  • মোচার উচ্চতা ৬০-৭০ সেমি। মোচার ওজন ২৫০ গ্রাম।
  • প্রতি মোচার বীজের ওজন ২০০ গ্রাম। প্রতি মোচার বীজের সারির সংখ্যা ১৬টি।
  • জীবন কাল রবি মৌসুমে ১৪০-১৫০ দিন ও খরিফ মৌসুমে ১০০- ১০৫ দিন।
  • জাতটির দানা হলুদ রঙের।
  • হাজার দানার ওজন ৩৫৬.১ গ্রাম।
  • প্রথম পাতার কাণ্ড বেষ্টনিতে (Leaf sheath) মধ্যম এন্থোসায়ানিন রং (Anthocyanin colour) থাকে। দ্বিতীয় পাতার কাণ্ড বেষ্টনিতে (Leaf Sheath) খুব হালকা এন্থোসায়ানিন রং (Anthocyanin colour)।
See also  হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি

ফলন: জাতটির ফলন হেক্টরপ্রতি রবি মৌসুমে ৮-৯ টন এবং খরিফ মৌসুমে ৭-৭.৫ টন।

(৩) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৩ (ইনসেটে মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৩ (ইনসেটে মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৩।

ভূমিকা: উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতটি CIMMYT হাইব্রিড ট্রায়াল থেকে বাছাইয়ের মাধ্যমে নির্বাচন করে পরবর্তীকালে সিমিট থেকে উক্ত হাইব্রিডের প্যারেন্ট লাইন সংগ্রহ করে এ জাতটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এ জাতটি ২০০২ সালের শেষ দিকে অনুমোদন লাভ করে।

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৩ জাতটি সিঙ্গল ক্রস হাইব্রিড এবং ফলন ক্ষমতা বারি হাইব্রিড ভুট্টা-২ এর চেয়ে শতকরা প্রায় ১০ ভাগ বেশি।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • সিল্ক আসার সময় রবি মৌসুমে ১০-১২দিন।
  • গাছের উচ্চতা ২২০-২৩০ সেমি।
  • মোচার উচ্চতা ১০০-১১০ সেমি। মোচার ওজন ২৫০ গ্রাম।
  • প্রতি মোচার বীজের ওজন ২৩০গ্রাম। প্রতি মোচায় বীজের সংখ্যা ৭৮৪টি।
  • জীবন কাল রবি মৌসুমে ১৪৬-১৫০ দিন ও খরিফ মৌসুমে ৯৫-১০৫ দিন।
  • জাতটির দানা হলদে রঙের (Orange yellow flint)।
  • হাজার বীজের ওজন ৩৯২ গ্রাম।
  • প্রথম পাতার কাজ বেষ্টনিতে (Leaf sheath) অনেক বেশি এন্থোসায়ানিন রং (Anthocyanin colour) থাকে।

ফলন: জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ৯.০-৯.৫ টন এবং খরিফ মৌসুমে ৭.০-৭.৫ টন।

(৪) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৪ (ইনসেটে মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৪ (ইনসেটে মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৪।

ভূমিকা: এ হাইব্রিড জাতটি ইনব্রেড লাইন ও একটি মুক্ত পরাগায়িত জাতের (বর্ণালী) মধ্যে সংকরায়ণ করে উদ্ভাবন করা হয়। জাত হিসেবে ২০০২ সালে অনুমোদন লাভ করে। এটি একটি নন-কনভেনশনাল সিঙ্গল ক্রস হাইব্রিড এবং একটি প্যারেন্ট লাইন মুক্ত- পরাগায়িত জাত বিধায় প্যারেন্ট লাইনের রক্ষণাবেক্ষণ ও হাইব্রিড বীজ উৎপাদন সহজতর এবং খরচ কম।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • সিল্ক আসার সময় রবি মৌসুমে ৮৫-৯০ দিন।
  • গাছের উচ্চতা ১৯০-২০০ সেমি।
  • মোচার উচ্চতা ১০০-১০৫ সেমি।
  • মোচার ওজন ২৫০ গ্রাম।
  • প্রতি মোচার বীজের ওজন ২৩০ গ্রাম। প্রতি মোচায় বীজের সংখ্যা ৭৮৪টি।
  • জীবন কাল রবি মৌসুমে ১৪৩ দিন ও খরিফ মৌসুমে ১১৫ দিন।
  • জাতটির দানা হলদে রঙের (Yellow flint)।
  • হাজার দানার ওজন ৩৪৯ গ্রাম।
  • প্রথম পাতার কাও বেষ্টনিতে (Leaf sheath) অনেক বেশি এন্থোসায়ানিন রং (Strong anthocyanin colour) থাকে। দ্বিতীয় পাতার কাও বেষ্টনিতে (Leaf Sheath) অনেক বেশি এন্থোসায়ানিন রং (Very strong anthocyanin colour) থাকে।

ফলন: জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ৭.৪- ৯.৫ টন।

(৫) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫ (ইনসেটে মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫ (ইনসেটে মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫।

ভূমিকা: একটি উচ্চ গুণগত মানের আমিষ (High Quality Protein Maize, QPM) সমৃদ্ধ উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাত। এটি একটি সিঙ্গেল ক্রস হাইব্রিড। ২008 সালে বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫ নামে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক বাণিজ্যিভাবে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন লাভ করে।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • সাধারণত গাছের গড় উচ্চতা রবি ও খরিফ মৌসুমে যথাক্রমে ১৯৫-২০০ সেমি এবং ১১০-১১৫ সেমি।
  • সিল্ক আসার সময় রবি মৌসুমে ১০-১৫ দিন।
  • গাছের উচ্চতা ১৯০-১৯৯ সেমি।
  • মোচার উচ্চতা ১০০-১১০ সেমি।
  • মোচার ওজন ২৫০ গ্রাম।
  • প্রতি মোচার বীজের ওজন ২৩০ গ্রাম। প্রতি মোচায় বীজের সংখ্যা ৪২০ টি।
  • জীবন কাল রবি মৌসুমে ১৪০-১৪৫ দিন ও খরিফ মৌসুমে ৯৫-১০৫ দিন।
  • জাতটির নানা কমলা রঙের (Orange flint)।
  • জাতটির দানার ওজন ২৯০-৩১০ গ্রাম।
  • প্রথম পাতার কাজ বেষ্টনিতে (Leaf sheath) অনেক বেশি এন্থোসায়ানিন রং (Strong anthocyanin colour) থাকে।

ফলন: জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ১০-১০.৫ টন এবং খরিফ মৌসুমে ৭.০-৭.৫ টন।

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫ এর গুণগত মান:

এমাইনো এসিডের নামবারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫সাধারণ ভুট্টা
ট্রিপটোফেন০.১১%০.০৫%
লাইসিন০.৪৭৫%০.২২৫%
মোট আমিষ১১.০০%৯.০০%

এই জাতটি উচ্চ গুণগত মানের আমিষের পরিমাণ বেশি থাকাতে হাঁস-মুরগির খাবারে আলাদাভাবে ট্রিপটোফেন ও লাইসিন দিতে হয় না।

(৬) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৬ (ইনসেটে মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৬ (ইনসেটে মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৬।

ভূমিকা: আন্তর্জাতিক গম ভুট্টা উন্নয়ন কেন্দ্র (সিমিট) হতে সংগৃহীত এবং বাছাইকৃত পিতৃ- মাতৃ লাইন হতে ত্রিমুখী (Three-way সংকরায়ন cross) করে এই উদ্ভাবিত জাতটি হয়। বাংলাদেশে এ জাতটি ২০০৬ সালে অবমুক্ত হয়েছে।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • সিল্ক আসার সময় রবি মৌসুমে ৯০-৯২ দিন।
  • গাছের উচ্চতা ২০০-২১০ সেমি।
  • মোচার উচ্চতা ১০০-১১০ সেমি।
  • মোচার ওজন ২৫০-২৬০ গ্রাম।
  • প্রতি মোচার বীজের ওজন ২০০-২১০ গ্রাম। প্রতি মোচায় বীজের সংখ্যা ৭০০-৭৮০টি।
  • জীবন কাল রবি মৌসুমে ১৪২-১৪৬ দিন।
  • জাতটির দানা হলদে রঙের (Yellow semi flint)।
  • হাজার দানার ওজন ৩৮২-৩৯২ গ্রাম।

ফলন: জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ৯.৮-১০.০ টন।

(৭) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৭ (ইনসেটে মোড়া)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৭ (ইনসেটে মোড়া)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৭।

ভূমিকা: আন্তর্জাতিক গম ও ভুট্টা উন্নয়ন কেন্দ্র (সিমিট) হতে সংগৃহীত ও বাছাইকৃত পিতৃ-মাতৃ লাইন হতে এক মুখী (Single cross) সংকরায়ন করে এই জাতটি উদ্ভাবিত হয়েছে। বাংলাদেশে এ জাতটি ২০০৬ সালে অবমুক্ত হয়।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • সিঙ্ক আসার সময় রবি মৌসুমে ৭৫-৮০ দিন।
  • গাছের উচ্চতা ২০০-২১০ সেমি।
  • মোচার উচ্চতা ১০০-১০৫ সেমি।
  • মোচার ওজন ২৫০ গ্রাম।
  • প্রতি মোচার বীজের ওজন ২০০ গ্রাম। প্রতি মোচায় বীজের সংখ্যা ৭০০-৭৮০ টি
  • জীবন কাল রবি মৌসুমে ১৩৩-১৪১ দিন।
  • জাতটির দানা আকর্ষণীয় হলুদ রঙের (Orange yellow flint)।
  • হাজার দানার ওজন ৩৪০-৩৬০ গ্রাম।

ফলন: জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ১০.৫-১১.০ টন।

(৮) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৮ (ইনসেট মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৮ (ইনসেট মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৮।

ভূমিকা: আন্তর্জাতিক গম ও ভুট্টা উন্নয়ন কেন্দ্র (সিমিট) হতে সংগৃহীত ও বাছাইকৃত পিতৃ-মাতৃ লাইন হতে এক মুখী (Single cross) সংকরায়ন করে এই জাতটি উদ্ভাবিত হয়েছে। বাংলাদেশে এ জাতটি ২০০৭ সালে অবমুক্ত হয়।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • সিঙ্ক আসার সময় রবি মৌসুমে ৮৯-১০৪ দিন।
  • গাছের উচ্চতা ২০০- ২২২ সেমি।
  • মোচার উচ্চতা ৯৯-১১৬ সেমি।
  • প্রতি মোচার বীজের ওজন ২৩০ গ্রাম।
  • প্রতি মোচায় বীজের সংখ্যা ৭০০-৭৮০টি।
  • জীবন কাল রবি মৌসুমে ১৪২-১৪৬ দিন।
  • জাতটির দানা আকর্ষণীয় হলুদ রঙের।

ফলন: জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ৯.৭০-১১.৫০ টন।

(৯) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৯ (ইনসেটে মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৯ (ইনসেটে মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৯।

ভূমিকা: আন্তর্জাতিক গম ও ভুট্টা উন্নয়ন কেন্দ্র (সিমিট) হতে সংগৃহীত ও বাছাইকৃত পিতৃ-মাতৃ লাইন হতে একমুখী (Single cross ) সংকরায়ন করে এই জাতটি উদ্ভাবিত হয়েছে। বাংলাদেশে এ জাতটি ২০০৭ সালে অবমুক্ত করা হয়েছে।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • সিল্ক আসার সময় রবি মৌসুমে ১৪-১০৭ দিন।
  • গাছের উচ্চতা ২০৮-২৩৯ সেমি।
  • মোচার উচ্চতা ১০০-১১৫ সেমি।
  • জাতটির দানা আকর্ষণীয় কমলা হলুদ রঙের।
  • হাজার দানার ওজন ৩৪০-৩৬০ গ্রাম।

ফলন: জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ১০.২০-১২০০ টন।

(১০) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১০ (ইনসেটে মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১০ (ইনসেটে মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১০।

ভূমিকা: এই নন-কনভেনশনাল সিঙ্গল ক্রস হাইব্রিডটি আন্তর্জাতিক গম ও ভুট্টা উন্নয়ন কেন্দ্র (সিমিট) হতে সংগৃহীত ও বাছাইকৃত মুক্তপরাগায়িত জাত ও বারির নিজস্ব উদ্ভাবিত ইনব্রিড এর মাতৃ-পিতৃ লাইনের সংকরায়ন করে উদ্ভাবিত হয়েছে। বাংলাদেশে এ জাতটি ২০০৮ সালে অবমুক্ত হয়েছে।

See also  ভুট্টার চাষ পদ্ধতি: ভুট্টা চাষ কিভাবে করে? ভুট্টা চাষে সারের পরিমাণ, সার প্রয়োগ, সঠিক সময়কাল, নিয়ম ও ফলন

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • সিল্ক আসার সময় রবি মৌসুমে ৯৫-১০০ দিন।
  • গাছের উচ্চতা ১৮৩-২২৫ সেমি।
  • মোচার উচ্চতা ৮৫-৯৭ সেমি। প্রতি সারিতে বীজের সংখ্যা ৪২-৪৯ টি। প্রতি মোচায় বীজের সংখ্যা ৭০০-৭৮০টি।
  • জীবন কাল রবি মৌসুমে ১৪৫-১৫০ দিন।
  • জাতটির দানা হলুদ রঙের (Yellow fint)।

ফলন: জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ৯.০০-১১.৫০ টন।

(১১) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১১ (ইনসেটে মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১১ (ইনসেটে মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১১।

ভূমিকা: আন্তর্জাতিক গম ও ভুট্টা উন্নয়ন কেন্দ্র (সিমিট) হতে সংগৃহীত ও বাছাইকৃত মাতৃ- পিতৃ লাইনের সংকরায়ন করে এ জাতটি উদ্ভাবিত হয়েছে। বাংলাদেশে এ জাতটি ২০০৮ সালে অবমুক্ত হয়েছে।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • উদ্ভাবিত এ জাতটি তুলনামূলকভাবে খাট (গড় উচ্চতা ১৭০-২০৬ সেমি)।
  • সিল্ক আসার সময় রবি মৌসুমে ৯০-৯৫ দিন।
  • গাছের উচ্চতা ১৭০-২০৬ সেমি।
  • মোচার উচ্চতা ৮০-৯৫ সেমি। প্রতি সারিতে বীজের সংখ্যা ৪২-৪৯টি।
  • দানাগুলো হলুদ রঙের ফ্লিন্ট টাইপ (Orange yellow flint)।
  • রবি মৌসুমে জীবন কাল ১৪৭- ১৫৩ দিন।

ফলন: রবি মৌসুমে হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৯.৫০-১১.৫০ টন।

(১২) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১২ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১২ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১২ (মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১২ (মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১২।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • জাতটি মধ্যম মাত্রার খরা সহনশীল।
  • খরা অবস্থায় মাঠে চারা প্রতিষ্ঠার পর গাছে ফুল আসার আগে অর্থাৎ বীজ গঁজানোর ৬০-৬৫ দিন পর শুধুমাত্র একটি সেচ প্রয়োগ করতে হয়।
  • গাছ মাঝারি উচ্চতা বিশিষ্ট এবং মোচাগুলো গাছের বেশ নীচুতে এবং একই উচ্চতায় থাকে।
  • মোচাগুলো বড় আকারের এবং অগ্রভাগ পর্যন্ত সম্পূর্নভাবে খোঁসাদ্বারা মজবুতভাবে আবৃত থাকে।
  • মোচায় দানার সংখ্যা বেশী দানাগুলো মুক্তার মত চকচকে সাদা, ফ্লিন্ট প্রকৃতির পুষ্ট ও বড়।
  • রবি মৌসুমে উপযুক্ত বপন সময় মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য অগ্রহায়ণ (নভেম্বরের প্রথম থেকে শেষ)।
  • রবি মৌসুমে উপযুক্ত সময়ে বপন করা হলে মধ্য চৈত্র থেকে বৈশাখের ১ম সপ্তাহ পর্যন্ত (এপ্রিলের ১ম থেকে ৩য় সপ্তাহ)।

ফলন: শতক প্রতি ফলন ৩৬ – ৪০ কেজি এবং হেক্টর প্রতি ফলন ৯.৫- ১১.০ টন।

(১৩) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৩ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৩ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৩ (মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৩ (মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৩। 

ভূমিকা : দেশে বেশিরভাগ ভুট্টাই রবি মৌসুমে সেচের মাধ্যমে আবাদ করা হয়ে থাকে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রাকৃতিকভাবেই দেশে পানির প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে। তাই ভুট্টা দেশের উত্তরাঞ্চলে বিশেষ করে বরেন্দ্র অঞ্চল ও অন্যান্য খরাপ্রবণ এলাকায় ব্যাপকভাবে চাষের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত সেচ সুবিধার অভাবে এর উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ খরা সহিষ্ণু বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৩ জাতটি উদ্ভাবন করে। একমুখী (Single cross) সংকরায়ন (BIL 215 × BIL 217) করে এই জাতটি উদ্ভাবিত হয়েছে। বাংলাদেশে এ জাতটি ২০১৬ সালে অবমুক্ত হয়।   

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য : 

  • জীবনকাল ১৪০-১৪৫ দিন।
  • গাছ মাঝারী উচ্চতা গড়ে-১৮০ সেমি এবং মোচার উচ্চতা গড়ে ৮৫ সেমি। মাঝারি ঝড়-বাতাসেও সহজে হেলে পড়ে না।
  • মধ্যমাত্রার খরা সহনশীল এবং কেবলমাত্র একটি সেচেই (ফুল আসার আগে) অধিক ফলন দিতে সক্ষম।  
  • মোচা পরিপক্ক হওয়ার পরও গাছ ও পাতা সবুজ থাকে যা গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহারের উপযোগী।
  • দানা ফ্লিন্ট প্রকৃতির, বড় আকারের ও চকচকে সাদা। সাদা ‍ভুট্টা গমের আটার সাথে মিশিয়ে রুটি তৈরি করে খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী। 
  • মোচায় দানার সংখ্যা বেশী। হাজার দানার ওজন ৩৬৭ গ্রাম।

উপযোগী এলাকা : খরা প্রবন বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য জাতটি বিশেষভাবে উপযোগী, তাছাড়াও সেচ সুবিধাহীন বিভিন্ন শুষ্ক এলাকাতেও আবাদের উপযোগী।  

ফলন: খরা অবস্থায় একটি মাত্র সেচ প্রয়োগে জাতটির ফলন ৮.১-৮.৫ টন/হেক্টর এবং স্বাভাবিক সেচ প্রয়োগে ফলন ১০.০-১১.১ টন/হেক্টর।

(১৪) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৪ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৪ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৪ (মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৪ (মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৪।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • জাতটি খরিপ মৌসুমে ফুল আসার পর্যায়ে অধিক তাপ সহিষ্ণু (দিনের তাপমাত্রা ˃ ৩৫˚সে.এবং রাতের তাপমাত্রা ˃২৩˚সে.) এবং মধ্যম ফলন ক্ষমতা সম্পন্ন।
  • দুর্যোগপূর্ণ ঝড়ো আবহাওয়াতে এ জাতের গাছ সহজে হেলে ও ভেঙ্গে পড়েনা।
  • রবি ও খরিপ মৌসুমে জাতটির গড় উচ্চতা যথাক্রমে ১৮৪ সে.মি. ও ১৬০ সে.মি. যা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষকৃত অন্যান্য প্রায় সব জাতের চেয়ে খাটো।
  • এ জাতটি বারি উদ্ভাবিত অন্যান্য জাতের যেমন বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৭ এবং বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৯ এর চেয়ে কিছুটা আগাম প্রকৃতির।
  • জাতটির দানা সাদা বর্ণেও এবং সেমি ডেন্ট প্রকৃতির।
  • মোচা শক্তভাবে খোঁসা দ্বারা আবৃত থাকে বিধায় খরিপ মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে দানা নষ্ট হবার সম্ভাবনা কম।
  • জাতটি পাতা ঝলসানো রোগ সহনশীল।
  • রবি মৌসুমে উপযুক্ত বপন সময় কার্তিকের শুরু থেকে অগ্রহায়নের ৩য় সপ্তাহ (মধ্য অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের প্রথম) এবং খরিপ ১ মৌসুমে উপযুক্ত বপন সময় ফাল্গুনের শুরু থেকে মধ্য চৈত্র (মধ্য ফেব্রুয়ারী থেকে মার্চের শেষ)।
  • রবি মৌসুমে উপযুক্ত সময়ে বপন করা হলে মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য বৈশাখ পর্যন্ত (মার্চের ১ম সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের ৩য় সপ্তাহ) এবং খরিপ ১ম মৌসুমে উপযুক্ত সময়ে বপন করা হলে জ্যৈষ্ঠ থে্কে মধ্য শ্রাবন পর্যন্ত (জুনের ২য় সপ্তাহ থেকে জুলাই এর ৩য় সপ্তাহ)।
  • জীবনকালঃ রবি ও খরিপ মৌসুমে পরিপক্ক হতে যথাক্রমে প্রায় ১৪০দিনও ১১৫ দিনসময় লাগে।

ফলন: রবি ও খরিপ মৌসুমে জাতটির গড় ফলন যথাক্রমে ১০.৮৪ টন/হেক্টর এবং ১০.৫২ টন/হেক্টর।

(১৫) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৫ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৫ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৫ (মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৫ (মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৫।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • জাতটি খরিপ মৌসুমে ফুল আসার পর্যায়ে অধিক তাপ সহিষ্ণু (দিনের তাপমাত্রা ˃ ৩৫˚সে.এবং রাতের তাপমাত্রা ˃২৩˚সে.) এবং উচ্চ ফলন ক্ষমতা সম্পন্ন।
  • পরিপক্ক অবস্থায় গাছটির বেশীর ভাগ পাতা সবুজ থাকে (Stay green) বিধায় গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহার উপযোগী।
  • রবি ও খরিপ মৌসুমে জাতটি গড় উচ্চতা যথাক্রমে ২১৪ সে.মি.এবং ১৬৫ সে.মি. যা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষকৃত অন্যান্য বেশির ভাগ জাতের চেয়ে খাটো।
  • জাতটির দানা হলুদ বর্ণের এবং সেমি ডেন্ট প্রকৃতির।
  • মোচা শক্তভাবে খোঁসা দ্বারা আবৃত থাকে বলে খরিপ মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হবার সম্ভাবনা কম।
  • জাতটি পাতা ঝলসানো রোগ সহনশীল।
  • ভুট্টার এ জাতটি সমগ্র বাংলাদেশে খরিপ মৌসুমে তাপ প্রবণ এলাকা এবং একই সাথে সারা বছর চাষের জন্য উপযোগী।
  • রবি মৌসুমে উপযুক্ত সময়ে বপন করা হলে মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য বৈশাখ পর্যন্ত (মার্চের ১ম সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের ৩য় সপ্তাহ) এবং খরিপ ১ মৌসুমে উপযুক্ত সময়ে বপন করা হলে জ্যৈষ্ঠে থেকে মধ্য শ্রাবন পর্যন্ত (জুনের ২য় সপ্তাহ থেকে জুলাই এর ৩য় সপ্তাহ)।
See also  ৩২টি উন্নত জাতের ভুট্টার নাম

ফলন: শতক প্রতি ফলন ৫০-৫২ কেজি এবং হেক্টর প্রতি ফলন ১২.৫ টন।

(১৬) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৬ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৬ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৬ (মোছা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৬ (মোছা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৬।   

ভূমিকা: দেশে উদ্ভাবিত ইনব্রিড লাইন থেকে তৈরি প্রথম উচ্চ ফলনশীল সিঙ্গেল ক্রস হাইব্রিড। প্রথমে বানিজ্যিক ভুট্টার জাত QY-11 এবং 900M থেকে স্ব-পরাগায়ন (সেলফিং) এর মাধ্যমে ইনব্রিড লাইন তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন লাইনগুলো সনাক্ত করে তাদের মধ্যে সংকরায়নের মাধ্যমে তৈরিকৃত হাইব্রিডগুলি বেশ কয়েক বছর ধরে বহুস্থানিক মাঠ মূল্যায়ন করা হয়। সেখান থেকে মাঝারি উচ্চতা বিশিষ্ট উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিডটি (BML 59 X BML 71) বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী হিসেবে প্রতীয়মান হওয়ায় এবং পরবর্তীতে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক নিবন্ধনের পর ২০১৮ সালে অবমুক্ত করা হয়।     

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • রবি মৌসুমে পরিপক্ক হতে ১৪০-১৪৫ দিন সময় লাগে।
  • গাছ খাটো আকৃতির (১৮০-১৯০ সে.মি.) এবং মোচার উচ্চতা (৮০-৮৫ সে.মি.)।
  • রবি মৌসুমে গাছে ৮৮ দিনে সিল্ক বের হয়, সিল্কের রং কিছুটা বেগুনী।
  • মোচা গুলো সম্পূর্ণভাবে অগ্রভাগ পর্যন্ত খোসাদ্বারা আবৃত থাকে।
  • দানার রং হলুদ এবং দানা সেমি-ডেন্ট প্রকৃতির, পুষ্ট ও বড় এবং সম্পূর্ণ মোচা দানা দ্বারা আবৃত থাকে।
  • মোচা পরিপক্ক অবস্থায়ও গাছ ও পাতা সবুজ থাকে।
  • হাজার দানার ওজন ৪২২ গ্রাম এবং প্রতি মোচায় গড়ে ৬৩২ টি দানা থাকে।  

উপযোগী এলাকা: সমগ্র বাংলাদেশেই জাতটি আবাদের উপযোগী।

ফলন: রবি মৌসুমে ১১.৫৭ টন/হেক্টর এবং লবনাক্ত এলাকায় (৮ ডিএস/মি) ৭.০৬ টন/হেক্টর ফলন দিতে সক্ষম।

(১৭) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৭ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৭ (গাছ)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৭ (মোচা)
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৭ (মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৭।

ভূমিকা: বর্তমানে জলবায়ুগত পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক হিসেবে দেখা গিয়েছে প্রতি ১ সে. তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ভুট্টার ফলন শতকরা ৭ ভাগ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। আরও ধারণা করা হচ্ছে উচ্চ তাপমাত্রার ফলে এশিয়া মহাদেশে ভুট্টার ফলন শতকরা ২৩ ভাগ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এই বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার জন্য দেশে অধিক তাপসহনশীল ভুট্টার জাত তৈরী খুবই দরকার। উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ, বিএআরআই, গাজীপুর, আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্র (CIMMYT) হতে Heat Tolerant Maize for Asia (HTMA) প্রকল্পের আওতায় ২০১৪-১৫ মৌসুমে প্রাপ্ত ২৪টি অধিক তাপসহনশীল ভুট্টার অগ্রবর্তী জাত বহুস্থানিক মূল্যায়ন করে এবং প্রস্তাবিত জাতটি (BIL 211 × BIL 157) অধিক ফলনশীল বলে প্রতীয়মান হয়। পরবর্তীতে খরিপ ২০১৫ মৌসুমে অধিক তাপ প্রবন এলাকায় মূল্যায়নে জাতটি বানিজ্যিক ভিত্তিতে চাষকৃত প্রচলিত অন্যান্য জাত অপেক্ষা অধিক ফলনশীল বলে প্রমাণিত হয়। পরবর্তীতে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক নিবন্ধনের পর ২০১৯ সালে বাংলাদেশে অবমুক্ত করা হয়।

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • জাতটি খরিপ মৌসুমে ফুল আসার পর্যায়ে অধিক তাপ সহিষ্ণু (দিনের তাপমাত্রা ৩৫ডিগ্রি সে. এবং রাতের তাপমাত্র ২৩ ডিগ্রি সে.)।
  • রবি ও খরিপ মৌসুমে পরিপক্ক হতে যথাক্রমে১৪০-১৫০ দিন ও ১১০-১১৫ দিন সময় লাগে।
  • রবি ও খরিপ মৌসুমে জাতটির উচ্চতা যথাক্রমে ২২০-২৩০ সে.মি. ও ১৭০-১৮০ সে.মি.।
  • জাতটির দানা হলুদ বর্ণের এবং সেমি ডেন্ট প্রকৃতির।
  • মোচার মাথায় সিল্কে হাল্কা এন্থোসায়ানিন বিদ্যমান।
  • টাসেল গ্লুমে গাঢ় এন্থোসায়ানিন এবং টাসেলের প্রশাখার অগ্রভাগ বাকানো প্রকৃতির।
  • মোচা শক্তভাবে খোসা দ্বারা আবৃত থেকে বিধায় বৃষ্টির পানিতে দানা নষ্ট হবার সম্ভাবনা কম।

উপযোগী এলাকা: এই হাইব্রিড জাতটি বাংলাদেশে খরিপ মৌসুমে এবং অধিকতাপ প্রবণ এলাকায় ভুট্টার উৎপাদন ও চাষাবাদ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।   

ফলন:  রবি ও খরিপ মৌসুমে জাতটির গড় ফলন যথাক্রমে ১১.০-১২.০ টন/হেক্টর এবং ৮.৫-৯.৫ টন/হেক্টর।   

(১৮) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা-১ (গাছ)
বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা-১ (গাছ)
বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা-১ (মোচা)
বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা-১ (মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা-১।  

ভূমিকা: বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত এই জাতটি সিঙ্গেল ক্রস পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত খাটো আকৃতির উচ্চফলনশীল জাত। এটি বিদেশী ইনব্রিড লাইনের সাহায্য ছাড়া এদেশে বিজ্ঞানীদের দ্বারা তৈরিকৃত ইনব্রিড লাইনের মধ্যে ক্রস করে উদ্ভাবন করা হয়েছে। প্রথমে বানিজ্যিক হাইব্রিড ভুট্টার জাত QY11 এবং 900M হতে ৭ (সাত) বছর ধরে স্ব-পরাগায়ন (সেলফিং) ও নির্বাচন (সিলেকসন) এর মাধ্যমে ইনব্রিড লাইন তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ইনব্রিড লাইনগুলো সনাক্ত করে তাদের মধ্যে সংকরায়নের মাধ্যমে তৈরিকৃত হাইব্রিডগুলি মূল্যায়ন করা হয়। মূল্যায়নে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হাইব্রিডগুলি বেশ কয়েক বছর ধরে বহুস্থানিক মাঠ মূল্যায়ন করা হয়। সেখান থেকে মাঝারি উচ্চতা বিশিষ্ট ও উচ্চফলনশীল একটি হাইব্রিড (BML 59 × BML 67) বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী হিসেবে প্রতীয়মান হয়। পরবর্তীতে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক নিবন্ধনের পর হাইব্রিডটি ২০২০ সালে অবমুক্ত করা হয়।   

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • খাটো প্রকৃতির হাইব্রিড যার মোচা তুলনামূলকভাবে নিচের দিকে অবস্থিত হওয়ায় ঝড়-বাতাসে সহজে হেলে ও ভেঙ্গে পড়ে না।
  • গাছের উচ্চতা ১৬৫-১৮০ সে.মি. ও মোচার উচ্চতা ৬৫-৭৫ সে.মি.।
  • সিল্কে মধ্যম মাত্রায় অ্যান্থোসায়ানিন বিদ্যমান। সিল্কের রং হালকা গোলাপী বর্ণের।
  • জাতটির দানা হলুদ বর্ণের এবং সেমি ডেন্ট প্রকৃতির।
  • দানাগুলো পুষ্ট ও বড় আকৃতির (১০০০ দানার ওজন ৩৮৫ গ্রাম)।
  • মোচার অগ্রভাগ পর্যন্ত খোসা দ্বারা শক্তভাবে আবৃত থাকায় বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হবার সম্ভাবনা কম থাকে।

উপযোগী এলাকা: সমগ্র বাংলাদেশেই জাতটি আবাদের উপযোগী। 

ফলন: জাতটি উচ্চফলনশীল। রবি মৌসুমে উপযুক্ত পরিবেশে হেক্টর প্রতি ফলন ১১.০-১৩.০ টন।

(১৯) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা-২ (গাছ)
বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা-২ (গাছ)
বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা-২ (মোচা)
বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা-২ (মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা-২।   

ভূমিকা: আঞ্চলিক কেন্দ্র, বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট, যশোরে ২০১২ সাল থেকে ভুট্টার হেলেপড়া সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যে কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ইনব্রেড লাইন তৈরীর কাজ শুরু করা হয়। বাছাইকৃত এবং কাঙ্খিত ৩০টি ইনব্রেড লাইনের সাথে ২টি টেস্টারের সংকরায়ন করে ২০১৫ সালে সিঙ্গেল ক্রস হাইব্রিড তৈরী করা হয়। এর পর দীর্ঘদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর (BML 264 × BIL 28) অগ্রবর্তী হাইব্রিডটি সম্ভাবনাময় হিসেবে নির্বাচন করা হয়। পরবর্তীতে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক নিবন্ধনের পর হাইব্রিডটি ২০২২ সালে অবমুক্ত করা হয়।    

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • গাছের উচ্চতা ২২০-২৪০ সে.মি. ও মোচার উচ্চতা ১০০-১৩০ সে.মি.।
  • সিল্কের অ্যান্থোসায়ানিন না থাকায় হালকা সবুজবর্ণের হয়ে থাকে।
  • জাতটির দানা হলুদ বর্ণের এবং ডেন্ট প্রকৃতির। দানাগুলো পুষ্ট ও বড় আকৃতির
  • ১০০০ দানার ওজন ৪০০-৪৬০ গ্রাম।
  • মোচার অগ্রভাগ পর্যন্ত খোসা দ্বারা শক্তভাবে আবৃত থাকায় বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হবার সম্ভাবনা কম থাকে।

উপযোগী এলাকা: সমগ্র বাংলাদেশেই জাতটি আবাদের উপযোগী। 

ফলন: জাতটি উচ্চফলনশীল। রবি মৌসুমে উপযুক্ত পরিবেশে হেক্টর প্রতি ফলন ১২.০-১৪.০ টন।  

(২০) নং হাইব্রিড ভুট্টার জাত পরিচিতি

বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড বেবিকর্ণ-১ (গাছ)
বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড বেবিকর্ণ-১ (গাছ)
বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড বেবিকর্ণ-১ (মোচা)
বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড বেবিকর্ণ-১ (মোচা)

হাইব্রিড ভুট্টার জাতের নাম: বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড বেবিকর্ণ-১।

ভূমিকা: বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত এ হাইব্রিডটি সিঙ্গেল ক্রস পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত তুলনামূলকভাবে খাটো আকৃতির উচ্চফলনশীল জাত। প্রথমে বানিজ্যিক বেবিকর্ণ জাত BCP 271 হতে ৭ (সাত) বছর ধরে স্ব-পরাগায়ন (সেলফিং) ও নির্বাচন (সিলেকসন) এর মাধ্যমে ইনব্রিড লাইন তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ইনব্রিড লাইনগুলো সনাক্ত করে তাদের মধ্যে সংকরায়নের মাধ্যমে তৈরিকৃত হাইব্রিডগুলি মূল্যায়ন করা হয়। মূল্যায়নে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হাইব্রিডগুলি বেশ কয়েক বছর ধরে বহুস্থানিক মাঠ মূল্যায়ন করা হয়। সেখান থেকে মাঝারি উচ্চতা বিশিষ্ট ও অধিক সংখ্যক মোচাসমৃদ্ধ একটি হাইব্রিড (BML 74 × BML 73) বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী হিসেবে প্রতীয়মান হয়। পরবর্তীতে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক নিবন্ধনের পর হাইব্রিডটি ২০২০ সালে অবমুক্ত করা হয়।    

সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

  • গাছে সংগ্রহ উপযোগী প্রথম বেবি মোচা গড়ে ৯৭ দিনে এবং বাকি মোচাগুলোও পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যেই সংগ্রহ করা যায়।
  • রবি মৌসুমে গাছ ও মোচার উচ্চতা যথাক্রমে ১৭০-১৮৫ সে.মি. এবং ৭০-৭৫ সে.মি.।
  • প্রতিটি গাছ থেকে ৩-৪ টি কচি মোচা পাওয়া যায় যাদের মোট ওজন ৩৪.৪ গ্রাম।
  • বেবিমোচার সিল্কের রং মাঝারী গোলাপী বর্ণের, খোসা ছাড়ানো কচি মোচা হলুদ থেকে ক্রীম বর্ণের।
  • কচি মোচা সংগ্রহের সময় গাছ ও পাতা সবুজ অবস্থায় থাকে বিধায় সম্পূর্ন গাছকে সবুজ গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কর্ণের TSS এর পরিমাণ ১২.২ ব্রিক্স।

উপযোগী এলাকা: সমগ্র বাংলাদেশেই জাতটি আবাদের উপযোগী।   

ফলন: রবি মৌসুমে হেক্টর প্রতি অপরিপক্ক বা কচি খোসা ছাড়ানো মোচার ফলন ২.৩০-২.৬৫ টন। জাতটি থেকে হেক্টর প্রতি ৪১.৩-৪৪.০ টন সবুজ গো-খাদ্য পাওয়া যায়।

(২১) বিভিন্ন বেসরকারি বীজ কম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবিত ভুট্টার জাত সমূহের পরিচিতি

এনকে-৪০, প্রোফিট, শাহী, ডন-১১১, ডন-১১২, প্যাসিফিক-১৩৯, কাভেরি-৩৬৯৬, ঊত্তরণ, উত্তরন-২, উত্তরন সুপার, বিপ্লব, বিপ্লব-২, শক্তি, শক্তি-৩, প্যাসিফিক-১১, প্যাসিফিক-৬০, প্যাসিফিক-২২৪, প্যাসিফিক ২৯৩, প্যাসিফিক-৫৫৫ হাইব্রিড, প্যাসিফিক ৯৮৪, প্যাসিফিক ৯৯৯ সুপার; ইত্যাদি জাত সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লিংকে যেতে হবে→ https://inbangla.net/krisi/ভুট্টার-জাত-সমূহ/; এখানে জাত এর নাম, পরিচিতি, গুণ-বৈশিষ্ট্য ও ফলন এর পরিমাণ ইত্যাদি তথ্যসহ সুন্দরভাবে গুছিয়ে উপস্থাপন হয়েছে।

প্রিয় খামারি বন্ধুগণ! আজকের এই হাইব্রিড ভুট্টার জাত সম্পর্কি আলোচনাটি এখানেই সমাপ্ত হচ্ছে। আশা করি বিভিন্ন উন্নত জাতের হাইব্রিড ভুট্টার জাত এর নাম, পরিচিতি, বৈশিষ্ট্য ও ফলন সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন, যা আপনার হাইব্রিট ভুট্টা চাষে জাত নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যাপভঅবে সাহায্য করবে।

আমাদের এই ওয়েবসাইটে ভুট্টা চাষের সাথে সম্পর্কি অনেকগুলো তথ্য সংবলিত পোষ্ট/আলোচনা রয়েছে। আপনি ভুট্টা চাষের ব্যাপারে আরও জানতে সেগুলো পড়তে পারেন।

আর পোষ্টটি দ্বারা যদি আপনার উপকার হয়ে থাকে মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে ধন্যবাদ জানাবেন। এতে করে আমরা কাজে উৎসাহ পাই।

আজকের মত এখানেই বিদায়। পরবর্তী আলোচনাটি পড়ার আমন্ত্রণ জানাই। আল্লাহ হাফেজ।

[সূত্র: বিএআরআই, বিডব্লিউএমআরআই, এআইএস ও কৃষি বাতায়ন]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts

You cannot copy content of this page