Skip to content

তিলের জাতের নাম ও চাষ করার পদ্ধতি এবং তিল গাছের বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার

তিলের জাতের নাম ও চাষ করার পদ্ধতি এবং তিল গাছের বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার

তিল বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম ভোজ্য তেল ফসল। বাংলাদেশে খরিফ এবং রবি উভয় মৌসুমেই তিলের চাষ করা হয়। তবে বেশিরভাগ তিলের আবাদ খরিফ মৌসুমে হয়।

বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই তিলের চাষ হয়। আমাদের বাংলাদেশে সাধারণত কালো ও খয়েরী রঙের বীজের তিলের চাষ বেশি হয়।

তিল ফসল
তিল ফসল

তিলের বীজে ৪২-৪৫% তেল এবং ২০% আমিষ থাকে। তিলের ফলন হেক্টরপ্রতি ৫০০-৬০০ কেজি। উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করে তিলের ফলন প্রতি হেক্টরে ১২০০ কেজি পাওয়া সম্ভব।

এখানে আমরা তিলের জাতের নাম, তিল চাষ করার পদ্ধতি এবং তিল চাষের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে জানব।

(১) তিলের জাতের নাম ও পরিচিতি

ক) টি-৬

স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত জার্মপ্লাজম থেকে বাছাই পদ্ধতির মাধ্যমে ‘টি-৬’ জাতটি ১৯৭৬ সালে উদ্ভাবন করা হয়।

তিলের টি-৬ জাতের ফসল
তিলের টি-৬ জাতের ফসল
  • এ জাতটির গাছের উচ্চতা ৮৫-১০০ সেমি।
  • বীজ চ্যাপ্টা, মাঝারি আকারের। হাজার বীজের ওজন ২.৫-২.৭ গ্রাম। বীজের রং কালো।
  • খরিফ ও রবি উভয় মৌসুমে এ জাতটি চাষ করা যায়। তবে খরিফ মৌসুমে আবাদের জন্য জাতটি বেশি উপযোগী।
  • ফসল বোনা থেকে কাটা পর্যন্ত ৮৫-৯০ দিন সময় লাগে। হেক্টরপ্রতি ফলন ৯৫০-১১০০ কেজি পাওয়া যায়।
  • বর্তমানে জাতটি রোগবালাই ও পোকামাকড় দ্বারা বেশি আক্রান্ত হয়। ফলে কৃষক পর্যায়ে জাতটি চাষাবাদে নিরুৎসাহিত করা হয়।

খ) বারি তিল-২

স্থানীয় এবং বিদেশ থেকে তিলের বিভিন্ন জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ‘বারি তিল-২’ জাতটি উদ্ভাবিত হয় এবং ২০০১ সালে অনুমোদিত হয়।

বারি তিল-২ এর ফসল (ইনসেটে দানা)
বারি তিল-২ এর ফসল (ইনসেটে দানা)
  • গাছের উচ্চতা ১০০-১২০ সেমি।
  • পাতা হালকা সবুজ রঙের। নিচের পাতাগুলো অপেক্ষাকৃত চওড়া এবং ক্রমান্বয়ে উপরের পাতা সরু ও বর্শাকৃতির হয়।
  • কান্ডের উপরিভাগের শাখা-প্রশাখার প্রতিটি পত্রকক্ষে একটি করে ঘণ্টাকৃতির ফুল ফোটে। ফুলের পাঁপড়ির রং গোলাপি।
  • প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ৬০-৭০টি। প্রতি ফলে বীজের সংখ্যা ৬০-৭০টি।
  • বীজের ত্বক কালচে রঙের। এ জাতটি আগাম বপনের (মাঘ/ফাল্গুন) জন্য উপযোগী।
  • জাতটির জীবনকাল ৯০-১০০ দিন। হেক্টরপ্রতি ফলন ১.২০-১.৩০ টন।

গ) বারি তিল-৩

স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত তিলের বিভিন্ন জার্মপ্লাজমের মধ্য থেকে বাছাই পদ্ধতির মাধ্যমে এ জাতটি উদ্ভাবিত হয়। এ জাতটি ২০০১ সালে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন লাভ করে।

See also  গর্জন তিলের জাত ও এর চাষ পদ্ধতি
বারি তিল-৩ এর ফসল
বারি তিল-৩ এর ফসল
  • গাছের উচ্চতা ১০০-১১০ সেমি।
  • পাতা গাঢ় সবুজ ও খসখসে।
  • কান্ড, শাখা ও প্রশাখা লোমহীন। প্রতি গাছে ৩-৫টি প্রাথমিক শাখা থাকে। শাখাগুলো প্রধান কান্ডের একটু উপরে জন্মায়। প্রতিটি শাখায় ২-৩টি প্রশাখা জন্মায়।
  • ফুলের রং হালকা গোলাপী।
  • প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ৬০-৬৫ টি। ফল ৪ প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট এবং প্রতি ফলে বীজের সংখ্যা ৫০-৫৫টি।
  • বীজের ত্বক গাঢ় লালচে রঙের।
  • ফসল বোনা থেকে কাটা পর্যন্ত ৯০-১০০ দিন সময় লাগে। হেক্টরপ্রতি ফলন ১.২০-১.৪০ টন।

ঘ) বারি তিল-৪

অভ্যন্তরীণভাবে সংগৃহীত তিলের জার্মপ্লাজম থেকে বাছাই পদ্ধতি ব্যবহার করে এ জাতটি উদ্ভাবিত হয়েছে। জাতটি ২০০৯ সালে অবমুক্ত করা হয়।

বারি তিল-৪ এর ফসল
বারি তিল-৪ এর ফসল
  • জাতটি বাংলাদেশের সর্বত্র খরিফ মৌসুমে চাষাবাদের উপযোগী। খরিফ মৌসুমে (মধ্য-ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্য-এপ্রিল) বপনের উপযুক্ত সময়।
  • জাতটি বপন সময় থেকে পরিপক্ক হতে ৯০-৯৫ দিন সময় লাগে।
  • গাছের উচ্চতা ৯০-১২০ সেমি।
  • প্রতি গাছে শুঁটির সংখ্যা ৮৫-৯০টি। অধিকাংশ শুঁটিই ৮ প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট এবং প্রতি শুঁটিতে ‘বারি তিল-২’ ও ‘বারি তিল-৩’ এর তুলনায় ২০-৪০% বেশি বীজ থাকে।
  • বীজের ত্বক গাঢ় লালচে বর্ণের।
  • জাতটি পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ সহিষ্ণু।
  • জাতটির হেক্টরপ্রতি ফলন ১.৪-১.৫ টন যা ‘বারি তিল-২’ ও ‘বারি তিল-৩’ এর চেয়ে ৮-১০% বেশি।

(২) তিল চাষ করার পদ্ধতি ও চাষের উপযুক্ত সময়

ক) মাটি

পানি জমে থাকে না এমন ধরনের মাটিতে তিলের চাষ করা যায়। উঁচু বেলে দোআঁশ বা দোআঁশ মাটি তিল চাষের জন্য বেশি উপযোগী।

খ) জমি তৈরি

তিল চাষের জন্য মাটি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে ঝুরঝুরে করে নিতে হয়।

গ) তিল চাষ করার উপযুক্ত সময়

তিল খরিফ মৌসুমে চাষ করা যায়।

খরিফ-১ মৌসুমে অর্থাৎ ফাল্গুন-চৈত্র মাসে (মধ্যে-ফেব্রুয়ারি হতে মধ্যে-এপ্রিল), খরিফ-২ মৌসুমে অর্থাৎ ভাদ্র মাসে (মধ্য-অগস্ট হতে মধ্য-সেপ্টেম্বর) তিলের বীজ বপনের উত্তম সময়।

ঘ) বপন পদ্ধতি

তিলের বীজ সাধারণত ছিটিয়ে বপন করা হয়। তবে সারিতে বপন করলে অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা করতে সুবিধা হয়। সারিতে বপন করলে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেমি ও গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৫ সেমি রাখতে হবে।

ঙ) বীজের হার

প্রতি হেক্টরে ৭.০-৮.০ কেজি।

চ) সারের পরিমাণ

তিলের জমিতে নিম্নরূপ হারে সার প্রয়োগ করতে হবে-

সারের নামসারের পরিমাণ/হেক্টর
ইউরিয়া১০০-১২৫ কেজি
টিএসপি১৩০-১৫০ কেজি
এমওপি৪০-৫০ কেজি
জিপসাম১০০-১১০ কেজি
জিংক সালফেট (প্রয়োজনে)০-৫ কেজি
বরিক এসিড (প্রয়োজনে)৮-১০ কেজি

ছ) সার প্রয়োগ পদ্ধতি

ইউরিয়া সারের অর্ধেক ও বাকি সব সার জমি শেষ চাষের সময় ছিটিয়ে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি ইউরিয়া বীজ বপনের ২৫-৩০ দিন পর ফুল আসার সময় উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

See also  গর্জন তিলের জাত ও এর চাষ পদ্ধতি

জ) সেচ প্রয়োগ ও পানি নিষ্কাশন

জমিতে রসের অভাব হলে বীজ বোনার সময় হালকা সেচ দিয়ে বীজ বপন করতে হয়। জমিতে রস না থাকলে ৫৫-৬০ দিন পর ফল ধরার সময় আর একবার সেচ দেওয়া যেতে পারে।

ঝ) ফসল সংগ্রহ

তিল ফসল সংগ্রহ করতে ৮৫-৯০ দিন সময় লাগে।

(৩) তিল গাছের বিভিন্ন রোগ ও প্রতিকার

ক) তিলের পাতার দাগ রোগ দমন

সারকোস্পোরা সিসেমী নামক এক প্রকার ছত্রাকের কারণে তিলের এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগের আক্রমণে প্রথমে পাতায় ছোট, গোলাকার, বাদামী থেকে গাঢ় বাদামী রঙের দাগ পড়ে। দাগ বিভিন্ন আকারের হয় এবং ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে।

প্রতিকার:

  • এ রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে ১ গ্রাম হারে অটোস্টিন প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর জমিতে ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
  • পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ফসলের চাষ করতে হবে।

খ) তিলের কান্ড পচা রোগ দমন

তিল গাছ কান্ড পচা রোগে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়ে থাকে। কলেটোট্রিকাম ডেমাশিয়াম নামক ছত্রাকের কারণে এ রোগ সৃষ্টি হয়।

আক্রান্ত গাছের কান্ডে ছোট, লম্বা আঁকা বাঁকা বিভিন্ন ধরনের গাঢ় খয়েরি ও কালচে দাগ দেখা যায়। এ দাগ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং সমস্ত কান্ডে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপকভাবে আক্রান্ত গাছের পাতা মরে যায়।

তিলের কান্ড পচা রোগের লক্ষণ
তিলের কান্ড পচা রোগের লক্ষণ

প্রতিকার:

  • বীজ বপনের পূর্বে প্রোভেক্স-২০০ ডাব্লিউপি ছত্রাকনাশক দ্বারা (২-৩ গ্রাম/কেজি) বীজ শোধনের মাধ্যমে রোগের আক্রমণ কমানো যায়।
  • এ রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে ১ গ্রাম হারে অটোস্টিন বা ২ গ্রাম হারে ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
  • ফসল কাটার পর গাছের শিকড়, আগাছা, আবর্জনা ইত্যাদি পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
  • সাধারণত মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হলে এ রোগের আক্রমণ হয়ে থাকে বিধায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা দেখা গেলে বৃষ্টির কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা আগে ডাইথেন এম-৪৫ বা ইনডোফিল নামক ছত্রাকনাশক ০.২% হারে স্প্রে করতে হবে।
  • গাছে ফুল আসার পূর্ব থেকে ১২-১৫ দিন পর পর ডাইথেন এম-৪৫ বা ইনডোফিল (০.২%) ৪-৫ বার স্প্রে করা হলে রোগের আক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়।

গ) তিলের হক মথ পোকা

বাংলাদেশে তিলের ৩০টি প্রজাতির পোকামাকড় শনাক্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে তিল হক মথ, বিছাপোকা ও পাতা মোড়ানো পোকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। কীড়া হলুদ রেখাযুক্ত সবুজ বর্ণের। পিছনের খন্ডের উপরে শিঙের মত অঙ্গ বিদ্যমান।

নিচে এদের ক্ষতির নমুনা ও সমন্বিত ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো-

আক্রমণের সময় ও ফসলের আক্রান্ত ধাপ:

এপ্রিল ও মে মাসে তিল গাছে ফুল ও ফল ধরার সময় আক্রমণ বেশি হয়। তিল গাছের অগ্রভাগ থেকে খাওয়া শুরু করে এবং কীড়া সাধারণত সকাল ও বিকালে বেশি ক্ষেতে দেখা যায়।

See also  গর্জন তিলের জাত ও এর চাষ পদ্ধতি

ক্ষতির ধরন:

কীড়া তিল গাছের কচি পাতা, কান্ড, ফুল ও ফল পেটুকের মত খেয়ে মারাত্মক ক্ষতি করে। ফলে গাছ পাতা শূন্য হয়ে বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং ফুল ধারণ বাধাগ্রস্ত হয়। এদের আক্রমণে তিলের শতকরা ২৫-৩০ ভাগ ফলন কমে যায়।

সমন্বিত ব্যবস্থাপনা:

  • সকালে ও বিকালে কীড়া হাত দ্বারা সংগ্রহ করে মেরে দমন করা যায়।
  • ক্ষেতে বিঘাপ্রতি ৮-১০টি কাঠি পুতে পাখি বসার সুযোগ করে দিলে শিকারী পাখি সবুজ রঙের কীড়া ধরে খায়।
  • মাটির নিচের পুত্তলী গভীর চাষের মাধ্যমে ধ্বংস করতে হবে।
  • আক্রমণ খুব বেশি হলে নাইট্রো (সাইপারমেথ্রিন+ক্লোরোপাইরিপাস) ৫০৫ ইসি ২ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত ক্ষেতে ১০ দিন অন্তর ২ বার ছিটিয়ে পোকা দমন করা যায়।

ঘ) তিলের বিছাপোকা

মথ হলদে বাদামী বর্ণের পাখায় কালো ফোটা ফোটা দাগ থাকে। মথ রাতে বিচরণ করে। এদের দেহ কমলা হলুদ রঙের ২০-৩০ মিমি লম্বা ও ৬-৮ মিমি চওড়া। কীড়া কমলা-হলুদ রঙের। গায়ে ছোট বড় অসংখ্য শুঁয়ো বা লোম থাকে।

আক্রমণের সময় ও ফসলের আক্রান্ত ধাপ:

এপ্রিল মে মাসে ফুল ও ফল আসার সময় আক্রমণের মাত্রা বেশি হয়। গাছের অঙ্গজ বৃদ্ধি থেকে শুরু করে পরিপক্ক অবস্থা পর্যন্ত এদের আক্রমণ দেখা যায়। তবে ফল ধরার সময় আক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

ক্ষতির ধরন:

আক্রমণের প্রাথমিক অবস্থায় ছোট ছোট কীড়া ১-২টি পাতা খেয়ে জালিকা সৃষ্টি করে। বয়স্ক কীড়াগুলি ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে এবং পাতা, কান্ড, ফুল ও ফল খেয়ে প্রচুর পরিমাণে ক্ষতি করে। ফলে গাছের বৃদ্ধি, ফুল ও ফল ধারণ ব্যাহত হয় এবং ফলন শতকরা ২০-৩০ ভাগ কমে যায়।

সমন্বিত ব্যবস্থাপনা:

  • রাতে আলোর ফাঁদ দ্বারা মথকে আকৃষ্ট করে ধরে মারা যায়।
  • প্রাথমিক অবস্থায় দলবদ্ধ কীড়াসহ আক্রান্ত পাতা হাত দ্বারা ধ্বংস করে দমন করা যায়।
  • ৫০ গ্রাম আধাভাঙ্গা নিম বীজ ১ লিটার পানিতে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে ২ গ্রাম ডিটারজেন্ট মিশিয়ে ছেঁকে ১০ দিন অন্তর ২ বার স্প্রে করে পোকা দমন করা যায়।
  • আক্রামণ খুব বেশি হলে নাইট্রো (সাইপারমেথ্রিন+ক্লোরোপাইরিপাস) ৫০৫ ইসি ২ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত ক্ষেতে ১০ দিন অন্তর ২ বার ছিটিয়ে পোকা দমন করা যায়।

ঙ) তিলের পাতা মোড়ানো ও ফলছিদ্রকারী পোকা

কীড়া হলদে সুবজ বর্ণের গায়ে কালো ফোটা ফোটা দাগযুক্ত, লম্বা, স্বল্পসংখ্যক লোম থাকে। মথ হালকা বাদামী বর্ণের।

আক্রমণের সময়:

মার্চ, এপ্রিল, মে মাস পর্যন্ত অর্থাৎ গাছের অঙ্গজ বৃদ্ধি থেকে শুরু করে পরিপক্ক অবস্থা পর্যন্ত এদের আক্রমণ দেখা যায়। উষ্ণ তাপমাত্রা (৩০-৩৪০ সে.) এবং মধ্যম আর্দ্রতা (৭৫-৮৫%) আক্রমণের জন্য অনুকূল।

ক্ষতির ধরন:

হলদে সবুজ রঙের কীড়া তিল গাছের উপরের কয়েকটি পাতা মুড়িয়ে ভিতরে বসে খায়। ফলে গাছের পাতা কুচকে ছিদ্রযুক্ত হয়ে যায়। ফলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং ফুল ও ফল ধারণ বাধাগ্রস্ত হয়।

এরা জাল তৈরি করে ও মল ত্যাগ করে পরবর্তী পর্যায়ে কীড়া ফল ছিদ্র করে ভিতরের অংশ খেয়ে ক্ষতি করে। ফলে ফলন শতকরা ২০-৩০ ভাগ কমে যায়।

সমন্বিত ব্যাবস্থাপনা:

  • মোড়ানো পাতা ও আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে হাত দ্বারা কীড়া মেরে দমন করা যায়।
  • প্রতি বিঘায় ৮-১০টি গাছের ডাল পুঁতে দিয়ে পোকাভোজী পাখি বসার ব্যবস্থা করে দেওয়া।
  • আক্রমণ খুব বেশি হলে পারফেকথিয়ন ৪০ ইসি ২ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত ক্ষেতে ১০ দিন অন্তর ২ বার ছিটিয়ে পোকা দমন করা যায়।

[সূত্র: বিএআরআই]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

পশু-পাখি পালন ও চাষাবাদ সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts