Skip to content

 

বেল চাষ পদ্ধতি

বেল চাষ পদ্ধতি

বেল (Rutaceae) পরিবারভুক্ত একটি দীর্ঘজীবী উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Aegle marmelos।

গাছ: গাছ ঝোপালো স্বভাবের। পাতা যৌগিক, ওভেট, পত্রফলকের অগ্রভাগ সুঁচালো ও গাঢ় সবুজ বর্ণের। পত্র ঝরার সময় হালকা হলুদ বর্ণ ধারণ করে।

ফুল: ফুল দেখতে সাদা রঙের এবং সবসময় গুচ্ছাকারে জন্মে। ফুলে ৫টি করে মঞ্জরীপত্র, বৃত্তাংশ ও পাপড়ি বিদ্যমান।

ফল: ফল আ্যম্ফিসারকা জাতীয় এবং বহুজীবী। ফল তুলনামূলকভাবে মাঝারি আকৃতির। বীজ সাধারণত গোলাকার এবং সাদা রঙের হয়।

অঞ্চল: বেল উষ্ম ও অবউষ্মম-লীয় অঞ্চলের উদ্ভিদ। জাতটি পাহাড়ী এলাকাসহ বাংলাদেশের সর্বত্র চাষযোগ্য ও খরা সহিষ্ণু। বর্তমানে বেল বাংলাদেশের সর্বত্র জন্মে।

ব্যবহার: এ ফলটি কাঁচা পাকা অবস্থাতেই খাওয়া যায়। তবে পাকা বেল সরবত তৈরিতে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। কাঁচা বেল পুড়ে খাওয়া হয়।

(১) বেলের জাত পরিচিতি

বারি বেল-১:

বারি বেল-১
বারি বেল-১

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারি বেল-১ নামে বেলের একটি জাত উদ্ভাবন করেছে।

  • ফল মাঝারী আকারের।
  • গড় ওজন ৯০০ গ্রাম।
  • ফলের শীর্ষ গর্তের মত।
  • রঙ হলুদাকার।
  • স্থানীয় জাতের বেলের (৬৬.০%) তুলনায় বারি বেল-১ এর খাদ্যোপযোগী অংশ বেশি (৭৮.১%)।
  • ফলের শাঁসের টিএসএস ৩৫% এবং তিতাবিহীন।
  • ফলে বীজের সংখ্যা কম এবং প্রতিটি ফলে গড়ে ৯১টি বীজ পাওয়া যায়, ওজন ৯০০ গ্রাম।

(২) বেল চাষ পদ্ধতির ধারাবাহিক বর্ণনা

  1. ক্রেফট গ্রাফটিং বা ফাটল কলমের সাহায্যে কলমের চারা তৈরি করা হয়।
  2. সাধারণত মে মাসের মাঝামাঝী সময়ে ৬০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতায় গর্ত করতে হবে।
  3. গর্ত করার সময় গর্তের উপরের অর্ধেক অংশের মাটি এক পার্শ্বে এবং নিচের অংশের মাটি অন্য পার্শ্বে রাখতে হবে।
  4. গর্ত থেকে মাটি উঠানোর ১০ দিন পর্যন্ত গর্তটিকে রৌদ্রে শুকাতে হয়। এরপর প্রতি গর্তে ১০ কেজি গোবর সার ও ১৫০ গ্রাম টিএসপি উপরের অংশের মাটির সাথে মিশিয়ে মাটি উলট-পালট করে গর্ত ভরাট করতে হবে।
  5. গর্ত ভরাটের সময় উপরের অর্ধেক অংশের মাটি দিয়ে গর্ত ভরাট না করা হলে প্রয়োজনে পার্শ্ব থেকে উপরের মাটি গর্তে দিতে হবে। তবে গর্তের নিচের অংশের মাটি দিয়ে গর্ত ভরাট না করা উত্তম।
  6. কলমের চারাটি জুন-জুলাই মাসে নির্ধারিত গর্তে রোপণ করতে হবে।
  7. রোপণের পর কলমের চারাটি সোজা করে খুঁটির সাথে বেঁধে দিতে হবে এবং বৃষ্টি না হলে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।
  8. কলমের চারা সংগ্রহ করে সারি থেকে সারি ও চারা থেকে চারা ৫ মিটার দূরত্বে গর্ত করে রোপণ করা হয়।
  9. গাছের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সারের পরিমাণও বৃদ্ধি করতে হবে। গাছের বয়স ১-২ বছর হলে পচা গোবর সার/আবর্জনা পচা সার ১৫ কেজি, ইউরিয়া সার ২৫০ গ্রাম, টিএসপি সার ২০০ গ্রাম, এমওপি সার ১৫০ গ্রাম, জিপসাম ১০০ গ্রাম, জিংক সালফেট ২০ গ্রাম এবং বোরিক এসিড বা পাউডার ১৫ গ্রাম প্রতিটি গাছের জন্য বছরে একবার প্রয়োগ করতে হবে। কারণ ফল সংগ্রহ করার পরপরই গাছে নতুন পাতা আসবে এবং ফুল আসা শুরু করবে।
  10. গ্রাফটিং এর গাছ সাধারণত ৫-৬ বছর পর ফল দিয়ে থাকে।

(৩) বেল চাষে পোকান্ডমাকড় ও রোগবালাই দমন ব্যবস্থাপনা

বারি বেল-১ এ পোকা মাকড়ের উপদ্রব কম। জাতটি চাষাবাদে তেমন কোন বালাইনাশকের প্রয়োজন পড়ে না। তবে লেপিডোপটেরা পোকা বেলের পাতা খায়।

নতুন পাতা বের হলে সাইপারমেথ্রিন, কার্বারিল, ইমিডাকোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক নির্দেশিত মাত্রায় মাত্র একবার ব্যবহার করলে পোকাটির আক্রমণ থেকে বেলের পাতাকে রক্ষা করা যাবে।

[সূত্র: বিএআরআই]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts

You cannot copy content of this page