Skip to content

পানের চাষ: পান গাছের বৈশিষ্ট্য, চারা তৈরি, পরিচর্যা সার প্রয়োগ, রোগের ওষুধ ও পানের পোকা দমন ব্যবস্থাপনা

পানের চাষ পান গাছের বৈশিষ্ট্য, চারা তৈরি, পরিচর্যা সার প্রয়োগ, রোগের ওষুধ ও পানের পোকা দমন

আলোচ্য বিষয়:

পান বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। পান Piperaceae পরিবারভুক্ত একটি বহুবর্ষজীবী চিরহরিৎ লতা জাতীয় উদ্ভিদ কিন্তু কান্ড হালকা শক্ত।

পান ছায়া পছন্দকারী ডাইয়োসিয়াস প্রকৃতির অর্থাৎ পুরুষ ও স্ত্রী গাছ ভিন্ন ভিন্ন। পাতা ৩-৮ ইঞ্চি লম্বা, অগ্রভাগ সরু এবং হৃদপিন্ডাকৃতির। এর বৈজ্ঞানিক নাম Piper betle. চীন, মালয়েশিয়া ও ভারত পানের আদি বাসস্থান।

অতিথি আপ্যায়নের অংশ হিসাবে পান পরিবেশন আমাদের বাংলাদেশে ঐতিহ্য।

পান পাতার রসে ফোনমিক উপাদানসমূহ থাকে। যাতে আছে চ্যাভিকল, রাইড্রোঅক্সিচ্যাভিকল, এসকরবিক এসিড এবং ১% পর্যন্ত উদ্বায়ী তেল যা কার্ডিনেনি, চ্যাভিকল, চ্যাভিবেটল এবং সিনেয়ল দ্বারা গঠিত। এতে আরও থাকে বিটা-ক্যারোটিন, আলফা-টোকোফেরল, আরোকেনি, ট্যানিন, স্টার্চ, সুগার ও ডায়াজটেজ থাকে। মূলে আছে ডায়োসজেনিন।

পান মনে প্রফুল্ল আনে, পাকস্থলী শক্তিশালী করে এবং মস্তিষ্ক সতেজ করে ও শক্তিশালী করে। পান যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে ও শ্লেষ্মা দূর করে। পানের রস কান পাকা দূর করে ও উকুননাশক হিসেবে কাজ করে। পানের শিকড়ে গর্ভ নিরোধক শক্তি রয়েছে।

পানে ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’ রয়েছে। পান মাথা, যকৃত ও হৃৎপিন্ডের টনিক হিসেবে কাজ করে। এর সবুজ পাতার ক্লোরোফিল দাতের জন্য উপকারী। পান বলবর্ধক, উত্তেজক এবং ক্ষতনাশক হিসেবেও কাজ করে।

বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকাতেই কম বেশি পানের চাষ করতে দেখা যায়।

বর্তমানে পান চাষের জমির পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার হেক্টর এবং উৎপাদনের পরিমাণ ২.১৫ লাখ মেট্রিক টন।

(বিবিএস, ২০১৭)

বাংলাদেশের মাটি, জলবায়ু, পারিপার্শ্বিককতা পান চাষের উপযোগী হলে ও পান উৎপাদন আশানুরূপ নয়। ভাল জাতের পানের চাষ ও আধুনিক কলাকৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে পানের ফলন অনেকাংশে বাড়ানো যায়।

(১) পানের গাছের বৈশিষ্ট্য

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বিজ্ঞানীরা বারি পান-১, বারি পান-২ ও বারি পান-৩ নামে তিনটি জাত উদ্ভাবন করেছেন।

বারি পান-৩:

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে সংগ্রহীত স্থানীয় জার্মপ্লাজম থেকে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানের উন্নত জাত ‘বারি পান-৩’ উদ্ভাবন করা হয়। জাতটি ২০১৭-১৮ সালে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক অবমুক্ত হয় যা ‘বারি পান-৩’ নামে পরিচিত।

বারি পান-৩ এর বরজ
বারি পান-৩ এর বরজ
  • পাতাগুলি গাঢ় সবুজ বর্ণের, বড় ও বোঁটা লম্বা।
  • ‘বারি পান-৩’ বাংলাদেশের সর্বত্র সারা বছর চাষ উপযোগী।
  • পান বরজের পরিচর্যা সময়মতো ও সঠিকভাবে গ্রহণ করা গেলে লতা লাগানোর ৬-৮ মাসের মধ্যে পান সংগ্রহ করা যায়। এ জাতের লতা প্রতি মাসে গড়ে ৩১.০০- ৩৩.৬৩ সেমি করে বৃদ্ধি পায়।
  • এক মিটার দৈর্ঘ্যরে লতায় গড়ে ১৯-২২ টি পান পাওয়া যায়।
  • পাতার পুরুত্ব গড়ে ০.৭৫- ০.৯০ মিমি ও পাতার বোটার দৈর্ঘ্য গড়ে ৮.৯০- ৯.৩৪ সেমি হয়।
  • জাতটিতে রোগ ও পোকার আক্রমণ অন্যান্য জাতের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম হয়।
  • জাতটি হতে প্রতি বছর হেক্টরপ্রতি ৩৭.৫০-৪০.৯১ লাখ পান উৎপাদিত হয় বা হেক্টরপ্রতি ২০.০০-২২.৪৩ টন ফলন হয়।

(২) পানের চাষ, চারা তৈরি, পরিচর্যা ও সার প্রয়োগ

ক) পান চাষের অগ্রবর্তী জেলাসমূহ

বাংলাদেশের প্রায় সবত্রই পান জন্মায়। তবে যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, ফরিদপুর, পটুয়াখালী, কুমিল্লা ও নোয়াখালী জেলায় উৎপন্ন পানের ৯০% উৎপাদিত হয়।

পান একটি অত্যন্ত লাভজনক অর্থকরী ফসল ও খুব সুখী ফসল। পান চাষের পদ্ধতিও খুব নিবিড়, ব্যয়বহুল এবং শ্রমসাধ্য।

অধিক উষ্ণ-আর্দ্র আবহাওয়ায় পান চাষ হয় বলে পোকান্ডমাকড় এবং ছত্রাক জাতীয় রোগের উপদ্রব অন্যান্য ফসলের চেয়ে অনেক বেশি।

খ) আবহাওয়া, জলবায়ু ও মাটি

  • ছায়াযুক্ত, গ্রীষ্মমন্ডলীয় বন্য পরিবেশে পান ভাল জন্মে। আমাদের বাংলাদেশে খরিফ মৌসুমে পান উৎপাদনের অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় উৎপাদনের পরিমাণ রবি মৌসুমের তুলনায় দ্বিগুন হয়।
  • পান চাষের জন্য বাৎসরিক বৃষ্টিপাত ২,২৫০-৪,৭৫০ মিমি, আপেক্ষিক আদ্রতা ৪০-৮০% এবং তাপমাত্রা ১৫-৪০ ডিগ্রি সে.। তবে ১৫-২৫ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় পান ভাল হয়।
  • বরজ এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেখানে গাছের জন্য প্রয়োজনীয় আলো বাতাস চলাচল করতে পারে।
  • নিষ্কাশনযুক্ত, ঊর্বর বেলে বা বেলে দোআঁশ বা এঁটেল মাটি পানচাষের জন্য বেশি উপযোগী।
  • মাটির পিএইচ ৫.৬ থেকে ৮.২ হলে পান চাষের জন্য ভালো।

গ) জমি তৈরি ও মাটি শোধন

  • ৩-৪ টি চাষ দিয়ে মাটি তৈরি করা উচিত।
  • চৈত্র-বৈশাখ মাসে ১ মাস ধরে স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখে মাটি শোধন করতে হবে।
  • তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য মাঝে মধ্যে বিকালের দিকে চাদর সরিয়ে অল্প পানি ছিটিয়ে দিয়ে আবার পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
  • ৬০ মিলি ফরমালিনে ১০ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে প্রতি বর্গমিটার জমিতে প্রয়োগ করে পলিথিন দিয়ে ৪-৫ দিন ঢেকে রাখতে হবে।
  • মাটি শোধনের ২০-২৫ দিন পর লতা রোপণ করতে হবে।

ঘ) লতা নির্বাচন ও শোধন

  • পানের লতা বা কাটিং লাগানোর জন্য সতেজ ও রোগমুক্ত বরজ হতে লতা বা কাটিং সংগ্রহ করতে হবে।
  • গাছের উপরের এক মিটারের মধ্যে থেকেই কাটিং সংগ্রহ করা উচিৎ।
  • লতা মাটিতে লাগানোর আগে প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম প্রোভ্যাক্স-২০০ বা অটোস্টিন ও এডমায়ার ১ মিলি মিশিয়ে এর জলীয় দ্রবণে ১২-১৫ মিনিট চুবিয়ে শোধন করে নিতে হবে। এর পর লতা ছায়াতে রেখে শুকিয়ে নিতে হবে।
  • লতা সংগ্রহের ৫-৬ দিন পূর্বে গাছের ডগার দিকে ২-৩ সেমি ভেঙ্গে দিলে ভাল হয়।
  • রোপণ দূরত্ব অনুযায়ী হেক্টরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার কাটিং প্রয়োজন হয়।

ঙ) রোপণ পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনা

পান বরজে সেচ ও নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে।

চারা গাছের জন্য পর্যাপ্ত ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে ও লতা আকড়ে ধরার জন্য অবলম্বনের ব্যবস্থা করতে হবে।

চ) কাটিং বা চারা প্রস্তুতকরণ

  • ২ বছর বয়সের পুরাতন, সুস্থ, সবল ও নিরোগ লতা নির্বাচন করতে হবে। লতা থেকে কাটিং সংগ্রহ করে ৮-১০ সেমি গভীর উর্বর মাটিতে বর্ষাকালে ৫০-৬০ সেমি এবং শরৎকালে ৪০-৫০ সেমি দূরে দূরে লাগাতে হবে।
  • পান গাছের কান্ডকে ছোট ছোট টুকরায় কেটে চারা তৈরি করতে হবে। প্রতিটি কাটিং লম্বায় ৩০-৪০ সেমি হতে হবে ও ৩-৫টি গিট (পর্ব) এবং ৩-৪ টি পাতা থাকলে ভাল হয়।
  • পানের লতার উপরের, মাঝের বা গোড়ার যে কোন অংশ কাটিং হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তবে গোড়ার অংশের তুলনায় উপরের ও মাঝের অংশ হতে অপেক্ষাকৃত কম সময়ে শিকড় ও কুশি গজাতে পারে।
  • বীজ লতা হতে সংগ্রহ করে প্রায় ৮০ টির মতো কাটিং একত্রে বেধে একটা বান্ডিল তৈরি করা হয়। এ বান্ডিলে কাদা মেখে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে। ২-৩ দিনের মধ্যে পর্বসন্ধি হতে নতুন শিকড় বের হলে কাটিং লাগানো যায়।

ছ) লতা রোপণের সময়

বছরের যে কোন সময় লতা লাগানো যায়। তবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, আশ্বিন-কার্তিক ও ফাল্গুন মাসে লতা লাগানো হলে ভাল ফল পাওয়া যায়। খরিফ মৌসুমে মধ্য ফাল্গুন হতে মধ্য চৈত্র মাসে পানের চারা রোপণ করা হয়। আবহাওয়ার তারতম্য ও অঞ্চল ভেদে চারা রোপণের উপযুক্ত সময়ের তারতম্য হয়।

কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও নড়াইলে মধ্য ফাল্গুন হতে মধ্য চৈত্র মাসে, যশোরে মধ্য জ্যৈষ্ঠ হতে মধ্য শ্রাবণ মাসে, বরিশালে ও বাগেরহাটে মধ্য জ্যৈষ্ঠ হতে মধ্য আষাঢ় মাসে, পটুয়াখালী আষাঢ় হতে শ্রাবণ মাসে, রাজশাহীতে মধ্য মাঘ হতে মধ্য চৈত্র মাসে, চট্টগ্রামে মধ্য জ্যৈষ্ঠ হতে মধ্য ভাদ্র মাসে, কক্সবাজারে মধ্য শ্রাবণ হতে মধ্য ভাদ্র মাসে পানের কাটিং রোপণ করা হয়।

জ) সার ব্যবস্থাপনা

জমি তৈরির সময় সার প্রয়োগ চারা লাগানোর পূর্বে হেক্টরপ্রতি ৮-১০ টন পচা গোবর সার ভালভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।

জ) পান বরজে সার প্রয়োগ

  • পান অধিক মাত্রায় পুষ্টি গ্রহণ করে। সাধারণত খৈল, কোন কোন এলাকায় ইউরিয়া সার দেয়া হয়।
  • কাঠা প্রতি জায়গায় বছরে টিএসপি ৩ কেজি, এমওপি ৩ কেজি, সরিষা বা নিম খৈল ২০ কেজি প্রয়োগ করা যেতে পারে। সার ও খৈল বছরে ৫-৬ টি ভাগে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
  • পান গাছের খাবার লতার গোড়ায় দেওয়া যাবে না। ২ সারির মাঝখানে ২ ইি খুড়ে খৈল বা রাসায়নিক সার দিতে হবে।
  • খৈল পচিয়ে তারপরে বরজে দিলে গাছ ভাল ভাবে গ্রহণ করতে পারে ও রোগবালাই কম হবে।

ঝ) সারের মাত্রা

নতুন বরজে সার প্রয়োগের পরিমাণ ও সময়কাল:

সারের নামপরিমাণ/হেক্টরসার প্রয়োগ পদ্ধতি
গোবর১০-১৫ টনসবটুকু জমি তৈরির সময়
খৈল৬ টন১২ কিস্তি (চারা লাগানোর ২ মাস পর হতে ৩০ দিন পরহবে।পর) সার প্রয়োগ করতে হবে।
ইউরিয়া২১৭ কেজি১২ কিস্তি (চারা লাগানোর ২ মাস পর হতে ৩০ দিন পরহবে।পর) সার প্রয়োগ করতে হবে।
টিএসপি১১০ কেজিসবটুকু জমি তৈরির সময়
এমওপি৮৪ কেজিসবটুকু জমি তৈরির সময়
জিপসাম৫০ কেজিসবটুকু জমি তৈরির সময়
জিংক সালফেট১৫ কেজিসবটুকু জমি তৈরির সময়

(Source : Effect of N, P and K on the yield and quality of betel leaf, Anual Research Report 2014-15, Spices Research Centre, Shibganj, Bogura)

পুরাতন বরজে সার প্রয়োগের পরিমাণ ও সময়কাল:

সারের নামপরিমাণ/হেক্টরসার প্রয়োগ পদ্ধতি
খৈল৪ টনজুন-নভেম্বর, ১৫ দিন পরপর ১২ কিস্তিতে
ইউরিয়া১৮০ কেজিজুন-নভেম্বর, ১৫ দিন পরপর ১২ কিস্তিতে
টিএসপি১৫০ কেজিমে মাসে ১ কিস্তিতে
এমওপি৭৫ কেজিমে মাসে ১ কিস্তিতে
জিপসাম৫০ কেজিমে মাসে ১ কিস্তিতে
জিংক সালফেট১৫ কেজিমে মাসে ১ কিস্তিতে

ঞ) সেচ প্রদান

সফলভাবে পান চাষের জন্য সঠিক মাত্রায় সেচ প্রয়োগ করা প্রয়োজন। পান বরজের মাটিতে সবসময় আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে।

শুষ্ক মৌসুমে ৬-৭ দিন পর পর সেচ দিতে হবে। কিন্তু বর্ষাকালে পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকতে হবে।

ট) আন্তঃপরিচর্যা

পানের লতা লাগানোর ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে সতেজ হয়ে উঠে এবং ১ মাসের মধ্যে প্রথম পাতা গজায়।

চারা একটু বড় হলেই এর খাড়া ভাবে বর্ধিত হওয়ার জন্য পাটকাটি বা বাশের কি পুঁতে এর সাথে পান গাছ বেধে দিতে হবে।

রোপণ পরবর্তী যত্নের উপর পানের উৎপাদন ও ফলন নির্ভর করে। রোপণ পরবর্তী যত্নের মধ্যে শূন্যস্থান পূরণ, সার প্রয়োগ, গোড়ায় মাটি তুলে দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার, সেচ ও নিষ্কাশন, লতা নামানো ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

ঠ) লতা নামানো ও বরজে মাটি তুলে দেওয়া

সাধারণত পান গাছকে ১-১.৫ মিটারের বেশি লম্বা হতে দেওয়া উচিত নায়। পানের লতা যখন বরজের ছাউনি পর্যন্ত (২-২.৫ মিটার) পৌছায় তখন তা নিচে নামিয়ে পাতা বিহীন অংশকে পেচিয়ে মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।

আমাদের বাংলাদেশে বছরে সাধারণত ২ বার (মাঘ-বৈশাখ ও আষাঢ়-আশ্বিন) পানের লতা নামানো হয়। কোন কোন স্থানে ৩-৪ বার লতা নামানো হয়।

আন্তঃপরিচর্যা করার ফলে পান লতার গোড়ার মাটি সরে যায়। এর ফলে শিকড় মাটি থেকে বের হয়ে আসে এবং মাটি থেকে খাদ্য সংগ্রহ করতে অসুবিধা হয়। এর ফলে লতা ধীরে ধীরে দুর্বল হয় ও রোগবালাই বৃদ্ধি পায়। এ জন্য বছরে ১-২ বার বাহির হতে ঝুরঝুরে মাটি এনে গাছের গোড়ায় দিতে হবে।

ড) পান সংগ্রহ

সময়মতো যত্ন ও পরিচর্যা করলে চারা লাগানোর ৬ মাস পর হতে পান তোলা যেতে পারে।

প্রতিটি গাছ হতে মাসে ৩-৪ বার পান তোলা যায়। পানের লতা লাগানোর ৬-৮ মাসের মধ্যে পাতা সংগ্রহ করার উপযুক্ত হয়।

ঢ) পাতার ফলন

আমাদের বাংলাদেশের পানের গড় ফলন প্রতিবেশী দেশ ভারতের তুলনায় অনেক কম। এর অন্যতম কারণ যত্ন ও পরিচর্যার অভাব, সুষম সার প্রয়োগ না করা, আবহাওয়া, মাটি, জাত, চাষাবাদ পদ্ধতি, রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ ইত্যাদি।

আমাদের বাংলাদেশে বাংলাদেশে গড়ে বছরে হেক্টরপ্রতি ১৬-২০ লক্ষ পান উৎপন্ন হয়। সেখানে ভারতে ৫০-৭০ লক্ষ পান উৎপন্ন হয়।

বরজ তৈরির প্রথম বছরে পানের ফলন কম হয়। এবং দ্বিতীয় বছরে ফলন বৃদ্ধি পায়। একই জমিতে ১০-১২ বছরের বেশি সময় পর্যন্ত পান চাষ করা ঠিক হবে না।

ণ) উৎপাদন বাড়ানো খরচ কমানো

পান চাষে কম খরচের মাধ্যমে অধিক পরিমাণ লাভ করতে হলে এই বিষয়গুলির প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে- উচ্চ ফলনশীল পানের জাত চাষ করা, সুষমমাত্রায় সার প্রয়োগ করা এবং শুষ্ক মৌসুমে সেচের ব্যবস্থা করা।

সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক মাত্রায় সঠিক বালাইনাশক ব্যবহার করা এবং নিবিড় যত্ন ও পরিচর্যার ব্যবস্থা করা।

ত) সংগ্রহ এবং সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থা

  • গাছ লাগানোর ৬-৮ মাস পর পান পাতা সংগ্রহ করা যায় এবং তার পর প্রতি ১৫-২৫ দিন অন্তর অন্তর পাতা সংগ্রহ করা যায়।
  • পান গাছ লম্বায় ১.২ থেকে ১.৮ মিটার হলে পাকা সংগ্রহ করা যায়। কান্ডের নিচের অংশ থেকে পাতা সংগ্রহ হয়।
  • প্রাথমিক পর্যায়ে পরিণত পাতা প্রধান কান্ডের নিচের অংশ থেকে ২-৩ বার সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে পান পাতা প্রধান কান্ডে ও পার্শ্বীয় কান্ড হতে সংগ্রহ করা হয়।
  • দূরর্বতী বাজারের জন্য পান পাতা তিন সপ্তাহ ও স্থানীয় বাজারের জন্য দুই সপ্তাহ পর পর সংগ্রহ করা হয়।
  • সংগ্রহকৃত পাতা পরিষ্কার করে পাতার আকৃতি ও গুণগত মান অনুযায়ী বাছাই করা হয়। তারপর সেগুলো বোটার অংশ বিশেষ কেটে এবং নষ্ট পাতা অপসারণ করে প্যাকেট করা হয়।
  • পরিষ্কার করার জন্য পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত পানি ব্যবহার করা হয়। কর্মীদেরকে নিজেদের হাত জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় মানসম্মত উপায় অবলম্বন করতে হবে।
  • স্বীকৃত আন্তর্জার্তিক মানদন্ড অবলম্বন করে সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে গুণগত মান বজায় থাকে এবং সংগনিরোধ (quarantine) নিশ্চিত করা যায়।

(৩) পানের পোকা দমন ব্যবস্থাপনা

‘বারি পান-৩’, ‘বারি পান-১’ ও ‘বারি পান-২’ এবং অন্যান্য স্থানীয় জাত হতে পোকান্ডমাকড় ও রোগবালাই এর আক্রমণ কম হওয়ায় এর ফলনও বেশি হয়।

যদি পোকান্ডমাকড় ও রোগবালাই এর আক্রমণ হয় তবে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা প্রয়োগের মাধ্যমে পোকান্ডমাকড় ও রোগবালাই এর ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব।

ক) কালো মাছি

ইহা পান বরজের ক্ষতিকারক পোকা। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে এ পোকা পানের বরজে বেশি দেখা যায়। এই পোকা পাতার নিচে বেশি দেখা যায়। নিম্ন বা বাচ্চা ও পূর্ণবয়স্ক দু অবস্থাতেই পান গাছের ক্ষতি করে। এরা পান পাতার রস চুষে খায়।

সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনা:

  1. আক্রমণের মাত্রা কম হলে আক্রান্ত পাতা তুলে ধ্বংস করতে হবে।
  2. বরজের ভিতর ও চারিদিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  3. এ পোকা হলুদ রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয়। তাই আঠালো হলুদ রঙের ফাঁদ পেতে এদের দমন করা যেতে পারে। হলুদ ফাঁদ তৈরির জন্য একটি প্লাস্টিকের বৈয়ামের উপরিভাগে মবিল বা অন্য কোন আঠালো পদার্থ মেখে পান বরজে স্থাপন করতে হবে। এর জন্য প্রতি বিঘায় ৭ টি ফাঁদ লাগবে।
  4. ২০ লিটার পানির মধ্যে ১ কেজি আধা ভাঙ্গা নিম বীজ ভিজিয়ে রেখে পরে দিন সকালে ঐ পানি স্প্রে করতে হবে।
  5. প্রতি লিটার পানির সাথে ৫ মিলি নিম তেল ও ৫ মিলি টিক্স মিশিয়ে পাতায় স্প্রে করতে হবে।
  6. আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে মেলাথিয়ন (ফাইফানন, মেলাটাফ, মেলাটক্স) ৫৭ ইসি ২ মিলি বা ডারসবান ১ মিলি বা ইমিটাফ বা গেইন ০.৫ মিলি মিশিয়ে ১০-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

খ) সাদা মাছি

এক ধরনের শোষক পোকা। পূর্ণ বয়স্ক মাছি ও তার বাচ্চা পান পাতা ও কচি ডগার রস চুষে খেয়ে ক্ষতি করে। ফাল্গুন মাস হতে বর্ষার পূর্ব পর্যন্ত এর আক্রমণ বেশি হয়।

সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনা:

  1. আক্রামণের মাত্রা কম হলে আক্রান্ত পাতা তুলে ধ্বংস করতে হবে।
  2. বরজের ভিতর ও চারিদিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  3. এ পোকা হলুদ রং এ আকৃষ্ট হয়। তাই আঠালো হলুদ রঙের ফাঁদ পেতে এদের দমন করা যেতে পারে। হলুদ ফাঁদ তৈরির জন্য একটি প্লাস্টিকের বৈয়ামের উপরিভাগে মবিল বা অন্য কোন আঠালো পদার্থ মেখে পান বরজে স্থাপন করতে হবে। এর জন্য প্রতি বিঘায় ৭ টি ফাঁদ লাগবে।
  4. ২০ লিটার পানির মধ্যে ১ কেজি আধা ভাঙ্গা নিম বীজ ভিজিয়ে রেখে পরেদিন সকালে ঐ পানি স্প্রে করতে হবে।
  5. প্রতি লিটার পানির সাথে ৫ মিলি নিম তেল ও ৫ মিলি টিক্স মিশিয়ে পাতায় স্প্রে করতে হবে।
  6. আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে সাইফারমেথিয়ন (রিপকর্ড) ৫৭ ইসি ১ মিলি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

গ) মিলি বাগ (Mily bug, Ferrisia virgata)

শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:

অপ্রাপ্ত বয়স্ক পর্যায়ে এই পোকা হলুদাভ অথবা ফ্যাকাশে সাদা হয়। অন্যদিকে প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী পোকা লম্বা, পালকবিহীন, মোমের সাদা আবরণযুক্ত হয়।

ক্ষতির লক্ষণ:

প্রাথমিক পর্যায়ে পাতায় এবং নরম কান্ডে সাদা তুলার মত লক্ষণ দেখা যায়। এরা পাতা ও কান্ডের রস চুষে নেয়, ফলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।

সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনা:

  1. আক্রমণের মাত্রা কম হলে আক্রান্ত পাতা তুলে ধ্বংস করতে হবে।
  2. বরজের ভিতর ও চারিদিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  3. এ পোকা হলুদ রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয়। তাই আঠালো হলুদ রঙের ফাঁদ পেতে এদের দমন করা যেতে পারে। হলুদ ফাঁদ তৈরির জন্য একট প্লাস্টিকের বৈয়ামের উপরিভাগে মবিল বা অন্য কোন আঠালো পদার্থ মেখে পান বরজে স্থাপন করতে হবে। এর জন্য প্রতি বিঘায় ৭ টি ফাঁদ লাগবে।
  4. ২০ লিটার পানির মধ্যে ১ কেজি আধা ভাঙ্গা নিম বীজ ভিজিয়ে রেখে পরেদিন সকালে ঐ পানি স্প্রে করতে হবে।
  5. প্রতি লিটার পানির সাথে ৫ মিলি নিম তেল ও ৫ মিলি টিক্স মিশিয়ে পাতায় স্প্রে করতে হবে।
  6. আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে সাইফারমেথিয়ন (রিপকর্ড) বা ক্লোরপাইরিফস (ডারস্বান) ১ মিলি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। স্প্রে করার পূর্বে প্রাপ্ত বয়স্ক অথবা বাজারজাত করা যাবে এমন পাতা তুলে ফেলতে হবে।

ঘ) সাদা কালো ও লাল মাকড়

মাকড় পান পাতার রস চুষে খায়। এদের খালি চোখে দেখা যায় না। গরম ও বৃষ্টিহীন অবস্থায় এদের আক্রমণ বেশি হয়। মাকড় আক্রমণ করলে পাতায় লাল লাল ফোটা ফোটা দাগ অথবা লম্বালম্বি ভাবে লাল দাগ দেখা যায়। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে এদের আক্রমণ বৃদ্ধি পায়।

সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনা:

  1. আক্রমণের মাত্রা কম হলে আক্রান্ত পাতা তুলে ধ্বংস করতে হবে।
  2. বরজের ভিতর ও চারিদিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  3. বাড়ন্ত অবস্থায় থেকে ১৫ দিন পর পর প্রতি লিটার পানির সাথে ১০ মিলি নিম পাতা বা আতা পাতার নির্যাস ব্যবহার
  4. করলে পোকার আক্রমণ কম হয়।
  5. প্রতি লিটার পানির সাথে ৫ মিলি নিম তেল ও ৫ মিলি টিক্স মিশিয়ে পাতায় স্প্রে করতে হবে।
  6. প্রতি লিটার পানির সাথে সালফার জাতীয় ছত্রাক নাশক যেমন- থিয়ভিট/কুমুলাক্স/ফাইটোভিট ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে পাতার উপরে ও নিচে স্প্রে করতে হবে। আক্রমণের মাত্রা খুব বেশি হলে প্রতি লিটার পানির সাথে মাকড় নাশক যেমন- ভারটিমেক/ওমাইট/নিউরোন ইত্যাদি ১ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

(৪) পান গাছের রোগের ওষুধ

ক) গোড়া/লতা ও পাতা পচা (Foot rot or leaf rot or wilt)

আক্রমণকারী জীবাণু:

Phytophthora parasitica var. piperina

লক্ষণ:

এই রোগ দ্বারা গাছ বৃদ্ধির সকল পর্যায়ে আক্রান্ত হয়ে থাকে। প্রাথমিকভাবে হঠাৎ ঢলে পড়া এই রোগের লক্ষণ। আক্রান্ত গাছের পাতা হলুদাভ এবং নিচে দিকে ঢলে পড়ে। পাতার উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়। আক্রান্ত গাছ ২ অথবা ৩ দিনে সম্পূর্ণভাবে শুকিয়ে যায়। কান্ড বাদামী, ঝুরঝুরে এবং কাঠির মতো শুকিয়ে যায়। কান্ডের মাটির কাছের অংশে কাল অনিয়মিত ক্ষত দেখা যায়।

সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনা:

  1. প্রতি লিটার পানির মধ্যে ৫০০ মিগ্রা. স্ট্রেপটোসাইক্লিন ও ৫ মিলি বর্দো মিক্সার বা ০.২% রিডোমিল গোল্ড দ্রবণে চারাকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে ও পরে ছায়ায় শুকিয়ে রোপণ করতে হবে।
  2. আক্রান্ত লতা পাতাকে সংগ্রহ করে ধ্বংস করতে হবে।
  3. পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং শীতের সময় নিয়ন্ত্রিত সেচ দিতে হবে।
  4. শীতের সময় মাটির সাথে প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলি বর্দো মিক্সার মিশিয়ে প্রতি হিলে ৫০০ মিলি হারে এক মাস অন্তর অন্তর দিতে হবে।
  5. বরজে রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে রিডোমিল গোল্ড বা মিউকোসিল ২ গ্রাম বা সিকিউর ১.৫ গ্রাম মিশিয়ে গাছের গোড়াসহ সমস্ত গাছে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

খ) গোড়া পচা (Sclerotium foot rot and wilt)

আক্রমণকারী জীবাণু:

Sclerotium rolfsii

লক্ষণ:

সকল বয়সের গাছ এই রোগে আক্রান্ত হয়। মূল ও কান্ডে প্রথম আক্রমণ পরিলক্ষিত হয় যা সাদাটে তুলার মতো দেখা যায়। আক্রান্ত কান্ডে পচন ধরে এবং গাছের পাতা ঝরে যায় এবং অবশেষে মারা যায়।

সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনা:

  1. লতা রোপণের পূর্বে প্রতি লিটার পানির মধ্যে ২ গ্রাম প্রভেক্স বা অটোস্টিন মিশিয়ে চারা ৩০-৩৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে ও পরে রোপণ করতে হবে।
  2. আক্রান্ত গাছকে মূলসহ তুলে ফেলতে হবে এবং আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
  3. মাটিতে সরিষার খৈল/জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।
  4. বরজে রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম কার্বেনডাজিম/ প্রতি লিটার পানির সাথে ১ গ্রাম টিমসেন মিশিয়ে গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করতে হবে।

গ) এনথ্রাকনোজ (Anthracnose)

আক্রমণকারী জীবাণু:

Colletotrichum capsici var. piperis

লক্ষণ:

প্রথম পর্যায়ে পাতায় ছোট, গোলাকার কালো দাগ দেখা যায় যা পরবর্তীতে বৃদ্ধি পায়, চক্রাকার আকার ধারণ করে এবং দাগগুলি হালকা হলুদ দাগ দ্বারা আবৃত থাকে, যেগুলি ২ সেমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাতা ফ্যাকাসে হলুদ হয়ে যায় এবং দাগের মধ্যখানে বড় কালো ফোটা থাকে। একই লক্ষণ কান্ডে ও দেখা যায়। রোগের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে কালো দাগ কান্ডকে বেষ্টিত করে রাখে।

সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনা:

  1. আক্রান্ত লতা ও পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংস করতে হবে।
  2. পাতা তোলার পর প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম জিরাম বা ৫ মিলি বর্দো মিক্সার বা ০.৫ মিলি টিল্ট বা এমিস্টারটপ ১ মিলি বা ক্যাবরিওটপ ৩ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

[সূত্র: বিএআরআই]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts