Skip to content

চিনা চাষ পদ্ধতি (চিনা কাউন/চীনা ফসল)

চিনা চাষ পদ্ধতি (চিনা কাউন/চীনা ফসল)

বর্তমানে বাংলাদেশে অপ্রধান ফসল হিসেবে চীনার চাষ করা হয়ে থাকে। অনুর্বর মাটিতে ও চরাঞ্চলে এ ফসলটি বেশি চাষ হয়।

খরা বা বন্যার পর কৃষি উৎপাদন পুনর্বাসন কার্যক্রমে চীনা যথেষ্ট অবদান রাখতে পারে। চীনা দ্বারা বিচুরি, পায়েশ, মোয়া, নাজু ও পিঠা তৈরি করা যায়।

চীনা ফসল (দানা)
চীনা ফসল (দানা)
চীনা ফসল (গাছ)
চীনা ফসল (গাছ)

সাল ২০১০ এ বাংলাদেশে চীনার জমির মোট পরিমাণ প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর এবং মোট উৎপাদন প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার মেট্রিক টন।

(১) চিনা কাউন/চীনা ফসলের জাত

ক) তুষার

চিনার দানা (জাত তুষার)
চিনার দানা (জাত তুষার)
চিনার গাছ (জাত তুষার)
চিনার গাছ (জাত তুষার)

জাতের নাম: তুষার।

ভূমিকা: চীনার এ জাতটি ১৯৭২ সালে সুধাইট মিলেট নামে ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে আনা হয় এবং পরবর্তীকালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ১৯৮৯ সালে তুমার নামে অনুমোদন করা হয়।

বৈশিষ্ট্য:

  • তুষার গাছের উচ্চতা মাধারী, ৫-৬ টি কুশি বিশিষ্ট শীষ আকারে বেশ লম্বা ও শীর্ষে বীজ গুচ্ছাকারে থাকে।
  • বীজের রং হালকা ঘিয়ে।
  • হাজার দানার ওজন ৪.৫০-৪.৭৫ গ্রাম।

বিশেষ গুণ: গাছ শক্ত, সহজে হেলে পড়ে না।

বিশেষ গুণ: এ জাতটি উচ্চ ফলনশীল, আগাম এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন।

ফলন: তুষার স্থানীয় জাতের চেয়ে ১০ দিন আগে পাকে, ফলন প্রতি হেক্টরে ২.৫- ৩.০ টন। স্থানীয় জাতের চেয়ে তুমারের ফলন শতকরা ৩৫- ৪০% বেশি।

খ) বারি চীনা-১

জাতের নাম: বারি চীনা-১।

ভূমিকা: অবমূক্তকারী প্রতিষ্ঠান হলো বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।

বৈশিষ্ট্য:

  • উচ্চ ফলনশীল প্রারম্ভকি পরিপক্ক জাত।
  • দানা সাদা হালকা।
  • ১০০০ দানার ওজন ৪.৫-৪.৭৫ গ্রাম।

বিশেষ গুণ: স্থানীয় জাতের তুলনায় ৯-১০ দিন আগে পাকে। চীনার এ জাতটিতে সাধারণত রোগবালাই দেখা যায় না।

ফলন: উৎপাদন (সেচ সহ) প্রতি হেক্টরে ২.৫-৩.০ টন। স্থানীয় জাতের তুলনায় ফলন তুলনামূলকভাবে ৩৫-৪০% বেশি।

(২) চিনা চাষ পদ্ধতির বর্ণনা

চীনার শীষ
চীনার শীষ
উন্নত পদ্ধতিতে চাষকৃত চীনা ফসল
উন্নত পদ্ধতিতে চাষকৃত চীনা ফসল

মাটি:

See also  চীনা ফসলের চাষ পদ্ধতি

পানি জমে না এমন বেলে দোআঁশ মাটি চাষের জন্য বেশ উপযোগী।

বপনের সময়:

মধ্য- কার্তিক থেকে পৌষ মাস (নভেম্বর থেকে মধ্য- জানুয়ারি)।

বীজের হার:

  • চীনা বীজ ছিটিয়ে এবং সারিতে উভয় পদ্ধতিতেই বোনা যায়।
  • ছিটিয়ে বুনলে হেক্টরপ্রতি ২০ কেজি এবং সারিতে বুনলে ১৮ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। সারিতে বীজ বুনলে ২ সারির মাঝে দূরত্ব হবে ২০-৩০ সেমি।
  • সারিতে চারা গজানোর পর ৬-৮ সেমি দূরত্বে একটি করে চারা রেখে বাকি চারা তুলে ফেলতে হবে।

সারের পরিমাণ:

সাধারণত অনুর্বর জমিতে চীনার চাষ করা হলেও সার প্রয়োগ করে ফলন বাড়ানো যায়।

সারের নামসারের পরিমাণ/হেক্টর
ইউরিয়া৮০-১০০ কেজি
টিএসপি৬৫-৭৫ কেজি
এমপি৩০-৪০ কেজি

সার প্রয়োগ পদ্ধতি:

সেচ বিহীন চাষে সম্পূর্ণ সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। কিন্তু সেচের ব্যবস্থা থাকলে শেষ চাষের সময় অর্ধেক ইউরিয়া এবং সবটুকু টিএসপি ও এমপি সার প্রয়োগ করতে হবে। বাকি অর্ধেক ইউরিয়া বীজ বপনের ৩৫-৪০ দিন পর উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

পানি সেচ:

মাটিতে রসের অভাব হলে ১-২টি হালকা সেচ দেওয়া যেতে পারে।

পোকামাকড়:

চীনায় পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। দমন ব্যবস্থা পোকার আক্রমণ দেখা দিলে আক্রমণের ব্যাপকতা বুঝে কার্বোফুরান ৫ জি (তারপোকার ক্ষেত্রে) জাতীয় দানাদার কীটনাশক (যেমন ফুরাডান, ব্রিফার ইত্যাদি) হেক্টর প্রতি ১৮ কেজি হারে বীজ বপনের সময় প্রয়োগ করতে হবে।

কাটুই পোকার জন্য প্রতি লিটার পানির সাথে ৫ মিলি ক্লোরোপাইরিফস ২০ ইসি জাতীয় কীটনাশক (ডারসবান/পাইরিফস/অন্য নামের) মিশিয়ে চারাগাছ গুলোর গোড়ায় মাটি ভিজিয়ে ভালভাবে স্প্রে করে দিয়ে এ পোকার আক্রমণকমানো যায়।

চিনা ফসল সংগ্ৰহ:

শীর্ষ খড়ের রং ধারণ করলে তখন বুঝতে হবে ফসল কাটার সময় হয়েছে।

[সূত্র: বিএআরআই ও বিডব্লিউএমআরআই]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

পশু-পাখি পালন ও চাষাবাদ সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts