Skip to content

 

বাংলাদেশ হতে সবজি ও ফল রপ্তানি

বাংলাদেশ হতে সবজি ও ফল রপ্তানি

(১) বাংলাদেশ হতে রপ্তানিকৃত শাকসবজি ও ফল

ফলের বর্তমান অবস্থা হিসাবে বলা যায় ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী যথাক্রমে বাংলাদেশে প্রায় ৭.৭০ লক্ষ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০০ রকমের সবজি এবং ৪.৬২ লক্ষ হেক্টর জমিতে আলু এবং ৬.৭৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ৭০ ধরনের বাৎসরিক উৎপাদনের পরিমাণ যথাক্রমে ১৩৯.১৯ লক্ষ টন, ৮৯.৫০ লক্ষ টন এবং ১০৬.৭২ মেট্রিক টন (সূত্র: কৃষি ডাইরি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ২০১৫)।

বাংলাদেশের প্রধান প্রধান সবজির মধ্যে আলু, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, শশা, ঝিঙ্গা, জালি কুমড়া, চিচিঙ্গা, করলা, পটোল, শিম, বরবটি, ঢেঁড়শ, টমেটো, বেগুন, কাঁচা মরিচ, পানিকচু, মুখী কচু, কচুর লতি এবং পাতাজাতীয় সবজি যেমন- লালশাক, ডাঁটাশাক, পালংশাক, কলমিশাক, পুঁইশাক উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে ফলের মধ্যে আম, জাম, কলা, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, আনারস, লেবুজাতীয় ফল, পেঁপে, নারিকেল ও কুল অন্যতম।

মৌসুমি সবজি ও ফলের বৈশিষ্ট্যগত কারণে গ্রীষ্মকালীন উদ্যান ফসলের (সবজি ও ফল) স্থায়িত্বকাল তুলনামুলকভাবে খুবই কম এবং বিশেষভাবে উল্লেখিত ফলগুলোর সহজলভ্যতা খুবই স্বল্পকালীন। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন এবং বর্ষাকালীন ফলের পরবর্তী সময়ে দেশীয় ফলের সরবরাহ খুব একটা পরিলক্ষিত হয় না। একই সময়ে সবজির সহজলভ্যতাও অনেকাংশে হ্রাস পায়।

বাংলাদেশের উৎপাদিত পণ্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ যথা- সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, ওমান, কুয়েত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহ যেমন- যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, সুইডেন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশসমূহ তথা: মালয়েশিয়া, গণচীন, হংকং, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই দারুস সালাম, সিঙ্গাপুর-এ বিগত দিনগুলোতে এথনিক বাজারে রপ্তানি হয়ে আসছে।

গ্রীষ্মকালে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে উচ্চ তাপমাত্রা এবং শীতকালে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহে হিমাংকের নিম্নে তাপমাত্রা বিরাজমান থাকায় উল্লেখিত স্থানসমূহে স্থানীয়ভাবে তেমন একটা চাষাবাদের সুযোগ নেই বিধায় উল্লেখিত সময়ে বহির্বিশ্ব থেকে আমদানিকৃত শাকসবজি, ফল-মূল দ্বারা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা হয়। যা উল্লেখযোগ্য অংশ বাংলাদেশ হতে সরবরাহ করা হয়ে থাকে এবং এর পরিমাণ প্রায় ৯২,৬৭৯ মেট্রিক টন।

বর্তমানে বাংলাদেশ হতে শাকসবজি যথা- কাঁকরোল, বেগুন, পটোল, করলা, লাউ, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, মিষ্টিকুমড়া, বরবটি, দেশি শিম, ঢেঁড়শ, পানিকচু, কচুর লতি, মুখী কচু, শশা, জালি কুমড়া, কাঁচা কলা, কাঁচা পেঁপে, আলু, লালশাক, পুঁইশাক, ডাঁটাশাক, কাঁচা মরিচ ইত্যাদি এবং ফল যেমন- কাঁঠাল, আম, জাম, লিচু, পেঁয়ারা, লটকন, বিভিন্ন প্রকারের লেবু (সাতকড়া, এলাচিলেবু, জারা লেবু, বাতাবিলেবু, তৈকর, বীজবিহীন লেবু), আনারস, বেল, কদবেল, কুল, জামরুল, আমড়া, কামরাঙ্গা, শরিফা, আতাফল, আমলকী, জলপাই, চালতা, তেঁতুল ইত্যাদি সীমিত পরিমাণে ইউরোপীয় দেশসমূহ যেমন- যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ তথা: সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন, ওমান, লেবানন প্রভৃতি দেশে রপ্তানি হয়ে আসছে।

সারণি-১ এ ১৯৯৩-১৯৯৪ হতে ২০১৩-২০১৪ বাংলাদেশ হতে রপ্তানিকৃত শাকসবজি ও ফলের ৫ বছর অন্তর একটি পরিসংখ্যান নিম্নে প্রদত্ত হলো-

বর্ষপরিমাণ (মে. টন)ক্রমবৃদ্ধি (%)মূল্য (আমেরিকান ডলার) মিলিয়নক্রমবৃদ্ধি (%)
১৯৯৩-১৯৯৪৮৪২২৯.৪৪
১৯৯৮-১৯৯৯১৩১১৯(+)  ৫৫.৭৭১৭.৭০(+) 
২০০৩-২০০৪১৬১৪৪(+) ২৩.০৬২৪.৭০(+) 
২০০৮-২০০৯২৪৬৭০(+) ৫২.৮১৫০.৭১(+) 
২০১৩-২০১৪৯২৬৭৯(+)  ২৭৫.৬৭২১০(+) 

(২) শাকসবজি ও ফলের বর্তমান রপ্তানি বাজার ব্যবস্থা

সাধারণত আমদানিকারকগণের চাহিদানুযায়ী বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে সরবরাহকারীগণের (Suppliers) মাধ্যমে রপ্তানিকারকগণ তাদের কাঙ্ক্ষিত পণ্য সংগ্রহ করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকগণ বাজার থেকে বাজারজাতকরণ নীতি (Market to Market approach) অনুসরণ করেন। তবে, রপ্তানিকারকগণের চাহিদানুযায়ী কখনো কখনো সববাহকারীগণ কৃষক/উৎপাদকের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে সরাসরি বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করে থাকেন। এখানে উল্লেখ্য যে, সরবরাহকারীগণ জারালেবু এবং কাঁঠাল বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সরাসরি কৃষকের বাগান থেকে নিজেদের চাহিদা মোতাবেক সংগ্রহ করে রপ্তানিকারকগণকে সরবরাহ করে থাকেন।

বাংলাদেশি রপ্তানিকারকগণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বহির্বিশ্বের সীমিত এশিয়ান অধ্যুষিত বাজারে (Ethnic Market) পণ্য রপ্তানি করেন বিধায় পণ্যের গুণগত মান রক্ষায় তেমন একটা আন্তরিক নন। রপ্তানিকারকগণ নিজস্ব তত্ত্বাবধানে পণ্যের বর্ণ, আকার এবং গঠন অনুযায়ী শ্রেণিবিন্যাসসহ বাছাই করে পুনঃ ব্যবহৃত (Re-used) এবং পুনঃ তৈরিকৃত (Re-cycle) অনুন্নত করোগেটেড ফাইবার বোর্ড কার্টনে করে বিদেশে রপ্তানি করা হয়।

মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহের উচ্চমূল্যের বাজারে (High Value Market) গুণগত মানসম্পন্ন বাংলাদেশি তাজা শাকসবজি ও ফলের অপার সম্ভাবনা বিদ্যমান। উক্ত বাজারে প্রবেশাধিকারে পণ্যের মানদণ্ড, গুণগত মান, উচ্চমূল্যের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার এবং রপ্তানিযোগ্য শাকসবজি ও ফলের গুণগত মান রক্ষায় আমাদের অনেক কিছু করণীয় রয়েছে।

এশিয়ান অধ্যুষিত বাজার (Ethnic market) এর পাশাপাশি উচ্চমূল্যের বাজারে বাংলাদেশি তাজা শাকসবজি, ফল-মূল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরিমাণ কয়েক গুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। বর্তমান বিশ্বের স্বাস্থ্যসচেতন ক্রেতাসাধারণের চাহিদানুযায়ী উচ্চমূল্যের বাজারে প্রবেশাধিকারের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি উত্তম কৃষি চর্চা (Global GAP) এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে পণ্যের গুণগত মান রক্ষায় উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি (Good Agriculture Practice) অবলম্বন করা অত্যাবশ্যকীয়।

রাসায়নিক এবং জীবাণু সংক্রমণমুক্ত গুণগত মানসম্মত পণ্য উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণে উৎপাদন এবং সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা অতীব জরুরি। এর পাশাপাশি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (World Trade Organization ) সেনিটারি এন্ড ফাইটো-সেনিটারি (SPS) এবং ট্রেড ব্যারিয়ার ইন ট্রেড (TBT) নীতিমালা যথাযথভাবে অনুশীলন করা অত্যাবশ্যক।

(৩) রপ্তানির বৃদ্ধিতে উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি অবলম্বনে করণীয়

ক) উৎপাদন পর্যায়ে করণীয়সমূহ

উচ্চমূল্যের মূল বাজার (High Value Mainstream Market)-এ বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে গুণগত মানসম্পন্ন শাকসবজি ও ফল উৎপাদনের কোনো বিকল্প নাই। 

  1. অধিকন্তু ক্রেতার সন্তুষ্টি সাধনে উৎপাদিত ফসলের উৎপাদন প্রক্রিয়া তথা- 
  2. উৎপাদন এলাকা নির্বাচন,
  3. উপযুক্ত জমি নির্বাচন,
  4. জাতসহ বীজ, চারা নির্বাচন,
  5. জমি/মাটি ব্যবস্থাপনা,
  6. চারা রোপণ প্রক্রিয়া,
  7. রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ মাত্রা, সময় নির্ধারণ,
  8. ব্যবহৃত সেচ/পানি এবং নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনাসহ নিরাপদ সংক্রান্ত তথ্যাবলি,
  9. রোগবালাই এবং পোকা-মাকড় দমন ব্যবস্থাপনায় প্রয়োগ প্রণালিসহ ব্যবহৃত কীটনাশক/বালাইনাশক- এর ধরন, প্রয়োগের অনুমোদিত মাত্রা ও প্রয়োগ প্রণালি, কীটনাশক/বালাইনাশক প্রয়োগের পরামর্শক এবং প্রয়োগকারী তথ্যাবলি,
  10. সংগ্রহকালীন সময় ও পদ্ধতি ব্যবস্থাপনা,
  11. সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণ অতীব জরুরি।

উৎপাদক/কৃষক পরিচিতসহ যাবতীয় তথ্যাবলি যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিরীক্ষা এবং নিরাপদ এবং গুণগত মান বিবেচনায় সনদ সাপেক্ষে আন্তর্জাতিক উচ্চমূল্যের মূল বাজারে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত হবে এবং ক্রেতাসাধারণ কর্তৃক সাদরে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

খ) সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে করণীয়সমূহ

স্বাভাবিক অর্থে ফসল সংগ্রহকালীন সময় থেকেই সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শুরু হয়। পণ্যের গুণগত মান রক্ষায় সংগ্রহকালীন সময় এবং সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত হতে প্রাপ্ত সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে তাজা এবং পচনশীল পণ্য তথা শাকসবজি, ফল-মূল-এর একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ (২৫-৪০%) অবচয় হয়।

অবচয় রোধ এবং সঠিক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে উৎপাদিত ফলের পরিমাণ অনেকাংশে বৃদ্ধি করা সম্ভব এবং এই বিরাট অবচয় রোধকল্পে সঠিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এনজিও এবং বেসরকারি সংস্থা হতে অপর্যাপ্ত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

(৪) শাকসবজি ও ফলের উৎপাদন সমস্যাবলি

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশে শাকসবজি ও ফলের উৎপাদন প্রকৃত চাহিদার চেয়ে অনেক কম যদিও এর উৎপাদন এলাকা এবং পরিমাণ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলের উৎপাদন প্রক্রিয়া যথাযথ বিশ্লেষণ পূর্বক প্রধান প্রধান সমস্যা নিরূপণ করা হয়েছে। উল্লেখিত সমস্যাবলি যথাযথভাবে বিবেচনাকরত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে ফলের আশানুরূপ ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভব। 

সমস্যাবলি নিম্নরূপ-

  • উপকরণের অধিক মূল্য,
  • সঠিক প্রযুক্তির অভাব,
  • উন্নত জাতের অভাব,
  • আধুনিক/উন্নত উৎপাদন কলাকৌশল-এর অভাব,
  • উচ্চ মাত্রায় সংগ্রহোত্তর অবচয়,
  • রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাব,
  • প্রাকৃতিক দুর্যোগ,
  • উন্নত বাজার ব্যবস্থাপনার অভাব।

(৫) শাকসবজি ও ফল রপ্তানির প্রধান সমস্যাবলি

আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য সরবরাহের জন্য ধারাবাহিকতা আবশ্যক। বাংলাদেশি শাকসবজি ও ফল প্রধানত নির্ধারিত মৌসুমি ফলে, যা সীমিত সময়ের পর আর সরবরাহ করা সম্ভবপর হয় না। এর ফলে আমদানিকারক সংস্থাকে বিকল্প উৎসের সন্ধান করতে হয়। ধারাবাহিক এবং দীর্ঘসময়ব্যাপী শাকসবজি ও ফল রপ্তানির লক্ষ্যে বর্ষব্যাপী রপ্তানিযোগ্য শাকসবজি ও ফলের জাত উদ্ভাবন করতে হবে।

অন্যান্য সমস্যাবলির মধ্যে-

  • অপর্যাপ্ত উৎপাদন,
  • অনিয়মিত সরবরাহ,
  • পোকা-মাকড় এবং রোগবালাই প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে দক্ষতার অভাব,
  • গুণগত মানসম্পন্ন ফল উৎপাদনে উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকদের জ্ঞানের অভাব,
  • সংগ্রহকালীন এবং সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতার অভাব,
  • মানসম্পন্ন প্যাকেজিং সামগ্রী ব্যবহার না করা,
  • বিমানে প্রয়োজনীয় স্থান সংকুলানের ব্যবস্থা না থাকা,
  • দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় অতিরিক্ত বিমান ভাড়া প্রদান,
  • আধুনিক প্যাক- হাউজ এবং শীততাপনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার অভাব,
  • বিমানের কার্গো স্পেসে শীততাপনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা না থাকা অন্যতম।

উল্লেখিত সমস্যাবলি যথাযথভাবে সমাধানের মাধ্যমে অধিক পরিমাণে শাকসবজি ও ফল রপ্তানি করা সম্ভব।

(৬) শাকসবজি ও ফল রপ্তানির সম্ভাবনা

অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে সুনির্দিষ্টভাবে ধারণা করা যায় যে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশি ফলের রপ্তানির সম্ভাবনা প্রচুর।

পর্যাপ্ত সরবরাহ সাপেক্ষে ফলের গুণগত মান উন্নয়ন, ধারাবাহিকভাবে সরবরাহ নিশ্চিত করা, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় অনুকূল তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা রক্ষা, উন্নত প্যাকেজিং ব্যবহার এবং সর্বোপরি সুপারভাইজড এবং চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ নিশ্চিত করা গেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে বাংলাদেশি শাকসবজি ও ফলের রপ্তানি কয়েক গুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব।

আন্তর্জাতিক উচ্চমূল্যের বাজারের গতিধারা, বাজার চাহিদা এবং পণ্যের প্রবেশাধিকারের উপর ভিত্তি করে গুণগত মানসম্পন্ন প্রধান প্রধান শাকসবজি যেমন- বরবটি, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়শ, বেগুন, কাঁকরোল, পটোল, কুমড়াজাতীয় সবজি ইত্যাদি। এবং প্রধান প্রধান ফল যথা- আম, আনারস, কাঁঠাল, লেবুজাতীয় ফল (সাতকড়া, তৈকর, জারা লেবু, এলাচি লেবু), কুল, কলা, লিচু, পেয়ারার যথেষ্ট বাজার সম্ভাবনা বিদ্যমান। এ ছাড়াও প্রক্রিয়াজাতকরণের (হিমায়িত এবং টিনজাতকরণ) মাধ্যমে কিছু কিছু ফল যেমন- জলপাই, আনারস (টিনজাত), সাতকড়া, কাঁচা কাঁঠাল ও কাঁঠালের বিচি বাজারজাত করণের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদাসম্পন্ন বাংলাদেশি শাকসবজি ও ফলের অধিক বাজার সম্প্রসারণ, উচ্চমূল্যের বাজারে প্রবেশ, অধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে শাকসবজি ও ফলের উন্নত জাত উদ্ভাবন, বছরব্যাপী বা দীর্ঘ সময়কালীন সংগ্রহোত্তর কার্যক্রম পরিচালনায় চলমান গবেষণা এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিকল্প নাই।

[সূত্র: এনসিটিবি]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts

You cannot copy content of this page